আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
102 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (19 points)
আসসালামু আলাইকুম  আমি ইটালিতে থাকি


আজকে আমার Physical exercise এর ক্লাস ছিল। এই ক্লাস টা করা বাধ্য তামুলক! ছেলে মেয়ে সবাই একসাথে আমরা, যাইহোক আজকে টিচার রা সিদ্ধান্ত নিছে আজকে দুই ক্লাস কে একসাথে, আমাদের ডিসেম্বর এর টেস্ট এর জন্য ট্রেনিং দিবে।

2D আমার ক্লাস 2E আরেক ক্লাস। তো আমার সবাই দৌড়াচ্ছিলাম, টেস্ট টাও আমাদের দৌড় এরই। যাইহোক দৌড়াচ্ছিলাম তখন টিচার বলে দুজন দুজন করে গ্রুপে দাঁড়াও, তো আমি আমার মেয়ে ক্লাসমেট এর কাছে যাচ্ছিলাম, তখন টিচার বলে গ্রুপে একজন ছেলে একজন মেয়ে হতে হবে। এই বলে আমাকে টান দিয়ে 2E এর একটা ছেলের সাথে নিয়ে দিল। তা যাইহোক আমরা সাথে হওয়া সত্ত্বেও আলাদা আলাদা ই দৌড়াচ্ছিলাম। কিছুক্ষণ পর টিচার আবার সবাই কে ডাক দিল। দিয়ে বলতেছে, তোমরা হলুদ কোণ টার কাছে গিয়ে High Plank করবা এন্ড একজনের নিচে দিয়ে আরেকজন যাবা। আর অরেন্জ কোণ এর কাছে গিয়ে একজন উল্টা Plank করবা এন্ড আরেকজন উপরে বা নিচে দিয়ে যাবা ইচ্ছাকৃত ভাবে। তো ছেলে বলে: তুমি অরেন্জ কোণ টা করবা আমি হলুদ টা করবো নে যেহেতু আমি তোমার চেয়ে লম্বা। আমি বলি আচ্ছা ঠিক আছে। তো দু-এক বার করি যথাসম্ভব দূরে দূরে থেকে।
গেলো এইসব,  এইবার টিচার বলে: এবার তোমাদের একজন উল্টা Plank করবা এন্ড একজনের পায়ের উপর আরেকজন বসে হাত-পা ছড়িয়ে ধরবা। আমার তো কথা শুনে চোখ কপালে উঠে গেছে। আমি বলি ওই ছেলেটাকে: আমাদের করা লাগবে না, আমরা জাস্ট এমনি হাঁটা-হাঁটি করি। তো ছেলেটা বললো আচ্ছা। তো আমরা কিছুই করছিলাম না ঠিক তখনই টিচার এসে বলে তোমরা করছো না কেন? আমি বললাম, হ্যাঁ করবো তো। তো টিচার ছেলেটাকে বললো তুমি উল্টা plank করো, তখন ভাই আমার হাত ধরে টান দিয়ে আমাকে ওর পায়ের উপর বসালো! আমি বসে সাথে সাথে উঠে যাই! তখন হাসি মেরে উড়াই দিতে চাইলাম যাতে মেম কিছু না বলে। ওদিকে আমার ভিতরে কষ্টে ফেটে যাচ্ছে কি এক দেশে আছি! তারপর, টিচার আরেকটা বলা শুরু করছে। বলতেছে একজন plank করবা আরেকজন তার উপরে পিঠে পিঠ লাগিয়ে শুবা। আমি এইটা তেও না করলাম। মেম আইসা আবার জোড়াজোড়ি শুরু করছে, আমি শুই নাই, জাস্ট একটু ঝুঁকে উঠে চলে যাই। তারপর, আবার সবাই কে বললো ফ্লোরে বসতে। বসলাম, বললো নিজের পার্টনারের সাথে হাত ধরে হেন টেন ব্যায়াম করো, আমি শুধু হালকা করে হাত ধরি, আর সেই ছেলে আমার হাত ধরে শক্ত করে! আমার ভাই চোখে পানি ই চলে আসতেছিল। আজ বাধ্য হয়ে কত কিছু করছি! তারপর বললো, একজনের কাধেঁ আরেকজন হাত রেখে নিচের দিকে ঝুঁকে থাকো। তো আমি তো মেয়ে মানুষ হাত ও তেমন বড়ো না আমার। আমি ধরি নাই, ছেলে আমার থেকে অনেক বড় সে আমার কাঁধে হাত রাখছে ওর হাত মনে হচ্ছে আমার অর্ধেক পিঠেই পরে আছে। আমি সাথে সাথে সরে বলি: ম্যাম! আমি একটু পানি খেয়ে আসতে পারি? তো বললেন হ্যাঁ। এই বাহানাই আমি উঠে দৌড়ে চলে যাই। এই বলে অনেকক্ষণ চেইন্জ রুমে ছিলাম।
এই যা যা হলো আজ।

