আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
338 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (42 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম হযরত!

আবার আব্বুর বিশ্বাস, আকিদা হচ্ছে হিন্দুদের মত!

তিনি বিশ্বাস করেন, পরজনমে! এক জনমে খারাপ কাজ করলে পরের জনমে পশু পাখি হয়ে জন্মাবে।

এবং কালি মা, লোকনাথ, কৃষ্ণা এসব দেবতাকে ভক্তি করে। তাদেরকে ডাকে।

তিনি আরও বিশ্বাস করেন, খাজা বাবা নাকি সব পারেন, আল্লাহর অলিরা মারা যান না, তাই তিনি খাজা বাবাকেও ডাকেন, আল্লাহকেও ডাকেন, নবীজীকেও ডাকেন। (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
আবার মাঝে মাঝে হিন্দুদের দেবতাদেরও ডাকেন।

উনি নামাজ রোজা, আলিম উলামাদের দেখতে পারেন না।  মসজিদ মাদ্রাসা দেখতে পারেন না। কুরআন হাদীস পড়লে লাভ নাই, ভন্ড পীরদের কাছ থেকে মারফতি জ্ঞান অর্জন করতে হবে।

নামাজ রোজার কথা বললে, বলেন আমাদের এসব পড়তে হয় না, এসব ভুয়া। আল্লাহকে পেতে হলে নামাজ লাগে না।

ইনি আবার লালন ভক্তও।

জানতেন গান বাজনা হারাম, কিন্তু এখন বলেন। গান শুনলে আল্লাহর কাছে যাওয়া যায়। এসব ছাড়া নাকি দুনিয়াতে থাকা যাবে না।

একবার নাকি কালীমন্দিরে গিয়ে মূর্তির সামনে মাথা নত ও আগরবাত্তি ধরিয়ে ছিল! (আম্মু বলল)

উল্লেখ্য, তিনি এক সময় নামাজ পড়তেন। এখন এসব দেখতেই পারেন না। নামাজকে গালি দেন। মাঝে মাঝে আল্লাহকেও, মাঝে মাঝে কুরআনকেও (নাউজুবিল্লাহ)

মাঝে মাঝে বলেন, নবীজী ই আল্লাহ (নাউজুবিল্লাহ)

এসব সত্বেও তিনি নিজেকে হকপন্থী মুসলিম দাবি করে, আর বাকি সবাইকে বাতিলপন্থী মনে করেন।
আমাকে বলেন, কুরআন হাদীস পড় এক সময় বুঝবা এসব এসব ভুয়া তারপর ঈমান শক্ত হবে। উনি দাবি করেন উনারটাই ঈমান।

১. তিনি কি এখনও মুসলিম আছেন?

২.ইনি অনেক অহংকারী, দাওয়াত দিলে নামাজ রোজাকে গালিগালাজ শুরু করেন, আগে বুঝাতাম তারপর বাসায় ঝগড়া হতো। তাই এখন আমি চুপ থাকি! আমার জন্য করণীয় কী?

৩.যদি কাফির হয়ে যায়, তাহলে  বাবা মার বিয়ের ব্যাপারে কী হবে?

৪. ছেলেরা বাবার সম্পত্তির ওয়ারিশ হবে?

৫. আব্বুর ক্ষেত্রে 'আল ওয়ালা ওয়াল বারা' কেমন হবে? আমি উনাকে ঘৃণা করি, কিন্তু আল্লাহ বলেছে ভালো ব্যবহার করতে তাই চেষ্টা করি ভালো ব্যবহার করতে।

৬.আগে বুঝতাম না, নামাজ রোজাকে গালি দিলে মাথা গরম হয়ে যেত, তারপর উচ্চ কণ্ঠে প্রতিবাদ করতাম! যখন জানলাম বাবা মার সাথে ভালো ব্যবহার করা ফরয, তখন থেকে আমার সামনে ইসলামকে খাটো করলেও চুপ থাকি, এটা কি ঠিক করতেছি?


৭.এক সময় আমাকে নামাজ পড়তে নিষেধ করতো, রাগারাগি করতো, কারণ তখন আমি বলতাম তোমার এসব তো ভুল। কিন্তু এখন চুপ থাকি, দাওয়াতও দেই না, তাই আমাকে আর নিষেধ করেন না,
মূলত এসব ফিৎনার ভয়ে আমি দাওয়াত দেই না, তখন নামাজ রোজা পড়তে বাধা দেয়, এলাকায় গিয়ে বলে বেড়ায় আমি ওহাবী হয়ে গেছি, (উল্লেখ্য আমাদের এলাকা বেরেলবী এলাকা)

তখন এলাকার মানুষও আমাকে দেখতে পারেন না, এখন চুপ থাকি, কারণ তাদের কাছে সত্য তুলে ধরার সাহস আমার নেই।
আমি কি ঠিক করছি?


