আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
195 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (4 points)
আসসালামু আলাইকুম উস্তাজ, আমার প্রশ্ন হচ্ছে ... আমার বিয়ে নিয়ে কথা চলছিলো আর আমার বাবা বলছেন ছবি না দিলে কখনো বিয়ে সম্ভব না। আমি বাবা মা কে বারবার বলেছিলাম আমাকে বাসায় এসে দেখে যেতে বলেন আমি ছবি দিতে পারবো না।  বারবার এমন হয় যেকোনো বিয়ের প্রস্তাব আসুক না কেনো আমি এক প্রকার বাধ্য হয়ে ছবি তুলে দি সাথে এটাও বলি কোনো ঘটক / ছেলের পরিবার নন মাহরাম এর কাছে ছবি যাতে না যায়। কিন্তু আমার বাবা শুনেনি দেখলাম ঘটক এর কাছে আমার ছবি দিয়েছে এতে কি আমার বাবা গুনাহগার হবেন?  এবং ছবিগুলো নিয়ে এসেছে ঘটক থেকে কিন্তু নন মাহরাম তো আমাকে দেখেছে এতে কি আমার বা আমার মা বাবার কেউ গুনাহগার হবে?

এবং আমি যে ছবিগুলো তুলেছি এতে আমার কি গুনাহ হবে?
শরীয়তের দৃষ্টিকোণ থেকে ছেলে পক্ষ যদি ছবি ছাড়া সরাসরি দেখতে না চাই তাহলে কি ছবি দেওয়া যাবে? এবং ছবি দেওয়ার পর তাদের যদি বলে দেওয়া হয় যাতে কোনো নন মাহরাম এর কাছে এই ছবি না যায় কিন্তু তারা নন মাহরামকে দেখিয়ে দিলো মেয়ের ছবি এতে কি মেয়ের গুনাহ্ হবে? এবং বিয়ে যদি না হয়ে থাকে তাদের ছবি ডিলিট করতে বলে দেওয়া হবে কিন্তু তারা যদি ছবিগুলো ডিলিট বা ফেরত না দেয় তাহলে কি আমার গুনাহ হবে?

আমার বাবা-মা ছবি তুলে ছেলের মানে যার জন্য আমার প্রস্তাব এনেছে তার ভাইকে আমার ছবি গুলো পাঠাতে চেয়েছে... ছেলের মা বোন থাকার সর্তেও কিন্তু আমি দিতে দেয় নি এবং আব্বুকে কড়া ভাবে নিষেধ করেছি আমার ছবি যাতে না যায় এরকম কিছু হলে আমি আর কখনো বিয়ে করবো না এই কথা বলাতে কি আমার গুনাহ্ হবে ?

এবং আমি এই কথাগুলো বলতে বাধ্য হয়েছি তারা প্রতিবার এমন করে আমার সাথে ছবি দিতে না চাইলে জোর করে নেই...
আর আমি এটার কারণে আব্বু আম্মুকে বলে ফেলেছি আমি বোঝা হয়ে গিয়েছি তোমাদের জন্য হয়তো তাই এমন করছো বিয়ে নিয়ে। একথা বলাতে কি আমার গুনাহ হবে? আমি কি ক্ষমা চেয়ে নিবো তাদের থেকে ? বা তারা যদি পুনরায় এমনটাই করে ছবি দেওয়া নিয়ে তাহলে কি আমি চুপ করে থাকবো বা ছবি কি যেখানে সেখানে দিয়ে দেওয়ার অনুমতি দিয়ে দিবো?  কোনো টা করবো উস্তাজ যদি আমাকে সকল প্রশ্ন বিস্তারিত বলেন খুব ভালো হয় ইং শা আল্লহ ।
এবং যেই ছেলেটা দেখছে আমি যদি তাকে পারসোনালি ছবিগুলো পাঠিয়ে যদি বলেদি কোনো ভবাে যাতে নন মাহরাম আমার ছবি না দেখে কিন্তু তারপরও সে দেখিয়ে দিলে এতে কি আমার গুনাহ হবে?  বা এখন আমার করনীয় কি ছেলে আমার নানার আত্মিয় এবং ছেলে খুব ভালো তাই বাসার সবাই মত দিচ্ছে কিন্তু আমি না দেখা পযন্ত কিছু বলিনি এখনো। যদি আমার নানা জোর করে বা ছবি না দেওয়া এতো কিছু মেনে আমাকে বকা দিলে তখন কি বলবো?

