আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
165 views
in পবিত্রতা (Purity) by (47 points)
reshown by
১. হানাফি মাজহাব মতে জানি যে, যেই ওয়াক্ত চলাকালীন সময়ে হায়েজ শুরু হয় সেই ওয়াক্তের নামাজ কাযা আদায় করা লাগেনা। এটা কি নিফাসের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য? মানে, আমার বাচ্চা হয়েছিল দুপুর ৪টার দিকে, তখন যোহরের ওয়াক্ত ছিল। এর অনেক আগেই হসপিটালে যেতে হয়েছিল তাই যোহরের সালাত পড়তে পারিনি। এখন কি পরবর্তীতে আমার যোহরের সালাত কাযা আদায় করা লাগবে?

২. (এটা আমার হিসাব সঠিক হয়েছে কি'না সেটা জানার জন্য বলছি, ইংরেজী তারিখ মতে)

জুন মাসের ২৮ তারিখে ৪ টার দিকে আমার নিফাস শুরু হয়। পরবর্তীতে ৪০ দিন ৪০ রাত পূর্ণ হবে আগস্ট মাসের ৭ তারিখে না? (জুন মাস ৩০ শে, জুলাই ৩১ শে)।  তাহলে ৭ তারিখের ঠিক আসরের ওয়াক্ত থেকেই আমি নামাজ আদায় শুরু করতে হবে তো, তাইনা?

৩. আমার প্রথম বাচ্চার ক্ষেত্রেও আমার ইস্তিহাজা হয়েছিল। তো এইবারও ৪০ দিন পার হয়ে গেলেও তো ইস্তিহাজা হবে। এখন ৪০ দিনে ফরজ গোসল করে সালাত আদায়  শুরু করলে পরবর্তীতে ইস্তিহাজা সেরে গেলে কি পুনরায় ফরজ গোসল করা লাগবে?

৪. ইস্তিহাজা সেরে যাবার পরে হায়েজ শুরু হবার ব্যবধান মিনিমাম কত দিন হওয়া লাগবে? ১৫ দিন কি? অর্থাৎ, ব্লিডিং বন্ধ থেকে আবার পরবর্তীতে ব্লিডিং শুরু হলে কখন থেকে বুঝব যে হায়েজ শুরু হয়েছে?

৫. আমি সবসময়ই সুন্নাতে মুয়াক্কাদা আদায় করি আলহামদুলিল্লাহ, খুব কম সময়েই মিস যায়।

এখন ২টা বাচ্চা নিয়ে ফরজ আদায় করতেই কঠিন ব্যাপার হয়ে যায়। (আল্লাহ সহজ করুন)। এক্ষেত্রে কি আমি গোনাহগার হব? নামাজ ওয়াক্ত চলে যাচ্ছে, আবার ছোট বাচ্চাও কান্না  করেই চলেছে, এক্ষেত্রে বাচ্চাকে থামাতে ওয়াক্ত চলে যায়, সেক্ষেত্রে কি গোনাহগার হব? এসবের ক্ষেত্রে হুকুম কি? আগে নামাজটা আদায় করা, নাকি বাচ্চাকে সামলানো?

৬.  বাচ্চাদের নাপাক কাঁথাকাপড় গুলো বালতি বালতি হয়, অনেক হয়। এগুলো ধোয়ার পরে ( যথাসম্ভব ময়লা পরিষ্কার করার পরে) ১/২ বার চিপড়ালেই পাল হয়ে যাবেনা কি? আর চিপড়ানোর সাথে সাথেই সেগুলোকে যদি পাক কাপড়ের সাথে রাখা হয় তাহলে কি সেই পাক কাপড়ও নাপাক হয়ে যাবে? চিপড়ানোর পরেও তো দেখা যায় পানি থেকে যায়। আর সবাই তো সবসময় অনেক ক্ষন ধরে সেই কাপড় চিপড়ায়ও না। একেক জনের কাজ একেকরকম।সেক্ষেত্রেও কি পাক হয়ে যাবেনা?

৭. বাচ্চার কাঁথা ভালো করে ধোয়াও পরও যখন নাড়তে গিয়ে দেখা যায় যে, সামান্য পায়খানার দাগ লেগে আছে যেটা ধোয়ার সময়ে হয়ত নজরে আসেনি অথবা ধুলেও ওঠেনি তাহলে কি হুকুম হবে? ওই কাপড়ের সাথে যত পাক কাপড় ধুয়ে একই বালতিতে রাখা হয়েছিল সেগুলোও কি নাপাক হয়ে যাবে ওই পায়খানার দাগের কারনে?

1 Answer

0 votes
by (574,260 points)
edited by
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


(০১)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

 أخبرنا جعفر بن عون أنا إسماعيل بن مسلم، عن الحسن عن عثمان بن أبي العاص، قال: وقت النفساء أربعين يوما، فإن طهرت وإلا فلا تجاوزه حتى تصلي.

