আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
204 views
in সালাত(Prayer) by (3 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহ
উস্তাদ, আমার স্বামীর সরকারি চাকুরির কাজের জন্যে আমি এবং আমার স্বামী সফরে এসেছি প্রায় ২০০ কিমি দূরে। নির্দেশ আছে, সরকারি কর্তব্য শেষ না হওয়া অবধি উক্ত স্থানে অবস্থান করতে হবে। সেক্ষেত্রে সময়টা অনির্দিষ্ট, আমাদের অজানা। ১৫ দিনের মধ্যে কাজ শেষ হতে পারে, আবার ১৫ দিনের বেশিও লাগতে পারে।

তাই তিনি মুকীমের মতো পুরো নামাজ পড়ছেন। এদিকে আমি আশা করছি ১৫ দিনের মাঝে বাড়িতে ফিরতে পারবো, তাই মুসাফিরের মতো কসর সালাত আদায় করছি।
১/ এক্ষেত্রে আমাদের করণীয় কি?
২/ বিবাহিত মেয়েদের বাবার বাড়ি যদি শহরের ভাড়া বাসায় হয়, তবে কি সেখানে কসর আদায় করা যাবে?
৩/ মেয়েদের শ্বশুরবাড়ি যদি গ্রামে হয় সেখানে কসর আদায় করা যাবে? চাকুরির জন্যে আমরা অন্য শহরে থাকি। গ্রামে ১-২ বার বেড়াতে যাই অল্পদিনের জন্যে। ( গ্রামে স্বামীর পৈত্রিক ভিটাবাড়ি আছে। সম্পদ ভাগ হয়নি। এরা ২ বোন, ১ ভাই। বাবা জীবিত নেই, মা জীবিত।)

1 Answer

+1 vote
by (573,870 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


(০১)
https://ifatwa.info/41598/ ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ-
হাদীস শরীফে এসেছেঃ  

عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ: فُرِضَتِ الصَّلَاةُ رَكْعَتَيْنِ رَكْعَتَيْنِ إِلَّا الْمَغْرِبَ فُرِضَتْ ثَلَاثًا لِأَنَّهَا وِتْرٌ، قَالَتْ: ” وَكَانَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا سَافَرَ صَلَّى الصَّلَاةَ الْأُولَى إِلَّا الْمَغْرِبَ، فَإِذَا أَقَامَ زَادَ مَعَ كُلِّ رَكْعَتَيْنِ رَكْعَتَيْنِ إِلَّا الْمَغْرِبَ، لِأَنَّهَا وَتْرٌ، وَالصُّبْحَ، لِأَنَّهُ يُطَوِّلُ فِيهَا الْقِرَاءَةَ “

হযরত আয়শা রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, প্রথম প্রথম নামায দুই রাকাত করে ফরজ হয় মাগরিব ছাড়া। কারণ এটি শুরুতেই ছিল তিন রাকাত। কেননা, এটি দিনের বিতির নামায। তিনি আরো বলেন, রাসূল সাঃ যখন সফর করতেন, তখন তিনি দুই রাকাত করেই পড়তেন, মাগরিব ছাড়া। তথা মাগরিব তিন রাকাতই পড়তেন। তার পরবর্তীতে দুই রাকাতের সাথে দুই রাকাত বৃদ্ধি করা হল মাগরিব ছাড়া। কেননা এটি [দিনের] বিতির। আর ফজরের দুই রাকাতের সাথে বৃদ্ধি করা হয়নি, কেননা এতে লম্বা কিরাত পড়া হয়। {মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-২৬২৮২, সহীহ ইবনে খুজাইমা, হাদীস নং-৩০৫, সুনানে সগীর লিলবায়হাকী, হাদীস নং-২৫৫}
 
فى تنوير الابصار- (من خرج من عمارة موضع إقامته) قاصدا مسيرة ثلاثة أيام ولياليها بالسير الوسط مع الاستراحات المعتادة صلى الفرض الرباعي ركعتين حتى يدخل موضع مقامه أَوْ يَنْوِيَ إقَامَةَ نِصْفِ شَهْرٍ (الدر المختار، كتاب الصلاة، باب صلاة المسافر-2/599-605، قاضى خان-1/164)

