আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
225 views
in ব্যবসা ও চাকুরী (Business & Job) by (24 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম!

আমার কিছু প্রশ্ন আছে

আমার বাবা আমাকে ব্যবসা করার জন্য ৯০০০০ টাকা দিয়েছিলেন। কিন্তু আমি ব্যাবসা চালিয়ে যেতে পারি নাই। পরবর্তীতে আমি নিজ প্রয়োজনে আব্বু কে না জানিয়ে ৪৫০০০ টাকার মতো খরচ করে ফেলেছি। এখন আমি অনলাইনে ব্যবসা করতে চাচ্ছি। কিন্তু সমস্যা হলো আমার বাবা আমাকে যেই ৯০০০০ টাকা দিয়েছিলেন তা হারাম টাকা ছিল।
১. অবশিষ্ট ৪৫০০০ টাকা দিয়ে আমি যদি ব্যবসা করি তাহলে কি আমার ইনকাম হারাম হবে? (বি:দ্রঃ আমি টিশার্ট ডিজাইন করবো এবং তা টিশার্ট ও অন্যান্য পণ্যের উপর প্রিন্ট করে বিক্রি করবো অন্য একটা কোম্পানির মাধ্যমে, টিশার্ট ডিজাইন করার জন্য এবং ফেইসবুকে পোস্ট করার জন্য আমি যেই সফটওয়্যার ব্যবহার করবো তার মাসিক সাবস্ক্রিপশন নেয়া লাগবে , সেই সাবস্ক্রিপশন এর টাকা এবং আমার ডিজাইন করা টিশার্ট বিক্রি করার জন্য ফেইসবুকে বিজ্ঞাপন দেয়ার টাকা আমি আব্বুর টাকায় থেকে নিয়ে খরচ করবো, আর কোনো খরচ নেই, শুধু সটওয়্যার এর মাসিক সাবস্ক্রিপশন এর টাকা এবং আমার ডিজাইন করা টিশার্ট বিক্রি করার জন্য ফেইসবুকে বিজ্ঞাপন দেয়ার টাকা আব্বুর থেকে নিবো।)

২. যদি ওই টাকায় করা ব্যবসার ইনকাম হারাম হয়। তাহলে কি আমি আব্বু কে বলব যে আমি আপনার কাছ থেকে টাকা ধার নিতে চাই। তারপর সেই ধারের টাকা দিয়ে আমি ব্যবসা করলে কি আমার ইনকাম হারাম হবে?

৩. আমি তো আব্বু কে না জানিয়ে ৯০০০০ টাকা থেকে ৪৫০০০ হাজার টাকা খরচ করে ফেলেছি, এখন আব্বু কে তো এই কথা জানতে পারবো না। আব্বু তার নামে একটা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট করে আমাকে টাকা দিয়েছিল, এখন যদি আমি আব্বু কে বলি যেই অ্যাকাউন্ট এ যেই টাকা আছে তা আমি আপনার থেকে ধার নিলাম। মানে আমি সরাসরি উল্লেখ করবো না যে আমি কত টাকা ধার নিবো , কারণ আমি আব্বু কে না জানিয়ে ৪৫০০০ টাকা খরচ করে ফেলেছি, আমি শুধু উল্লেখ করবো অ্যাকাউন্ট এর টাকা ধার নিবো। তারপর সেই টাকা দিয়ে ব্যবসা করলে কি আমার ইনকাম হারাম হবে?

৪. আব্বু যেই ব্যাংক কে অ্যাকাউন্ট করে টাকা রেখে আমাকে খরচ করতে বলছে, সেই ব্যাংক প্রতি মাসে সুদ দেয়, আমি ব্যাংক কে বলছি এটা অফ করতে কিন্তু তারা বলছে চিঠি লিখতে, আমি তখন আর লিখি নাই, তাই এখন ও সুদ আসে। কত টাকা সুদ আসছে এত দিনে তা আমি কয়েক মাসের টা জানি না, এখন যদি আমি পূর্ববর্তী মাসের সুদ এর টাকার থেকে ৫০ টাকা বাড়িয়ে আমার না জানা মাসের সুদ হিসেবে দান করে দেই সওয়াবের নিয়ত ছাড়া এবং পরবর্তীতে যেই টাকা সুদ আসবে তা আমি এইভাবে দান করে দেই , তারপর অ্যাকাউন্ট এর টাকা দিয়ে ব্যবসা করি তাহলে কি আমার ইনকাম হারাম হবে? আমি ঢাকায় আছি তাই ব্যাংক এ চিঠি লিখতে পারছি না, আমি বাসায় গেলে সুযোগ হলে ব্যাংকে চিঠি লিখে জমা দিবো। চিঠি লিখার আগ পর্যন্ত এবং সুদ বন্ধ হওয়ার আগ পর্যন্ত আমি কি এইভাবে সুদের টাকা সওয়াবের নিয়ত ছাড়া দান করে দিলে হবে? (৪.২) এইভাবে ওই ব্যাংক অ্যাকাউন্ট এর টাকা দিয়ে ব্যবসা করলে কি আমার ইনকাম হারাম হবে? (৪.৩) (বি:দ্রঃ আমি ওই ব্যাংক এর ভিসা কার্ড ব্যবহার করি, তাই টাকা তুলতে আমাকে ব্যাংক এ যেতে হয় না।)