৮. একা একা চুপে চুপে ইসলাম মানি, কাউকে জানতে দেই না, এজন্য পাঞ্জাবি পড়ি না, পড়লে মানুষ জেনে যায়, আব্বুও পছন্দ করেন না, ঘরে অশান্তি হয়, তাই সাধারণদের মত গেঞ্জি আর প্যান্ট, পায়জামা পড়ি।

 আমাদের এলাকা বেরেলবী তাই আমাকে আমাদের বাড়ির পাশের মসজিদ ডিঙিয়ে সঠিক ইমামের পিছনে নামাজ পড়তে যেতে হয়, যদি পাঞ্জাবি পড়ি তাহলে মানুষ বুঝে যায় যে আমি নামাজ পড়ি, তখন জিজ্ঞাসার সম্মুখীন হই, কখনও এমন পরিস্থিতি হলে মিথ্যা বলা যাবে? (যেমন বন্ধুর বাসায় যাচ্ছি)

৯. সর্বোপরি আমাকে নসিহত করুন, হযরত।

1 Answer

0 votes
by (583,050 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
(১)
যেহেতু উনি নামাজ রোজাকে গালিগালাজ শুরু করেন, তাই উনার ঈমান চলে গেছে।
رَجُلٌ كَفَرَ بِلِسَانِهِ طَائِعًا، وَقَلْبُهُ مُطْمَئِنٌّ بِالْإِيمَانِ يَكُونُ كَافِرًا وَلَا يَكُونُ عِنْدَ اللَّهِ مُؤْمِنًا كَذَا فِي فَتَاوَى قَاضِي خَانْ. 
مَا كَانَ فِي كَوْنِهِ كُفْرًا اخْتِلَافٌ فَإِنَّ قَائِلَهُ يُؤْمَرُ بِتَجْدِيدِ النِّكَاحِ وَبِالتَّوْبَةِ 
যদি কোনো মানুষ যবান দ্বারা ইচ্ছাকৃত কুফরি করে, এবং তার অন্তরে ঈমান থাকে, তাহলেও সে কাফির হয়ে যাবে।সে আল্লাহর কাছে ঈমানদার হিসেবে বিবেচিত হবে না।(ফাতাওয়া কাযিখান) যদি কারো কুফরি হওয়া নিয়ে ইখতেলাফ থাকে, তাহলে উক্ত কুফরি বক্তাকে ঈমান ও তাওবাহ এর হুকুম।প্রদাণ করা হবে।(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-২/২৮৩)

(২)
নিরবে থেকে সুযোগ বুঝে উনাকে দাওয়াত দিবেন।সম্ভব হলে, ওয়াজ মাহফিল বা তাবলীগের বয়ানে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করবেন।

(৩)
আপনার বাবা মায়ের মধ্যকার বিয়ে ভেঙ্গে গেছে।সুতরাং আপনার বাবার ঈমানকে তিনি নবায়ন করবেন।এবং আপনার বাবা মায়ের মধ্যকার বিয়েকে দোহড়িয়ে নিবেন।

(৪)
জ্বী, ওয়ারিছ হবেন। তবে আপনার বাবা আপনার দাদার সম্পত্তির ওয়ারিছ হবে না,যদি আপনার দাদা জীবিত থাকেন।এবং আপনার সম্পদের ওয়ারিছও তিনি হবেন না।
الْمُرْتَدُّ لَا يَرِثُ مِنْ مُسْلِمٍ وَلَا مِنْ مُرْتَدٍّ مِثْلِهِ، كَذَا فِي الْمُحِيطِ الْمُرْتَدُّ إذَا قُتِلَ أَوْ مَاتَ أَوْ لَحِقَ بِدَارِ الْحَرْبِ فَمَا اكْتَسَبَهُ فِي حَالِ إسْلَامِهِ هُوَ مِيرَاثٌ لِوَرَثَتِهِ الْمُسْلِمِينَ تَرِثُ زَوْجَتُهُ مِنْ ذَلِكَ 
মুরতাদ ব্যক্তি কখনো কোনো মুসলমান বা মুরতাদ থেকে ওয়ারিছ হবে না। মুরতাদকে হত্যা করা হলে , অথবা মারা গেলে অথবা দারুল হারবে স্থানান্তরিত হয়ে গেলে, সে মুসলমান থাকাবস্থায় যা কিছু উপার্জন করবে, তা তার মুসলমান ওয়ারিছদের মধ্যে বন্টন করা হবে।মুরতাদের মুসলিম স্ত্রীও ওয়ারিছ হবে।(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-৬/৪৫৫)

(৫)
উনার সাথে ভালো ও উত্তম ব্যবহার করবেন।

(৬)
জ্বী, ঠিকই করতেছেন।

(৭)
নিশ্চুপ হয়ে থাকবেন।তবে গোপনে গোপনে হকের প্রচার করবেন।যখন আপনার অনুসারী বা হকের অনুসারী কয়েকজন হয়ে যাবে, তখন প্রকাশ্যে হকের প্রচার করবেন।

(৮)
এত কিছু করা প্রয়োজনিয়তা নাই। এত ভয় কেন পাবেন।আপনি একজন স্বাধীন মানুষ। স্বাধীন দেশে আছেন। কাকে ভয় করবেন। স্বাধীনভাবে চলাফেরা করবেন।

(৯)
আপনি আরো পড়াশোনা করুন। থানভী রাহ ও মুফতি তাকী উসমানি দাঃবাঃ এর বাংলা কিতাবাদি বেশী করে অধ্যায়ন করবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...