আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
153 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (189 points)
edited by
১. কেউ যদি তার স্ত্রীকে এইভাবে বলে,
"তুমি ওইখানে গেলে ওইসব হয়ে যাবে" -এইখানে "ওইসব" বলতে "তালাক" বুঝাইছে। কিন্তু মুখে তালাক উচ্চারণ করে নাই।

স্বামী যদি স্ত্রীকে তালাক উচ্চারণ না করে বলে যে, "তুমি ওইখানে গেলে ওইসব হয়ে যাবে" তাহলে কি স্ত্রী ওইখানে গেলে তালাক হবে?

২. "তুমি ওইখানে গেলে ওইসব হয়ে যাবে" এইটা কি শর্তযুক্ত কেনায়া বাক্য? এটি বলাতে কি অমুক জায়গায় গেলে সরাসরি তালাক হবে?

৩. কোনো স্ত্রী স্বামীকে এইভাবে প্রশ্ন করে,

"আমি ওইখানে গেলে সাথে সাথে ওইরকম কিছু হয়ে যাবে, তোমার মনে কি এমন কোনো শর্ত ছিল?"
ওইরকম কিছু বলতে স্ত্রী তালাক বুঝাইছে। কিন্তু মুখে তালাক উচ্চারণ করে প্রশ্ন করে নাই।

স্ত্রীর এইভাবে স্বামীকে প্রশ্ন করাতে কি স্ত্রীর নিজের উপর শর্ত দেওয়া হয়ে যাবে যদি স্ত্রীর তালাক নেওয়ার অধিকার থাকে??

1 Answer

0 votes
by (560,820 points)
জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم 


তালাক খুবই মারাত্মক একটি শব্দ। নিকৃষ্ট হালাল বলা হয়েছে হাদীসে। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا كَثِيرُ بْنُ عُبَيْدٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ خَالِدٍ، عَنْ مُعَرِّفِ بْنِ وَاصِلٍ، عَنْ مُحَارِبِ بْنِ دِثَارٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " أَبْغَضُ الْحَلاَلِ إِلَى اللَّهِ تَعَالَى الطَّلاَقُ " .

কাসীর  ইবন  উবায়দ .......... ইবন  উমার  (রাঃ)  নবী  করীম  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম  হতে  বর্ণনা  করেছেন যে,  আল্লাহ্  তা‘আলার  নিকট  নিকৃষ্টতম  হালাল বস্তু  হল  তালাক।

(আবূ দাউদ ২১৭৮, ইরওয়া ২০৪০, যইফ আবু দাউদ ৩৭৩-৩৭৪, আর-রাদ্দু আলাল বালীক ১১৩।) 

★তালাক স্পষ্ট বাক্য দ্বারাও হতে পারে,আবার কেনায়া শব্দ,ইঙ্গিতসূচক শব্দ দ্বারাও হতে পারে।
কেনায়া তালাক বলা হয় স্পষ্ট তালাক শব্দ না বলে বরং তালাকের ইঙ্গিতসূচক শব্দ বলে তালাক দেওয়া। 

★★শরিয়তের পরিভাষায় ইঙ্গিত সূচক শব্দে তালাক দেয়াটাকে বলা হয় ‘কেনায়া তালাক’ বা ইঙ্গিতসূচক শব্দ দ্বারা তালাক। আর কেনায়া তালাকের ক্ষেত্রে নিয়ত তথা তালাকের ইচ্ছা থাকা অত্যাবশ্যক। আর কেনায়া তালাক দ্বারা এক তালাকে বায়েন পতিত হয় ৷

সুতরাং যদি কেউ স্ত্রীকে এরূপ কথা বলে এবং তালাকের নিয়ত করে, তবে স্ত্রী তালাক হয়ে যাবে। আর যদি তালাকের নিয়ত না করে তাহলে তালাক হবে না। (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া, ১/৩৭৫)

আরো জানুনঃ  

ألفاظ الشرط إن … ومتی ومتی ما ففي ہٰذہٖ الألفاظ إذا وجد الشرط انحلت الیمین وانتہت؛ لأنہا لا تقتضي العموم والتکرار، فبوجود الفعل مرۃ تم الشرط وانحلت الیمین فلا یتحقق الحنث بعدہ۔ (الفتاویٰ الہندیۃ ۱؍۴۱۵) 
সারমর্মঃ
শর্তের কিছু বাক্য আছে,যখন শর্ত পাওয়া যাবে,কসম ভেঙ্গে যাবে এবং শেষ হয়ে যাবে।
সেই শর্ত অনুপাতে হুকুম ফিরে আসবেনা।
কেননা এটি বারংবার কে চায়না।  

إذا وجد الشرط انحلت الیمین۔ (الفتاویٰ الہندیۃ ۱؍۴۱۵، کذا في الہدایۃ / باب الأیمان في الطلاق ۲؍۳۵۸، البحر الرائق / باب التعلیق ۴؍۸ کوئٹہ)
সারমর্মঃ
যখন শর্ত পাওয়া যাবে,কসম ভেঙ্গে যাবে। 

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন, 
(১.২)
প্রশ্নে উল্লেখিত বাক্য বলার আগ দিয়ে স্বামী তালাকের ধমক দেয়,বা স্ত্রী যদি তালাক চায়,যার পরিপ্রেক্ষিতে স্বামী তালাক প্রদানের নিয়তে স্ত্রী এ ধরনের বাক্য বলে,তাহলে শর্ত যুক্ত তালাক হবে।

উক্ত স্ত্রী ঐখানে গেলে তালাক হয়ে যাবে।
,
যদি প্রশ্নে উল্লেখিত বাক্য বলার আগ দিয়ে স্বামী তালাকের ধমক না দেয়,বা স্ত্রী যদি তালাক না চায়,
এমনিতেই স্বামী তালাক প্রদানের নিয়তে উক্ত বাক্য বলে,পরবর্তীতে স্বামী যদি নিজেই বলে যে আপনি উক্ত শর্তযুক্ত বাক্যের মধ্যে ঐসব বলার ক্ষেত্রে তালাক উদ্দেশ্য নিয়েছি,তাহলে শর্ত যুক্ত তালাক হবে।

উক্ত স্ত্রী ঐখানে গেলে তালাক হয়ে যাবে।
,
আর যদি স্বামীর তালাকের নিয়ত না থাকে,তাহলে শর্ত যুক্ত তালাক হবেনা।

সেক্ষেত্রে স্ত্রী সেখানে গেলে কোনো সমস্যা হবেনা।
,
(০৩)
স্ত্রীর এইভাবে স্বামীকে প্রশ্ন করাতে স্ত্রীর নিজের উপর শর্ত দেওয়া হয়ে যাবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...