আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
146 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (189 points)
edited by
বিয়ের কাবিননামাতে কাজী স্বামীর অনুমতি না নিয়ে অধিকার দিলে স্ত্রী অধিকার পায় না এটি আমি বিয়ের পর জানতে পারি।বিয়ের সময় আমাকে ব্যস্ততার কারনে কাজী ধারাটি পূরন করতে দেয় নাই। সেইখানে কি লিখবে এই ব্যাপারে কিছু জানায় নাই। শুধু আমার স্বাক্ষর নিয়েছে।

আমার অধিকার দেওয়ার ইচ্ছা আগে থেকে ছিল না। বিয়ের পর আমি স্ত্রীকে বলি "বিয়ের সময় আমাকে ধারাটি পূরণ করতে দিলে তোমাকে অধিকার দিতাম না। কিন্তু কাজী তোমাকে সেখানে অধিকার দিয়ে দিসে"। আমার ধারনা কাজীরা অধিকার দিয়ে দেয়। যেইটা ঠিক না। তাই বলেছি কাজী অধিকার দিয়ে দিসে।

১. "বিয়ের সময় আমাকে ধারাটি পূরণ করতে দিলে আমি তোমাকে অধিকার দিতাম না। কিন্তু কাজী তোমাকে অধিকার দিয়ে দিসে"। আমার এইভাবে কথা বলাতে কি স্ত্রী অধিকার পেয়ে যাবে?

২. আমি স্ত্রীকে তালাক গ্রহনের অধিকার দেই নাই।

একদিন স্ত্রী আমাকে বলে "তুমি কখনো আমাকে ছেড়ে যেও না"। তখন আমিও আমার স্ত্রীকে বলি "আমি কখনো তোমাকে ছেড়ে  যাবো না, তুমিও আমাকে ছেড়ে যেও না/ তুমি আমাকে ছেড়ে যেও না"।

আমিতো তাকে আগে তালাক গ্রহনের অধিকার দেই নাই।
আমি যে আমার স্ত্রীকে বলেছি "তুমি আমাকে ছেড়ে যেও না" বা "তুমিও আমাকে ছেড়ে যেও না" এই দুইভাবে বলার জন্য কি আগে স্ত্রীকে অধিকার না দিলেও স্ত্রী অধিকার পেয়ে যাবে?

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
জবাব
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম 


তালাক খুবই মারাত্মক একটি বিষয় । নিকৃষ্ট হালাল বলা হয়েছে হাদীসে। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا كَثِيرُ بْنُ عُبَيْدٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ خَالِدٍ، عَنْ مُعَرِّفِ بْنِ وَاصِلٍ، عَنْ مُحَارِبِ بْنِ دِثَارٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " أَبْغَضُ الْحَلاَلِ إِلَى اللَّهِ تَعَالَى الطَّلاَقُ " .

কাসীর  ইবন  উবায়দ .......... ইবন  উমার  (রাঃ)  নবী  করীম  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম  হতে  বর্ণনা  করেছেন যে,  আল্লাহ্  তা‘আলার  নিকট  নিকৃষ্টতম  হালাল বস্তু  হল  তালাক।

(আবূ দাউদ ২১৭৮, ইরওয়া ২০৪০, যইফ আবু দাউদ ৩৭৩-৩৭৪, আর-রাদ্দু আলাল বালীক ১১৩।) 

★শরীয়তের বিধান হলো স্বামী যদি জেনে শুনে নিকাহ নামার ১৮ নং ধারাতে স্ত্রীকে তালাকের ক্ষমতা দেয়, অথবা সেখানে কাজী সাহেব বা অন্য কেহ হ্যাঁ লিখে দেয়,আর স্বামী তাহা জেনে শুনে নিচে স্বাক্ষর দেয়,আর এই নিকাহ নামা বিবাহের ইজাব কবুল হওয়ার পরে যদি লেখা হয়,তাহলে স্ত্রী তালাকের ক্ষমতা পাবে। 

তবে যদি এমনটি না হয়,স্বামী যদি না জেনেই নিচে সাইন করে,সে যদি তালাকের ক্ষমতা প্রদানের এই বিষয় সম্পর্কে স্বীকার না করে যে এটার তারই লেখা,অথবা এই নিকাহ নামা যদি বিবাহের ইজাব কবুল হওয়ার আগে লেখা হয়,তাহলে স্ত্রী তালাকের ক্ষমতা পাবেনা।
 
كُلُّ كِتَابٍ لَمْ يَكْتُبْهُ بِخَطِّهِ وَلَمْ يُمِلَّهُ بِنَفْسِهِ لَا يَقَعُ بِهِ الطَّلَاقُ إذَا لَمْ يُقِرَّ أَنَّهُ كِتَابُهُ كَذَا فِي الْمُحِيطِ (الفتاوى الهندية، كتاب الطلاق، الفصل السادس فى الطلاق بالكتابة-1/379، المحيط البرهانى، كتاب الطلاق، الفصل السادس فى ايقاع الطلاق بالكتاب-4/486، تاتارخانية، كتاب الطلاق، الفصل السادس فى ايقاع الطلاق بالكتاب-3/380)
সারমর্মঃ
প্রত্যেক ঐ লেখা,যেটা নিজ হাত দিয়ে লিখেনি,নিজের মন সেদিকে ঝুকেওনি,তাহলে তালাক পতিত হবেনা।
যদি সে এটা স্বীকার না করে যে এটার তারই লেখা।    

সুতরাং  যদি স্বামীর দস্তখত করার সময় জানা থাকে যে, কাজী স্ত্রীকে তালাক দেয়ার অধিকার দিয়েছে মর্মে উপরে লিখে দিয়েছে, একথা জানার পরও যদি স্বামী উক্ত কাগজের নিচে সাইন করে, তাহলে স্বামী কর্তৃক স্ত্রীকে তালাক দেয়ার অধিকার দেয়া হয়েছে বলে সাব্যস্ত হবে। সেই হিসেবে স্ত্রী যদি পরবর্তীতে নিজের উপর তালাক পতিত করে থাকে, তাহলে তালাক পতিত হয়ে যায়।

আরো জানুনঃ 
,
প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
(০১)
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে কাজির লেখা ঐ নিকাহনামা বিবাহের ইজাব কবুলের আগে লেখা হয়েছিলো?
নাকি বিবাহের ইজাব কবুলের পরে লেখা হয়েছিলো?

যদি বিবাহের ইজাব কবুলের আগে লেখা হয়,তাহলে এখানে স্ত্রী কোনোভাবেই তালাকের ক্ষমতা পাবেনা।

আর যদি এটি ইজাব কবুলের পরে লেখা হয়ে থাকে,সেক্ষেত্রে স্বামী নিজে যেহেতু লিখে নাই,সেক্ষেত্রে যদি স্বামী নিচে দস্তখতের সময় স্ত্রীকে তালাক প্রদানের ক্ষমতা দেওয়ার বিষয় জেনে শুনেই নিচে স্বাক্ষর দেয়,তাহলে স্ত্রী তালাকের ক্ষমতা পাবে। 
অন্যথায় শুধুমাত্র প্রশ্নে উল্লেখিত বাক্য বলায় স্ত্রী তালাকের ক্ষমতা পাবেনা।

(০২)
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে এই দুইভাবে বলার জন্য আগে স্ত্রীকে অধিকার না দিলে স্ত্রী অধিকার তালাকের পেয়ে যাবেনা।
আপনি নিশ্চিত থাকুন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...