আমি কেন বেশি বাঁধা দিতে পারিনি? আমি না করলে আমাকে দিবে Nota, nota দিলে আমার স্কুলের সব কিছুতে এফেক্ট করবে। এই এক বাধ্যকতা, শুনে তেমন সিরিয়াস লাগে না। কিন্ত আমি জানি কেমনে কি হচ্ছে।

আমার সারাটাক্ষন ভয়ে কান্না আসছিল, না জানি কি গুনাহ হয়ে যাচ্ছে। না জানি যিনার গুনাহ হয়ে যাই। আরো বেশি কষ্ট লাগছিল এই ভেবে যে এর আগে আমার গায়ে কখনো কোনো ছেলের স্পর্শ লাগে নাই। এই প্রথম । আমার এইসবের কোনো ইচ্ছা ছিল না, কোনো ইন্টেনসন ছিল না সব কিছুই বাধ্যতামূলক ছিল। আল্লাহ তো দেখেছে আসল বিষয়!

আমার কি যিনার গুনাহ হবে? বেশি গুনাহ হবে?

1 Answer

0 votes
by (573,960 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم


মহান আল্লাহ তায়ালা পর্দা ফরজ করেছেন।
এভাবে নারী পুরুষ এর একসাথে ব্যায়াম,স্পর্শ সবই হারাম। 

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ- 

قُلْ لِلْمُؤْمِنِينَ يَغُضُّوا مِنْ أَبْصَارِهِمْ وَيَحْفَظُوا فُرُوجَهُمْ ۚ ذَٰلِكَ أَزْكَىٰ لَهُمْ ۗ إِنَّ اللَّهَ خَبِيرٌ بِمَا يَصْنَعُونَ [٢٤:٣٠] 

وَقُلْ لِلْمُؤْمِنَاتِ يَغْضُضْنَ مِنْ أَبْصَارِهِنَّ وَيَحْفَظْنَ فُرُوجَهُنَّ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا مَا ظَهَرَ مِنْهَا ۖ وَلْيَضْرِبْنَ بِخُمُرِهِنَّ عَلَىٰ جُيُوبِهِنَّ ۖ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا لِبُعُولَتِهِنَّ أَوْ آبَائِهِنَّ أَوْ آبَاءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوْ أَبْنَائِهِنَّ أَوْ أَبْنَاءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوْ إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي أَخَوَاتِهِنَّ أَوْ نِسَائِهِنَّ أَوْ مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُهُنَّ أَوِ التَّابِعِينَ غَيْرِ أُولِي الْإِرْبَةِ مِنَ الرِّجَالِ أَوِ الطِّفْلِ الَّذِينَ لَمْ يَظْهَرُوا عَلَىٰ عَوْرَاتِ النِّسَاءِ ۖ وَلَا يَضْرِبْنَ بِأَرْجُلِهِنَّ لِيُعْلَمَ مَا يُخْفِينَ مِنْ زِينَتِهِنَّ ۚ وَتُوبُوا إِلَى اللَّهِ جَمِيعًا أَيُّهَ الْمُؤْمِنُونَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ [٢٤:٣١] 

মুমিনদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গর হেফাযত করে। এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা আছে। নিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ তা অবহিত আছেন।

