আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
99 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (30 points)
edited by

আসসালামু'আলাইকুম প্রিয় শায়েখ,

হানাফি ফিকহ এর আলোকে নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর জানাবেন আশা করিঃ

(১) বিছানার চাদরে কোনো নাপাক শুকনো অবস্থায় লেগে থাকলে সেটা কি পাক হবে?

(২) জামাতে ছুটে যাওয়া রাকাত আদায়ের সময় ইমামের কয়টা সালাম ফিরানোর পর উঠতে হবে?

(৩) ইমাম সাহেব রুকুতে এমতাবস্থায় তাকবীর বলে ছানা পড়তে হবে নাকি সরাসরি রুকুতে চলে যাবো?

(৪) সেজদায় এই দু'য়াটি পড়া যাবে কি?

(৫) ইচ্ছাকৃত এবং অনিচ্ছাকৃতভাবে আমার অনেক ওয়াক্ত নামাজ কাযা হয়ে গেছে, যার পরিমাণ আমার নির্দিষ্ট জানা নেই, ফলে আমি কাযা আদায়ের জন্য যে পরিমাণ ওয়াক্ত নির্ধারণ করবো সেটা যদি প্রকৃতপক্ষে আমার কাযা নামাজের থেকে কম হয়ে যায়, তাহলে কি আমার সব কাযা নামাজ আদায় হয়ে যাবে? 

(৬) শুধু ফরজ নামাজের কাযা পড়লে হবে, নাকি সুন্নত, নফলসহ সব পড়তে হবে? 

(৭) একজন ব্যক্তি অনেক আমল করেছে, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামাতের সহিত কায়েম করেছে কিন্তু একটা কবিরা গোনাহ্ থেকে জেনে শুনে তাওবা না করার কারণে/তাওবা কবুল না হওয়ার কারণে কি সে জাহান্নামি হবে?(জান্নাত-জাহান্নামের ফয়সালা অবশ্যই আল্লাহ্ তায়ালা ই করবেন)

(৮) আমার আম্মুকে আমি মানুষের গীবত, সমালোচনা করতে অনেকবার নিষেধ করেছিলাম, কিন্তু তিনি প্রথমে এটা মেনে নিয়ে পরে ঠিকই সুযোগ বুঝে আমাকে "বেশি জানে" বলে খোটা দেয়, এমতাবস্থায় আমি কী করতে পারি?

(৯) এইখানে বর্ণিত বিষয়টি কি সঠিক? এই নিয়তে দু'য়া করা যাবে কি?

1 Answer

+1 vote
by (686,640 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


(০১)
না,পাক হবেনা।
যতক্ষন পর্যন্ত পানি দ্বারা ধুয়ে পাক না করা হবে,ততক্ষন পর্যন্ত এটি পাক হবেনা।

(০২)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ   

وَعَنِ الْمُغِيْرَةِ بْنِ شُعْبَةَ اَنَّه غَزَا مَعَ رَسُوْلِ اللهِ ﷺ غَزْوَةَ تَبُوْكَ قَالَ الْمُغِيْرَةُ فَتَبَرَّزَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ قِبَلَ الْغَائِطِ فَحَمَلْتُ مَعَه اِدَوَاةً قَبْلَ الْفَجْرِ فَلَمَّا رَجَعَ اَخَذْتُ اُهْرِيْقُ عَلى يَدَيْهِ مِنَ الاِدَاوَةِ فَغَسَلَ يَدَيْهِ وَوَجْهَه وَعَلَيْهِ جُبَّةٌ مِّنْ صُوْفٍ ذَهَبَ يَحْسِرُ عَنْ ذِرَاعَيْهِ فَضَاقَ كُمُّ الْجُبَّةِ فَاَخْرَجَ يَدَيْهِ مِنْ تَحْتِ الْجُبَّةِ وَاَلْقَى الْجُبَّةَ عَلى مَنْكِبَيْهِ فَغَسَلَ ذِرَاعَيْهِ ثُمَّ مَسَحَ بِنَاصِيَتِه وَعَلَى الْعِمَامَةِ ثُمَّ اَهْوَيْتُ لَانْزِعَ خُفَّيْهِ فَقَالَ دَعْهُمَا فَاِنِّىْ اَدْخَلْتُهُمَا طَاهِرَتَيْنِ فَمَسَحَ عَلَيْهِمَا ثُمَّ رَكِبَ وَرَكَبْتُ فَانْتَهَيْنَا اِلَى الْقَوْمِ وَقَدْ قَامُوْا اِلَى الصَّلَاةِ وَيُصَلِّىْ بِهِمْ عَبْدُ الرَّحْمنِ بْنِ عَوْفٍ وَّقَدْ رَكَعَ بِهِمْ رَكْعَةً فَلَمَّا اَحَسَّ بالنَّبِىِّ ﷺ ذَهَبَ يَتَاَخَّرُ فَاَوْمَا إِلَيْهِ فََاَدْرَكَ النَّبِىُّ ﷺ اِحْدَىِ الرَّكْعَتَيْنِ مَعَه فَلَمَّا سَلَّمَ قَامَ النَّبِىُّ ﷺ وَقُمْتُ مَعَه فَرَكَعْنَا الرَّكْعَةَ الَّتِىْ سَبَقَتْنَا. رَوَاهُ مُسْلِمٌ 

