আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
264 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (7 points)
reshown by
আসসালমুআলাইকুম সায়েখ

আপনারা মাফ করবেন আবারও প্রশ্ন করছি। খুব সমস্যার মধ্যে রয়েছি।

আগের প্রশ্ন অনুযায়ী এবং উত্তর অনুযায়ী আমার তালাক হয়েছে কী না আমি জানিনা, সমস্ত কিছু অনুযায়ী না হওয়ার কথা। আবার হতে ও পারে। এই সব ভাবনা ছেড়ে দিয়ে আমি অনেক টা সুস্থ ছিলাম কিন্তু আমার যেই রোগ *আবসেসিউস রেমুনেশন*

যার বাংলা অর্থ জাবর কাটা বা একই কথা বার বার মনে করা।
আমার স্ত্রী তার আবার বাড়ি থাকে, আমি আমার বাড়ি থাকি। আমি তার বাড়ি যাই তার সঙ্গে দেখা করতে আমাদের বাড়ি করা হলে , কিছু মানুষ কে নিমন্ত্রণ করে একটা অনুষ্ঠান করে নিয়ে আসবো।
আমার তালাক হয়েছে কি না আমি জানিনা, শুধু মনে হয় ১তালাক তো হয়ে গিয়েছে । আমি এতটাই বাজে যে এক তালাক বলে দিলাম বিনা কারণে। এই নিয়ে মনে অশান্তি থাকে অন্য বন্ধু দের দেখি তারা তো এই সব বলেনি তাহলে আমি কেনো বললাম। আমার সম্পর্ক কি নষ্ট হয়ে গিয়েছে, একসঙ্গে থাকলে মনে হয় গুণহা হবে সম্পর্কের ওজন কমে গিয়েছে , নতুন বিয়ে করে এমন হয়ে গেলো। এই সব চিন্তা সব সময় মাথায় ঘুরছে।

কিছু হলে শুধু মনে মনে তালাক দিবো । বা দিয়ে দিবই ইত্যাদি মনে হয়, হটাৎ করে মনে হয় মুখে উচ্চরণ করে ফেললাম , হয়ত করেছি বা করিনি সঠিক মনে পড়ে না তখন এই নিয়ে শুরু হয়ে যায় চিন্তা।
আমার স্ত্রী আমাকে পাগলের মত ভালোবাসে সে আমাকে অনেক বোঝাই। কিন্তু আমার কিছুই ভালো লাগছিল না, আমার স্ত্রী হঠাৎ কান্না করে আর বলে , তোমাকে এত কিছু বুঝিয়ে তুমি বুঝছো না তোমাকে আমার আর কিছু বলবো না , তোমাকে আর বিরক্ত করবোনা। তুমি যা ভাবছো যা করছো করো। তখনই আমি আবারও চিন্তিত হয়ে যায় যা আমার স্ত্রী এমন কথা বললো তালাক হয়ে গেলো নাকি । আমি স্ত্রী কে জিজ্ঞাসা করি কি ভেবে এই কথা বললে স্ত্রী বলে তুমি তো আমার একটা কোথাও সুনোনা তাহলে আমি চুপ থাকবো সেই টা বলতে চেয়েছি।
আমি আমার স্ত্রী কে বলি , সবাই নতুন বিয়ে করে কত ভালো থাকে আর আমি তোমাকে একটুও ভালো রাখতে পারলাম না গো বলে কান্না করতে থাকি। আর বলি আমাদের এই সমস্ত কথা বাড়িতে বলবো দিয়ে দুই বাড়ি থেকে আলোচনা করে কি করবে দেখবো। আমার স্ত্রী রাজি না আমাদের সমস্যা আমরাই ঠিক করবো তাই বলে।
এমন হতে হতে এক পর্যায়ে আমি বলি আমাদের টিঃ সব শেষ ই হয়ে গিয়েছে মনে হয় আর কি কিছু বাকি আছে স্ত্রী বলে কিছু হয়নি । যদিও ১ তালাক হয় তাহলে কিছু হয়নি , তখন আমি বলি আমার মনে মনে কত খারাপ চিন্তা বা কত কি উচ্চরণ করেছি কি করিনি মনে পড়ছে না হয়ত , আরো তালাক হয়ে গিয়েছে, এই বলে কান্না করতে লাগলাম দুজনই। মনে হচ্ছিল বুকে পাথর চাপা আছে।
স্ত্রী বার বার ফোন করে আমাকে বুঝতে চাই আমি তাকে বলি আমি যেদিন সুস্থ হবো সেইদিন আমি ফোন করবো। তুমি আর ফোন করো না।
আবার এমন ও বলি সবই তো শেষ আর ফোনে কি হবে। এবং বলি সবই তো হয়ে গেলো বাকি আর কি থাকলো।

