আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
84 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (49 points)

১. ওযু করার আগে আমি সাধারনত পেশাব করে নেই। পেশাব করার পর তাড়াহুড়ো না করে লজ্জাস্থান ঝেড়ে নেই যাতে পেশাব থাকলে টা বের হয়। ভালো করে পরিষ্কার করে নেই।  তারপরও নামাজ পরতে গেলে অনেকসময় মনে হয় যে পেশাব এর ফোঁটা বের হয়েছে। পরে চেক করলে দেখি, কাপড়ে কোন ফোটার ছাপ নেই। এরকম প্রায়ই হয়, আর দেখি কোনও নাপাকীর ফোটার ছাপ নেই। আমি ওযুর পর লজ্জাস্থানে পানি ছিটিয়ে দেই, তাও এমন হয়।

এ অবস্থায়, এরকম হলে কি করব? আমি কি চেক না করে নামাজ চালিয়ে যাবো? পরে যদি আসলেই ফোঁটা পরে? 

 

২. ওযু ভঙ্গের কারণ হিসেবে আছে রক্ত গড়িয়ে পড়লে ওযু ভেঙে যায়, এর বিস্তারিত ব্যাখ্যা জানতে চাই। আর এর দলীল কি?

 

৩.  হাদীসে আছে,  রাসূলাল্লাহ (সা) বলেন, তোমাদের প্রতেকেই জান্নাতে প্রবেশ করবে, কিন্তু যে অস্বীকার করবে। যে আমার অবাধ্য হবে সেই অস্বীকার করবে।

এখানে কি রকম অবাধ্য উদ্দেশ্য? আমরা যদি কোন সুন্নতের গুরুত্ব স্বীকার করি, তা না পালন করতে পারলে অন্তরে কষ্ট পাই কিন্তু কোনো কারনে না পালন করি, তবুও কি হাদীসের অনুযায়ী আমরা রাসূলের (সা) এর অবাধ্য??

 

৪. আরেকটি হাদীস হলো, রাসুল (সা) বলেছেন,  আল্লাহ তায়ালা প্রত্যেক বিদআতির তওবা ততখন পর্যন্ত কবুল করেন না যতখন না সে তার বিদআত ত্যাগ করে।  - তাবরানী, সহিহ তারগীব

এ হাদীসের অর্থ কি বিদআতীদের কোনো গুনাহের তওবা আল্লাহ তায়ালা কবুল করেন না??

1 Answer

0 votes
by (677,120 points)
edited by
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


(০১)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
  
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، وَمُحَمَّدُ بْنُ أَحْمَدَ بْنِ أَبِي خَلَفٍ، قَالَا حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ، وَعَبَّادِ بْنِ تَمِيمٍ، عَنْ عَمِّهِ، قَالَ: شُكِيَ إِلَى النَّبِيِّ صلي الله عليه وسلم الرَّجُلُ يَجِدُ الشَّىْءَ فِي الصَّلَاةِ حَتَّى يُخَيَّلَ إِلَيْهِ فَقَالَ " لَا يَنْفَتِلُ حَتَّى يَسْمَعَ صَوْتًا أَوْ يَجِدَ رِيحًا " . - صحيح 

 ‘আব্বাদ ইবনু তামীম হতে তাঁর চাচার সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে অভিযোগ করল যে, কখনো সলাতের মধ্যে কিছু একটা সন্দেহ হয় যে, তার অযু হয়ত নষ্ট হয়ে গেছে। তিনি বললেন, (বায়ু নির্গত হওয়ার) শব্দ না শুনা কিংবা গন্ধ না পাওয়া পর্যন্ত সলাত ছাড়বে না।
বুখারী (অধ্যায়ঃ উযু, অনুঃ নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত সন্দেহ বশতঃ উযু করতে হবে না, হাঃ ১৩৭), মুসলিম,আবু দাউদ ১৭৬।

এ হাদীস দ্বারা উদ্দেশ্য হল- অযু ভাঙ্গার ব্যাপারে পরিপূর্ণ নিশ্চিত হওয়া ছাড়া আপনি এটাই মনে করবেন যে, আপনার অযু ভাঙ্গে নি। 

