আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
131 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (24 points)
আসসাামুআলাইকুম শায়খ। নিচের প্রশ্ন গুলোর উত্তর দিয়ে আমাকে বাধিত করবেন।
1। আমার বন্ধুর একটি প্রশ্ন। বন্ধুর বিয়ে সামনে ।আমার বন্ধু আলহামদুলিল্লাহ ধার্মিক।ইসলাম মেনে চলে ।কিন্তু তার পরিবার ধার্মিক না।এখন সামনে আমার বন্ধু র বিয়ে।বন্ধুর ইচ্ছেমত বিয়ে মসজিদে হলেও ওয়ালিমা রেস্টুরেন্টে হবে।এখন তো জানেন ই বিয়ে তে ফ্রী মিক্সিং, বেপর্দা কত হারাম কাজ হয়ে থাকে।( এটা অবশ্যই যে বিয়ে তে কোনো গান বাজনা হবে না।বন্ধু যতটুকু পারে নিজে থেকে হারাম থেকে দূরে থাকবে।
কিন্তু যারা দাওয়াতে আসবে তারা সবাই পর্দা করবে না, অনেকে ছবি তুলবে, নিজেরা নিজেরা হারাম কাজ করবে।এখন এই সব গুনাহ কী বন্ধুর উপরেও বর্তাবে???? কেননা বন্ধুর জন্যই তো সবাই দাওয়াতে এসেছে এবং গুনাহ করেছে????

2। আমার স্বামী আমাকে দেনমোহর দিলো। আমি এই টাকাটা জমা রাখলাম। প্রায় দুই বছর পর আমার স্বামী বললো আমি( সে) হযে যাবে।আমিও যেতে চাইলাম।কিন্তু বললো আমার ( আমার স্বামী) তো টাকা নাই।তখন আমি নিজ থেকেই বললাম আচ্ছা দেনমোহর এর টাকা দিয়ে যাবো।

এক্ষেত্রে কি আমার হজ হবে?

3)আমি যদি আমার স্ত্রী কে প্রায়ই বলি তোমার যে টাকা আছে( দেনমোহর) সেখান থেকে কিছু টাকা দাও/ কিছু উপহার কিনে দাও এসব বললে কি গুনাহ হবে?

4) যদি মজা করেও উপরের কথা বলি তাহলে কি গুনাহ হবে?

5) আমার এক স্যার আমাকে জিজ্ঞেস করেছে ওই লোকটি কেমন? আমি উনাকে ( ওই লোকটিকে) প্রায় 4 বছর আগে চিনতাম।এরপর আর কোনো খোঁজ পাই নাই । 4 বছর আগে যখন জানতাম তখন উনি খুব একটা ভালো লোক ছিলেন না।তাই আমি sir ke তখন কার কথা বলেছি।এটা কি গীবত হয়েছে???? যদি বর্তমানে ওই দোষ না থেকে থাকে তাহলে কি আমার গুনাহ হয়েছে???

এরকম পরিস্থিতি কিভাবে হ্যান্ডেল করবো????

6)আমার সব কাজে রিয়া এর ওয়াসওয়াসা আসে।e থেকে পরিত্রাণ এর উপায় কি?

7) রুকু থেকে উঠে আবার যখন সেজদায় জাই তখন মনে হয় ঠিক মত সোজা হয়ে দাঁড়াই নাই। তখন কি সাহু সেজদা দেয়া লাগবে?

8) আমি স্বপ্নে দেখেছি আমি একজন বড়ো আলেমকে( ব্যাক্তিগত ভাবে চিনি, বাংলাদেশের 2জন জনপ্রিয় আলেমদের নাম আসলে উনার নাম ও আসবে।সঙ্গত কারণেই নাম বললাম না) , মুরগির মাংস দিয়েছি খাওয়ার জন্য।সপ্ন টা ছিল::: আমি উনার জন্য মুরগি মাংস গরম বাটিতে করে উনার বাসায় নিয়ে গেসি।আমি যখন বাসায় প্রবেশ করেছি তখন উনি বাসার ভিতরে যেয়ে বলেছে নাফিজ ভাইয়া এসেছে।তোমরা ভিতরে যাও।আমি তখন মনে মনে বলেচি মাশা আল্লাহ কত কঠিন পর্দার বেপারে।তারপর আমি উনার বাসার ভিতরে প্রবেশ করি।উনাকে মাংস দেই।ভাত দেই।উনি খুব তৃপ্তি সহকারে খান।বলে মজা হয়েছে।পড়ে আবার আমি উনার জন্য বাসা থেকে মাংস নিয়ে যাই।উনি খুব খুশি হন।পড়ে আমি আমার বাসায় চলে আসি।

সপ্ন টা দেখেছি ফযরের আগে আগে।সপ্ন তার মানে কি?

