আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
58 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (15 points)
১.রোদে পানি গরম করে গোসল করলে  শ্বেত রোগ হয় এটা কি হাদিসে আছে?

২.ভবিষ্যতের জন্য টাকা জমানো কি গুনাহ?কত টাকা/ সম্পদ জমানোর অনুমতি আছে?

৩.সিজার করা লাগতে পারে ভেবে টাকা জমানোর মানে কি তাওয়াক্কুল নাই?

৪.দান-খয়রাত করার ইচ্ছা করলে ৭০টা শয়তান এসে বাধা দেয়।হাত-পা আঁকড়ে ধরে।এটা কি সঠিক?

৫.স্বামীর ইনকামে সংসার চলে টেনেটুনে।তাই বাচ্চা নিতে সায় দেয়না পরিবারের সদস্যরা।করণীয় কি?

৬.সন্তান নেওয়ার আগে ডাঃ এর কাছে গিয়ে বিভিন্ন চেকআপ করতে হয়।যতটুকু জানি ইসলামে পরিকল্পিত গর্ভধারণের কোনো নিয়ম নাই।এক্ষেত্রে করণীয় কি?

৭.গর্ভকালীন সময়ে কয়েকবার চেকাপ করতে হয় মেডিসিন নিতে হয়। দুআ দ্বারা সব সম্ভব হলে ডাঃ এর কাছে না গিয়ে শুধু দুআ করলে হবে কি?

এঅবস্থায় মেডিসিন নেওয়া চেকাপ করানো এসব কি তাওয়াক্কুলের বিপরীত?

৮.স্বাভাবিকভাবে বাচ্চা না হলে চিকিৎসার মাধ্যমে বাচ্চার চেষ্টা করা কি আল্লাহর ওপর দিয়ে হাত ঘুরানো?

৯.সন্তান নিতে আর্থিক প্রস্তুতির কথা শুনি।আরও শুনি সন্তান রিজিক নিয়েই আসে।তাহলে কেন আর্থিক প্রস্তুতি নিতে হবে?এ নিয়ে ইসলাম কি বলে রেফারেন্সসহ বুঝিয়ে বলবেন মিন ফাদলিক

১০.অনেকে বলে হজ থেকে এসে ব্যবসা,জমি চাষ এসব করা যায়না।40 দিন বের হওয়া যায়না। এসব কি সঠিক।হজ থেকে এসে কি কি করা যায় ও যায়না রেফারেন্সসহ জানতে চাই

১১.অনেকে ইসলামিক বই মাটিতে, রাস্তাতে রেখে ছবি তোলে।একজন বলেন,এটা বইয়ের সাথে বেয়াদবি।এসব আদবের খেলাফ করলে ইলম থেকে মাহরুম হতে হয়।কথা কি সঠিক?রেফারেন্সসহ জানাবেন।

১২.কুরআনের মাঝের কোনো অংশ পড়লে  তাসমিয়া না পড়ে তাআউজ পড়তে হয় কেন?

১৩.স্ত্রী স্বামীকে খুশি করার জন্য হাসলে যতগুলো দাঁত বের হবে ততগুলো নফল হজের সওয়াব পাবে এই কথাটি কি সঠিক?

1 Answer

0 votes
by (713,800 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
(১)
وَعَنْ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: لَا تَغْتَسِلُوا بِالْمَاءِ الْمُشَمَّسِ فَإِنَّهُ يُورِثُ البرص. رَوَاهُ الدَّارَقُطْنِيّ
 ’উমার ইবনুল খাত্ত্বাব (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রোদে গরম করা পানি দিয়ে গোসল করো না। কারণ এ পানি শ্বেত ও কুষ্ঠ রোগ সৃষ্টি করে। (মিশকাতুল মাসাবিহ-৪৮৯,দারাকুত্বনী ১/৩৯, বায়হাক্বী ১/৬, তালখীসুল হাবীর ৬, ৭ নং পৃঃ)

