আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
156 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (4 points)

আমার প্রশ্ন হলো,

দরুন,স্বামী-স্ত্রীর দুনিয়াতে তাদের দুজনরেই একে অপরের প্রথম বিয়ে।

এখন তারা যদি উভয়ই জান্নাতি হয়,তখনকি ঐ জান্নাতি নারী তার দুনিয়ার স্বামীর সাথেই থাকতে হবে/বাধ্যতামূলক?

*নাকি সে চাইলে একা জীবন জাপন করতে পারবে?

* বা চাইলে অন্য জান্নাতী পুরুষকে বিয়ে করতে পারবে?

1 Answer

0 votes
by (574,050 points)
edited by
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


জান্নাতী নারীর স্বামীও যদি জান্নাতি হয়,তাহলে সে জান্নাতে তাকেই স্বামী হিসেবে পাবে, যার কাছ থেকে সে ইহলোক ত্যাগ করেছে। 

কেননা পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেছেন, ‘জান্নাতে প্রবেশ করো তোমরা এবং তোমাদের স্ত্রীরা সানন্দে।’ (সুরা : জুখরুফ, আয়াত : ৭০)

এ বিষয়ে হাদিসে এসেছে, হুজায়ফা (রা.) তাঁর স্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, ‘যদি তোমাকে এই বিষয়টি আনন্দিত করে যে তুমি জান্নাতে আমার স্ত্রী হিসেবে থাকবে, তাহলে আমার পর আর বিয়ে কোরো না। কেননা জান্নাতে নারী তার দুনিয়ার সর্বশেষ স্বামীর সঙ্গে থাকবে। এ জন্যই রাসুলুল্লাহ (সা.) মৃত্যুর পর তাঁর স্ত্রীদের জন্য অন্য কারো সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়া হারাম করা হয়েছে। কেননা তাঁরা জান্নাতে তাঁরই স্ত্রী হিসেবে থাকবেন।’ (বায়হাকি, সুনানে কুবরা, হাদিস : ১৩৮০৩)

আবু দারদা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘একজন নারী তার সর্বশেষ স্বামীর জন্যই থাকবে।’ (জামে সাগির : হাদিস : ৬৬৯১, সিলসিলা সহিহাহ, হাদিস : ১২৮১)

আল্লামা আলুসি বাগদাদী রাহঃ বলেনঃ 

 ﻭﻳﻌﻄﻲ ﺍﻟﺮﺟﻞ ﻫﻨﺎﻙ ﻣﺎ ﻛﺎﻥ ﻟﻪ ﻓﻲ ﺍﻟﺪﻧﻴﺎ ﻣﻦ ﺍﻟﺰﻭﺟﺎﺕ ، ﻭﻗﺪ ﻳﻀﻢ ﺇﻟﻰ ﺫﻟﻚ ﻣﺎ ﺷﺎﺀ ﺍﻟﻠﻪ ﺗﻌﺎﻟﻰ ﻣﻦ ﻧﺴﺎﺀ ﻣُﺘْﻦَ ﻭﻟﻢ ﻳﺘﺰﻭﺟﻦ .

জান্নাতি পুরুষদেরকে তার পৃথিবীর স্ত্রী দেওয়া হবে,সাথে সাথে ঐ সমস্ত মহিলাকেও তাকে দেওয়া হতে পারে যে মহিলা মারা গেছে এবং বিবাহ হয়নি।

ﻭﻣﻦ ﺗﺰﻭﺟﺖ ﺑﺄﻛﺜﺮ ﻣﻦ ﻭﺍﺣﺪ : ﻓﻬﻲ ﻵﺧﺮ ﺃﺯﻭﺍﺟﻬﺎ ، ﺃﻭ ﻷﻭﻟﻬﻢ ﺇﻥ ﻟﻢ ﻳﻜﻦ ﻃﻠﻘﻬﺎ ﻓﻲ ﺍﻟﺪﻧﻴﺎ ، ﺃﻭ ﺗﺨﻴﺮ ﻓﺘﺨﺘﺎﺭ ﻣﻦ ﻛﺎﻥ ﺃﺣﺴﻨﻬﻢ ﺧﻠﻘﺎً ﻣﻌﻬﺎ ، ﺃﻗﻮﺍﻝ : ﺻﺤﺢ ﺟﻤﻊ ﻣﻨﻬﺎ ﺍﻷﻭﻝ ، ﻭﺗﻌﻄﻰ ﺯﻭﺟﺔ ﻛﺎﻓﺮ ﺩﺧﻠﺖ ﺍﻟﺠﻨﺔ ﻟﻤﻦ ﺷﺎﺀ ﺍﻟﻠﻪ ﺗﻌﺎﻟﻰ "