9) ইসলামে বলা আছে কেও করো গুনাহ এর দায়ভার নিবে না। তাহলে কোনো সশুর ইচ্ছাকৃত ভাবে পুত্রবধূর সাথে সহবাস করলে ছেলে মেয়ের বিয়ে ভেঙে যাবে কেন? কেননা এখানে তো ছেলে ও দোষ নাই, বউ এর দোষ নাই।দোষ শুধু  সোশুর এর।

10) এক ছেলে হারাম সম্পর্কে ছিলো।এখন দ্বীনের বুঝ এসেছে তাই হারাম সম্পর্ক ছেড়ে দিতে চায়।ছেলে বিয়ে করতে চায় তার প্রেমিকাকে।কিন্তু প্রেমিকা রাজি না।প্রেমিকা এক শর্তে রাজি  যে যতদিন মেয়ের ফ্যামিলি রাজি না হয় ততদিন তারা স্বামী স্ত্রী এর মত রাত কাটাবে না, অর্থাৎ সহবাস করবে না।ছেলে এই শর্তে রাজি।ইসলামিক মতে এই বিয়ে করলে কি বিয়ে হবে? জেনা হবে নাতো?

উত্তর গুলো hae/ na আকারে দিলেই হবে।

1 Answer

0 votes
by (671,200 points)
edited by
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


(০১)
মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ 

اِنۡ تَکۡفُرُوۡا فَاِنَّ اللّٰہَ غَنِیٌّ عَنۡکُمۡ ۟ وَ لَا یَرۡضٰی لِعِبَادِہِ الۡکُفۡرَ ۚ وَ اِنۡ تَشۡکُرُوۡا یَرۡضَہُ لَکُمۡ ؕ وَ لَا تَزِرُ وَازِرَۃٌ وِّزۡرَ اُخۡرٰی ؕ ثُمَّ اِلٰی رَبِّکُمۡ مَّرۡجِعُکُمۡ فَیُنَبِّئُکُمۡ بِمَا کُنۡتُمۡ تَعۡمَلُوۡنَ ؕ اِنَّہٗ عَلِیۡمٌۢ بِذَاتِ الصُّدُوۡرِ ﴿۷﴾ 

যদি তোমরা কুফরী কর তবে (জেনে রাখ) আল্লাহ তোমাদের মুখাপেক্ষী নন। আর তিনি তার বান্দাদের জন্য কুফরী পছন্দ করেন না। এবং যদি তোমরা কৃতজ্ঞ হও তবে তিনি তোমাদের জন্য তা-ই পছন্দ করেন। আর কোন বোঝা বহনকারী অপরের বোঝা বহন করবে না। তারপর তোমাদের রবের কাছেই তোমাদের ফিরে যাওয়া। তখন তোমরা যা আমল করতে তা তিনি তোমাদেরকে অবহিত করবেন। নিশ্চয় অন্তরে যা আছে তিনি তা সম্যক অবগত।
(সুরা আয যুমার ০৭)

وَ لَا تَزِرُ وَازِرَۃٌ وِّزۡرَ اُخۡرٰی

কোনো ব্যাক্তি অন্য কোনো ব্যাক্তির গুনাহের বোঝা বহন করবেনা।
(সুরা ফাতির ১৮)