হাদীসটি যঈফ,কারণ এর সানাদে হায়সাম ইবনু আযহার আস্ সালাফী নামে একজন দুর্বল রাবী রয়েছে যাকে ইবনু হিব্বান ছাড়া কেউ বিশ্বস্ত বলেননি। আর তার তাওসীক করণকে অনেকেই সঠিক বলেননি। কারণ তিনি মাজহূল (অপরিচিত) রাবীদেরও বিশ্বস্ত বলে থাকেন।


(২)ভবিষ্যতের জন্য টাকা জমানো গুনাহ নয়। যাকাত আদায় করে নিলে যত ইচ্ছা  টাকা/ সম্পদ জমানো যাবে।

(৩)সিজার করা লাগতে পারে ভেবে টাকা জমানোর মানে তাওয়াক্কুল খেলাফ হবে না।

وَلَا تَجْعَلْ يَدَكَ مَغْلُولَةً إِلَىٰ عُنُقِكَ وَلَا تَبْسُطْهَا كُلَّ الْبَسْطِ فَتَقْعُدَ مَلُومًا مَّحْسُورًا [١٧:٢٩]
(কৃপণতাবশে) নিজের হতা ঘাড়ের সাথে বেধে রেখো না এবং (অপব্যায়ী হয়ে) তা সম্পূর্ণরূপে খুলে রেখো না। তাহলে তুমি তিরস্কৃত ও নিঃস্ব হয়ে পড়বে। [সূরা বনী ইসরাঈল-২৯]
، عَنْ سَعْدٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَعُودُنِي وَأَنَا مَرِيضٌ بِمَكَّةَ، فَقُلْتُ: لِي مَالٌ، أُوصِي بِمَالِي كُلِّهِ؟ قَالَ: «لاَ» قُلْتُ: فَالشَّطْرِ؟ قَالَ: «لاَ» قُلْتُ: فَالثُّلُثِ؟ قَالَ: «الثُّلُثُ وَالثُّلُثُ كَثِيرٌ، أَنْ تَدَعَ وَرَثَتَكَ أَغْنِيَاءَ خَيْرٌ مِنْ أَنْ تَدَعَهُمْ عَالَةً يَتَكَفَّفُونَ النَّاسَ فِي أَيْدِيهِمْ، وَمَهْمَا أَنْفَقْتَ فَهُوَ لَكَ صَدَقَةٌ، حَتَّى اللُّقْمَةَ تَرْفَعُهَا فِي فِي امْرَأَتِكَ، وَلَعَلَّ اللَّهَ يَرْفَعُكَ، يَنْتَفِعُ بِكَ نَاسٌ، وَيُضَرُّ بِكَ آخَرُونَ»
সা’দ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি মক্কায় রোগগ্রস্ত হলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার শুশ্রূষার জন্য আসেন। আমি বললাম, আমার তো মাল আছে। সেগুলো আমি ওয়াসিয়্যাত করে যাই? তিনি বললেনঃ না। আমি বললামঃ তাহলে অর্ধেক? তিনি বললেনঃ না। আমি বললামঃ তবে এক-তৃতীয়াংশ? তিনি বললেনঃ এক-তৃতীয়াংশ করতে পার। আর এক-তৃতীয়াংশই তো বেশী। মানুষের কাছে হাত পেতে পেতে ফিরবে ওয়ারিশদের এমন ফকীর অবস্থায় ছেড়ে যাওয়ার চেয়ে তাদেরকে বিত্তবান অবস্থায় রেখে যাওয়া উত্তম। আর যা-ই তুমি খরচ করবে, তা-ই তোমার জন্য সাদকাহ হবে। এমনকি যে লোকমাটি তুমি তোমার স্ত্রীর মুখে তুলে দিবে, সেটাও। সম্ভবতঃ আল্লাহ তোমাকে দীর্ঘজীবী করবেন। তোমার দ্বারা অনেক লোক উপকৃত হবে,আবার অন্যেরা কাফির সম্প্রদায়) ক্ষতিগ্রস্ত হবে। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৫৩৫৪]