তুমি ভালো করে পড়াশোনা করো , আমার কথা ভেবোনা, নিজেকে নিয়ে ভেবে পড়া সোনা করো, আমাকে নিয়ে একদম চিন্তা করব না , আমার কথা না ভেবে , তুমি পরো, আমার স্ত্রী বলে এইগুলো কি সম্ভব।

আমার স্ত্রী বলে কত আশা করে বিয়ে করলাম, আখন তুমি আমার সব আর তুমি আমার কোনো কিছুই বুঝতে পারছেন না। এই কথা শুনে আমি কষ্ট তে খুব কান্না করি ও তো সত্যি বলছে এই ভেবে। আমি ভাবলাম মনে হয় এই তালাক হয়ে গেলো আর তালাক ভালো লাগছিল না একবারই সব শেষ করে দিবো, এই ভাবলাম আবার বিয়ে করবো আর পারছিনা এই সব ভাবনা কে কেন্দ্র করে আরো অনেক কথা হয়। আর আমি যা কথা বলেছি বলার আগে শুধু ভয় হচ্ছে যে তালাক যেনো না হয়, এই ভয় নিয়ে সব কথা বলছি, আর শুধু ভয় তালাক যেনো না হয়।

আমি একবার বললাম আমি তো তোমার দায়িত্ব তে অবহেলা করেছি আমাকে মাফ করো কাল দুই বাড়ি তে যা হওয়ার হবে । তখন আবার ভাবলাম তালাক হবে নাকি।
এমন সময় রেগে গিয়ে আমি দেওয়াল এ ঘুসি মারি, আবার আব্বা চলে আসে শব্দ শুনে , এবং আমাকে খুব মারে। আমি মার খেয়ে কান্না করি আর ভবি আমার জীবন তাই শেষ হয়ে গেলো ।
আরো অনেক কথা হয়েছে , হয়ত বলতে পারছিনা মনে না পারার কারণে।

১.হুজুর আপনি বলেন আমাদের কি কোনো নতুন তালাক হয়েছে ? বা পূর্বে হয়েছিল?
২.আমার যে মনে ভয় ১তালাক হয়ে গেলে আল্লাহ তাকে পছন্দ করেনা, আমার মনে হয় সমাজের আমি ছোটলোক। আমার স্ত্রী ১তালাকের স্ত্রী এই রকম মনে হয় আর মনে হয় প্রথম বিয়ের মত আর সম্পর্ক নেই।
৩. হুজুর আমরা কি প্রথম বিয়ের মতো আছি নাকি কিছু মর্যাদা শেষ হয়েছে?
আমাকে ভালো করে বুঝিয়ে বলেন আমার জীবনের এই ঘটনায় কোনো তালাক হয়েছে নাকি আগে কখনো হয়েছে? আমি link দিতে দিচ্ছি।       ১.   https://ifatwa.info/50498/

২.https://ifatwa.info/50794/

৪. আমার স্ত্রী কি আমার সঙ্গে থাকলে পাপ হবে? আখেরাতে জেনার হিসাব দিতে হবে? আমার সন্তান হলে বৈধ সন্তান হবে?

৫. নাকি এত সমস্যা হচ্ছে হুজুর সম্পর্ক তো নষ্ট করা আল্লাহ পছন্দ করে না কিন্তু আমার মনে দ্বিধা হচ্ছে যে পাপ হচ্ছে , সম্পর্ক হারাম হচ্ছে কি করবো।
৬., আমার শশুর বাড়ির লোক জানে না আমার এমন সমস্যা আছে , আগে ছিল , মোটা মুটি ভালই হয়ে গিয়েছিলাম , আবার এই রোগ এসেছে আখন আমি তো বলিনি আমার রোগ বিষয় এ, আমার স্ত্রী সমস্ত কিছু জানত সেও চাইনি এই পুরনো কথা বলবে। এই গোপন করার জন্য কি কিছু হবে?