ঈমানদার নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌন অঙ্গের হেফাযত করে। তারা যেন যা সাধারণতঃ প্রকাশমান, তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং তারা যেন তাদের মাথার ওড়না বক্ষ দেশে ফেলে রাখে এবং তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভ্রাতা, ভ্রাতুস্পুত্র, ভগ্নিপুত্র, স্ত্রীলোক অধিকারভুক্ত বাঁদী, যৌনকামনামুক্ত পুরুষ, ও বালক, যারা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ, তাদের ব্যতীত কারো আছে তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে, তারা যেন তাদের গোপন সাজ-সজ্জা প্রকাশ করার জন্য জোরে পদচারণা না করে। মুমিনগণ, তোমরা সবাই আল্লাহর সামনে তওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও। {সূরা নূর-৩০-৩১}

يَا نِسَاءَ النَّبِيِّ لَسْتُنَّ كَأَحَدٍ مِنَ النِّسَاءِ إِنِ اتَّقَيْتُنَّ فَلَا تَخْضَعْنَ بِالْقَوْلِ فَيَطْمَعَ الَّذِي فِي قَلْبِهِ مَرَضٌ وَقُلْنَ قَوْلًا مَعْرُوفًا (32) وَقَرْنَ فِي بُيُوتِكُنَّ وَلَا تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ الْجَاهِلِيَّةِ الْأُولَى

হে নবীর স্ত্রীগণ! তোমরা অন্য নারীদের মত নও [ইহুদী খৃষ্টান)। তোমরা যদি আল্লাহকে ভয় পাও তবে আকর্ষণধর্মী ভঙ্গিতে কথা বলনা, যাতে যাদের মাঝে যৌনলিপ্সা আছে তারা তোমাদের প্রতি আকৃষ্ট হয়। বরং তোমরা স্বাভাবিক কথা বল। এবং তোমরা অবস্থান কর স্বীয় বসবাসের গৃহে, জাহেলী যুগের মেয়েদের মত নিজেদের প্রকাশ করো না। {সূরা আহযাব-৩২}

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 
হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত।

فَالْعَيْنَانِ زِنَاهُمَا النَّظَرُ، وَالْأُذُنَانِ زِنَاهُمَا الِاسْتِمَاعُ، وَاللِّسَانُ زِنَاهُ الْكَلَامُ، وَالْيَدُزِنَاهَا الْبَطْشُ، وَالرِّجْلُ زِنَاهَا الْخُطَا، وَالْقَلْبُ يَهْوَى وَيَتَمَنَّى، وَيُصَدِّقُ ذَلِكَ الْفَرْجُ وَيُكَذِّبُهُ


রাসূল সাঃ ইরশাদ করেন, চোখের জিনা হল [হারাম] দৃষ্টিপাত। কর্ণদ্বয়ের জিনা হল, [গায়রে মাহরামের যৌন উদ্দীপক] কথাবার্তা মনযোগ দিয়ে শোনা। জিহবার জিনা হল, [গায়রে মাহরামের সাথে সুড়সুড়িমূলক] কথোপকথন। হাতের জিনা হল, [গায়রে মাহরামকে] ধরা বা স্পর্শকরণ। পায়ের জিনা হল, [খারাপ উদ্দেশ্যে] চলা। অন্তর চায় এবং কামনা করে আর লজ্জাস্থান তাকে বাস্তবে রূপ দেয় [যদি জিনা করে] এবং মিথ্যা পরিণত করে [যদি অন্তরের চাওয়া অনুপাতে জিনা না করে]। {সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-২৬৫৭, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-৮৯৩২}

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে খুব মারাত্মক গুনাহ হয়েছে।
আপনাকে খালেস দিলে তওবা করতে হবে,আর যেনো ভবিষ্যতে এহেন পরিস্থিতিতে না পড়তে হয়,সেজন্য যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।
সেখানে পড়াশোনা করতে হলে যদি বাধ্যতামূলক এমনটা করতেই হয়,তাহলে সেখানে পড়াশোনা করা কোনোভাবেই জায়েজ হবেনা।

★তবে এক্ষেত্রে আপনার যেনার গুনাহ হবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...