بسم الله الرحمن الرحيم
জবাব,
https://ifatwa.info/43381/নং ফাতওয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, শরীয়ত যে সমস্ত উদ্দেশ্যে
কুকুর লালন-পালনের আদেশ দিয়েছে সে সমস্ত উদ্দেশ্যে কুকুর লালন-পালন করলে ফেরেস্তা বাধাপ্রাপ্ত
হবে না।অর্থাৎ ফেরেস্তা প্রবেশ করবেন।
হযরত আবু
হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত,
ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻲ ﻃَﻠْﺤَﺔَ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻪُ ﻋَﻦْ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ
ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻗَﺎﻝَ:( ﻟَﺎ ﺗَﺪْﺧُﻞُ ﺍﻟْﻤَﻠَﺎﺋِﻜَﺔُ ﺑَﻴْﺘًﺎ ﻓِﻴﻪِ ﻛَﻠْﺐٌ ﻭَﻟَﺎ
ﺻُﻮﺭَﺓٌ )
রাসূলুল্লাহ
সাঃ বলেন,যে ঘরে কুকুর বা ফটো থাকবে, সে ঘরে ফেরেস্তা প্রবেশ করবেন
না।(সহীহ বুখারী-৩৩২২,সহীহ মুসলিম-২১০৬)
ঐ কুকুর
ঘরে থাকলে ফেরেস্তা প্রবেশ করেন না, যে কুকুরকে লালন-পালনের
অনুমোদন শরীয়ত দেয় নাই। আর যে কুকুর কে লালন-পালনের অনুমোদন শরীয়ত দিয়েছে,সে কুকুর ঘরে থাকলে ফেরেস্তা প্রবেশ করেন। (তরহুত-তাসরিব-৬/৩৫)
কোন কোন
উদ্দেশ্যে কুকুর লালন-পালন করার অনুমোদন রয়েছে- এ সম্পর্কে একটি হাদীস শুনুন-
হযরত আবু
হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত,
ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻲ ﻫُﺮَﻳْﺮَﺓَ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ﻋَﻦْ ﺭَﺳُﻮﻝِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ
ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻗَﺎﻝَ : ( ﻣَﻦْ ﺍﻗْﺘَﻨَﻰ ﻛَﻠْﺒًﺎ ، ﻟَﻴْﺲَ ﺑِﻜَﻠْﺐِ ﺻَﻴْﺪٍ ﻭَﻻ ﻣَﺎﺷِﻴَﺔٍ
ﻭَﻻ ﺃَﺭْﺽٍ : ﻓَﺈِﻧَّﻪُ ﻳَﻨْﻘُﺺُ ﻣِﻦْ ﺃَﺟْﺮِﻩِ ﻗِﻴﺮَﺍﻃَﺎﻥِ ﻛُﻞَّ ﻳَﻮْﻡٍ
রাসূলুল্লাহ
সাঃ বলেন,যে ব্যক্তি শিকারের কুকুর বা ক্ষেত পাহাড়ার কুকুর বা পশু পাহাড়ার কুকুর ব্যতীত
অন্য কোনো উদ্দেশ্যে কুকুর লালন পালন করবে, তার আ'মল নামা থেকে দৈনিক দুই ক্বিরাত করে সওয়াব কর্তিত হবে।(সহীহ মুসলিম-২৯৭৪)
আল্লামা
আলাউদ্দিন হাসক্বাফী রাহ এ সম্পর্কে লিখেন,
وَلَا
خِلَافَ فِي نَجَاسَةِ لَحْمِهِ وَطَهَارَةِ شَعْرِهِ.