অর্থাৎ কেয়ামতের দিন কোন মানুষ অন্য মানুষের পাপভার বহন করতে পারবে না। প্রত্যেককে নিজের বোঝা নিজেই বহন করতে হবে। “বোঝা” মানে কৃতকর্মের দায়দায়িত্বের বোঝা। এর অর্থ হচ্ছে, আল্লাহর কাছে প্রত্যেক ব্যক্তি নিজেই তার কাজের জন্য দায়ী এবং প্রত্যেকের ওপর কেবলমাত্র তার নিজের কাজের দায়-দায়িত্ব আরোপিত হয়। এক ব্যক্তির কাজের দায়-দায়িত্বের বোঝা আল্লাহর পক্ষ থেকে অন্য ব্যক্তির ঘাড়ে চাপিয়ে দেবার কোন সম্ভাবনা নেই। কোন ব্যক্তি অন্যের দায়-দায়িত্বের বোঝা নিজের ওপর চাপিয়ে নেবে এবং তাকে বাঁচাবার জন্য তার অপরাধে নিজেকে পাকড়াও করাবে  এরও কোন সম্ভাবনা নেই।
,
প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,    
প্রশ্নে উল্লেখিত বিবাহের দাওয়াতে আপনার সেই বন্ধু যদি নারীদের জন্য পর্দার সহিত আলাদা স্থানের ব্যাবস্থা রাখেন,তারপরেও এক্ষেত্রে কোনো নারী বেপর্দা ভাবে চলে,বেপর্দা ভাবে ছবি তোলে,হারাম কাজ করে,তাহলে তার গুনাহ তার উপরেই বর্তাবে।
আপনার বন্ধুর উপর নয়।
,
কেননা আপনার সেই বন্ধু শরীয়াহ নীতিমালা মেনেই দাওয়াতে নারীদের জন্য পর্দার সহিত আলাদা স্থানের ব্যাবস্থা রেখেছিলেন।
,
পক্ষান্তরে আপনার বন্ধু যদি উক্ত দাওয়াতে নারীদের জন্য  শরীয়াহ নীতিমালা মেনে পর্দার সহিত আলাদা স্থানের ব্যাবস্থা না রেখে থাকেন,তাহলে তাদের গুনাহের ভাগীদার আপনার সেই বন্ধুকেও হতে হবে।
কেননা মূলত সেই দাওয়াতের মাধ্যমে বেপর্দা হওয়ার কাজে আপনার বন্ধুর সহযোগিতা ছিলো। 

আরো জানুনঃ- 

(০২)
আপনি যদি হজ্জে যান,তাহলে আপনার হজ্জ আদায় হবে।
শুধুমাত্র আপনার স্বামী হজ্জে গেলে আপনার হজ্জ আদায় হবেনা।

(০৩)
গুনাহ হবেনা।
তবে বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া এভাবে টাকা/গিফট  চাওয়া সমীচীন নয়।

(০৪)
গুনাহ হবেনা।

(০৫)
আপনি তার নির্দিষ্ট কোনো দোষ বলেননি,তাই প্রশ্নের বিবরণ মতে আপনার গুনাহ হবেনা।

(০৬)
বিষয়টিকে পাত্তা দেয়া যাবেনা। ভ্রুক্ষেপ করা যাবেনা
কোনো আমল বাদ দেয়া যাবেনা।

তাহলেই ইনশাআল্লাহ আস্তে-ধীরে সমাধান পাবেন।

(০৭)
সাহু সেজদাহ দিতে হবেনা।
তবে আপনি যদি কোনোরকমে না দাঁড়িয়েই অনেকটা রুকু থেকে সেজদায় যাওয়ার মতো কাজ করেন,তাহলে সেজদায়ে সাহু ওয়াজিব হবে। 

(০৮)
এটি তার প্রতি আপনার মুহাব্বতের বহিঃপ্রকাশ। 
সম্ভবত তাকে দাওয়াত খাওয়ানোর সুযোগও আপনার হতে পারে।

(০৯)
একজনের গুনাহের বোঝা অন্যের হবেনা।

তাই প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে পুত্রবধূকে জোড় করে যেনা করা হলে পুত্রবধূর ও ছেলের গুনাহ হবেনা।
তবে হুরমতে মুসাহারাত প্রমানিত হওয়ায় তাদের বৈবাহিক সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যাবে।

এটিই শরীয়তের বিধান। 
যাহা যুক্তি দিয়ে চলেনা।

(১০)
হ্যাঁ, এই শর্তে বিবাহ করলে তাহা শুদ্ধ হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...