৫. আমার আব্বু আমাকে কম্পিউটার , মোবাইল কিনে দিয়েছে হারাম টাকা দিয়ে। এখন যদি এই কম্পিউটার ও মোবাইল ব্যবহার করে আমি ব্যবসা করি তাহলে কি আমার ইনকাম হারাম হবে? যদি হারাম হয় তাহলে কি আমি ওই টাকার মত কম্পিউটার ও মোবাইল আব্বুর কাছ থেকে ধার নিবো, তারপর তা দিয়ে ইনকাম করলে কি আমার ইনকাম হারাম হবে? (৫.২)

৬. আমি যে আব্বুর কাছ থেকে ধার নিবো, তখন আব্বু কে কি নিদিস্ট কোনো দিন এর কথা বলতে হবে যে  আমি আপনাকে ওই দিন টাকা ফেরত দিবো বা এত তারিখে বা এত সালে ফেরত দিবো? আমি ব্যবসায় তো লোকসান ও হতে পারে, তাহলে তো আমি আব্বু কে টাকা ফেরত দিতে পারবো না। এক্ষেত্রে অমর করনীয় কি?

৭. আমি অনলাইনে একটা কোম্পানির সাথে ব্যবসা করবো কিন্তু আমার আইডি কার্ড নেই, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নেই, এখন যদি আমার আব্বুর ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে ওই কোম্পানি থেকে আমার ব্যবসার লাভের টাকা আনি তাহলে কি আমার ইনকাম হারাম হবে? ওই কোম্পানি তো জানবে না আমি আমার আব্বুর ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে টাকা আনি।

৮. আমি তো আমার আব্বুর হারাম টাকা দিয়ে কাজ শিখেছি, এখন আমি যদি সেই কাজ করে ইনকাম করি তাহলে কি আমার ইনকাম হারাম হবে?

৯. আমার বয়স  ১৮ বছর ৫ মাস প্রায়। আমি অনেক চেষ্টা করেছি হালাল ভাবে ইনকাম করতে কিন্তু পারি নি। এত দিন আব্বুর হারাম টাকা খেয়ে এসেছি, এখন ব্যবসা করতে চাচ্ছি, ব্যবসা করে ইনকাম করার আগ পর্যন্ত কি আমি আব্বুর টাকা দিয়ে খেতে পারবো? আব্বুর হারাম টাকা দিয়ে খেয়ে এত দিন  বড় হয়েছি এবং এখনও যদি আব্বুর হারাম টাকা খেয়ে জীবনধারণ করতে থেকে ব্যবসা করে ইনকাম করি তাহলে কি আমার সেই ইনকাম হারাম হবে? (৯.২)

1 Answer

0 votes
by (573,870 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


https://ifatwa.info/25087/ ফতোয়ায় উল্লেখ করা হয়েছে যে, 
হারাম টাকায় ব্যবসা করাও নাজায়েজ। 
,
তবে কঠিন প্রয়োজন বশত এমনটি হলে উক্ত ব্যবসার লভ্যাংশ ব্যবহারের অনুমতি কিছু ইসলামী স্কলারগন দিয়েছেন।   তারা বলেছেন যে এটি সেই ব্যবসায় তার পরিশ্রমের বিনিময়। 
হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

عَنْ مَخْلَدِ بْنِ خُفَافٍ قَالَ : ابْتَعْتُ غُلَامًا فَاسْتَغْلَلْتُه ثُمَّ ظَهَرْتُ مِنْهُ عَلٰى عَيْبٍ فَخَاصَمْتُ فِيهِ إِلٰى عُمَرَ بْنِ عَبْدِ الْعَزِيزِ فَقَضٰى لِىْ بِرَدِّه وَقَضٰى عَلَىَّ بِرَدِّ غَلَّتِه فَأَتَيْتُ عُرْوَةَ فَأَخْبَرْتُه فَقَالَ : أَرُوْحُ إِلَيْهِ الْعَشِيَّةَ فَأُخْبِرُه أَنَّ عَائِشَةَ أَخْبَرَتْنِىْ أَنَّ رَسُوْلَ اللّٰهِ ﷺ قَضٰى فِىْ مِثْلِ هٰذَا : أَنَّ الْخَرَاجَ بِالضَّمَانِ فَرَاحَ إِلَيْهِ عُرْوَةُ فَقَضٰى لِىْ أَنْ اٰخُذَ الْخَرَاجَ مِنَ الَّذِىْ قَضٰى بِه عَلَىِّ لَه

