আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
311 views
in সাওম (Fasting) by (21 points)
আসসালামু 'আলাইকুম।
আমি কাল রাতে আশুরার রোজার নিয়ত করেছিলাম। আজ আর কাল এই দুটো করার৷ সেহেরিতে উঠতে পারিনি এবং সকালে ভুলবশত একটু পানি খেয়ে ফেলেছি। এখন এই রোজাটা কি আমাকে রাখতে হবে নাকি কাল, পরশু এই দুইদিন রাখলে হবে?
আমার ছোট বাচ্চা আছে দুধ খায়৷ এই অবস্থায় না খেয়ে রোজা রাখবো কি না একটু বলবেন অনুগ্রহ করে৷ এতে করে দুধ কম পেলে বাচ্চার হক্ব নষ্ট হবে কি না( বাচ্চার বয়স ১১ মাস। দুধের পাশাপাশি অন্য খাবার খায়)।

1 Answer

0 votes
by (60,180 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

https://ifatwa.info/10689/ নং ফাতাওয়াতে আমরা বলেছি যে,

সজাগ থাকা অবস্থায় ভুলে পানাহার করলেও রোযা ভঙ্গ হয় না। ঘুমে পানাহার করলে তো রোযা ভাঙ্গার প্রশ্নই উঠে না।

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : مَنْ نَسِيَ وَهُوَ صَائِمٌ فَأَكَلَ أَوْ شَرِبَ فَلْيُتِمَّ صَوْمَهُ فَإِنَّمَا أَطْعَمَهُ اللَّهُ وَسَقَاهُ  رواه البخاري(1933) ، ومسلم (1155 .

যে ব্যক্তি ভুলে আহার করল বা পান করল সে যেন তার রোযা পূর্ণ করে। কারণ আল্লাহই তাকে পানাহার করিয়েছেন।-সহীহ মুসলিম ১/২০২

 

عن أبي هريرة رضي الله عنه أن النبي صلى الله عليه وسلم قال :  من أفطر في شهر رمضان ناسياً فلا قضاء عليه ولا كفارة أخرجه ابن حبان (8/288) ، والحاكم (1/430) وحسنه الألباني في "صحيح الجامع"(6070 .

পানাহার ও স্ত্রী সহবাস করলে রোজা ভেঙে যায়; যদি রোজাদারের এ কথা মনে থাকে যে; সে রোজা রেখেছে। সুতরাং কেউ যদি রোজার কথা ভুলে গিয়ে পানাহার ও সঙ্গম করে, তবে তার রোজা ভাঙবে না। অবশ্য, স্মরণ হওয়ার সাথে সাথে তা থেকে বিরত থাকতে হব। (রদ্দুল মুহতার, ৩য়খণ্ড, ৩৬৫ পৃষ্ঠা)

 

গর্ভবর্তী ও দুগ্ধদানকারিনীর জন্য সিয়াম পালন না করার অনুমতি।

হাদিস শরীফে এসেছে

عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ سَوَادَةَ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، رَجُلٌ مِنْ بَنِي عَبْدِ اللَّهِ بْنِ كَعْبٍ قَالَ أَغَارَتْ عَلَيْنَا خَيْلُ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَأَتَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَوَجَدْتُهُ يَتَغَدَّى فَقَالَ " ادْنُ فَكُلْ " . فَقُلْتُ إِنِّي صَائِمٌ . فَقَالَ " ادْنُ أُحَدِّثْكَ عَنِ الصَّوْمِ أَوِ الصِّيَامِ إِنَّ اللَّهَ تَعَالَى وَضَعَ عَنِ الْمُسَافِرِ الصَّوْمَ وَشَطْرَ الصَّلاَةِ وَعَنِ الْحَامِلِ أَوِ الْمُرْضِعِ الصَّوْمَ أَوِ الصِّيَامَ " .

আবূ কুরায়ব ও ইউসুফ ইবনু ঈসা (রাঃ) ..... বানু আবদুল্লাহ ইবনু কা’ব গোত্রের আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বাহিনী আমাদের কবীলায় অকস্মাৎ আক্রমণ করে। এরপর আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট আসলাম। তখন তিনি তাঁকে সকালের আহারে রত পেলাম। তিনি বললেনঃ কাছে আস এবং খাও। আমি বললাম, আমি তো সায়িম। তিনি বললেনঃ কাছে আস। তোমাকে আমি সিয়াম সম্পর্কে নির্দেশ দিচ্ছি। আল্লাহ তা’আলা মূসাফির থেকে অর্ধেক সালাম মাফ করে দিয়েছেন আর গর্ভবতী ও দুগ্ধদানকারিণী মহিলাদের জন্য সিয়াম পালন মাফ করে দিয়েছেন। সুনান আত তিরমিজী, হাদিস নং- ৭১৩

 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন!

 

ক. রোজার কথা ভুলে গিয়ে পানি পান করে থাকলে রোজা ভাঙবে না। অবশ্য, স্মরণ হওয়ার সাথে সাথে তা থেকে বিরত থাকতে হব। (রদ্দুল মুহতার, ৩য়খণ্ড, ৩৬৫ পৃষ্ঠা)

তবে যদি রোজার কথা স্মরণ থাকা অবস্থায় অসতর্কতাবশত পানি পান করে থাকেন তাহলে রোজা ভেঙ্গে যাবে। পরবর্তীতে এই রোজাটা আদায় করে দিবেন।

 

খ. গর্ভবর্তী ও দুগ্ধদানকারিনীর জন্য ফরজ সিয়াম পালন না করার অনুমতি শরীয়ত দিয়েছে। তবে যদি রোজা রাখলে সন্তানের কোনো ক্ষতি না হওয়ার সম্ভবনা থাকে তাহলে তারা চাইলে রোজা রাখতে পারবে। সুতরাং প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে যেহেতু আপনার সন্তান বাইরের খাবার খেতে পারে তাহলে আপনি চাইলে আশুরার রোজা রাখতে পারেন।

তবে যদি এমন হয় যে, রোজা রাখলে দুধ এতো কম হবে যে, ফলে সন্তানের খুবই কষ্ট হবে আর সন্তানও বাইরের খাবার অতো বেশী খেতে চাই না। তাহলে আবার রোজা রাখা যাবে না।


গ. প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে যেহেতু সাহরী খেতে পারেননি। আবার যেহেতু কাল, পরশু দুইদিন রোজা রাখারও অবকাশ আছে তাই আপনি চাইলে আজকের রোজাটা ভেঙ্গে ফেলতে পারেন। তবে পরবর্তীতে এই রোজাটা কাযা আদায় করে দিবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 532 views
...