আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
158 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (2 points)
আসসালামুআলাইকুম শায়েখ।

আমাদের বিয়ে হয়েছে ৫ বছর আগে।বিয়ের পর থেকেই সামান্য বিষয় নিয়ে আমাদের মাঝে ঝগড়া হতো,ঝগড়ার সময় অসংখ্যবার আমি তার কাছে তালাক চেয়েছি। সে আমাকে বলতো আমি কেনো তালাক দিবো তুমি লিখিতভাবে তালাক দাও আমি মেনে নিবো।এখন প্রশ্ন হলো শায়েখ

১.আমি যখন তালাক চেয়েছি (আমরা সামনাসামনি ছিলাম)তখন কয়েকবার এর ঘটনা তার মনে তালাকের নিয়ত ছিলো (এক তালাক বা তিন তালাক নিয়ত নয়,শুধু তালাকের নিয়ত)এবং তালাক চাওয়ার প্রেক্ষিতে বলেছে ঠিক আছে চলে যাও, তোমার থাকার ইচ্ছা না থাকলে চলে যাও,

এতে কী এক তালাকে বায়েন হয়েছে?

২.মাঝে ২-৩ বার সে ঝগড়া করে বাসা থেকে চলে গেছে,সে বলছে যে তার তালাকের নিয়ত ছিল(এক তালাক, দুই তালাক এমন নয়)সে যাওয়ার সময় বলেছিল আর ফিরে আসবে না,সে আমার সাথে সংসার করবে না এমন নিয়ত ছিলো। এই দুইটা ঘটনা ক্রমান্বয়ে ঘটেছে।কোনটা আগে ঘটেছে মনে নেই। দুইটা ঘটনার দ্বারা কী দুইটা আলাদা তালাক হয়েছে,নাকি একটাই বায়েন তালেক হয়েছে?

৩.একবার তালাক চেয়েছিলাম তখন সে মুখে বলে "এক তালাক"। কিন্তু এই ঘটনা আগের দুইটা ঘটনার আগে ঘটেছে নাকী পরে তা স্পষ্ট মনে নেই। মুখে এক তালাক বলার পর আমরা একসাথেই ছিলাম।

৪.এই তিনটা ঘটনার পর একবার বাসা থেকে তাকে না বলে বের হয়েছিলাম, তখন সে রাগান্বিত ছিল,মনে তালাকের নিয়ত ছিল আমার সাথে সংসার করবে না।

৫.একবার সে রাগান্বিত হয়ে বাসা থেকে বের হয়ে যেতে বলে, মনে তালাকের নিয়ত ছিল মনে হয়,আমি বের হয়ে যাই একটু পর আবার ফিরে আসি, সে আমাকে গ্রহণ করে।

শায়েখ আমাদের কী পুনরায় বিবাহ করার সুযোগ আছে? আর থাকলে এরপর তিনি আর কয় তালাকের অধিকার রাখে? সঠিক তথ্য দিয়ে সাহায্য করুন শায়েখ খুব পেরেশানিতে আছি।

1 Answer

0 votes
by (589,260 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
মুযাকারায়ে তালাক বা তালাকের আলোচনা
وَفِي حَالَةِ مُذَاكَرَةِ الطَّلَاقِ يَقَعُ الطَّلَاقُ فِي سَائِرِ الْأَقْسَامِ قَضَاءً إلَّا فِيمَا يَصْلُحُ جَوَابًا وَرَدَّا فَإِنَّهُ لَا يُجْعَلُ طَلَاقًا كَذَا فِي الْكَافِي
তালাকের আলোচনার পরিস্থিতিতে সকল প্রকার কেনায়া তালাকে তালাক পতিত হবে।তবে যে শব্দগুলো তালাকের আবেদনের জবাব এবং রদ উভয়টা বুঝাবে,সে শব্দুগুলো দ্বারা তালাক পতিত হবে না।(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/৩৭৫)

প্রশ্ন জাগে,মুযাকারায়ে তালাক কাকে বলে?
এ বিষয়ে রদ্দুল মুহতারে বর্ণিত রয়েছে,
"(قَوْلُهُ: وَهِيَ حَالَةُ مُذَاكَرَةِ الطَّلَاقِ) أَشَارَ بِهِ إلَى مَا فِي النَّهْرِ مِنْ أَنَّ دَلَالَةَ الْحَالِ تَعُمُّ دَلَالَةَ الْمَقَالِ قَالَ: وَعَلَى هَذَا فَتُفَسَّرُ الْمُذَاكَرَةُ بِسُؤَالِ الطَّلَاقِ أَوْ تَقْدِيمِ الْإِيقَاعِ كَمَا فِي اعْتَدِّي ثَلَاثًا وَقَالَ قَبْلَهُ الْمُذَاكَرَةُ أَنْ تَسْأَلَهُ هِيَ أَوْ أَجْنَبِيٌّ الطَّلَاقَ".
( كتاب الطلاق، بَابُ الْكِنَايَاتِ، ٣ / ٢٩٧)
মুযাকারায়ে তালাকের অর্থ হল, স্ত্রীর পক্ষ থেকে স্বামীর নিকট তালাকের আবেদন করা ,অথবা তৃতীয় কোনো ব্যক্তির পক্ষ থেকে স্বামীর নিকট তালাকের আবেদন এবং তামান্না করা। এই উভয় প্রকারকে 'মুতালাবায়ে তালাক' নামে অভিহিত করা হয়।তাছাড়া স্বামী যদি ইতিপূর্বে স্ত্রীকে এক বা দুই তালাক দিয়ে থাকে,তাহলে এদ্বারাও মুযাকারায়ে তালাক প্রমাণিত হবে।এই তৃতীয় প্রকারকে  তাকদীমূল ঈ'কা বলা হয়ে থাকে।(রদ্দুল মুহতার-৩/২৯৭) 

(দারুল ইফতা বিন্নুরী, পাকিস্তান,ফাতাওয়া নং- 144106200277)


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
(১)
স্ত্রী তালাক চেয়েছেন এবং তালাক চাওয়ার প্রেক্ষিতে স্বামী বলেছে ঠিক আছে চলে যাও, তোমার থাকার ইচ্ছা না থাকলে চলে যাও, এরকম কেনায়া বাক্য দ্বারা তালাক পতিত হবে। যেহেতু স্বামীর মনে কোনো নিয়ত ছিলনা, তাই এক সর্বনিম্ন এক তালাক বায়েন পতিত হবে।

(২)
তালাকের নিয়তে ঘর থেকে বের হলে তালাক পতিত হবে না। 

(৩)
একবার তালাক চেয়েছিলাম তখন সে মুখে বলে "এক তালাক"। এখানে এক তালাক পতিত হবে। এর পূর্বে বা পরে কি তালাক পতিত হবে? সে সম্পর্কে নিশ্চিত না হলে তো তালাক পতিত হবে না। 

(৪)
এই তিনটা ঘটনার পর একবার বাসা থেকে তাকে না বলে বের হইছিলাম,তখন সে রাগান্বিত ছিল,মনে তালাকের নিয়ত ছিল আমার সাথে সংসার করবে না।এদ্বারাও তালাক হবে না।

(৫)
একবার সে রাগান্বিত হয়ে বাসা থেকে বের হয়ে যেতে বলে,মনে তালাকের নিয়ত ছিলো মনে হয়,আমি বের হয়ে যাই একটু পর আবার ফিরে আসি,সে আমাকে গ্রহণ করে। এদ্বারাও তালাক পতিত হবে না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...