আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
76 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (5 points)

মুদির দোকানে তো দোকানদার অন্য পন্যের পাশাপাশি ব্লেট এবং রেজার ও বিক্রি করে। ব্লেট এবং রেজার দিয়ে তো দাঁড়ি শেপ করা হয় এবং গোপনাঙ্গ ও পরিস্কার করা হয়। কিন্তু দোকানদার তো আর জানে না যে কাস্টমার দাঁড়ি শেপ করবে নাকি গোপনাঙ্গ পরিস্কার করবে।

১ নং প্রশ্ন:  কাস্টমার যদি মুদির দোকান থেকে ব্লেট বা রেজার ক্রয় করে সে যদি ব্লেট বা রেজার দিয়ে সে তার দাঁড়ি শেপ করে তাহলে কি দোকনদারের গুনা হবে?

২ নং প্রশ্ন:  দোকানে ব্লেট এবং রেজার বিক্রি করা কি ইসলামের দৃষ্টিতে জায়েজ হবে? এবং ব্লেট এবং রেজার বিক্রি করার অর্থ কি হালাল হবে?

৩ নং প্রশ্ন:  দোকানে চুলের কালো কলোপ বিক্রি করা কি জায়েজ হবে? 

1 Answer

0 votes
by (63,440 points)
edited by

 

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

শরীয়তের বিধান হলো দাড়ি না রাখা , মুন্ডিয়ে ফেলা বা এক মুষ্ঠির কম রাখা হারাম ও কবীরা গুনাহ।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

عن ابن عمر  : عن النبي صلى الله عليه و سلم قال ( خالفوا المشركين وفروا اللحى وأحفوا الشوارب  . وكان ابن عمر إذا حج أو اعتمر قبض على لحيته فما فضل أخذه

হযরত ইবনে ওমর রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন-তোমরা মুশরিকদের বিরোধীতা কর। দাড়ি লম্বা কর। আর গোঁফকে খাট কর।

আর ইবনে ওমর রাঃ যখন হজ্ব বা ওমরা করতেন, তখন তিনি তার দাড়িকে মুঠ করে ধরতেন, তারপর অতিরিক্ত অংশ কেটে ফেলতেন। {সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৫৫৫৩}

দাড়ির সীমানা হলো গালের শেষ ভাগে এবং গলার শুরু ভাগে বাম কান থেকে ডান কান পর্যন্ত বিস্তৃত লম্বা হাড্ডিতে গজানো চুল হলো দাড়ির সীমারেখা। বাকিটা দাড়ি নয়। থুতনির উপরের ছোট চুল কাটাও উচিত নয়।

★★ মৌলিকভাবে চুলে রং করাতে কোনো সমস্যা নেই; এবং শরীয়তে এর অনুমতি রয়েছে। তাই বৃদ্ধ বয়সে যারা চুল রাঙিয়ে নিতে চান, তারা তিনটি শর্তসাপেক্ষে নিঃসন্দেহে তা করতে পারেন।

প্রথমত: চুল রং করার ক্ষেত্রে কালো রং তথা কলপ ব্যবহার করা যাবে না; কারণ এর দ্বারা পাকাচুল পুরোপুরি আবৃত হয়ে যায়।

দ্বিতীয়ত: চুলে রং করতে গিয়ে কোনো কাফির-মুশরিকের স্টাইল ধারণ করা যাবে না।

তৃতীয়ত: যে রং  চুলে লাগানো হচ্ছে, তার মধ্যে যদি কোনো ক্ষতিকর রাসায়নিক না থাকে।

 

তদ্রূপ নারীদের জন্যও কালো রং ছাড়া অন্য যে কোনো রং দ্বারা পাকা চুল রাঙিয়ে নেওয়া জায়েজ আছে। পাকা চুল রং করার ক্ষেত্রে কালো রং পরিহার করার ব্যাপারে একাধিক হাদিস বর্ণিত আছে।

হজরত জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, মক্কা বিজয়ের দিনে আবু কুহাফাকে আনা হলো। তখন তার চুল-দাড়ি ছিল ‘ষাগামা’ ফুলের মতো সাদা।  তখন রাসুল (সা.) বললেন, ‘এটিকে কোনো কিছু দ্বারা পরিবর্তন করো। তবে কালো থেকে বিরত থাকো।’ (মুসলিম: ৫৪৬৬)

আরেক হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, রাসুল (সা.) বলেন, শেষ যুগে এমন এক শ্রেণির লোক হবে, যারা পায়রার ছাতির মতো কালো কলপ ব্যবহার করবে, তারা জান্নাতের সুগন্ধও পাবে না। (আবু দাউদ: ৪২১২)

আর পাকা চুল রং করার ক্ষেত্রে এমন রংও পরিহার করতে হবে, যে রং দিয়ে চুল রাঙালে কাফির-মুশরিক আর মুসলমানের মধ্যে পার্থক্য করা যায় না। এ ধরনের রং দ্বারা চুল রাঙানো নারী-পুরুষ উভয়ের জন্যই হারাম।

কেননা হাদিসে এসেছে- হজরত আবু উমামা (রা.) হতে বর্ণিত, রাসুল (সা.) কিছু আনসার সাহাবাদের উদ্দেশে বলেন, সাদা দাঁড়ি চুলগুলো লাল অথবা হলুদ রঙ দ্বারা পরিবর্তন করো এবং আহলে কিতাবদের (ইহুদিদের) বিরোধিতা করো। (আহমাদ- ২২৩৩৭)

ফুকাহায়ে কেরামদের আলোচনা থেকে বুঝা যায় যে,কালো কলপ বিশেষ কিছু শ্রেণী ব্যতীত একদমই দেওয়া যাবে না। (জাওয়াহিরুল ফিকহ, ৭/১৫৯

কালো কলপ ব্যতীত চুলে যেকোনো কালার দেয়া যেতে পারে যদি তা কাফিরগণ কে অনুসরণ করে না করা হয়। (যেব ও যি-নত কে শরয়ী আহকাম-৭১)

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!

১. প্রশ্নেল্লিখিত ছুরতে ব্লেট বা রেজার শুধু দাঁড়ি শেপ করার ক্ষেত্রেই ব্যবহার করা হয়না। বরং শরীরের গুপ্তস্থানের লোম পরিষ্কারের ক্ষেত্রেও ব্যবহার করা হয়ে থাকে। সুতরাং ব্লেট বা রেজার বিক্রি করা জায়েয আছে এবং বিক্রিত মূল্য হালাল। তবে যেই ক্রেতার সম্পর্কে প্রবল ধারণা হবে যে, সে সেগুলিকে দাঁড়ি শেপ করার কাজে ব্যবহার করবে তাহলে জেনে বুঝে এমন ব্যক্তির নিকট ব্লেট বা রেজার বিক্রি করা মোটেও উচিত হবে না। সর্বপরি যে ব্যক্তি দাঁড়ি শেপ করবে সেই গুনাহগার হবে।  

২. উপরে উল্লেখিত শর্তানুপাতে চুলে কালো কলোপ দেওয়া জায়েয নেই। সুতরাং চুলের কালো কলোপ বিক্রি করা থেকে বিরত থাকা উচিত। এজাতীয় দুএকটি পণ্য না থাকলেও দোকান চলবে ইনশাআল্লাহ।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...