বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-
নিজের অন্যায় কর্ম অন্যদের সামনে প্রকাশ করা সম্পর্কে হাদিসে এসেছে, রাসুল (সা.) বলেন ‘আমার উম্মতের সব ব্যক্তির গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে, তবে ওইসব লোক ছাড়া, যারা নিজেদের পাপ ও অপরাধ জনসম্মুখে প্রকাশ করে। নিজেদের অপরাধ প্রকাশ করার অর্থ হচ্ছে কেউ রাতে কোনো গুনাহ করে, অতঃপর যখন সকাল হয় সে নিজেই তা মানুষকে বলে বেড়ায়, গতরাতে আমি এই এই কাজ করেছি। অথচ রাতে তার প্রতিপালক সেটাকে গোপন রেখেছেন এবং অবিরত তার প্রতিপালক তা গোপন রাখছিলেন। এবং সে দিনের বেলায় কোনো গুনাহের কাজ করে, আর যখন রাত হয় সে তা মানুষকে বলে বেড়ায়, যদিও আল্লাহ তা গোপন রেখেছিলেন।’ (মুসলিম : ২৯৯০)
নিজের কোনো পাপ হয়ে গেলে তা তো গোপন করতেই হবে, অন্য কোনো ব্যক্তির পাপ ও অপরাধও যদি চোখে পড়ে যায় সেটাও গোপন করা উচিত। হাদিসে এসেছে, ‘যে ব্যক্তি তার মুসলিম ভাইয়ের গোপন (অপরাধের) বিষয় গোপন রাখবে, আল্লাহ কিয়ামতের দিন তার গোপন (অপরাধের) বিষয় গোপন রাখবেন। আর যে ব্যক্তি তার মুসলিম ভাইয়ের গোপন বিষয় ফাঁস করে দেবে, আল্লাহ তার গোপন বিষয় ফাঁস করে দেবেন, এমনকি এই কারণে তাকে তার ঘরে পর্যন্ত অপদস্থ করবেন।’ (ইবনে মাজা : ২৫৪৬)
অন্যের দোষ অনুসন্ধান করতেও কঠোরভাবে নিষেধ করা হয়েছে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেনÑ ‘তোমরা মুসলমানদের দোষ-ত্রুটি, ভুলভ্রান্তি খুঁজে বের করো না। যে ব্যক্তি অন্যের দোষ খুঁজে বেড়ায় ও প্রকাশ করে, স্বয়ং আল্লাহ তার দোষ প্রকাশ করে দেন। আর আল্লাহ যার দোষ-ত্রুটি প্রকাশ করেন তাকে নিজের বাড়িতেই লাঞ্ছিত করেন।’ (আবু দাউদ : ৪৮৮০)
অন্যের দোষ গোপন রাখা একটি মানবীয় গুণ। এতে মানুষ বিশ্বস্ত প্রমাণিত হয়; যে লোক দোষ বলে বেড়ায়, সে সবার বিশ্বস্ততা হারায়। সম্পর্কও নষ্ট হয়। উত্তম চরিত্রের দাবি হলো মানুষের দোষ-ত্রুটি গোপন রাখা এবং কথাচ্ছলে কারও কাছে প্রকাশ না করা। মানুষের দোষ ও পাপ গোপন করার অনেক সওয়াব রয়েছে। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে কেউ অন্যের দোষ গোপন রাখবে, আল্লাহ কেয়ামতের দিন তার দোষ ঢেকে রাখবেন।’ (বুখারি : ২৪৪২; মুসলিম : ২৬৯৯)
প্রশ্নকারী প্রিয় দ্বীনী ভাই /বোন!
প্রথমত আপনার মোটেও উচিত হয়নি আপনার স্বামীর কাছে পূর্বের গুনাহগুলি প্রকাশ করা। কারণ, গুনাহ করা একটি গুনাহ এবং তা প্রকাশ করা আরো একটি গুনাহ। তাছাড়া এমন বিষয়গুলি স্বামী স্ত্রীর সম্পর্কে দূরত্ব তৈরী করে।
সুতরাং এমন পরিস্থিতিতে আপনার জন্য করণীয় হলো, সর্বদা স্বামীর আনুগত্য ও খেদমত করার পাশাপাশি তার সাথে ভালোবাসাপূর্ণ আচরণ করা। তিনি কিছু বললে তার কথার প্রতিউত্তর না করা। এবং সবরের সাথে আল্লাহ পাকের নিকট দোয়া করা।