بسم الله
الرحمن الرحيم
জবাব,
ইস্তেগফার অর্থাৎ আল্লাহর কাছে নিজের
গোনাহের জন্যে ক্ষমা প্রার্থনা করার গুরুত্ব ও ফযীলত প্রমাণ করার জন্যে এ একটি হাদীসই
যদি থাকত, তবুও যথেষ্ট ছিল-রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
তাঁর সর্বাধিক প্রিয় মানুষটিকে বছরের সবচেয়ে মহিমান্বিত রাতে পড়ার জন্যে ক্ষমাপ্রার্থনা
করার দুআ শিখিয়ে দিয়েছেন! এ ইস্তেগফারই আমাদের দুনিয়া-আখেরাতের মুক্তির রাজপথ।
এবারে সায়্যিদুনা আবু বকর সিদ্দীক
রা.-এর কথা বলি। নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গে ছায়ার মতো ঘনিষ্ঠ ছিল
তাঁর জীবন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদিন বলেছিলেন, আমি যদি কাউকে ‘খলীল’ বা অন্তরঙ্গ বন্ধুরূপে গ্রহণ করতাম, তবে আবু বকরকেই গ্রহণ করতাম। -সহীহ বুখারী, হাদীস ৪৬৭
ঘরে-বাইরের সহচর সুখ-দুঃখের অংশীদার
আবু বকর নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বললেন, নামাযে পড়ার জন্যে একটি দুআ আমাকে শিখিয়ে দিন। নবীজী সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে শিখিয়ে দিলেন –
اللَّهُمَّ إِنِّي ظَلَمْتُ نَفْسِي ظُلْمًا كَثِيرًا،
وَلاَ يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلاَّ أَنْتَ، فَاغْفِرْ لِي مَغْفِرَةً مِنْ
عِنْدِكَ، وَارْحَمْنِي، إِنَّكَ أَنْتَ الْغَفُورُ الرَّحِيمُ
হে আল্লাহ! আমি তো আমার নিজের ওপর
অনেক জুলুম করেছি। আপনি ছাড়া গোনাহ মাফ করার কেউ নেই। তাই আপনি আপনার পক্ষ থেকে আমাকে
ক্ষমা করে দিন আর আমাকে অনুগ্রহ করুন। নিশ্চয়ই আপনিই কেবল মহা ক্ষমাশীল, মহা দয়ালু। -সহীহ বুখারী,
হাদীস ৮৩৪হাদীসেও অনেক
দুআ-ইস্তিগফার বর্ণিত হয়েছে। এর মধ্যে ‘সায়্যেদুল ইস্তিগফার’কে আমরা আমাদের ওজীফা বানাতে
পারি।
اللّهُمّ أَنْتَ رَبِّي لاَ إِلهَ إِلّا أَنْتَ،
خَلَقْتَنِي وَأَنَا عَبْدُكَ، وَأَنَا عَلَى عَهْدِكَ وَوَعْدِكَ مَا
اسْتَطَعْتُ، أَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ مَا صَنَعْتُ، أَبُوءُ لَكَ بِنِعْمَتِكَ
عَلَيّ، وَأَبُوءُ لَكَ بِذَنْبِي فَاغْفِرْ لِي، فَإِنّهُ لاَ يَغْفِرُ الذّنُوبَ
إِلّا أَنْتَ
হে আল্লাহ! আপনি আমার প্রতিপালক। আপনি
ছাড়া কোনও মাবুদ নেই। আপনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন। আমি আপনার বান্দা। আমি যথাসাধ্য আপনার
সাথে কৃত অঙ্গীকার ও আপনার প্রতিশ্রুতির উপর রয়েছি। আমি আমার কৃতকর্মের অনিষ্ট থেকে
আপনার আশ্রয় গ্রহণ করছি। আমার প্রতি আপনার নিআমতের কথা স্বীকার করছি। আপনার কাছে আমি
আমার গোনাহের কথা স্বীকার করছি। কাজেই আপনি আমাকে ক্ষমা করে দিন। নিশ্চয় আপনি ছাড়া
আর কেউ গুনাহ ক্ষমা করতে পারে না। -(সহীহ বুখারী, হাদীস ৬৩০৬)
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
১. ইসতিগফারের প্রাণ
হল তাওবা। আর তাওবার হাকীকত হল,
মানুষ আল্লাহ তাআলার নাফরমানী
ছেড়ে আল্লাহর দিকে ফিরে আসবে। পিছনের অন্যায়গুলোর কাফফারা আদায় করবে। যেখানে যে
কাফফারার কথা বলা হয়েছে সেখানে তা-ই আদায় করবে। বিশেষ করে মানুষের কোনো হক নষ্ট হয়ে
থাকলে সেগুলো আদায়ের ব্যাপারে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিবে।
একথাও মনে রাখবে, ইসতিগফারের গুরুত্বপূর্ণ একটি সুরত হল, কুরআনে কারীমে কিংবা হাদীস শরীফে যে আমল ও ইবাদাতের প্রসঙ্গে
মাগফিরাতের ওয়াদা করা হয়েছে সেগুলোর প্রতি বেশি গুরুত্ব দিবে।
প্রত্যেক মুমিনের যেহেনেই সেই আমলগুলোর
একটা তালিকা থাকা উচিত। এই তালিকায় সর্বপ্রথম রয়েছে ফরয নামায ও অন্যান্য ফরয ইবাদাত।
এরপর মাগফিরাত পাওয়ার আমলগুলোর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল কবীরা গোনাহ থেকে বেঁচে
থাকা। তাছাড়া দান-সদকা, যিকির-আযকার ও অন্যান্য
নফল ইবাদতগুলো তো রয়েছেই।
২. জ্বী মোবাইলে কুরআন শরীফ পড়া যাবে। বিস্তারিত জানতে ভিজিট
করুন: https://ifatwa.info/16259/
মোবাইল নিয়ে টয়লেটে নিয়ে যাওয়া
যাবে। তবে স্কীনে কুরআনের আয়াত, হাদীস ইত্যাদি থাকলে আলো অফ রাখতে হবে। তাহলে কোনো সমস্যা নেই। বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন: https://ifatwa.info/26050/
দোয়া সম্পর্কে জানতে : https://ifatwa.info/41573/?show=41573#q41573
৩. গোসল ফরজ থাকা অবস্থায়
কুরআন তেলাওয়াত করা নিষিদ্ধ হলেও কুরআন তেলাওয়াত শ্রবণ নিষিদ্ধ নয়। বরং এ অবস্থায় কুরআন
তেলাওয়াত শ্রবণ করা যাবে। তবে গোসল ফরজ থাকা অবস্থায় গোসলে বিলম্ব না করা উচিৎ।