আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
164 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (54 points)
edited by
আসসালামুআলাইকু। হুজুর ঈমান ভংগের কারন জানার পর বিভিন্ন প্রশ্ন মনে জাগতেছে।

         ১.হুজুর ৬-৭ বছর আগে আমার বন্ধু আমাকে গল্প করার সময় বলে যে,   আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাঃ বলেছেন সুরা ফালাক সুরা নাস    নাকি  কুরআন শরিফের আয়াত নয়। তারপর বিভিন্ন কথা বলি। তখন আমি নিয়মিত নামাজ পরতাম না।  হুজুর আমার বন্ধু ওভাবে বলার পর আমার মনে সন্দেহ জাগে যে,  সুরা ফালাক বা সুরা নাস দিয়ে নামাজ পরলে নামাজ পরলে নামাজ হবে না নাকি আবার। এ  সন্দেহের  কারনে কোন দিন নামাজে  সুরা ফালাক বা সুরা নাস পরেছিলাম  না নাকি আমার মনে নেই। হুজুর এ সন্দেহের কারনে বা নামজে এ সন্দেহের কারনে সুরা ফালাক বা সুরা নাস না পরলে কি ঈমানের কোন সমস্যা হবে।

২.হুজুর পরবর্তী সময়ে  আমি নামাজে  সুরা ফালাক বা সুরা নাস পরি। এবং এই সুরা ফালাক বা সুরা নাসের যে আমলগূলো আছে সেগুলো করার চেষ্টা করি। হুজুর ঈমান ভংগের     কারন জানার আগে থেকেই আমি সুরা ফালাক বা সুরা নাস পরি। এবং আমল করার চেষ্টা করি। কিন্তু ঈমান  ভংগের কারন   জানার পর বিভিন্ন প্রশ্ন মনে জাগতেছে। হুজুর আমার আগে সুরা ফালাক বা নাস নিয়ে আমার মনে সন্দেহ জাগার কারনে এবং সন্দেহের কারনে যদি নামাজে সুরা ফালাক বা সুরা নাস না পরি তাহলে কি আমার ঈমানের কোন সমস্যা  হবে। হুজুর আমি বিবাহিত  আমার বিবাহের কোন সমস্যা হবে? আর এটা কি  অজ্ঞতার মধ্যে পরবে।  
৩.কেউ  যদি ঈমান ভংগের কারন জানার পরও কাউকে জিজ্ঞেস করে যে, সুরা ফালাক বা সুরা নাস নাকি কুরআনের আয়াত নয়। তাহলে কি তার ঈমান থাকবে।

1 Answer

0 votes
by (58,830 points)
edited by
           بسم الله الرحمن الرحيم
জবাব,
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
  
عَنْ مُعَاذِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ خُبَيْبٍ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ خَرَجْنَا فِي لَيْلَةٍ مَطِيرَةٍ وَظُلْمَةٍ شَدِيدَةٍ نَطْلُبُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يُصَلِّي لَنَا – قَالَ – فَأَدْرَكْتُهُ فَقَالَ ” قُلْ ” . فَلَمْ أَقُلْ شَيْئًا ثُمَّ قَالَ ” قُلْ ” . فَلَمْ أَقُلْ شَيْئًا . قَالَ ” قُلْ ” . قُلْتُ مَا أَقُولُ قَالَ ” قُلْ : هوَ اللَّهُ أَحَدٌ وَالْمُعَوِّذَتَيْنِ حِينَ تُمْسِي وَتُصْبِحُ ثَلاَثَ مَرَّاتٍ تَكْفِيكَ مِنْ كُلِّ شَيْءٍ ”

আবদুল্লাহ ইবন খুবায়ব তাঁর পিতা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ এক বর্ষণমুখর রাতে গভীর অন্ধকারে আমাদের জন্য দু’আ করার উদ্দেশ্যে আমারা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে তালাশ করতে বের হলাম। এক স্থানে গিয়ে আমি তাঁকে পেলাম।
তখন তিনি বললেনঃ বল।
আমি কিছুই বললাম না।
তিনি আবার বললেনঃ বল।
আমি কিছুই বললাম না। পুনরায় তিনি আমাকে বললেনঃ বল। আমি বললামঃ কি বলব?
তিনি বললেনঃ “সকাল-সন্ধ্যায় কুল হুয়াল্লাহু আহাদ এবং মুআওওয়াযাতায়ন (কুল আউযু বিরাব্বিল ফালাক ও কুল আউযু বিরাব্বিন নাস) তিন বার পাঠ করবে; তবে তা সব কিছুর ক্ষেত্রে তোমার জন্য যথেষ্ট হবে।”
[তিরমিজী হাদিস নম্বরঃ ৩৫৭৫ [আল মাদানী প্রকাশনী] হাদীসটির সনদ হাসান, তা’লীকুর রাগীব ১/২২৪, আল কালিমুত তাইয়্যিব ১৯/৭]