কুকুরের
গোসত নাপাক এবং তার পশম পাক হওয়ার বিষয়ে সবাই একমত। সুতরাং কুকুরের শরীরের সাথে কারো
শরীর লেগে গেলে তার কাপড় নাপাক হবে না। তবে সাবধান রাসূলুল্লাহ সাঃ কুকুরকে অপছন্দ
করতেন।এবং প্রয়োজন ব্যতীত কুকুর লালনপালনের নিষেধ করতেন।
যেজন্য
ফুকাহায়ে কেরাম,শিকার করা, বকরী রাখালি
করা, ক্ষেত পাহারা দেওয়া ,বাড়ী পাহাড়া দেওয়া
সহ বিশেষ বিশেষ প্রয়োজনে কুকুর পালনের অনুমতি দিয়ে থাকেন। অযথা কুকুর লালন পালন জায়েয
নয়। রাসূলুল্লাহ সাঃ কালো নিকতা বিশিষ্ট কুকুর হত্যার নির্দেশ দিয়েছিলেন।
** হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, 'পাঁচ প্রকার প্রাণী বেশি
অনিষ্টকারী। এদেরকে হারাম সীমানার মধ্যেও মেরে ফেলতে হবে। এগুলো হলো-
الْفَأْرَةُ، وَالْعَقْرَبُ، وَالْحُدَيَّا، وَالْغُرَابُ، وَالْكَلْبُ
الْعَقُورُ
অর্থাৎ
'ইঁদুর, বিচ্ছু, চিল, কাক এবং পাগলা কুকুর।' (বুখারি-৩৩১৫)
- হজরত ইবনে জুরায়জ রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, আমি নাফি
রাহমাতুল্লাহি আলাইহির কাছে জিজ্ঞাসা করলাম, আপনি ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু
আনহুকে মুহরিম ব্যক্তির জন্য কোন্ কোন্ প্রাণী হত্যার বৈধতা ঘোষণা করতে শুনেছেন?
তখন নাফি রাহমাতুল্লাহি আলাইহি আমাকে বললেন, হজরত
আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেছেন, আমি রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি-
এমন পাঁচ
প্রকারের প্রাণী আছে, কোনো ব্যক্তি তা হত্যা করলে তার কোনো গোনাহ
হবে না। (আর তাহলো)- কাক, চিল, বিচ্ছু,
ইঁদুর ও হিংস্র কুকুর।' (মুসলিম)
এ প্রাণীগুলোর
মধ্যে ইঁদুর একটি মারাত্মক ক্ষতিকর প্রাণী। ভুক্তভোগীরাই তা জানে। আর সে কারণে ইসলাম
ইঁদুরসহ ক্ষতিকর প্রাণী নিধনে উৎসাহিত করা হয়েছে। ইঁদুরের ক্ষয়-ক্ষতির সংক্ষিপ্ত পরিসংখ্যান
দেখলেই ইসলামি শরিয়তে কেন তা নিধনের নির্দেশ দেয়া হয়েছে তা পরিষ্কার হয়ে যায়।
ইঁদুর যে
শুধু ফসলেরই ক্ষতি করে তা নয়। বই খাতা, কাপড়, আসবাবপত্র, বিছানাপত্র ইত্যাদি কেটে নষ্ট করে।
এ ছাড়া
ইঁদুরসহ প্রায় ৩০ প্রকার রোগ ছড়ায়। এরা বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ও সেচ নালায় গর্ত করে
নষ্ট করে, অনেক সময় বৈদ্যুতিক সরঞ্জামাদি কেটে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত ঘটায়। এজন্য ইঁদুরসহ
সব ক্ষতিকর প্রাণীদমন করা অত্যন্ত জরুরি।
সুতরাং
ক্ষতিকর প্রাণীসহ ইঁদুর নিধনের জন্য ফাঁদ পাতা, রাসায়নিক প্রক্রিয়া বা
বিষ প্রয়োগ করা, গ্যাস ট্যাবলেট- ফস টক্সিন ট্যাবলেট,
অ্যালুমিনিয়াম ফসফেট অথবা অন্য যে কোনো উপায় অবলম্বন করে মেরে ফেলা জায়েজ
আছে। তবে বিকল্প ব্যবস্থা থাকা স্বত্বেও ক্ষতিকর
কোনো প্রাণীই আগুনে দ্বারা হত্যা করা ঠিক নয়। কেননা হাদিসে আগুন দ্বারা শাস্তি
দেয়া মেরে ফেলায় নিষেধ রয়েছে।