আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
229 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (3 points)
reshown by
গতকাল আমার স্বামীর সঙ্গে আমার ঝগড়া হয়। ঝগড়ার সময় আমার স্বামী আমাকে একজন ব্যক্তির ব্যাপারে বার বার কিছু মন্তব্য করে যা আমার কাছে খুবই পীড়াদায়ক লাগে। তখন আমি রাগের মাথায় আমার স্বামীকে বলি "তুমি যদি এই ব্যক্তিকে নিয়ে আর কোন কথা বল তাহলে তোমার সাথে আমার তালাক হয়ে যাবে।" এই কথাটি আমি ৩ বার বলি।
আমার জিজ্ঞাসা আমার স্বামী যদি এরপর ওই ব্যক্তিকে নিয়ে আমাকে কিছু বলে তাহলে কি আমাদের তালাক হয়ে যাবে?
উল্লেখ্য, আমার কাবিন নামার ১৮ নং পয়েন্টে আমি আমার স্বামীকে তালাক দিতে পারবো এই অনুমতি দেয়া আছে। কিন্তু বিয়ের সময় কাজী আমার স্বামী আমাকে কয় তালাকের অনুমতি দিচ্ছে সে সম্পর্কে কিছুই জিগ্যেস করেননি। তাই তিনি নিশ্চিত না যে সেখানে কি ৩ তালাকের অনুমতির কথা বলা আছে কিনা। আর এপর যদি সে ওই ব্যক্তিকে নিয়ে কোন্দিন আমাকে কিছু বলে ফেলে তাহলে কি আমার দেয়া শর্ত অনুযায়ী ৩ তালাক হয়ে যাবে?

(এই শর্ত ফিরিয়ে নেয়ার কি কোন উপায় আছে? আমি কায়মনোবাক্যে আল্লাহর কাছে তওবা করেছি মাফ চেয়েছি। আমি নিজেও তালাক চাইনা। আমাদের বিয়ে খুব অল্প দিনের)

আরো উল্লেখ্য যে, গতকাল ঝগড়ার সময় রাগের বশে  আমার স্কবামী কয়েকবার বলেছেন যে সে আমার সাথে আর সংসার করতে চান না। কিন্তু আজকে আমি তাকে জিগ্যেস করলে উনি বলেন যে এই কথা বলার সময় তার তালাকের কোন নিয়ত ছিল না।
এই কথায় কি আমাদের তালাক হয়ে গেছে?

আরো একটি কথা বলতে চাই আমি রাগ হলে প্রায় ই আমার স্বামিকে বলি আমাকে তালাক দাও আমি তোমার সাথে সংসার করতে চাইনা। এই কথাতে তালাক হবে কি?

আর স্ত্রীর তালাকের অনুমতি থাকলে সে মুখে স্বামীকে " তোমাকে তালাক দিলাম" বললে তালাক হয়?

1 Answer

0 votes
by (589,140 points)
edited by

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
সমাধানঃ-
মাসআলা জানার পূর্বের এ সংক্রান্ত একটি মূলনীতি আমাদের মনে রাখতে হবে।
أَلْفَاظُ الشَّرْطِ إنْ وَإِذَا وَإِذْمَا وَكُلُّ وَكُلَّمَا وَمَتَى وَمَتَى مَا فَفِي هَذِهِ الْأَلْفَاظِ إذَا وُجِدَ الشَّرْطُ انْحَلَّتْ الْيَمِينُ وَانْتَهَتْ لِأَنَّهَا تَقْتَضِي الْعُمُومَ وَالتَّكْرَارَ فَبِوُجُودِ الْفِعْلِ مَرَّةً تَمَّ الشَّرْطُ وَانْحَلَّتْ الْيَمِينُ فَلَا يَتَحَقَّقُ الْحِنْثُ بَعْدَهُ إلَّا فِي كُلَّمَا لِأَنَّهَا تُوجِبُ عُمُومَ الْأَفْعَالِ فَإِذَا كَانَ الْجَزَاءُ الطَّلَاقَ وَالشَّرْطُ بِكَلِمَةِ كُلَّمَا يَتَكَرَّرُ الطَّلَاقُ بِتَكْرَارِ الْحِنْثِ حَتَّى يَسْتَوْفِيَ طَلَاقَ الْمِلْكِ الَّذِي حَلَفَ عَلَيْهِ فَإِنْ تَزَوَّجَهَا بَعْدَ زَوْجٍ آخَرَ وَتَكَرَّرَ الشَّرْطُ لَمْ يَحْنَثْ عِنْدَنَا كَذَا فِي الْكَافِي.
ভাবার্থঃ
শর্তের মাধ্যমে তালাক প্রদাণের জন্য নিম্নোক্ত হরফ ব্যবহার করা হয়ে থাকে।যথা-
(১)إنْ-যদি
(২)َإِذَا-যখন
(৩)َإِذْمَا-যখন
(৪)َكُلُّ-সব
(৫)َكُلَّمَا-যখনই
(৬)مَتَى-যখন
(৭)مَتَى مَا-যখন
বাক্যর প্রারম্ভে এ সকল শব্দ প্রয়োগ করে কোনো কাজের সাথে সম্পর্কিত করে তালাক প্রদাণ করলে যখনি উক্ত শর্ত পাওয়া যাবে,তখন তাৎক্ষণাৎ তালাক পতিত হয়ে উক্ত শর্তযুক্ত বাক্য বিনষ্ট হয়ে যাবে।পরবর্তীতে একাজের পূনরাবৃত্তি ঘটলে আর তালাক পতিত হবে না।তবে শুধুমাত্র ৫ নং বাক্য এর বিপরিত।এটা ব্যবহার করলে যখনই শর্ত পাওয়া যাবে তখনই তালাক পতিত হতে থাকবে।যতক্ষণ না উক্ত বিয়ে বন্ধন শেষ হচ্ছে।শরীয়া মোতাবেক দ্বিতীয়বার উক্ত স্বামী উক্ত স্ত্রীকে বিয়ে করলে তখন আর তালাক পতিত হবে না।(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/৪১৫)এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-https://www.ifatwa.info/10666

সু-প্রিয় দ্বীনী প্রশ্ন কারী ভাই।
"তুমি যদি এই ব্যক্তিকে নিয়ে আর কোন কথা বল তাহলে তোমার সাথে আমার তালাক হয়ে যাবে।"

যেহেতু আপনি নিজের উপর তালাকের ইঙ্গিত করেছেন, তাই শর্তযুক্ত তালাক হয়ে যাবে। এই শর্তযুক্ত তালাককে পরিহার করা যাবে না। যেহেতু কয় তালাক হবে? সেটা আপনি নির্দিষ্ট করেননি, তাই যখন আপনার স্বামী ঐ ব্যক্তির সাথে কথা বলবে,তখন এক তালাক পতিত হয়ে যাবে।এক তালাক পতিত হওয়ার পর আর কোনো তালাক পতিত হবে না।

সংসার করতে চান না? এই শব্দ দ্বারা তালাক হবে না।

"প্রায় ই আমার স্বামিকে বলি আমাকে তালাক দাও আমি তোমার সাথে সংসার করতে চাইনা। "

এই কথাতে তালাক হবে না।

"স্ত্রীর তালাকের অনুমতি থাকলে সে মুখে স্বামীকে " তোমাকে তালাক দিলাম"

এইকথা বলার দ্বারা তালাক হবে না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (589,140 points)
সংযোজন ও সংশোধন করা হয়েছে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...