আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
229 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (8 points)
লম্বা লেখা হওয়ার জন্যে মাফ করে দিবেন। পুরো অবস্থা বর্ণনা করার জন্যে এত কিছু বলতে বাধ্য হওয়া।
আসসালামু আলাইকুম ওস্তাদ
গত প্রশ্নে আমি জিজ্ঞাস করেছিলাম যে মায়ের খালাতো বোনকে বিয়ে করা যাবে কিনা।
তখন বলা হয়েছিল যে যাবে,  পরিবারের সাথে কথা বলতে। অতঃপর আমি বাসায় জানালে  এ নিয়ে আমাকে অপমান করা, বকা দেওয়া হয় এমনকি বলদ, বেক্কল এসবও বলা হয়। বলে নিজের বোন আর খালাতো বোন একই। রক্তের মধ্যে বিয়ে হয় না, কিভাবে এসব চিন্তা করলি, লজ্জা করল না?, কেউ রাজি হবে না, সমাজ কি বলবে এসব বলে আমাকে নিরুৎসাহিত করে। এমনকি আমি এটাও বলি যে আমি আইওএম এর আইফতোয়ার মাধ্যমে ওস্তাদদের থেকে জেনেই এসব বলেছি, ইসলাম নিষেধ করে নাই। তখন বলে তারা কি জানে, তারা বললেই হল নাকি। আমি জবাবে বলি তাহলে আমি সরাসরি মেয়েকে বিয়ের কথা বলব। তখন বলে আমার বোন তোকে মামা বলে, আমাকে বোন বলে সে কিভাবে রাজি হবে, সে কিভাবে আমাকে শাশুড়ি হিসেবে মেনে নিবে, তাছাড়া তার মা-বাবা ও রাজি হবে না এসবের জন্যে। উলটো সে তার বাবার কাছে সব বলে দিবে, এতে তুইও ছোট হবি, মান সম্মান সব হারাবি।

এখন আমার জন্যে কি সরাসরি মেয়েকে বিয়ের কথা বলা ঠিক হবে? সে খারাপ ভাবে নিক কিংবা রিজেক্ট করে দিক অন্তত আমি আমার দিক থেকে চেষ্টা করেছি এটুকু নিজেকে সান্তনা দিতে পারব। অনৈতিক কোনো প্রস্তাব তো আর দেই নি। কিংবা প্রেমের প্রস্তাবও তাকে দেইনি। হালাল নিয়তে বিয়ের প্রস্তাব দিতে চাচ্ছিলাম।

নন মাহরাম যে কাউকে বিয়ের প্রস্তাব দিতেই পারি এক্ষেত্রে মানুষ কেন বিষয়টাকে এত খারাপ ভাবে দেখবে? যেখানে আজকাল এসব এর আড়ালে কত পরকীয়া, বেহায়পনা, লুচ্চামি হচ্ছে। এ সমাজ, পরিবার হারাম রিলেশন, প্রেম, অশ্লীলতা বেহায়পনা তে কেউ কিছুই বলে না দেখে না, হালাল পন্থায় বিয়ের কথা উঠলেই যত চুলকানি উঠে।

আমি নিজের চরিত্র রক্ষার জন্যে ছাত্রাবস্থায়ই (বর্তমানে বি.এস.সি টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং এ ৩য় সেমিস্টার চলমান) বিয়ে করতে চাচ্ছিলাম। কারন নিজেকে গোপন পাপ থেকে সহজে নিয়ন্ত্রন করতে পারছিলাম না আর, শুধু মনে হত ইশ যদি অন্যদের প্রেম করতে পারতাম বা কাউকে সাথে পেতাম। এজন্যে গত এক বছরে টিউশন করে ৮০ হাজার টাকা সঞ্চয় করি দেন মোহর বাবদ। তারপরেও পরিবার থেকে বিয়ের জন্যে রাজি হয়নি উলটো ইমোশনাল কথা বলে সেই জমানো টাকা টাও আমার থেকে নিয়ে নেয়। তার পর থেকে রাগে টিউশন/ নিজের আয় করে কিছু করার চেষ্টা ছেড়ে দেই। এখন আবার বলে টিউশনিও তো নাই যে বিয়ে করে বউকে চালাবি। আমিও বলে দেই যেদিন বিয়ে করে বউ নিয়ে চলে আসব সেদিন বুঝবা, তখন বলে আমরাও তোকে ঘর থেকে বের করে দিব, ত্যাজ্য করে দিব, ছেলে বলে পরিচয় দিব না, এত কষ্ট করে বড় করলাম তার প্রতিদান এই দিলি? বিয়ের জন্য এত পাগল কেন?
এর আগে ২০১৯-২০২০ সালে এক মেয়েকে পছন্দ করতাম প্রায় ৮-৯ বছর ধরে। বাসায় তাকে  বিয়ের কথা বললে তখনও বেকার, বিয়ে করে খাওয়াবি কি এসব বলা হয়েছিল  অথচ ২০২১-২২ গত দেড় বছরে টিউশন সহ ছোটখাটো অনলাইন ব্যবসা করে টাকা জমালাম তখন অজুহাত দিয়েছিল টিউশনি দিয়ে বিয়ে সম্ভব না। বলে পড়াশোনে ছেড়ে কাজে নেমে পড়, তারপরে নিজের জাত মতো কোনো ভাবে বিয়ে করে ফেল।
আমার কি বিয়ের জন্যে সামনে আগানো উচিত নাকি হাল ছেড়ে দিয়ে আবার সেই সমাজের তথাকথিত হারাম ফ্রি মিক্সিং পরিবেশে চলে যাওয়াটাই ভালো হবে? কেননা যাকেই পছন্দ করি প্রতিবারই কোনো না কোনা বাধা, অজুহাত দিয়েই যাচ্ছে। এভাবে আর নিজেকে ধরে রাখতে পারতেছি না। বুঝতেছিও না ঠিক কি করা উচিত।

1 Answer

0 votes
by (589,140 points)

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!