(৪)দান-খয়রাত করার ইচ্ছা করলে শয়তান এসে বাধা দেয়। তবে শয়তানের সংখ্যা নির্ধারিত নয়।

(৫)স্বামীর ইনকামে সংসার চলে টেনেটুনে।তাই বাচ্চা নিতে সায় দেয়না পরিবারের সদস্যরা। অভাবের ভয়ে বাচ্ছা না দেয়া হারাম ও নাজায়েয। 

(৬)ইসলামে পরিকল্পিত গর্ভধারণের কোনো নিয়ম নাই। এমনটা বলা উচিৎ হবে না।বরং সন্তান নেওয়ার আগে ডাঃ এর কাছে গিয়ে বিভিন্ন চেকআপ করানো যাবে।হ্যা, এক্ষেত্রে অবশ্যই মহিলা ডাক্তারকে খুজে বের করতে হবে। মহিলা ডাক্তার থাকাবস্থায় পরুষ ডাক্তারের কাছে যাওয়া জায়েয হবে না।

(৭)গর্ভকালীন সময়ে কয়েকবার চেকাপ করতে হয় মেডিসিন নিতে হয়।হ্যা, ডাঃ এর কাছে না গিয়ে শুধু দুআ করে নিলে সেটা উত্তম হবে।তবে মেডিসিন নেওয়া,এবং চেকাপ করানো এসব কিছুই তাওয়াক্কুলের পরিপন্থী হবে না।

(৮)স্বাভাবিকভাবে বাচ্চা না হলে চিকিৎসার মাধ্যমে বাচ্চার চেষ্টা করা আল্লাহর ওপর দিয়ে হাত ঘুরানো হবে না। বরং চিকিৎসা করানোও সুন্নত।চিকিৎসার পর আল্লাহর হুকুম হলে বাচ্ছা হবে নতুবা হবে না।

(৯) সন্তান সে তার রিজিক নিয়েই আসে।সুতরাং সন্তান নেয়ার পূর্বে আর্থিক প্রস্তুতি নেয়ার কোনো প্রয়োজনিয়তা নাই। এবং এটা ইসলাম সমর্থিতও নয়।

(১০) হজ থেকে এসে ব্যবসা,জমি চাষ এসব করা যায়না।40 দিন বের হওয়া যায়না। এসব সঠিক নয়।হজ থেকে এসে সাথে সাথে সকল প্রকার কাজ করা যাবে।

(১১) ইসলামিক বই মাটিতে, রাস্তাতে রেখে ছবি তোলা বইয়ের সাথে বেয়াদবি।এসব আদবের খেলাফ করলে ইলম থেকে মাহরুম হওয়াই স্বাভাবিক।

(১২)কুরআনের মাঝের কোনো অংশ পড়লে ও তাআউজের সাথে তাসমিয়া পড়তে হয়।তবে তিলাওয়াত শুরুর পর ভিন্ন কোনো কাজ বা কারো সাথে কথা বলে ফেললে তখন তাসমিয়াহ না পড়ে শুধুমাত্র তাআউজ পড়তে হয়, কেননা তাসমিয়াহ তো প্রত্যেক কাজের শুরুতে পড়তে হয়। আর এখানে তো ইতিপূর্বে তাসমিয়াহ পড়ে তিলাওয়াতকে শুরু করে নেয়া হয়ে গেছে। সুতরাং এখন শুধুমাত্র তাআউজ পড়ে নিলেই হবে। এটাই সুন্নাহ।হ্যা, তখনো তাসমিয়াহ পড়ে নেওয়া নিষেধ নয়।

(১৩)স্ত্রী স্বামীকে খুশি করার জন্য হাসলে যতগুলো দাঁত বের হবে ততগুলো নফল হজের সওয়াব পাবে, এরকম কোনো কথা কোথাও আসেনি। তবে স্বামীকে খুশি করার জন্য স্ত্রীর হাসী অনেক সওয়াবের কাজ।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...