আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
196 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (11 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম উস্তাদ।

১) উস্তাদ আপনাদের এখানে করা প্রশ্নের উত্তরে বলা হয়েছে যে উল্লিখিত অলঙ্কার পোশাক ইত্যাদি স্বামীর সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে ব্যবহার করা যাবে, সাথে এটাও যে স্পষ্ট পাপী, কাফির দের অনুসরণ ও করা যাবে না। এখন উস্তাদ অনেক অলঙ্কার, পোশাক ই তো এমন হিন্দু, খ্রিস্টান ওদের থেকে উৎপত্তি হয়েছে, কিছু আছে যা স্যাটেলাইট টিভির কু প্রভাবে প্রসার পেয়েছে। তো এখানে কি করণীয় উস্তাদ?
২) আরেকটা বিষয়ে আপনাদের উত্তর সমূহে দেখেছি যে, স্ত্রী স্বামীর কতটুক অনুগত হবে এই ব্যাপারে, মাকরূহ কাজ সমূহ করতে পারে কিনা স্ত্রী, এখন স্বামী যদি এমনই হয়ে থাকে যে কোনভাবেই মানতে নারাজ, তার কথাই হয় এমন যে তোমাকে হারাম কোনো কিছু তো করতে বলি নি, কি সমস্যা তোমার, মাঝে মধ্যে তুই তোকারি করেও ধমক দেয়, আরো বিভিন্ন ভাবে স্ত্রীর থেকে ওইরকম কাজগুলো চরিতার্থ করতে চায় ও কোনো প্রকার দ্বিতীয় কথা শুনতে রাজি না হয়, স্ত্রীকে বাধ্য করে এগুলোতে। এমন কথাও শুনতে হলে, তোর কাছে থেকে এগুলো না পেলে কি আমি পর নারীর কাছে যাব... তবে স্ত্রীর ভাষ্যমতে আক্ষরিক ভাবে বলেন না এইসব, রাগের মাথায়। আবার এ ধরণের যেসব কাজ আছে যেমন স্ত্রীর লজ্জাস্থান মুখে নেওয়া, আবার মাঝে মধ্যে তাকে দিয়েও এটা করানো (বিশেষ করে হায়েয অবস্থায় স্বামী কোনোভাবেই রাজি না স্ত্রীকে এটা করা থেকে ফুসরত দিতে) ইত্যাদি করার পর স্বামী মহা খুশি হয় স্ত্রীর প্রতি, বিভিন্ন মোহাব্বাত পূর্ণ কথা বলে, উপহার দেয় মাঝে মধ্যে, স্ত্রীর কাছে তাই সন্দেহ যে এতে করে কি স্বামী সন্তুষ্টির সওয়াব আসলে সে আশা করতে পারে কিনা,এখানে উস্তাদ বিধান কি, আল্লাহ কিভাবে দেখবেন এটা শরিয়তে তা পাওয়া যায় কিনা?
৩) আর স্ত্রী এমন স্বামীর জোরপূর্বক অংশগ্রহণে কি তার গুনাহ হবে? এহেন মহিলার প্রতি কি নাসিহা দিতে পারেন যে কিভাবে স্বামীকে না রাগিয়ে বুঝান যায় এইসব কাজ থেকে দূরে থাকতে?
৪) আর একদমই যদি সম্ভব না হয় তাহলে এমন কাজে অংশ নিলে নিজের সাথে সাথে স্বামীর জন্যও ইসতিগফার করতে পারবে কিনা স্ত্রী?
অনুগ্রহ করে এগুলো জানাবেন উস্তাদ।

