জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
নিজ স্ত্রী ও অধীনস্থ দাসীদের ছাড়া অন্য কারোর সাথে সহবাস হারাম। এ কথাটা সত্য।
মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ-
وَ الَّذِیۡنَ ہُمۡ لِفُرُوۡجِہِمۡ حٰفِظُوۡنَ ۙ﴿۵﴾
আর যারা নিজেদের যৌনাঙ্গকে রাখে সংরক্ষিত।
(সুরা মুমিনুন ০৫)
اِلَّا عَلٰۤی اَزۡوَاجِہِمۡ اَوۡ مَا مَلَکَتۡ اَیۡمَانُہُمۡ فَاِنَّہُمۡ غَیۡرُ مَلُوۡمِیۡنَ ۚ﴿۶﴾
নিজেদের স্ত্রী বা অধিকারভুক্ত দাসীগণ ছাড়া, এতে তারা হবে না নিন্দিত।
(সুরা মুমিনুন ০৬)
পূর্ণ মুমিনের এটি চতুর্থ গুণঃ তা হচ্ছে, যৌনাঙ্গকে হেফাযত করা। তারা নিজের দেহের লজ্জাস্থানগুলো ঢেকে রাখে। অর্থাৎ উলংগ হওয়া থেকে নিজেকে রক্ষা করে এবং অন্যের সামনে লজ্জাস্থান খোলে না। আর তারা নিজেদের লজ্জাস্থানের সততা ও পবিত্ৰতা সংরক্ষণ করে। অৰ্থাৎ যৌন স্বাধীনতা দান করে না এবং কামশক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রে লাগামহীন হয় না। অর্থাৎ যারা স্ত্রী ও যুদ্ধলব্ধ দাসীদের ছাড়া সব পর নারী থেকে যৌনাঙ্গকে হেফাযতে রাখে এবং এই দুই শ্রেণীর সাথে শরীআতের বিধি মোতাবেক কামপ্রবৃত্তি চরিতার্থকরা ছাড়া অন্য কারও সাথে কোন অবৈধ পন্থায় কামবাসনা পূর্ণ করতে প্ৰবৃত্ত হয় না।
★★ইসলামে দাসীর সাথে শারীরিক সম্পর্কের যৌক্তিকতা ও লুকায়িত হিকমাহ গুলো নিচে উল্লেখ করা হলোঃ
(১) পূর্বে দাসীদেরকে যে কেউই ব্যবহার করতে পারত এমনকি একই পরিবারের অনেক সদস্য তাদেরকে ভোগ করতে পারত। তবে ইসলাম শুধুমাত্র মালিকের জন্যই বৈধ করেছে। এতে প্রাচীনকালে যেমন যুদ্ধ শেষে নারীদেরকে ধর্ষন করা হত, বা তাদেরকে বিভিন্ন অনৈতিক কাজে বাধ্য করা হত। ইসলাম সেই সুযোগকে মিটিয়ে দিয়েছে। ইসলামে বৈধভাবে মালিকানাপ্রাপ্ত মালিকের সাথে দাসীর শারীরিক সম্পর্কের সুযোগ রেখে নারীকে বেইজ্জতি থেকে বাচিয়েছে, তাদেরকে সম্মানিত করেছে, তাদেরকে নতুন একটি পরিবার দিয়েছে, তাদেরকে অন্ন-বস্ত্র,বাসস্থানের নিশ্চয়তা দিয়েছে।
,
(২) মালিক ও দাসীর সম্পর্ক অবশ্যই ঘোষনা করতে হবে। যাতে লোকমনে তাদের দুইজনের ব্যাপারে কোন প্রকার সন্দেহ ও সংশয় না থাকে। এতে করে নারীটি পায় যথার্থ সম্মান ও মর্যাদা।
,
(৩) এর ফলে দাসীটির শারীরিক চাহিদা পূরনের একটি সুষ্ঠু ব্যবস্থা হয়, এতে একদিকে দাসীটির স্বাভাবিক চাহিদা পূরন হয় অন্যদিকে দাসীটি চাহিদা পূরন না করতে পেরে অবৈধ কোনো পন্থা বেছে নিবেনা এতে রাষ্ট্রে চারিত্রিক পবিত্রতা ও শৃংখলা বজায় থাকব।
,
(৪) মালিকের জন্য দাসীকে বিয়ে করা জায়েজ।
সূরা নিসা ৪ঃ২৫।
যেমন হাদীছে এসেছে, যে ব্যক্তি দাসীকে উত্তম রুপে লালন-পালন, প্রতিপালন করে, তার প্রতি ইহসান করে, তাকে মুক্ত করে বিবাহ করে তার জন্যে আছে দ্বিগুন সওয়াব;
সহীহ বুখারী, ইফা, হা-২৩৭৬, ২৩৭৯।
,
(৫) দাসীকে কোনোমতেই সহবাসে জোর করা যাবেনা যেমনটা রোমান সমাজে প্রচলন ছিলো।
(৬) দাসীকে অন্ন-বস্ত্রের নিশ্চয়তা দিতে হবে, সাথে উত্তম আচরন করতে হবে।
(৭) দাসী যদি উম্মুল ওয়ালাদ অর্থ ওই মালিকের সন্তানের জননী হয় তবে ওই দাসী বিক্রি হারাম হয়ে যাবে। হাদীছে এসেছে, তোমরা উম্মুল ওয়ালাদ বিক্রি করোনা।
সিলসিলাহ সহীহাহ, ৫/৫৪০, হা-২৪১৭
আর ওই দাসী মালিকের মৃত্যুর পরে মুক্ত হয়ে যাবে।
এতে যেমন দাসীর মুক্ত হওয়ার সুযোগ আছে, তেমনি সন্তানের পিতৃপরিচয়ের নিশ্চয়তা আছে। আর সন্তান ও মুক্ত বলে বিবেচিত হবে।
,
(৮) দাসীর জন্য এ সুযোগ ও রয়েছে সে মালিকের কাছে দাসত্ব থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য আবেদন করতে পারে এবং দাসত্ব থেকে মুক্তি পেতে পারে।
,
(৯) সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো এতে দাসী খুব কাছ থেকে ইসলাম সম্পর্কে জানতে, বুঝতে, উপলব্ধি করতে পারে। এতে হয়ত সে ইসলাম গ্রহন করে নিতে পারে, যা তার জন্যে চিরস্থায়ী জাহান্নাম থেকে মুক্তি আর চিরশান্তির জান্নাতের নিশ্চয়তা দিতে পারে।
বিস্তারিত জানুনঃ-