‘আলক্বামাহ (রহ.) হতে বর্ণিত।
عن علقمة، قال: كنت مع عبد الله، فلقيه عثمان بمنى، فقال: يا أبا عبد الرحمن إن لي إليك حاجة فخلوا، فقال عثمان: هل لك يا أبا عبد الرحمن في أن نزوجك بكرا، تذكرك ما كنت تعهد؟ فلما رأى عبد الله أن ليس له حاجة إلى هذا أشار إلي، فقال: يا علقمة، فانتهيت إليه وهو يقول: أما لئن قلت ذلك، لقد قال لنا النبي صلى الله عليه وسلم: «يا معشر الشبابمن استطاع منكم الباءة فليتزوج، ومن لم يستطع فعليه بالصوم فإنه له وجاء»
তিনি বলেন, যখন আমি ‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ)-এর সঙ্গে ছিলাম, ‘উসমান (রাঃ) তাঁর সঙ্গে মিনাতে দেখা করে বলেন, হে আবূ ‘আবদুর রহমান! আপনার সাথে আমার কিছু দরকার আছে। অতঃপর তারা দু’জনে এক পাশে গেলেন। তারপর ‘উসমান (রাঃ) বললেন, হে আবূ ‘আবদুর রহমান! আমি কি আপনার সঙ্গে এমন একটি কুমারী মেয়ের বিয়ে দিব, যে আপনাকে আপনার অতীত কালকে স্মরণ করিয়ে দিবে? ‘আবদুল্লাহ্ যখন দেখলেন, তার এ বিয়ের দরকার নেই তখন তিনি আমাকে ‘হে ‘আলক্বামাহ’ বলে ইঙ্গিত করলেন। আমি তাঁর কাছে গিয়ে বলতে শুনলাম, আপনি আমাকে এ কথা বলছেন (এ ব্যাপারে) রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে বলেছেন, হে যুবকের দল! তোমাদের মধ্যে যে বিয়ের সামর্থ্য রাখে, সে যেন বিয়ে করে এবং যে বিয়ের সামর্থ্য রাখে না, সে যেন ‘সওম’ পালন করে। কেননা, সওম যৌন ক্ষমতাকে দমন করে।(সহীহ বোখারী-৫০৬৫)

«النِّكَاحُ حَالَةَ الِاعْتِدَالِ سُنَّةٌ مُؤَكَّدَةٌ مَرْغُوبَةٌ، وَحَالَةَ التَّوَقَانِ وَاجِبٌ، وَحَالَةَ الْخَوْفِ مِنَ الْجَوْرِ مَكْرُوهٌ.» - «الاختيار لتعليل المختار»
(3/ 82)
স্বাভাবিক অবস্থায় বিয়ে করা সুন্নতে মু’আক্কাদা। আর যিনা ব্যভিচারে লিপ্ত হওয়ার সম্ভাবনায় বিয়ে করা ওয়াজিব। আর স্ত্রীর উপর জুলুম করার আশংকা থাকলে তখন বিয়ে করা মাকরুহ।(আল-এখতিয়ার লি তা’লিলিল মুখতার-৩/৮২)

অথবা এভাবেও বলা যায়,
বিবাহের সামর্থ রয়েছে, আর্থিক শারিরিক উভয় রকম সামর্থ্য রয়েছে,এবং যিনা ব্যভিচারে লিপ্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে,তাহলে এমতাবস্থায় বিয়ে ওয়াজিব। বিবাহের সামর্থ্য রয়েছে,তবে যিনা-ব্যভিচারে লিপ্ত হওয়ার সম্ভাবনা নাই এমতাবস্থায় বিয়ে করা সুন্নত। এবং স্ত্রীর হক আদায় না করার আশংকা থাকলে তখন বিয়ে করা মাকরুহ।বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- https://www.ifatwa.info/2276

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
অবস্থাভেদে বিয়ে করা ফরয,ওয়াজিব,সুন্নত ও হারাম হয়। আপনি পূর্বের হারাম রিলেশনের জন্য মহন রব্বে কারীমের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করবেন। অতি সত্তর পারিবারিকভাবে বিয়ে করে নেয়ার চেষ্টা করবেন,মাতাপিতা যখন মানছেন না, তাহলে তাদের চয়েজমত স্থানে বিয়ে করে নিবেন। পারিবারিকভাবে বিয়ের মধ্যেই মূলত কল্যাণ নিহিত রয়েছে।হ্যা, আপনার চয়েজমত একাকি বিয়ে করলে সেই বিয়েও বিশুদ্ধ হবে, তবে কতটুকু কল্যাণকর হবে, সেটা বলা মুশকিল।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...