1 Answer

0 votes
by (63,560 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

ওয়াবিসা ইবনে মা'বাদ রাযি থেকে বর্ণিত,

ﻭﻋﻦ ﻭﺍﺑﺼﺔَ ﺑﻦِ ﻣَﻌْﺒِﺪٍ  ﻗَﺎﻝَ : ﺃَﺗَﻴْﺖُ ﺭﺳﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪ ﷺ ﻓَﻘَﺎﻝَ : « ﺟِﺌْﺖَ ﺗﺴﺄَﻝُ ﻋﻦِ ﺍﻟﺒِﺮِّ؟ » ﻗُﻠْﺖُ : ﻧَﻌَﻢْ، ﻓَﻘَﺎﻝَ : « ﺍﺳْﺘَﻔْﺖِ ﻗَﻠْﺒَﻚَ، ﺍﻟﺒِﺮُّ : ﻣَﺎ ﺍﻃْﻤَﺄَﻧَّﺖْ ﺇِﻟَﻴْﻪِ ﺍﻟﻨَّﻔْﺲُ، ﻭﺍﻃْﻤَﺄَﻥَّ ﺇِﻟَﻴْﻪِ ﺍﻟﻘَﻠْﺐُ، ﻭﺍﻹِﺛﻢُ : ﻣَﺎ ﺣﺎﻙَ ﻓﻲ ﺍﻟﻨَّﻔْﺲِ، ﻭﺗَﺮَﺩَّﺩَ ﻓِﻲ ﺍﻟﺼَّﺪْﺭِ، ﻭﺇِﻥْ ﺃَﻓْﺘَﺎﻙَ ﺍﻟﻨَّﺎﺱُ ﻭَﺃَﻓْﺘَﻮﻙَ » ﺣﺪﻳﺚٌ ﺣﺴﻦٌ، ﺭﻭﺍﻩُ ﺃﺣﻤﺪُ ﻭﺍﻟﺪَّﺍﺭﻣِﻲُّ ﻓﻲ " ﻣُﺴْﻨَﺪَﻳْﻬِﻤﺎ ."

তিনি বলেন,আমি রাসূলুল্লাহ সাঃ এর নিকট গেলাম।রাসূলুল্লাহ সাঃ আমাকে বললেন,তুমি কি নেকীর কাজ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করার জন্য এসেছ?আমি বললাম জ্বী হ্যাইয়া রাসূলাল্লাহ!

তখন তিনি আমাকে বললেন,তুমি তোমার অন্তরের নিকট ফাতওয়া জিজ্ঞাসা করো। নেকি হল সেটা যার উপর অন্তর প্রশান্তিবোধ করে,এবং যে জিনিষের উপর অন্তর শান্ত থাকে।আর গোনাহ হল সেটা,যা অন্তরে অশান্তি সৃষ্টি করে নাড়িয়ে দেয়,এবং অন্তরকে দ্বিধান্বিত করে ফেলে। যদিও উক্ত কাজ সম্পর্কে মুফতিগণ বৈধতার ফাতাওয়া প্রদাণ করুক না কেন। (মুসনাদে আহমদ-১৭৫৪৫)

 

হাসান ইবনে আলী রাযি থেকে বর্ণিত রয়েছে।

ﻭﻋﻦ ﺍﻟﺤَﺴَﻦِ ﺑﻦ ﻋَﻠﻲٍّ ﺭﺿﻲَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋﻨﻬﻤﺎ ﻗَﺎﻝَ : ﺣَﻔِﻈْﺖُ ﻣِﻦْ ﺭَﺳُﻮﻝ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﷺ : « ﺩَﻉْ ﻣَﺎ ﻳَﺮِﻳﺒُﻚَ ﺇِﻟﻰ ﻣَﺎ ﻻ ﻳﺮِﻳﺒُﻚ » ﺭﻭﺍﻩُ ﺍﻟﺘﺮﻣﺬﻱ ﻭﻗﺎﻝ : ﺣﺪﻳﺚٌ ﺣﺴﻦٌ ﺻﺤﻴﺢٌ 

তিনি বলেনআমি রাসূলুল্লাহ সাঃ কে বলতে শুনেছি।তিনি বলেন,সন্দেহ যুক্ত জিনিষকে পরিহার করে সন্দেহমুক্ত জিনিষকে গ্রহণ করো। (সুনানু তিরমিযি-২৪৪২)

 

নু'মান ইবনে বশির বলেন,আমি রাসূলুল্লাহ সাঃ কে বলতে শুনেছি-

عن عامر، قال: سمعت النعمان بن بشير، يقول: سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول: "الحلال بين، والحرام بين، وبينهما مشبهات لا يعلمها كثير من الناس، فمن اتقى المشبهات استبرأ لدينه وعرضه، ومن وقع في الشبهات: كراع يرعى حول الحمى، يوشك أن يواقعه، ألا وإن لكل ملك حمى، ألا إن حمى الله في أرضه محارمه، ألا وإن في الجسد مضغة: إذا صلحت صلح الجسد كله، وإذا فسدت فسد الجسد كله، ألا وهي القلب "

রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,(কোনো জিনিষ) হালাল (হওয়া) পরিস্কার। (এবং কোনো জিনিষ) হারাম (হওয়া) ও পরিস্কার। হ্যাঁ এ দুয়ের মধ্যে কিছু বিধান রয়েছে সাদৃশ্যপূর্ণ। যার সম্পর্কে অধিকাংশ মানুষই জানেনা।যে ব্যক্তি সন্দেহপূর্ণ জিনিষ থেকে বেঁছে থাকলসে যেন তার দ্বীন এবং ইজ্জতকে হেফাজত করে নিল। আর যে ব্যক্তি সন্দেহপূর্ণ জিনিষে পতিত হলসে যেন হারামে পতিত হল। যেমন রাখাল ক্ষেতের দেয়াল ঘেষে পশু চড়ালো। এখানে সম্ভাবনা রয়েছে যেপশু ক্ষেতে নেমে যাবে। 

 

জেনে রাখ! প্রত্যেক বাদশারই একটি সীমান্তরেখা রয়েছে এবং আল্লাহ যমীনে তার সীমারেখা হল,তার হারাম বিধি-বিধান।জেনে রাখ! শরীরে একটি মাংসপিণ্ড রয়েছে। যখন সেই মাংসপিণ্ড ভাল থাকে তখন সারা শরীর-ই ভাল থাকে।আর যখন সেই মাংসপিণ্ড নষ্ট হয়ে যায়,তখন সমস্ত শরীরই নষ্ট হয়ে যায়। সেই বস্তু হল,ক্বলব বা অন্তর। (সহীহ বুখারী-৫২)

 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

 

. হ্যাঁ, মাঝে মধ্যে উক্ত অলঙ্কার ও পোশাক ইত্যাদি স্বামীর সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে পরিধান করাতে কোনো সমস্যা নেই। এখানে হিন্দু-খ্রিস্টানদের থেকে অলঙ্কার ও পোশাক উৎপত্তি হলেই যে, তা ব্যবহার নাজায়েজ বিষয়টা এমন নয়। বরং যেগুলো তারা তাদের ধর্মের বৈশিষ্ট হিসেবে পরিধান করে তা ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে হবে। 

উল্লেখ্য যে, আপনার প্রশ্নটা অস্পষ্ট। তাই কোন কোন অলঙ্কার ও পোশাক তা বলে দিলে আরো বিস্তারিত উত্তর দেওয়া যেতো।

 

২. ক. স্বামীর যৌনাঙ্গে মুখ দেওয়া সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন- https://ifatwa.info/53864/ 

খ. হায়েজ অবস্থায় সহবাস করা জায়েজ নেই। আল্লাহ তায়ালা নিষেধ করে দিয়েছেন। তবে সহবাস ছাড়া অন্যন্য সব কিছু করা যাবে। তাই হায়েজ অবস্থায় স্বামী সহবাস করতে চাইলেও রাজী হওয়া যাবে না। বরং স্বামীকে বুঝিয়ে বলতে হবে যে, এটা নাজায়েজ। তবে সহবাস ছাড়া অন্যন্য (চুম্বন, জড়িয়ে ধরা ইত্যাদি) সব কিছু করা যাবে।

 

৩. স্বামী যদি জোরপূর্বক করে (হায়েজ অবস্থায় সহবাস) থাকে তাহলে প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে স্ত্রীর কোনো গোনাহ হবে না। বরং স্বামীর গোনাহ হবে। উল্লেখ্য যে, ঐ মহিলা তার স্বামীকে আরো বুঝাতে থাকবে। বিশেষ করে দ্বীনী ইলম কম হওয়ার কারণেই এমনটা করে থাকে। তাই দ্বীনী ইলম শিক্ষার প্রতি উদ্বুদ্ধ করবে। আর আল্লাহ তায়ালার কাছে বেশী বেশী দুআ করবে।

 

৪. হ্যাঁ, প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে স্বামীর জন্যও ইসতিগফার করতে পারবে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)
by (11 points)
শুকরিয়া উস্তাদ, তবে ২ খ এর অংশ টা বুঝাতে একটু সমস্যা হয়েছে। স্বামী হায়েয অবস্থায় সহবাসের নিষেধাজ্ঞা সম্পর্কে জানেন এবং মানেন। উক্ত অবস্থায় স্ত্রীকে বলেন লজ্জা স্থান মুখে নেওয়ার জন্য, (বিশেষ করে হায়েয অবস্থায় স্বামী কোনোভাবেই রাজি না স্ত্রীকে এটা করা থেকে ফুসরত দিতে) এই ব্যাপারে প্রশ্নে উল্লেখ করেছি যে এখানে স্ত্রীর করণীয় কি 

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...