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরত গুলোতে আপনি নামাজের মধ্যে পেশাব বের হওয়া সম্পর্কে নিশ্চিত হলে অযু করতে যাবেন।
যদি নামাজের মধ্যে পেশাব বের হওয়া সম্পর্কে সন্দেহ সৃষ্টি হয়,যেমনটি প্রশ্নে উল্লেখ রয়েছে,সুতরাং এক্ষেত্রে আপনি নামাজের পর চেক করবেন।
পেশাবের চিন্হ/গন্ধ পেলে পুনরায় অযু করে উক্ত নামাজ আদায় করবেন।
 
নামাজের পর চেক করার সময় পেশাবের চিন্হ/গন্ধ না পাওয়া পেলে আপনার উক্ত নামাজ শুদ্ধ হয়ে গিয়েছে,বলে ধরবেন।

(০২)
এ সংক্রান্ত জানুনঃ 

(০৩)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ كُلُّ أُمَّتِي يَدْخُلُونَ الْجَنَّةَ اِلَّا مَنْ أَبى قِيْلَ وَمَنْ أْبى قَالَ مَنْ أَطَاعَنِي دَخَلَ الْجَنَّةَ وَمَنْ عَصَانِي فَقَدْ أَبى. رَوَاهُ الْبُخَارِيُّ

আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ‘আমার সকল উম্মাত জান্নাতে যাবে, যে অস্বীকার করবে সে ব্যতীত। জিজ্ঞেস করা হলো, কে অস্বীকার করবে? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, যারা আমার আনুগত্য স্বীকার করেছে তারা জান্নাতে যাবে। আর যে ব্যক্তি আমার অবাধ্য হলো সে-ই (জান্নাতে যেতে) অস্বীকার করলো (অতএব সে জাহান্নামে প্রবেশ করবে)।
(সহীহ : বুখারী ৭২৮০, সহীহ আল জামি‘ ৪৫১৩, আহমাদ ৮৭২৮, সহীহাহ্ ৩১৪১।)

উক্ত হাদীসের ব্যাখ্যায় বলা হয়েছেঃ
রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বাণীঃ আমার উম্মাতের সকলেই জান্নাতে যাবে। এখানে উম্মাত দ্বারা ঐ সকল উম্মাত হতে পারে যাদের নিকট রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর দা‘ওয়াত পৌঁছেছে অথবা যারা তাঁর দা‘ওয়াত কবূল করেছে। অসম্মতি প্রকাশকারীর দ্বারা উদ্দেশ্য হবে নাফরমান ব্যক্তি বা পাপী।

অতএব, হাদীসের মূল বক্তব্য হচ্ছে, কিতাব ও সুন্নাহকে ধারণ করার মাধ্যমে যে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর আনুগত্য করবে সেই জান্নাতে প্রবেশ করবে। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি প্রবৃত্তির অনুসরণ করে সিরাতে মুস্তাক্বীম তথা সঠিক পথ থেকে বিচ্যুত হয়ে যাবে সেই জাহান্নামে যাবে। ইমাম বাগাভী (রহঃ) এ হাদীসটিকে ‘‘কিতাব ও সুন্নাতকে আঁকড়িয়ে ধারণ করা’’ পূর্বক অধ্যায়ে নিয়ে আসা এবং তাতে আনুগত্য শব্দটিকে উল্লেখ করা দ্বারা উপরোক্ত ব্যাখ্যার গুরুত্ব বহন করে। কেননা, আনুগত্যশীল ব্যক্তিই কিতাব ও সুন্নাহকে আঁকড়িয়ে ধারণ করে এবং প্রবৃত্তির চাহিদা ও বিদ্‘আতী কার্যক্রম থেকে বিরত থাকে।

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই.
যদি সেই সুন্নাতটি সুন্নাতে মুয়াক্কাদা হয়,আর তাহা বিনা ওযরে ছেড়ে দেওয়াকে কেহ অভ্যাসে পরিণত করে,তাহলে সে এই হাদীসের অন্তর্ভুক্ত হবে।   
রাসুলের অবাধ্য হবে।

(০৪)
এই বিদআতি দের কোনো গুনাহের তওবাই কবুল হবেনা,বিষয়টি এই হাদীস থেকে বুঝায়না। 
বরং এখানে উদ্দেশ্য হলো বিদ'আতি কাজ চালিয়ে যাওয়া পর্যন্ত  উক্ত বিদ'আত থেকে তওবা করা হলে 
সেটি কবুল হবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...