সারমর্মঃ কোনো ব্যাক্তি যদি তিন দিন তিন রাত সমপরিমাণ  দুরত্ব সফর করে,নিজ শহরের মৌজা থেকে বের হওয়া মাত্র ব্যাক্তি চার রাকাত ওয়ালা ফরজকে চার রাকাত করে আদায় করবে।
 
আরো জানুনঃ 

কেহ যদি পনেরো দিন বা তার চেয়ে বেশি  থাকার নিয়ত না করেন,বরং আজ কাল বা ১৫ দিনের আগেই যেকোনো মুহুর্তে চলে যেতে হবে,,এমন নিয়তই যদি হয়,তাহলে সে ব্যাক্তি এই অবস্থায় যতদিন সেখানে থাকবে,মুসাফির হিসেবে কসরের নামাজ আদায় করবে।
,
ফাতাওয়ায়ে শামীতে আছেঃ

أو دخل بلدة ولم ينوها) أي مدة الإقامة (بل ترقب السفر) غدا أو بعده (ولو بقي) على ذلك (سنين) إلا أن يعلم تأخر القافلة نصف شهر كما مر.
(قوله: أو دخل بلدة) أي لقضاء حاجة أو انتظار رفقة.
(قوله: ولم ينوها) وكذا إذا نواها وهو مترقب للسفر كما في البحر لأن حالته تنافي عزيمته."
(باب صلوة المسافر، ج:2، ص:126، ط:ایچ ایم سعید)

সারমর্মঃ
যদি এমন হয় যে কাল চলে যাবো বা পরশু চলে যাবো,নিয়ত যদি নির্দিষ্ট না থাকে, এইভাবে যদি দুই বছরও,তাহলেই ব্যাক্তি কসর করবে।
,
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে শুরুতেই তো আপনারা ১৫ দিন তার বেশি থাকার নিয়ত করেননি,সুতরাং এক্ষেত্রে আপাতত আপনারা ১৫ দিনের থাকার নিয়ত করবেন,আর কসর করবেন।

এক্ষেত্রে যদি আরো কিছু দিন থাকার আদেশ চলে আসে,সেক্ষেত্রে সেই নির্দেশ আসাত দিন হতে নতুন করে নিয়ত করবেন।
আগের নিয়ত বাদ দিয়ে এই নতুন নিয়তে যদি পরবর্তীতে আরো পনেরো দিন বা তার চেয়ে বেশি থাকার নিয়ত করেন,সেক্ষেত্রে পূর্ণ নামাজ আদায় করতে হবে।

আর যদি তার চেয়ে কম থাকার নিয়ত করেন,সেক্ষেত্রে কসর চালিয়ে যাবেন।

(০২)
নিজ স্বামীর বাসস্থান হতে বাবার উক্ত বাসা যদি ৭৮ কিলোমিটার বা তার চেয়ে বেশি দূরত্বে হয়,তাহলে সেখানে গিয়ে ১৫ দিনের কম থাকার নিয়ত করলে কসর আদায় করতে হবে।

(০৩)
প্রশ্নে উল্লেখিত শ্বশুরবাড়িই তো তার স্বামীর স্থায়ী নিবাস,স্থায়ী নিবাসে এক দিনের জন্য গেলেও পূর্ণ নামাজই আদায় করতে হয়।
সুতরাং সেখানে গেলে কসর আদায় করা যাবেনা।
পূর্ণ নামাজই আদায় করতে হবে।

হ্যাঁ যদি স্বামী সেই বাড়িকে স্থায়ী নিবাস হিসেবে গ্রহন না করেন,তিনি যদি অন্যত্রে আলাদা স্থায়ী নিবাস বানিয়ে ফেলেন এবং নিয়তও করেন,সেক্ষেত্রে গ্রামের উক্ত বাসা স্বামীর বাসস্থান হতে যদি ৭৮ কিলোমিটার বা তার চেয়ে বেশি দূরত্বে হয়,তাহলে সেখানে গিয়ে ১৫ দিনের কম থাকার নিয়ত করলে কসর আদায় করতে হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 304 views
...