আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
229 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (61 points)
edited by
আমরা হানাফি মাহজাবের দেওবন্দী ঘরানার আলেমদের ফলো করি, বিভিন্ন মাসআলা তদের থেকেই কারো কাছ থেকে জেনে আমল করি। একটা বিষয় নিয়ে মাথায় কিছু প্রশ্নের উধয় হয়েছে। যদি মেহেরবানি করে এই প্রশ্ন গুলোর জবাব দেন, আমার বিষয়গুলো পরিষ্কার হয়। প্লিজ মুফতি সাহেব খাস করে শেষের কুফরের পশ্বের জবাব গুলো দিবেন দয়া করে, কষ্ট করার জন্য অগ্রীম ধন্যবাদ।অনেক চিন্তায় আছি।
১. আমাদের উপর তাদের মধ্যে থেকে যেকোনো একজনকে সর্বদা অনুসরণ করা ফজর বা ওয়াজিব?
২.না কি সুবিধা মতো এই ঘরানার বিভিন্ন মুফতিকে কাছে/সুযোগে পাই তাদের থেকে জেনে আমল করলেই হবে?আমাদের তো অনেক মুফতিই পরিচিত থাকতে পারে। এভাবে করলে কি আমল বা ফতোয়া সঠিক হবে না?
৩. যদি একজনেই অনুসরণ করতে হয়, তখন তো আমরা উনাকে সব সময় কাছে না ও পেতে পারি,হয়তো উনি ব্যস্ত বা অন্য যেকোনো কারণে জরুরী মাসআলা জানার দরকার পরতে পারে। তখন এই ঘরানার অন্য মুফতি থেকে জেনে আমল করলে হবে না?

৪.হানাফি দেওবন্দি আলেমদের মাঝে মতবিরোধ থাকলে আমার অনুকুলে / সুবিধামাফিক কি যেকোনো  এক মতের উপর আমল করতে পারি?যেটা লজিকাল মনে হয়।আমরা তো দলিল যাচাই বাচাই করতে পারতেছিনা, লজিক পারতেছি। অনেকে বলেন হারাম টাকে প্রাধানয় দিতে, এই রকম হলে তো মাজহাব ৪ টার দরকার পরে?সব হারাম গুলো নিয়ে একটা মাজহাব করা যাচ্ছে।  এর উপযুক্ত সমাধান কি?

৫.একজনকেই সবসময় অনুসরণ করতে হলে, ধরুন আমি আপনাকে অনুসরণ এর সিদ্ধান্ত নিলাম, এখন কি আমি পূর্বে বিভিন্ন মুফতি থেকে যেসব ফতোয়া নিয়েছি, তা হোক, কুফর, তালাক,সহ বিভিন্ন বিষয়, সেগুলো কি আপনার থেকে আবার জানতে হবে?

৬. যদি আমার জন্য যে কোন নির্দিষ্ট  মুফতিকে  ফলো করা বাধ্যতামূলক হয়,  হতে পারে সেই মুফতির কোনো ফতোয়া আমার কাছে দালিলিক /লজিজাল মনে হচ্ছে না, এই একই  মাসআলায় হানাফি(দেওবন্দি) অন্য আলেমের মত ই যুক্তিসঙ্গত মনে হচ্ছে,তখন কি ওই মুফতির ফতোয়া নিতে পারি?

৭. পার্লারে কাজ করা বৈধ কি না এই নিয়ে একদিন আমার সাথে একজনের কথা হয়। উনি বলেছিলেন যে এই কাজ নাজায়েজ।  তখন আমি বলেছিলাম যে সাজিয়ে দেওয়া তো গুনাহ না, যে সেজেগুজে অন্য পুরুষদের দেখাবে গুনাহ তো তার হবে, সাজিয়ে দিয়েছে তার দোষ হওয়ার কথা না। লজিক হিসাবে আমি তাকে, ওয়াইফাই এর ব্যবসা, বা ছুরি কেনা বেচার উদাহরন দেই। আজকে দেখলাম আপনাদের সাইটে,  যে পার্লারে যদি মেয়ে পরপুরুষকে দেখাবে এমন বুঝা যায় তব তা সাজিয়ে দেওয়া নাজায়েজ, এটা দেখে এইটাই বিশ্বাস করছি,এবং তওবা করছি। আগের কথোপকথন এর জন্য কি ইমানে সমস্যা হবে? (কতো আগের ঘটনা স্পষ্ট খেয়াল নাই, আমার বিয়ের পরেই মনে হয়, বিবাহে সমস্যা হবে?)

1 Answer

0 votes
by (590,550 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
মুজতাহিদ নয় এমন সবার জন্য মাযহাব মানা ফরয।বিস্তারিত জানতে দেখুন!জাস্টিস আল্লামা তাক্বী উসমানী রচিত"মাযহাব কি ও কেন?"

