আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
191 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (49 points)
reshown by
## আখিরাতের বিভিন্ন ধাপের ধারাবাহিক বর্ণনা জানতে চাচ্ছি। আমরা অনেকেই সিরাত, মিজান এসব সম্পর্কে জানি কিন্তু কিসের পর কি ধাপ অনেকে ভালো জানি না। তাই এই প্রশ্নে আমি যতটুকু জানি সেটা এখানে লিখছি, কোন ধাপ আগে পরে, অথবা কোনো ভুল হলে ঠিক করে দিবেন -

সর্বপ্রথম ফেরেশতা হযরত ইসরাফিল (আ) শিঙ্গায় ফুঁ দিলে সকলে কবর থেকে উঠলে একজন আহ্বানকারীর আহ্বানে সবাই একজায়গায় জড়ো হবে।

এরপর এক সময় আল্লাহ আসবেন, আটজন আরশ বহনকারী ফেরেশতা থাকবে। আরো অনেক ফেরেশতা আসবেন।
অনেক সময় পার হবে, সূর্য মাথার উপর থাকবে। মহানবী (সা) তার উম্মতদের হাউজে কাউসার থেকে পানি পান করবেন।

সকলে পাপ অনুযায়ী ঘামতে থাকবে, পরে এক পর্যায়ে সকলে আদম (আ) এর কাছে যাবে সুপারিশ করতে, পরে সে সুপারিশ করতে পারবেন না বললে নুহ (আ) তারপর তিনিও না পারলে,এভাবে বিভিন্ন নবীর থেকে নিরাশ হয়ে শেষে মহানবী (স) এর কাছে গেলে উনি আল্লাহর সামনে সিজদা করে দোয়া করবেন, এরপর আল্লাহ বিচার শুরু করবেন।

এরপর শুরু হবে মিজান এর ধাপ। অনেকেই বিনা হিসেবে জান্নাতে যাবেন। তারপর যাদের আমলনামা ডান হাতে দেয়া হবে তারা সৌভাগ্যবান, যারা বাম হাতে আমল পাবে তারা দুর্ভাগা। যাদের নেকীর পাল্লা ভারী তারা জান্নাতে যাবেন, যাদের গুনাহর পাল্লা ভারী তারা জাহান্নামে যাবে। অনেকে যাদের ফয়সালা জাহান্নামের জন্য হয়ে যাবে তাদের অনেকের জন্য সুপারিশ করবেন মহানবীর (স), অনেক মুমিন বান্দার সম্মান বৃদ্ধির জন্য সুপারিশ করা হবে।

১. নবীগণ এবং যেসব সাহাবী দুনিয়ায় থাকতে জান্নাতের সুসংবাদ পেয়েছেন তাদের ও কি মিজানে আমল মাপা হবে?

এরপর মিজানের পর শুরু হবে সিরাত, সর্বপ্রথম মহানবী (সা) পার হবেন, এরপর অনেকে সিরাত পার হবেন, জাহান্নামীরা জাহান্নামে পড়ে যাবে। মুমিনরা আমল অনুসারে, পার হবেন সিরাত।

২. শুনেছিলাম সিরাত পার করেও অনেকে জান্নাতে যেতে পারবেন না। বিভিন্ন জন বিভিন্ন অভিযোগ নিয়ে আসবে তার বিরুদ্ধে, পরে আল্লাহ মিটমাট করে দিবেন। এটা কি সঠিক?

৩. এমন কি হতে পারে যে কেউ সিরাত পার করেও জান্নাতে না যেয়ে জাহান্নামে যাবে?

মহানবী (স) এরপর জাহান্নামী বান্দাদের জন্য সুপারিশ করবেন, এছাড়াও আল্লাহর অনুমতিতে নবীগণ, আলেম, মুমিনগণ, কুরআন সুপারিশ করবে।

এখনে যা লিখেছি সব বিশ্বাস কি ঠিক আছে?

1 Answer

0 votes
by (697,400 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
وَنَضَعُ الْمَوَازِينَ الْقِسْطَ لِيَوْمِ الْقِيَامَةِ فَلَا تُظْلَمُ نَفْسٌ شَيْئًا ۖ وَإِن كَانَ مِثْقَالَ حَبَّةٍ مِّنْ خَرْدَلٍ أَتَيْنَا بِهَا ۗ وَكَفَىٰ بِنَا حَاسِبِينَ
আমি কেয়ামতের দিন ন্যায়বিচারের মানদন্ড স্থাপন করব। সুতরাং কারও প্রতি জুলুম হবে না। যদি কোন আমল সরিষার দানা পরিমাণও হয়, আমি তা উপস্থিত করব এবং হিসাব গ্রহণের জন্যে আমিই যথেষ্ট। (সূরা আম্বিয়া-৪৭)

