আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
179 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (24 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম!
আমার জরুরি কিছু প্রশ্ন আছে শায়েখ?

অনেকে অনলাইনে টিশার্ট ডিজাইন করে বিক্রি করছে আবার অনেকে টিশার্ট ডিজাইন করে তা টিশার্ট এর উপরে সফটওয়ার দিয়ে বসিয়ে সাজিয়ে রেখে দিচ্ছে, যদি কেউ দেখে অর্ডার করে তাহলে তা প্রিন্ট করে কাস্টমার এর বাসায় ডেলিভারি দেয়।

১. আমি যদি তাদের টিশার্ট ডিজাইন দেখে দেখে তাদের টিশার্ট ডিজাইন এর মতো করে টিশার্ট ডিজাইন করি বা তাদের ২-৩ টা বা আরো বেশি ডিজাইন দেখে তার সমন্বয় করে আমি একটা ডিজাইন তৈরি করে বিক্রি করি,এইভাবে বিক্রি করা কি আমার জায়েজ হবে? অথবা এই ডিজাইন টি আমি বিদেশী কোনো  কোম্পানি কে দিয়ে দিবো, ওরা  টিশার্ট এর উপরে আমার ডিজাইনটি সফটওয়ার দিয়ে বসিয়ে সাজিয়ে রেখে দেবে, তারপর কেউ যদি তা দেখে অর্ডার করে টাকা পাঠিয়ে দেয়, তাহলে তা প্রিন্ট করে কাস্টমার এর বাসায় ডেলিভারি দিয়ে দেই। ধরি কোম্পানি টিশার্ট বিক্রি করে ৫০০ টাকায়, আমি আমার ডিজাইন দিয়ে তারপর  ৫০০ টাকার উপরে যত টাকা সেট করে দিবো,আমার ডিজাইন দিয়ে কোনো টিশার্ট বা অন্য কিছু বিক্রি হলে কোম্পানি আমাকে তত টাকা দিবে, হয়তো কিছু চার্জ কাটতে পারে। এইভাবে বিক্রি করা কি আমার জায়েজ হবে?

২. ফেইসবুকে প্রোডাক্ট এর অ্যাড দেয়া যায়, আমি যদি আমার তৈরি করা টিশার্ট ডিজাইন সফওয়্যার বা কোনো ওয়েবসাইট এর সাবস্ক্রিপশন কিনে ওয়েবসাইট এর মাধ্যমে কোনো পুরুষের গায়ের টিশার্ট এর উপর আমার তৈরি করা ডিজাইন বসাই, তারপর সেই পুরুষের ছবি বা ভিডিও দিয়ে পুরুষ ও মহিলাদের কাছে ফেইসবুকে অ্যাডস দেই, তাহলে কি আমার গুনা হবে? বা আমার ইনকাম হারাম হবে? কারণ আমি চাইলে শুধু পুরুষ দের কাছে ফেইসবুকে অ্যাডস দিতে পারি কিন্তু মহিলারা বেশি কেনা কাটা করে তাই আমি মহিলাদের কাছে অ্যাডস দিবো কিন্তু আমার ফেসবুক অ্যাডস এ তো পুরুষের ছবি থাকবে, আমার জন্য মহিলাদের কাছে পুরুষের ছবি যাবে বা আমার জন্য মহিলারা পুরুষের ছবি দেখবে, এই জন্য কি আমার গুনা হবে? আমার ইনকাম হারাম হবে?

৩. অনলাইনে টিশার্ট কিনলে হাত দিয়ে কাপড় দরে কিনা যায় না, আমি একটি টিশার্ট ডিজাইন করি, তারপর আমি তা কোম্পানিকে দেই। তারা সেই ডিজাইনটি সফটওয়্যার বা ওয়েবসাইট এর মাধ্যমে একটি টিশার্ট এর উপর বসিয়ে সাজিয়ে রাখে, তা দেখে কেউ অর্ডার করে টাকা দিলে কোম্পানি ওই ডিজাইন টিশার্ট এর উপর বসিয়ে প্রিন্ট করে কাস্টমার এর বাসায় ডেলিভারি দিয়ে দেয়। টিশার্ট দেখে তো আর কাপড় কেমন তা বুঝা যায় না, কোম্পানি যেকোনো একটা টিশার্ট এর উপরে আমার ডিজাইন বসিয়ে সাজিয়ে রাখে কারণ কাস্টমার তো শুধু কালার টা কোম্পানিকে বলে দেয়। কোম্পানি যেই টিশার্ট টা কাস্টমার কে পাঠায় সেই টিশার্ট এর উপরে ডিজাইন করে সাজিয়ে রাখে না, কারণ কোম্পানি সফটওয়্যার বা  ওয়েবসাইট এর সাবস্ক্রিপশন কিনে সেই সফটওয়্যার বা ওয়েবসাইট দিয়ে টিশার্ট এর উপর ডিজাইন বসায়, আর এই টিশার্ট, কোম্পানি প্রিন্ট করে কাস্টমার এর বাসায় পাঠায়। কোম্পানি আমার ডিজাইন যেই টিশার্ট এর উপর বসায় আর কোম্পানি কাস্টমার কে যেই টিশার্ট দেয় তা দেখতে এক এই রকম। সলিড টিশার্ট তো এক এই রকম হয়, শুধু কালার ভিন্ন ভিন্ন, কাস্টমার শুধু কালার দেখে অর্ডার দেয়, কাপড় তো দরে দেখতে পারে না। এটা কি কাস্টমারকে ধোঁকা দেয়া হলো? আমার ইনকাম কি হারাম হবে? কাস্টমার যেই কালার দেখে অর্ডার দেয় কোম্পানি সেই কালার এর টিশার্ট এই কাস্টমার কে দেয়। আর যদি কাস্টমার দেখে যে টিশার্ট ছিড়া বা কোয়ালিটি খারাপ তাহলে সে রিটার্ন করতে পারবে বা রিফান্ড নিতে পারবে। কিন্তু রিটার্ন করলে তাকে অন্য কোনো প্রোডাক্ট কিনতে হবে অথবা রিফান্ড নিলে তাকে ডেলিভারি চার্জ এর টাকা তাকে ফেরত দেয়া হবে না, শুধু টিশার্ট এর টাকা ফেরত দেয়া হবে। রিটার্ন বা রিফান্ড পলিসি স্টোরে দেয়া থাকে। কাস্টমার চাইলে রিটার্ন বা রিফান্ড পলিসি দেখতে পারেন এইভাবে ব্যাবসা করলে কি ইনকাম হালাল হবে?