  ৭. আখন যা মনে হলো সব বললাম পড়ে হয়ত কিছু কথা নিয়ে চিন্তা হতে থাকলো তাহলে কি করবো? যা বলেছি কি বলিনি তাই নিয়ে চিন্তা হলে?
৮.আমাকে বলবেন আমার কোনো তালাক হয়েছে নাকি হয়নি যদি হয় তাহলে সবকিছু তো ঠিক করে নিয়েছি, পরবর্তী কিছুতে কি তালাক হয়েছে? আর এক তালাকের পর সম্পর্ক আর নতুন বিয়ের সম্পর্ক কি একই ।

কাকতি মিনতি করে বলছি হুজুর, সাহায্য চাই।. আমাকে একটু ভালো করে বলে দিয়েন । আমার জন্য দুআ করবেন ।

হুজুর আমি কত কান্না করি আল্লাহর কাছে, কত ক্ষমা চাই গো হুজুর ,  আমি আর কি করবো বলেন। আমার আর ভালো  লাগছে না। আমি আমর  ভুলের জন্য আর কত মাফ চাইবো।

সাহায্য চাইছি হুজুর ।

1 Answer

0 votes
by (597,330 points)

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
ইমাম বোখারী রাহ বলেন,
بَاب الطَّلاَقِ فِي الإِغْلاَقِ وَالْكُرْهِ وَالسَّكْرَانِ وَالْمَجْنُونِ وَأَمْرِهِمَا وَالْغَلَطِ وَالنِّسْيَانِ فِي الطَّلاَقِ وَالشِّرْكِ وَغَيْرِهِ
مُسْلِمُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ حَدَّثَنَا هِشَامٌ حَدَّثَنَا قَتَادَةُ عَنْ زُرَارَةَ بْنِ أَوْفٰى عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ إِنَّ اللهَ تَجَاوَزَ عَنْ أُمَّتِي مَا حَدَّثَتْ بِه„ أَنْفُسَهَا مَا لَمْ تَعْمَلْ أَوْ تَتَكَلَّمْ
قَالَ قَتَادَةُ إِذَا طَلَّقَ فِي نَفْسِه„ فَلَيْسَ بِشَيْءٍ.
পরিচ্ছেদঃ ৬৮/১১. বাধ্য হয়ে, মাতাল ও পাগল অবস্থায় ত্বলাক্ব দেয়া আর এ দু'য়ের বিধান সম্বন্ধে। ভুলবশতঃ ত্বলাক্ব দেয়া এবং শির্ক ইত্যাদি সম্বন্ধে। এসব নিয়্যাতের উপর নির্ভরশীল)।
৫২৬৯. আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) সূত্রে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ আল্লাহ আমার উম্মতের হৃদয়ে যে খেয়াল জাগ্রত হয় তা ক্ষমা করে দিয়েছেন, যতক্ষণ না সে তা কার্যে পরিণত করে বা মুখে উচ্চারণ করে।
ক্বাতাদাহ (রহ.) বলেনঃ মনে মনে তালাক দিলে তাতে কিছুই তালাক হবে না। [২৫২৮] আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮৮৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৭৮)

وَعَنْ أَبِي اللَّيْثِ لَا يَجُوزُ طَلَاقُ الْمُوَسْوِسِ  يَعْنِي الْمَغْلُوبَ فِي عَقْلِهِ عَنْ الْحَاكِمِ هُوَ الْمُصَابُ فِي عَقْلِهِ إذَا تَكَلَّمَ تَكَلَّمَ بِغَيْرِ نِظَامٍ
ওয়াসওয়াসা গ্রস্থ ব্যক্তি -যার বিবেকবুদ্ধি লোপ পেতে বসেছে,এবং ঐ ব্যক্তি বিবেকবুদ্ধিতে সমস্যা চলে এসেছে, তাদের তালাক গ্রহণযোগ্য নয়।(রদ্দুল মিহতার-৪/২২৪, বাহরুর রায়েক্ব-৫/৯১)
এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-https://www.ifatwa.info/835

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
আপনি চুড়ান্ত পর্যায়ের ওয়াসওয়াসার রোগী। সুতরাং আপনার অতীত এবং বর্তমান এবং ওয়াসওয়াসা অবস্থায় ভবিষ্যতের কোনো তালাকই গ্রহণযোগ্য হবে না।অর্থাৎ আপনার স্ত্রীর উপর তালাক হবে না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...