‘‘উসমান ইবনে আবুল আস রাযিআল্লাহু আনহু বলেন, নেফাসগ্রস্ত মহিলাদের সময়সীমা চল্লিশ দিন। তবে যদি এর আগেই পবিত্র হয়ে যায়, (তাহলে  পবিত্রতার বিধান শুরু হয়ে যাবে।) অন্যথায় চল্লিশ দিন পর নামায শুরু করতে বিলম্ব করবে না।’’
(মুসনাদে দারেমী ৫/১৮৫ (১০৩৭) ও ইবনুল মুনযির রচিত আল আওসাতে ২/৩৭৬ (৮২৫) 

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
হায়েজের ন্যায় নেফাসের ক্ষেত্রেও নামাজের শেষ ওয়াক্ত ধর্তব্য।
সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার যখন বাচ্চা হয়েছিলো,তখন যদি আসলেই জোহরের ওয়াক্ত বিদ্যমান থাকে,তাহলে উক্ত জোহরের নামাজের কাজা আদায় করতে হবেনা।

আরো জানুনঃ- 

(০২)
https://ifatwa.info/26064/ ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
  
عَنْ أَنَسٍ قَالَ: كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ «وَقَّتَ لِلنُّفَسَاءِ أَرْبَعِينَ يَوْمًا، إِلَّا أَنْ تَرَى الطُّهْرَ قَبْلَ ذَلِكَ

হযরত আনাস রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নেফাসওয়ালী মহিলাদের মেয়াদ সাব্যস্ত করেছেন চল্লিশ দিন। তবে যদি এর আগে পবিত্র হয়ে যায়, তাহলে ভিন্ন কথা। [সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-৬৪৯, আলমুজামুল আওসাত, হাদীস নং-৮৩১১, সুনানে দারাকুতনী, হাদীস নং-৮৫২, সুনানে কুবরালিলবায়হাকী, হাদীস নং-১৬১৯]


★সুতরাং আপনার যদি নেফাস চলমান থাকে,তাহলে আপনি ৭ ই আগষ্ট জোহর থেকে নামাজ আদায় করবেন।

(জুন মাসের ২৮ তারিখের জোহর থেকে নেফাস শুরু হয়েছে,তো এই দিন আর ৭ ই আগষ্ট এর জোহরের আগ পর্যন্ত ওয়াক্ত হিসেব করে এক দিন হয়। সেই হিসেবে আপনি ৭ ই আগষ্ট জোহর থেকে নামাজ আদায় করবেন। আর যদি বাচ্চা হওয়ার সময় আসরের ওয়াক্ত চলে আসে,তাহলে আপনি ৭ ই আগষ্ট আসর থেকে নামাজ আদায় করবেন, এক্ষেত্রে ২৮ ই জুনের জোহরের কাজা আদায় করতে হবে। )

আর যদি এর আগেই আপনার নেফাস বন্ধ হয়,তাহলে যেই ওয়াক্তে বন্ধ হলো,সেই ওয়াক্ত থেকেই নামাজ আদায় করতে হবে।

(০৩)
আপনার এইবার নেফাসের ক্ষেত্রে যদি ৪০ দিনের আগেই রক্ত আসা বন্ধ হয়,তাহলে যেই ওয়াক্তে বন্ধ হলো,সেই ওয়াক্ত থেকেই নামাজ আদায় করতে হবে।

আর যদি ৪০ দিন পরেও রক্ত আসা চলমান থাকে,তাহলে ৪১ তম দিন থেকে নামাজ আদায় করতে হবে।

(০৪)
১৫ দিন ব্যবধান ধরবেন।

(০৫)
এভাবে নিয়মিত সুন্নাতে মুয়াক্কাদা নামাজ ত্যাগ করলে আপনি গুনাহগার হবেন।
সময় বের করে আপনাকে যেইভাবেই হোক আসর বাদ দিয়ে বাকি নামাজ গুলোর যে কয় রাকাত সুন্নাতে মুয়াক্কাদা নামাজ আছে,সেগুলো আদায় করতে হবে।

তবে ওযর বশত কোনো এক বা দুই সময় এই সুন্নাত ছেড়ে দিলে সমস্যা হবেনা।
তবে নিয়মিত ত্যাগ করা যাবেনা।

(০৬)
এগুলোকে পাক কাপড়ের সাথে রাখবেননা।
আলাদা রাখবেন।
পাক কাপড়ের সাথে রেখে পাক কাপড় ভিজে গেলে সেটাও নাপাক হয়ে যাবে।

(প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে এভাবে তিনবার কাপড় ধোয়া হলে নাপাক কাপড়টি পাক হবে।)

(০৭)
যদি তিনবার ভালোভাবে ধোয়ার পরে না উঠে,সেক্ষেত্রে এটি সমস্যা হবেনা।

নতুবা নাপাকই থাকবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 156 views
...