মুগীরাহ্ ইবনু শু‘বাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে তাবূক যুদ্ধে শরীক হয়েছিলেন। মুগীরাহ্ বলেন, একদিন ফজরের (ফজরের) সলাতের আগে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পায়খানার উদ্দেশে বের হলেন। আর আমি তাঁর পেছনে একটি পানির পাত্র বহন করে গেলাম। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বেরিয়ে আসার পর আমি তাঁর দুই হাতের কব্জির উপর পানি ঢালতে লাগলাম। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাঁর দুই হাত ও চেহারা ধুলেন। তখন তাঁর গায়ে একটি পশমের জুববাহ্ ছিল। তিনি তাঁর (জুববার আস্তিন গুটিয়ে) হাত দু’টি খুলতে চাইলেন। কিন্তু জুববার আস্তিন খুব চিকন ছিল। তাই জুববার ভেতর দিক দিয়েই তাঁর হাত দু’টি বের করে নিজের দুই কাঁধের উপর রেখে দিলেন এবং হাত দু’টি (কনুই পর্যন্ত) ধুলেন। অতঃপর মাথার সামনের দিক (কপাল) ও পাগড়ীর উপর মাসাহ করলেন। তারপর আমি তাঁর মোজাগুলো খুলতে চাইলাম। তিনি বললেন, এগুলো এভাবে থাকতে দাও, আমি এগুলো পবিত্রাবস্থায় (অর্থাৎ- উযূ (ওযু/ওজু/অজু) করে) পরেছি। তিনি এগুলোর উপর মাসাহ করলেন। অতঃপর তিনি সওয়ারীর উপর আরোহণ করলেন, আমিও আরোহণ করলাম এবং আমরা একটা দলের কাছে পৌঁছে গেলাম। তখন তারা সলাতে দাঁড়িয়ে গিয়েছিলেন, আর ‘আবদুর রহমান ইবন ‘আওফ (রাঃ) তাদের সলাতের ইমামাত করছিলেন এবং তাদের নিয়ে এক রাক্‘আত সলাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায়ও করে ফেলেছিলেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর আগমন বুঝতে পেরে তিনি পেছনে সরে আসতে চাইলেন। কিন্তু নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে তার স্থানে (স্থির থাকতে) ইশারা করলেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার সাথে দুই রাক্‘আতের মধ্যে এক রাক্‘আত সলাত (সালাত/নামায/নামাজ) পেলেন। তিনি সালাম ফিরালে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দাঁড়িয়ে গেলেন এবং আমিও তাঁর সাথে দাঁড়িয়ে গেলাম। আর এক রাক্‘আত ছুটে যাওয়া সলাত (সালাত/নামায/নামাজ) আমরা আদায় করলাম।
(মুসলিম ২৭৪, নাসায়ী ১০৮, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৫১৪৩, ইবনু মাজাহ্ ১২৩৬।)

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
মাসবুক ইমামের দুই দিকে সালাম ফিরানো শেষ হওয়ার পর ছুটে যাওয়া রাকাত আদায় করার জন্য দাঁড়াবে। কিন্তু অনেককে দেখা যায় ইমাম সালাম ফিরানো শুরু করার সাথে সাথে উঠে যায়। এটা অনুত্তম।

বিস্তারিত জানুনঃ- 

(০৩)
এক্ষেত্রে ছানা পড়বেননা।
দাঁড়িয়ে তাকবিরে তাহরিমা বলে রুকুর তাকবির বলতে বলতে রুকুতে চলে যাবেন।

(০৪)
হ্যাঁ পড়া যাবে।

(০৫)
আপনি যদি প্রবল ধারনার ভিত্তিতে সংখ্যা নির্দিষ্ট করেন,তাহলে আপনার সব কাজা নামাজ আদায় হয়েছে বলে ধরা হবে। 

(০৬)
শুধু ফরজ নামাজ আর বিতর নামাজের কাজা আদায় করতে হবে।

(০৭)
বিষয়টি সম্পূর্ণভাবে আল্লাহ তায়ালার ইখতিয়ারধীন।
আল্লাহ তায়ালা যদি তাকে জাহান্নামে কিছু শাস্তি দিয়ে জান্নাতে দিতে পারেন,মাফ করে দিয়ে শাস্তি না দিয়ে সরাসরি জান্নাতে দিতে পারেন।

বিষয়টি সম্পূর্ণভাবে আল্লাহ তায়ালার ইখতিয়ারধীন।

(০৮)
আপনি আপনার দায়িত্ব পালন করেন।
আপনার মা গীবত করলে সেটি তারই গুনা হবে।

তবুও আপনি চাইলে আপনার মাকে গীবত সংক্রান্ত ফতোয়া,হাদীস দেখিয়ে বিরত রাখার চেষ্টা করতে পারেন।

(০৯)
বিষয়টি সঠিক। এই নিয়তে দু'য়া করা যাবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 86 views
...