عَنْ عُقْبَةَ بْنِ عَامِرٍ، قَالَ أَمَرَنِي رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَنْ أَقْرَأَ بِالْمُعَوِّذَاتِ دُبُرَ كُلِّ صَلاَةٍ

‘উক্ববাহ ইবনু ‘আমির (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাকে প্রত্যেক সলাতের পর মুআওয়াযাত তথা আশ্রয় প্রার্থনার সূরাগুলো পাঠ করতে নির্দেশ দিয়েছেন। (সূনান আবু দাউদ, হাদীস নং ১৫২৩, সহিহ হাদিস)

উকবা বিন আমের রা. হবে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,

قل هو الله أحد ، وقل أعوذ برب الفلق ، وقل أعوذ برب الناس ، تعوذ بهن ، فإنه لم يتعوذ بمثلهن ، اقرأ المعوذات دبر كل صلاة ” فذكرهن

“তুমি পাঠ করো, ‘কুল হুওয়াল্ল-হু আহাদ’, ‘কুল আঊযু বিরাব্বিল ফালাক’ এবং ‘কুল আঊযু বিরাব্বিন নাস’ এ সূরাগুলো দ্বারা (আল্লাহর নিকট) আশ্রয় প্রার্থন করো। কেননা এই সূরাগুলোর মত অন্য কিছু দ্বারা (আল্লাহর নিকট) আশ্রয় প্রার্থনা করা যায় না। তুমি মুআওয়ায়াযাত বা আশ্রয় প্রার্থনার সূরাগুলো প্রত্যেক ফরয সালাতের পাঠ করো। তারপর তিনি উক্ত তিনটি সূরা উল্লেখ করলেন।”
(সুনান আবুদ দাউদ, তিরমিয, নাসাঈ, মুসনাদে আহমদ, ইবনে খুযায়মা ও ইবনে হিব্বান প্রমূখ।)

★উপরোক্ত হাদীস সমূহের আলোকে প্রমাণিত হয় যে, সকাল-সন্ধ্যায় তিনবার করে এবং পাঁচ ওয়াক্ত ফরয সালতের পর একবার করে এ তিনটি সূরা তথা সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক ও সূরা নাস পাঠ করা মুস্তাহাব।
★আল্লাহর আয়াতকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করার ব্যাপারে জাহিলদের মধ্যে বৈপরীত্য দেখা যায়। তাদের কতিপয় আল্লাহর সকল আয়াতকে মিথ্যা মনে করে এবং আল্লাহর কোন কিতাব বিশ্বাস করে না। যেমনভাবে মুশরিকরা নাবী-রসূলগণকে বিশ্বাস করে না। আর চুড়ান্ত কথা হলো আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে অবতীর্ণ কোন কিতাবই তারা বিশ্বাস করে না।

আর জাহিলদের কতিপয় কিছু আয়াতকে বিশ্বাস করে এবং কতেককে অস্বীকার করে। যেমন ইয়াহুদী ও খ্রিষ্টান। যারা কতিপয় আয়াত বিশ্বাস করে এবং কতিপয়কে বিশ্বাস করে না, তারা মূলতঃ তাদের মতই যারা সকল আয়াতকেই অস্বীকার করে। মহান আল্লাহ বলেন,

(أَفَتُؤْمِنُونَ بِبَعْضِ الْكِتَابِ وَتَكْفُرُونَ بِبَعْضٍ فَمَا جَزَاءُ مَنْ يَفْعَلُ ذَلِكَ مِنْكُمْ إِلَّا خِزْيٌ فِي الْحَيَاةِ) [البقرة: 85]

তোমরা কি কিতাবের কিছু অংশে ঈমান রাখ আর কিছু অংশ অস্বীকার কর? সুতরাং তোমাদের মধ্যে যারা তা করে দুনিয়ার জীবনে লাঞ্ছনা ব্যতীত তাদের কী প্রতিদান হতে পারে? (সূরা বাক্বারাহ ২:৮৫)
 প্রশ্নকারী প্রয় দ্বীনি ভাই/ বোন!
 ১. আপনার কথা সঠিক নয়। বরং পুরো করআনের উপর ঈমান রাখা ফরজ। যদি কোন ব্যাক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে কুরআনের একটি আয়াতকেও অস্বীকার করে তাহলে সে মুমিন থাকবে না। সূরা নাস ও ফালাক কুরআনের সূরা হওয়ার ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই।
 ২,৩. না জানার কারণে উক্ত ধারণা আসলে বা সন্দেহ হলে যদিওবা ঈমান ভঙ্গ হবে না কিন্তু আপনার জন্য তওবা করা আবশ্যক। যেন পরবর্তীতে কখনো কুরআনের কোন অংশ নিয়ে এজাতীয় সন্দিহান না আসে সে বিষয়েও খেয়াল রাখবে। না জানার কারণ উক্ত কাজের দ্বারা বিবাহের সম্পর্কে কোন সমস্যা হবে না বলেই আশা করি ইনশাআল্লাহ। সর্বপরি তওবা করা আপনার জন্য আবশ্যক। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 189 views
...