বি:দ্রঃ( আমার তৈরি করা ডিজাইন টিশার্ট সহ আরো অনেক পণ্যের উপর এই সাজিয়ে রাখা হয়, বিক্রি হলে প্রিন্ট করে কাস্টমার এর বাসায় ডেলিভারি দেয়া হয়। যেমন: মগ,ক্যানভাস, কোসন, প্যান্ট ইত্যাদি। )

দয়া করে উত্তরগুলো জানাবেন শায়েখ, ধন্যবাদ।

1 Answer

0 votes
by (574,260 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


(০১)
অন্যায় ভাবে কোনো কিছু ব্যবহার করা শরীয়তে জায়েজ নেই।
কাহারো অনুমতি ছাড়া তার ডিজাইন এভাবে ব্যবহার করে ইনকান করা তাকে ধোকা দেয়ার শামিল, বিধায় তাহা জায়েজ নেই।
  
হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

وَعَنْ أَبِىْ حُرَّةَ الرَّقَّاشِىِّ عَنْ عَمِّه قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ : «أَلَا لَا تَظْلِمُوا أَلَا لَا يَحِلُّ مَالُ امْرِئٍ إِلَّا بِطِيبِ نَفْسٍ مِنْهُ». رَوَاهُ الْبَيْهَقِىُّ فِىْ شُعَبِ الْإِيْمَانِ وَالدَّارَقُطْنِىِّ فِى الْمُجْتَبٰى

আবূ হুররাহ্ আর্ রক্কাশী (রহঃ) তাঁর চাচা হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সাবধান! কারো ওপর জুলুম করবে না। সাবধান! কারো মাল তার মনোতুষ্টি ছাড়া কারো জন্য হালাল নয়। (বায়হাক্বী- শু‘আবুল ঈমান, দারাকুত্বনী- মুজতাবা)
সহীহ : আহমাদ ২০৬৯৫, শু‘আবুল ঈমান ৫১০৫, ইরওয়া ১৪৫৯, সহীহ আল জামি‘ ৭৬৬২,মিশকাতুল মাসাবিহ ২৯৪৬।)

হাদীস শরীফে এসেছেঃ
 
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ غَشَّنَا فَلَيْسَ مِنَّا»

হযরত আবু হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ যে ধোঁকা দেয়, সে আমার উম্মতের অন্তর্ভূক্ত নয়। {মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-২৩১৪৭, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-১৬৪, সুনানে দারেমী, হাদীস নং-২৫৮৩, সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-২২২৫, সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৪৯০৫}

قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «الْمُسْلِمُونَ عَلَى شُرُوطِهِمْ

হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ মুসলমানগণ তার শর্তের উপর থাকবে। {সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৩৫৯৪, সুনানে দারা কুতনী, হাদীস নং-২৮৯০, শুয়াবুল ঈমান, হাদীস নং-৪০৩৯}

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
অন্যের টিশার্ট ডিজাইন দেখে দেখে ডিজাইন করা,বা   তাহা হতে কিছু অংশ কাটসাট করে নিজের ডিজাইনে নিয়ে আসাটা জায়েয হবে না।এবং এভাবে ইনকাম করাটাও জায়েয হবে না।
অর্ধেক জিডাইন এভাবে ধোকাবাজি. চুরি করলে অর্ধেক ইনকাম হারাম।পূর্ণ ডিজাইন এভাবে ধোকাবাজি, চুরি করলে পূর্ণ ডিজাইন হারাম।

তবে যদি সেই ডিজাইন যে মূলত করেছে,তার থেকে বা কর্তৃপক্ষ থেকে অনুমতি নিয়ে আপনি তার ডিজাইন দেখে দেখে এসব করে ইনকাম করেন,তাহলে আপনার একাজ ও ইনকাম জায়েজ হবে।

বিস্তারিত জানুনঃ- 

(০২)
পুরুষ এর ছবি দিলে ইনকাম হারাম হবেনা।

(০৩)
প্রশ্নের বিবরণ মতে এভাবে ব্যবসা করলে আপনার ব্যবসা জায়েজ হবে।
সমস্যা নেই।

তবে এক্ষেত্রে যদি কোনো ক্রেতা অর্ডার করার সময় 
টিশার্ট এর ডিজাইন, কালারের পাশাপাশি যদি কাপড়ের মানের কথা স্পষ্ট ভাবে উল্লেখ করে দেয়,বা কাপড়ের নাম উল্লেখ করে দেয়,তাহলে সেই মানের/সেই নামের কাপড় না দিতে পারলে এটি ধোকা হবে,যাহা জায়েজ নেই।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...