মাখলাদ ইবনু খুফাফ (রহঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি একটি দাস কিনেছিলাম এবং তার মাধ্যমে কিছু উপার্জনও করিয়েছিলাম। অতঃপর আমি তার মধ্যে একটি দোষ সম্পর্কে অবগত হলাম এবং শাসনকর্তা ‘উমার ইবনু ‘আবদুল ‘আযীয (রহঃ)-এর কাছে আমি তার বিষয়ে অভিযোগ করলাম। তিনি বিচার করলেন যে, আমি তাকে ফেরত দিতে পারবো, তবে অবশ্যই তার দ্বারা উপার্জিত সব কিছুই আমাকে ফেরত দিতে হবে। আমি ‘উরওয়াহ্ (রহঃ)-এর নিকট এ রায় জানালাম। তিনি বললেন, আমি সন্ধ্যাকালেই শাসনকর্তার নিকট যাবো এবং তাঁকে অবহিত করবো। ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) আমাকে বর্ণনা করেছেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ জাতীয় ঘটনায় রায় দিয়েছেন যে, উপার্জিত আয় তার তত্ত্বাবধান ব্যয় বলে সাব্যস্ত হবে। ‘উরওয়াহ্ (রহঃ) সন্ধ্যাকালেই ‘উমার ইবনু ‘আবদুল ‘আযীয (রহঃ)-এর কাছে গেলেন। এমতাবস্থায় তিনি বিচার করলেন যে, উক্ত উপার্জিত আয় তিনি পূর্বে (প্রথমে) যাকে দেয়ার জন্য আদেশ করেছিলেন তার কাছ থেকে আমি যেন তা ফেরত নেই।
(মিশকাতুল মাসাবিহ ২৮৭৯)

উক্ত সম্পদ দ্বারা ব্যবসা করে যে লভ্যাংশ অর্জিত হয়েছে বা হবে,তাহা গ্রহন করা জায়েজ নেই,এটিই অনেক ইসলামী স্কলারদের মত।

★তবে ইমাম শাফেয়ী ও মালেক রহঃ এর মতে সে ব্যাক্তি লভ্যাংশ নিজের পরিশ্রমের বিনিময় বা পারিশ্রমিক হিসাবে গ্রহণ করতে পারবে  (নববী, আল-মাজমূ‘ ৯/৩৫১)। 
তবে তাদের মতেও এহেন ব্যবসার লাভ পরিত্যাগ করাই অধিকতর নিরাপদ ও তাক্বওয়াপূর্ণ।


★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
(০১)
প্রশ্নে উল্লেখ রয়েছে যে আপনি শুধু সটওয়্যার এর মাসিক সাবস্ক্রিপশন এর টাকা এবং আমার ডিজাইন করা টিশার্ট বিক্রি করার জন্য ফেইসবুকে বিজ্ঞাপন দেয়ার টাকা আপনার আব্বুর থেকে নিবেন।
এক্ষেত্রে আপনি যে টিশার্ট ডিজাইন করবেন এবং তা টিশার্ট ও অন্যান্য পণ্যের উপর প্রিন্ট করে বিক্রি করবেন,এই বিক্রয়ের টাকাকে হারাম বলা যায়না ।
এটি হালাল।

তবে এখানে হারাম টাকার কিছুটা ব্যবহার থাকায় উক্ত টাকা ব্যবহার করবেননা।
হালাল টাকা ব্যবহারের চেষ্টা করবেন।

(০২)
আপনি এভাবে ধার নিতে পারেন।
পরবর্তীতে আপনি হালাল টাকায় আপনার আব্বুকে টাকা শোধ করে দিবেন।
তাহলে আর কোনো সমস্যা থাকবেনা।

(০৩)
আপনি বলবেন যে তাহা হতে ৪৫০০০ টাকা ধার নিবো।
অথবা পুরো টাকা ধার নেয়ার কথা বলবেন।

ধার নেয়ার ক্ষেত্রে এভাবে অস্পষ্টতা রাখবেননা।

(০৪)
আপনি জানার ভিত্তিতে ও প্রবল ধারনার ভিত্তিতে সূদের টাকা নির্ণয় করে সেই পরিমান টাকা গরিব মিসকিনকে ছওয়াবের নিয়ত ছাড়া দান করে দিবেন।

তাহলেই ব্যবসার ইনকাম হালাল হবে।

(০৫)
আপনার ইনকাম হালাল হবে।

(০৬)
আপনি অনির্দিষ্টকালের জন্যেও ধার নিতে পারেন।
আপনার বাবা রাজি থাকলে তাতে সমস্যা নেই।

(০৭)
আপনার ইনকাম হালাল হবে।

(০৮)
আপনার ইনকাম হালাল হবে।

(০৯)
আপনি যতটাকা এভাবে খাবেন,সেই পরিমাণ টাকা পরবর্তীতে আনুমানিক একটি হিসেব করে গরিব মিসকিনকে দান করে দিবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...