ঐ মহিলা যে দুনিয়াতে দুই বা ততোধিক স্বামীর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিল,সে সর্বশেষ স্বামীর সাথে জান্নাতে থাকবে,অথবা প্রথম স্বামীর সাথে থাকবে( যদি বিবাহ বিচ্ছেদ না হয়ে থাকে),অথবা স্ত্রীকে এখতিয়ার দেয়া হবে।
আহলে কিতাবের মু'মিন স্ত্রীকে আল্লাহ যাকে ইচ্ছা তার সাথে বিবাহ দিবেন।(রুহুল মা'আনী-২৫/১৩৬)

জান্নাতী হুর পুরুষকে দেয়া হবে,মহিলাকে তাদের সর্দার বানানো হবে,মহিলারা জান্নাতে একজন স্বামী নিয়েই সন্তুষ্ট থাকবে,তারা অন্য কাউকে চাইবে না।বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- https://www.ifatwa.info/5365

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
জান্নাতী নারী জান্নাতী তার স্বামীকে নিয়েই সন্তুষ্ট থাকবে,সে অন্য কাউকে চাইবেনা,আবার এই স্বামীকে বাদ দিয়ে অন্য স্বামীর সাথেও থাকতে চাইবেনা।
,
তবে তারপরেও কোনো জান্নাতী স্বামী ও স্ত্রী যদি জান্নাতে গিয়ে মহান আল্লাহর কাছে আশা করে যে তারা এক সাথে থাকবেনা,স্ত্রী অন্য স্বামীকে গ্রহন করতে চাইলে আর স্বামীও তাতে রাজি হলে তাদের এই আশা কবুল করা হবে,ইনশাআল্লাহ। 

আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেন,

ادْخُلُوا الْجَنَّةَ أَنتُمْ وَأَزْوَاجُكُمْ تُحْبَرُونَ يُطَافُ عَلَيْهِم بِصِحَافٍ مِّن ذَهَبٍ وَأَكْوَابٍ وَفِيهَا مَا تَشْتَهِيهِ الْأَنفُسُ وَتَلَذُّ الْأَعْيُنُ وَأَنتُمْ فِيهَا خَالِدُونَ وَتِلْكَ الْجَنَّةُ الَّتِي أُورِثْتُمُوهَا بِمَا كُنتُمْ تَعْمَلُونَ لَكُمْ فِيْهَا فَاكِهَةٌ كَثِيْرَةٌ مِّنْهَا تَأْكُلُوْنَ.

‘তোমরা এবং তোমাদের স্ত্রীরা জান্নাতে প্রবেশ কর তোমাদেরকে সন্তুষ্ট করে দেওয়া হবে। তাদের সামনে সোনার থালা ও পানপাত্রসমূহ পরিবেশন করা হবে এবং মন ভুলানো ও দৃষ্টির পরিতৃপ্তকারী জিনিস সমূহ সেখানে থাকবে। তাদেরকে বলা হবে এখন তোমরা চিরদিন এখানেই থাক। তোমরা পৃথিবীতে যে নেক আমল করেছিলে সে সব আমলের দরুন তোমরা এ জান্নাতের উত্তরাধিকারী হয়েছ। তোমাদের জন্য এখানে প্রচুর ফল-ফলাদী রয়েছে যা তোমরা খাবে’ (যুখরূফ ৭০-৭৩)।

★উল্লেখ্য যে প্রশ্নে উল্লেখিত বিষয় যদিও বাধ্যতামূলক নয়,তবে জান্নাতী স্বামী ও স্ত্রীকে একে অপরের জন্য মহান আল্লাহ তায়ালা এমন আকর্ষনীয় রুপে সৃষ্টি করবেন,তাতে স্ত্রী নিজ স্বামী ব্যাতিত অন্য স্বামী গ্রহন করার আগ্রহই প্রকাশ করবেনা। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...