আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
100 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (5 points)
edited by

১ম প্রশ্ন : আমি একজন গ্রাফিক্স ডিজাইনার। আমি মুলত লোগো ডিজাইন নিয়ে কাজ করি।

এখন আমার প্রশ্ন হচ্ছে আমি যদি কোন প্রানির চিত্র ব্যবহার না করে কোন কোম্পানির জন্য লোগো তৈরি করি যেমন: গাছ-পালা, ঘর-বাড়ি, নদি-নালা এবং চাঁদ-সূর্য ইত্যাদি ব্যবহার করে লোগো তৈরি করি তাহলে কি আমার ইনকাম হালাল হবে?

২য় প্রশ্ন : আমি গ্রাফিক্স ডিজাইনের পাশাপাশি প্লান বি হিসাবে একটি ডিপার্টমেন্টাল স্টোর দিতে চাচ্ছি।

কিন্তু  এখন আমার প্রশ্ন হচ্ছে ডিপার্টমেন্টাল স্টোর দেওয়ার পর আমি যদি আমার দোকানের চাহিদা অনুযায়ী কিছু পন্য ক্রয় করি যেমন: পন্য গুলো ৮০০ টাকা করে কিনা এবং বিক্রয় মূল্য ৯০০ টাকা। কিন্তু তা যদি ১ সপ্তাহ পর বাজার মূল্য ১০০০ টাকা হয় এবং ৮০০ টাকায় যে পন্য গুলো ক্রয় করেছিলাম তার কোম্পানির নিধারিত গায়ে মূল্য তো ৯০০ টাকা এখন কথা হেচ্ছে আমি যদি আমার পন্য গুলোর গায়ের রেট মুছে বাজার মূল্য অনুযায়ী ১০০০ টাকায় বিক্রি করি তাহলে কি আমার ইনকাম টা হলাল হবে?

৩য় প্রশ্ন : আমি ডিপার্টমেন্টাল স্টোর দিলে আইসক্রিম এবং ঠানডা কোক বিক্রি করার জন্য আইসক্রিম এবং কোক কম্পানি থেকে ফ্রিতে ফ্রিজ ব্যবহার করতে দিলে তা নেওয়া কি জায়েজ হবে? ফ্রিজটা একেবারে দিয়ে দেয় না তারা দোকান ছেড়ে দিলে ফ্রিজটি নেয়ে যায়। কম্পানির ফ্রিজ দেওয়ার উদ্দেশ্য হোলো যাতে অন্য কম্পানির আইসক্রিম এবং কোক এর সাথে তাদের কম্পানির আইসক্রিম ও কোক যাতে বিক্রি করি।

৪র্থ প্রশ্ন: আমি যদি দোকানে সফট ড্রিংকস এর পাশাপাশি এনার্জি ড্রিংকস যেমন: টাইগার, র্স্পিড এবং রেড বুল বিক্রি করি তাহলে কি আমার এই ইনকাম হালাল হবে? 

৫ম প্রশ্ন: ব্যবসা করার সময় তো মহিলা কাস্টমার আসবে তখন তাদের দিকে তাকিয়ে তো কথা বলতে হয়। 

এখন আমার প্রশ্ন হচ্ছে ব্যবসা করার সময় মহিলা কাস্টমারদের দিকে তাকানো এবং তাদের সাথে কথা বলা কি জায়েজ হবে? 

1 Answer

0 votes
by (677,640 points)
edited by
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


(০১)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا نَصْرُ بْنُ عَلِيٍّ الْجَهْضَمِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ عَبْدِ الصَّمَدِ، حَدَّثَنَا مَنْصُورٌ، عَنْ مُسْلِمِ بْنِ صُبَيْحٍ، قَالَ كُنْتُ مَعَ مَسْرُوقٍ فِي بَيْتٍ فِيهِ تَمَاثِيلُ مَرْيَمَ . فَقَالَ مَسْرُوقٌ هَذَا تَمَاثِيلُ كِسْرَى . فَقُلْتُ لاَ هَذَا تَمَاثِيلُ مَرْيَمَ . فَقَالَ مَسْرُوقٌ أَمَا إِنِّي سَمِعْتُ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ مَسْعُودٍ يَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " أَشَدُّ النَّاسِ عَذَابًا يَوْمَ الْقِيَامَةِ الْمُصَوِّرُونَ " . قَالَ مُسْلِمٌ قَرَأْتُ عَلَى نَصْرِ بْنِ عَلِيٍّ الْجَهْضَمِيِّ عَنْ عَبْدِ الأَعْلَى بْنِ عَبْدِ الأَعْلَى، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ أَبِي الْحَسَنِ، قَالَ جَاءَ رَجُلٌ إِلَى ابْنِ عَبَّاسٍ فَقَالَ إِنِّي رَجُلٌ أُصَوِّرُ هَذِهِ الصُّوَرَ فَأَفْتِنِي فِيهَا . فَقَالَ لَهُ ادْنُ مِنِّي . فَدَنَا مِنْهُ ثُمَّ قَالَ ادْنُ مِنِّي . فَدَنَا حَتَّى وَضَعَ يَدَهُ عَلَى رَأْسِهِ قَالَ أُنَبِّئُكَ بِمَا سَمِعْتُ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " كُلُّ مُصَوِّرٍ فِي النَّارِ يَجْعَلُ لَهُ بِكُلِّ صُورَةٍ صَوَّرَهَا نَفْسًا فَتُعَذِّبُهُ فِي جَهَنَّمَ " . وَقَالَ إِنْ كُنْتَ لاَ بُدَّ فَاعِلاً فَاصْنَعِ الشَّجَرَ وَمَا لاَ نَفْسَ لَهُ .