1 Answer

0 votes
by (58,830 points)
edited by

 

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

https://www.ifatwa.info/2898 নং ফাতওয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে,

যদি কেউ কোনো মহিলাকে বিয়ে করার পূর্ণ ইচ্ছা করে নেয়,তাহলে ঐ মহিলাকে দেখতে পারবে।কথা বলতে পারবে।

হযরত জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ রাযি থেকে বর্ণিত,

(إِذَا خَطَبَ أَحَدُكُمْ الْمَرْأَةَ ، فَإِنْ اسْتَطَاعَ أَنْ يَنْظُرَ إِلَى مَا يَدْعُوهُ إِلَى نِكَاحِهَا ، فَلْيَفْعَلْ)

যদি কেউ কোনো মহিলাকে বিয়ের প্রস্তাব দিতে চায়,তাহলে সে যেন যযথাসম্ভব ঐ মহিলাকে দেখে নেয়। (সুনানু আবি দাউদ-২০৮২)

হযরত আবু হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত,

عن أبي هريرة، قال: كنت عند النبي صلى الله عليه وسلم، فأتاه رجل فأخبره أنه تزوج امرأة من الأنصار، فقال له رسول الله صلى الله عليه وسلم: «أنظرت إليها؟»، قال: لا، قال: «فاذهب فانظر إليها، فإن في أعين الأنصارشيئا»

তিনি বলেন,আমি রাসূলুল্লাহ সাঃ এর পাশে বসা ছিলাম।একব্যক্তি এসে বলল, আমি আনসারি এক মহিলাকে বিয়ে করতে চাই।রাসূলুল্লাহ বললেন,তুমি কি পাত্রী দেখেছো?তিনি বললেন,না।রাসূলুল্লাহ সাঃ বললেন,যাও গিয়ে পাত্রী দেখে আসো।কেননা আনসারীদের চোখে নীল বা এ জাতীয় কিছু থাকে। (সহীহ মুসলিম-১৪২৪)

" يَجُوزُ تَكْرَارُ النَّظَرِ إِنِ احْتَاجَ إِلَيْهِ لِيَتَبَيَّنَ هيئتها ، فَلاَ يَنْدَمُ بَعْدَ النِّكَاحِ ، إِذْ لاَ يَحْصُل الْغَرَضُ غَالِبًا بِأَوَّل نَظْرَةٍ ".

বারংবার দৃষ্টি দেয়া জায়েয।যাতেকরে পাত্রীর পূর্ণ অবয়ব পরিস্কার ভাবে ফুটে উঠে।এবং যাতেকরে বিয়ে পরবর্তী লজ্জিত হতে না হয়।কেননা একবারের দৃষ্টি অধিকাংশ সময়ে যথেষ্ট নাও হতে পারে। (আল-মাওসুআতুল ফেকহিয়্যাহ-২২/১৭)

পাত্র-পাত্রীর পরস্পর দেখা সাক্ষাৎ ও লাপ চারিতার কয়েকটি মূলনীতি-

(১)খালওয়াত হতে পারবে না।

(২)মুবাহ বিষয় ব্যতীত অন্য কোনো বিষয় নিয়ে আলোচনা করা যাবে না

(৩)ফিতনা থেকে নিরাপদ থাকতে হবে।যদি কামভাব জাগ্রত হওয়ার পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়ে যায়,অথবা কোনো একজন উপভোগ করতে শুরু করে নেয়,তাহলে তখন সেটা হারাম হয়ে যাবে।

(৪)মহিলা নরম ভাষায় কথা বলতে পারবে না।

(৫)মহিলা পূর্ণ হেজাব তথা কবজা পর্যন্ত হাত,টাখনু পর্যন্ত পা,এবং মুখ ব্যতীত সমস্ত শরীর ঢেকে রাখবে

(৬)প্রয়োজন অতিরিক্ত কথাবর্থা বলা যাবে না।

যখন এই সব শর্ত পাওয়া যাবে, তখনই মূলত পাত্র-পাত্রী পরস্পর আলোচনা ও দেখা সাক্ষাৎ করতে পারবে।

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

প্রস্তাবের পূর্বে বায়োডাটা প্রেরণ করা যাবে। তবে ছবি প্রেরণ করা যাব না। বরং পাত্র পক্ষের কোনো এক মহিলা সরাসরি পাত্রীকে দেখে আসবেন। আর প্রস্তাব দেয়ার পর যথাসম্ভব সরাসরি দেখার চেষ্টা করা হবে। কেননা যে হেকমতে পাত্রী দেখার কথা বলা হচ্ছে, সেটা একমাত্র সরাসরি দেখার মাধ্যমেই সম্ভব। হ্যা কোনো কারণে (যেমন পাত্র-পাত্রী বিদেশে অবস্থানরত)যদি পাত্র-পাত্রীকে সরাসরি দেখা সম্ভব না হয় তাহলে ভিডিওকলের মাধ্যমে উপরোক্ত শর্তাদির সাথে দেখা যেতে পারে। কেননা ছবির তুলনায় ভিডিওর হুকুমে কিছুটা শীতিলতা রয়েছে। ছবি ভিডিও সম্পর্কে জানতে ভিজিট করুন- https://www.ifatwa.info/2253

বিনা প্রয়োজনে রেষ্টুরেন্ট পা পার্কে পাত্র-পাত্রী দেখা উচিৎ না।কেননা এক্ষেত্রে উপরোক্ত শর্তাদির কোনোটাই রক্ষা করা সম্ভব হবে না। মহিলা প্রয়োজন ব্যতীত ঘরের বাহিরে বের হবে না। এ সম্পর্কে জানুন- https://www.ifatwa.info/572


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...