আল্লাহ তা'আলা বলেন,
فَلَنَسْأَلَنَّ الَّذِينَ أُرْسِلَ إِلَيْهِمْ وَلَنَسْأَلَنَّ الْمُرْسَلِينَ
অতএব, আমি অবশ্যই তাদেরকে জিজ্ঞেস করব যাদের কাছে রসূল প্রেরিত হয়েছিল এবং আমি অবশ্যই তাদেরকে জিজ্ঞেস করব রসূলগণকে।(সূরা আ'রাফ-৬)

ইবনে কাছির রাহ বলেন,;
আল্লাহ তা'আলা নবী রাসূলগণকে দাওয়াত ও তাবলীগ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে।অর্থাৎ লোকজন তখন তাদের নবীদেরকে কি জবাব দিয়েছিল, সেই কথা আল্লাহ তা'আলা তাদেরকে জিজ্ঞাস করবেন। নবীদের সামনেই এ সুওয়াল জওয়াব হবে।

ইমাম শাওকানী রাহ বলেন,
 [وَلَنَسْأَلَنَّ الْمُرْسَلِين] أن السؤال للأنبياء الذين بعثهم الله : أي نسألهم عما أجاب به أممهم عليهم،ومن أطاع منهم ومن عصى.
নবী রাসূলগণকে জিজ্ঞাসা করা হবে তাদেরকে তাদের উম্মত কি জবাব দিয়েছিল।কে কে তাদের অনুসরণ করেছিল আর কে কে তাদের অনুসরণ করেনি।

মিকদাম ইবনু মা’দীকারিব (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে।
عَنِ الْمِقْدَامِ بْنِ مَعْدِيكَرِبَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " لِلشَّهِيدِ عِنْدَ اللَّهِ سِتُّ خِصَالٍ يُغْفَرُ لَهُ فِي أَوَّلِ دَفْعَةٍ وَيَرَى مَقْعَدَهُ مِنَ الْجَنَّةِ وَيُجَارُ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ وَيَأْمَنُ مِنَ الْفَزَعِ الأَكْبَرِ وَيُوضَعُ عَلَى رَأْسِهِ تَاجُ الْوَقَارِ الْيَاقُوتَةُ مِنْهَا خَيْرٌ مِنَ الدُّنْيَا وَمَا فِيهَا وَيُزَوَّجُ اثْنَتَيْنِ وَسَبْعِينَ زَوْجَةً مِنَ الْحُورِ الْعِينِ وَيُشَفَّعُ فِي سَبْعِينَ مِنْ أَقَارِبِهِ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ .
 তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ শহীদের জন্য আল্লাহ্ তা’আলার নিকট ছয়টি পুরস্কার বা সুযোগ আছে। তার প্রথম রক্তবিন্দু পড়ার সাথে সাথে তাকে ক্ষমা করা হয়, তাকে তার জান্নাতের বাসস্থান দেখানো হয়, কবরের আযাব হতে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়, সে কঠিন ভীতি হতে নিরাপদ থাকবে, তার মাথায় মর্মর পাথর খচিত মর্যাদার টুপি পরিয়ে দেওয়া হবে। এর এক একটি পাথর দুনিয়া ও তার মধ্যকার সবকিছু হতে উত্তম। তার সাথে টানা টানা আয়তলোচনা বাহাত্তরজন জান্নাতী হুরকে বিয়ে দেওয়া হবে এবং তার সত্তরজন নিকটাত্মীয়ের জন্য তার সুপারিশ কুবুল করা হবে।(তিরমিযি-১৬৬৩)



সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
(১)
নবী রাসূল, শহীদগণ এবং জান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্ত সাহাবাগণ কে কিয়ামতের দিন জিজ্ঞাসা করা হবে না।তাদের আ'মলকে মিজানের পাল্লায় মাফ দেয়া হবে না।বরং তাদেরকে আ'মলের পরিমাপণ ব্যতিতও জান্নাতে দিয়ে দেয়া হবে।

(২)
জাহান্নামিরা সিরাত পার হতে পারবে না।বরং তারা সিরাত পার হতে গিয়ে জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হবে। সিরাত পার হওয়ার পর দুই দলে মানুষ থাকবে, জান্নাতি এবং আ'রাফ বাসী( জান্নাত ও নয় জাহান্নামও নয়, বরং মধ্যবর্তী স্থান, অমুসলিমদের নাবালক সন্তান এবং যাদের নেকি ও বদি সমান সমান, তারাই এখানে থাকবে)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (697,400 points)
সংযোজন ও সংশোধন করা হয়েছে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...