মাযহাব অর্থ হল,কুরআন-হাদীসের ব্যাখা জানতে কারো সাহায্য গ্রহণ করা।অর্থাৎ যারা নিজে সরাসরি কুরআনের আয়াত বা হাদীসে রাসূল এর মর্মার্থ বুঝতে পারেন না, তারা অন্যর সাহায্য নিয়ে কুরআন-হাদীস এর মর্মার্থ বুঝবেন,এবং সে অনুযায়ী আ'মল করবেন।

সুতরাং কোনো এক অালেম বা মৌলিক মূলনীতি এক এমন একদল আলেমের কুরাআন-সুন্নাহ অনুসৃত মত ও পন্থাকে অনুসরণ করার নামই হল মাযহাব।এক্ষেত্রে সকল মাস'আলায় শুধুমাত্র একজনকেই অনুসরণ করতে হবে।নতুবা একেকজনকে একেক মাস'আলা অনুসরণ মূলত প্রবৃত্তির অনুসরণ হবে,।এজন্য এমন কোনো এক আলেম বা মূলনীতি এক এমন একদল আলেমকে অনুসরণ করতে হবে যাদের প্রায় সকল বিষয়ে ইজতেহাদ রয়েছে।এই হল মাযহাব এর তাৎপর্য। সুতরাং এ দৃষ্টিকোনে নবীজী সাঃ কোনো মাযহাবের অনুসারী হওয়ার প্রশ্নই আসে না।

হ্যা কুরআন হাদীসে মাযহাবের কথা রয়েছে।যেমন আল্লাহ তা'আলা বলেন,
ﻭَﻣَﺎ ﺃَﺭْﺳَﻠْﻨَﺎ ﻣِﻦ ﻗَﺒْﻠِﻚَ ﺇِﻻَّ ﺭِﺟَﺎﻻً ﻧُّﻮﺣِﻲ ﺇِﻟَﻴْﻬِﻢْ ﻓَﺎﺳْﺄَﻟُﻮﺍْ ﺃَﻫْﻞَ ﺍﻟﺬِّﻛْﺮِ ﺇِﻥ ﻛُﻨﺘُﻢْ ﻻَ ﺗَﻌْﻠَﻤُﻮﻥَ
আপনার পূর্বেও আমি প্রত্যাদেশসহ মানবকেই তাদের প্রতি প্রেরণ করেছিলাম অতএব জ্ঞানীদেরকে জিজ্ঞেস কর, যদি তোমাদের জানা না থাকে। (সূরা নাহল-৪৩)
এই জিজ্ঞাসা এবং সে অনুযায়ী আ'মল করা এর নামই মাযহাব।এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-https://www.ifatwa.info/402

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
(১)
যে কোনো একটি মাযহাবকে ফলো করা ওয়াজিব।উক্ত মাযহাবের কোনো ব্যক্তিবিশেষকে ফলো করা ওয়াজিব নয়। তবে প্রবৃত্তির অনুসরণ বা নিজের সুবিধা অর্জনের লক্ষে বিভিন্ন জনের নিকট মাস'আলা জিজ্ঞাসা করা কখনো জায়েয হবে না।

(২)
নিজের কাছে নির্ভর্যোগ্য এবং যার সাথে যোগাযোগ করা সর্বদা সম্ভব এমন কারো কাছে সর্বদা মাস'আলা জিজ্ঞাসা করা উচিৎ। তবে সময় সুযোগের অভাবে একই মাযহাবের ভিন্ন জনের নিকট মাস'আলা জিজ্ঞাসা নাজায়েয নয়।

(৩)
জ্বী, এই ঘরানার অন্য মুফতি থেকে জেনে আমল করলে হবে।

(৪)
আপনার কাছে যিনি গ্রহণযোগ্য হবেন, উনার কথামাফিক মাস'আলা গ্রহণ করবেন।চায় আপনার স্বার্থের অনুকূলে হোক বা প্রতিকূলে হোক।

(৫)
কোন একজনকে সবসময় অনুসরণ করার জন্য নির্ধারণ করার আপনি পূর্বে বিভিন্ন মুফতি থেকে যেসব ফতোয়া নিয়েছেন, তা হোক, কুফর, তালাক,সহ বিভিন্ন বিষয়, সেগুলোকে আবার জানতে হবেনা।

(৬)
নির্দিষ্ট কোনো মুফতিকে বাধ্যতামূলক ভাবে ফলো করাকে নিজের উপর জরুরী করে নেয়ার পর, সেই মুফতি সাহেবের ফতোয়ার বিপরীত একই মাযহাবে  অন্য মুফতি সাহেবের  ফাতাওয়ার উপর আ'মল করা যাবে। এক্ষেত্রে শর্ত হল, নিজ সুবিধাকে পুঁজি না করা।বরং দলীলের বিশুদ্ধমতাকে পুজি করেই কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা।

(৭)
যেহেতু দ্বীনদার নারীরা পার্লারে খুব কমই আসে, বরং ঐ সমস্ত নারীরাই পার্লারে বেশী আসে, যাদের কাছে আখেরাতের চেয়ে দুনিয়া বড়। সুতরাং ঐ সব কারণে  পার্লারে ব্যবসা করা জায়েয হবে না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (61 points)
মুফতি সাহেব একটু কি দেখবেন?
৭,৮,৯ এর ক্ষেত্রে কি আমার ইমানে সমস্যা হবে শায়েখ?

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...