নাসর ইবনু আলী আল জাহযামী (রহঃ) ... মুসলিম ইবনু সুবায়হ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি মাসরুক (রহঃ) এর সাথে একটি ঘরে ছিলাম। সেখানে মারইয়াম (আলাইহিস সালাম) এর প্রতিকৃত ছিল। মাসরুক (রহঃ) বললেন, এটি (পারস্য সম্রাট) কিসরার প্রতিকৃতি। আমি বললাম, না, এটি মারইয়াম (আলাইহিস সালাম) এর প্রতিকৃতি। তখন মাসরুক (রহঃ) বললেন, শুন! আমি আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) কে বলতে শুনেছি যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কিয়ামতের দিন কঠিনতর আযাব ভোগকারী হবে ছবি অঙ্কনকারীরা।

[ইমাম মুসলিম (রহঃ) বলেন] আমি নাসর ইবনু আলী আন-জাহযামী (রহঃ) কে (এ হাদীসের পাঠ) পড়ে শুনিয়েছি। সাঈদ ইবনু আবূল হাসান (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি ইবনু আব্বাস (রাঃ) এর কাছে এসে বলল, আমি এসব ছবি একে থাকি; তাই এ বিযয় আপনি আমাকে ফাতওয়া দিন। তিনি বললেন, তুমি আমার নিকটে এস। সে তার কাছে এলে তিনি বললেন আরো কাছে এস। সে আরো কাছে এলে তিনি তার মাথায় হাত রেখে বললেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে যা শুনেছি, তা তোমাকে বলে দিচ্ছি।

আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি প্রত্যেক ছবি অঙ্কনকারী জাহান্নামের অধিকারী। তার অংকিত প্রতিটি ছবিতে প্রাণ দেয়া হবে, তখন সেগুলি জাহান্নামে তাকে আযাব দিতে থাকবে। তিনি আরও বললেন, তোমাকে একান্তই যদি (তা) করতে হয়, তা হলে গাছ (পালা) এবং যার প্রাণ নেই, সে সবের (ছবি) তৈরি কর।
(মুসলিম শরীফ ৫৩৫৯.৫৪৩৩.ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৫৩৫৯, ইসলামিক সেন্টার ৫৩৭৭)

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত হাদীস দ্বারা বুঝা যায় যে কাহারো যদি ছবি আঁকিয়ে উপার্জন করতে হয় তাহলে সে গাছের ছবি আঁকবে বা এমন ছবি আঁকবে যাতে কোনো প্রাণীর ছবি নেই।

তাই প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার ইনকাম হালাল। 
সমস্যা নেই।

আরো জানুনঃ- 

(০২)
হ্যাঁ আপনার ইনকাম হালাল হবে।
তবে এভাবে আগের মূল্য মুছে ফেলা ঠিক হবেনা।
এমনিতেই ক্রেতাদের জানাতে হবে যে বাজার মূল্য বেড়ে গিয়েছে।
প্যাকেটের গায়ে যেটা লেখা আছে,সেটা আগের মূল্য।
(ক্রেতা এই বিষয়টি জানতে চাইলে তাকে বিষয়টি জানিয়ে বিক্রয় করতে হবে।)

(০৩)
হ্যাঁ উক্ত ফ্রিজ নেয়া জায়েজ হবে।

(০৪)
হালাল যেকোনো পন্য আপনি বিক্রয় করতে পারবেন।
প্রশ্নে উল্লেখিত ড্রিংকস এ হারাম মিশ্রণ আছে বলে কেউ দাবী করেনি,তাই এসব ড্রিংকস বিক্রয় করা যাবে।
,
(০৫)
ব্যবসা করার সময় ইচ্ছাকৃতভাবে মহিলা কাস্টমারদের দিকে তাকানো জায়েজ হবেনা।
অনিচ্ছায় নজর চলে গেলে সাথে সাথে নজর ফিরিয়ে নিতে হবে।

চক্ষু নত রেখে তাদের সাথে কথা বলা জায়েজ হবে।
তবে অপ্রয়োজনীয় ও অতিরিক্ত কথা বলা জায়েজ হবেনা।
নাজায়েজ কোনো কথা বলাও জায়েজ হবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...