আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
192 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (4 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকা তুহ।
আমার যখন ৪ বছর তখন আমার বাবা মার বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে।বড় হয়ে জানতে পারি বিচ্ছেদের কারণ আমার বাবা আমার মামাদের মেরে ফেলতে চেয়েছিল আমার নানা বাড়ির সম্পদের লোভে।আমার নানার বাড়ির দলিল একবার চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়ে। আমার ছোট মামাকে চুরির আঘাতও করেছে। ফলে আমার মা বুঝতে পারায় আমার মাকে অনেক মারধর করতো।ফলে নিরাপত্তা আশঙ্কায় আমার মা ডিভোর্সের সিদ্ধান্ত নেয়।পরে দুই পক্ষের সম্মতিতে ডিভোর্স হয়।

আমার বাবা মায়ের বিবাহ বিচ্ছেদের পর আমার বাবা আমাদের তিন বোনের ভরনপোষণ দায়িত্ব পালন করছে না।আজ থেকে ১৭বছর আগে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে। আমরা তখন থেকেই নানাবাড়িতে থাকি।পড়াশোনা, ভরনপোষন সবই আমার নানা মামারা এখনো দিচ্ছে।পড়াশোনার ক্ষেএে আমাদের প্রেক্ষাপটে বাবার সকল তথ্য প্রয়োজন হয়।কিন্তু তিনি আমাদের খোঁজ খবর না নিয়ায় আমরা বিভিন্ন বিব্রত পরিস্থিতির শিকার হয়।তখন আমাদের এই পরিস্থিতি থেকে বাচানোর জন্য আমাদের সকল কাগজপত্রে বাবাকে মৃত দিয়া হয়েছে। এতে করে আমাদের অভিভাবক হিসেবে মামাদের তথ্য গ্রহনযোগ্য হয়।মায়ের সাথে যোগাযোগ থাকায় তার সকল তথ্য ব্যবহার করতে পারছি।কিন্তু শুধু মায়ের তথ্য দিলে হয় নি। কারণ  তিনি এখন আমাদের সাথে থাকে না। আমার বাবা মা দুই জনেরই আবার বিয়ে হয়েছে এবং তারা আলাদা সংসার করছে।তাদের সন্তান আছে দুই সংসারে। আমার বাবা কোথায় আছে, কেমন আছে, কিছু জানি না অনেক  বছর হয়ে গেছে।
১.এখন এই পরিস্থিতিতে আমরা আমাদের বাবাকে মৃত বলতে পারবো কি না?কিন্তু তিনি মৃত নয়।এতে আমাদের মিথ্যা হচ্ছে কি না?আমি শুনেছিলাম বাবা যদি খোঁজ খবর না নেয় তাহলে তাকে মৃত বলে ঘোষণা দিয়া যায় এটা কি সঠিক?
২.যদি মৃত না বলা যায় তাহলে কেউ জিজ্ঞেস করলে কি উওর দিয়া উচিত হবে? কারন প্রথমেই ডিভোর্সের কথা শুনলে সামাজিক প্রেক্ষাপটে তা নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। ডিভোর্সের কথা বললে সবাই কেমন যেন অন্য চোখে দেখে। এমনকি বিবাহের ক্ষেত্রে ও কোনো সম্পর্ক আসলে বাবা মার ডিভোর্স শুনলে কথা আগায় না।

৩.সন্তান হিসেবে আমাদের কি করনীয়?

1 Answer

0 votes
by (574,050 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حديث عَائِشَةَ، قَالَتْ: اخْتَصَمَ سَعْدُ بْنُ أَبِي وَقَّاصٍ وَعَبْدُ بْنُ زَمْعَةَ فِي غُلاَمٍ؛ فَقَالَ سَعْدٌ: هذَا، يَا رَسُولَ اللهِ ابْنُ أَخِي عُتْبَةَ بْنِ أَبِي وَقَّاصٍ، عَهِدَ إِلَيَّ أَنَّهُ ابْنُهُ، انْظُرْ إِلَى شَبَهِهِ، وَقَالَ عَبْدُ بْنُ زَمْعَةَ: هذَا أَخِي، يَا رَسُولَ اللهِ وُلِدَ عَلَى فِرَاشِ أَبِي مِنْ وَلِيدَتِهِ فَنَظَرَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلَى شَبَهِهِ فَرَأَى شَبَهًا بَيِّنًا بِعُتْبَةَ، فَقَالَ: هُوَ لَكَ يَا عَبْدُ، الْوَلَدُ لِلْفِرَاشِ وَلِلْعَاهِرِ الْحَجَرُ، وَاحْتَجِبِي مِنْهُ يَا سَوْدَة بِنْتَ زَمْعَةَ فَلَمْ تَرَهُ سَوْدَةُ قَطُّ

‘আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, সা'দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস ও ‘আব্দ ইবনু যাম'আ উভয়ে এক বালকের ব্যাপারে বিতর্ক করেন। সা'দ (রাঃ) বলেন, হে আল্লাহর রাসূল! এতো আমার ভাই উতবা ইবনু আবী ওয়াক্কাসের পুত্র। সে তার পুত্র হিসাবে আমাকে ওয়াসিয়্যত করে গেছে। আপনি ওর সাদশ্যের প্রতি লক্ষ্য করুন। ‘আবদ ইবন যাম'আ বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! এ আমার ভাই, আমার পিতার দাসীর গর্ভে জন্মগ্রহণ করে। তখন আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার চেহারার দিকে তাকিয়ে দেখতে পেলেন যে, উতবার সাথে তার পরিষ্কার সাদৃশ্য রয়েছে। তিনি বললেন, এ ছেলেটি তুমি পাবে, হে আব্দ ইবনু যাম'আ! বিছানা যার, সন্তান তার। ব্যভিচারীর জন্য রয়েছে বঞ্চনা। হে সাওদাহ বিনতু যাম‘আ! তুমি এর হতে পর্দা কর। ফলে সাওদাহ (রাঃ) কখনও তাকে দেখেননি।
(সহীহুল বুখারী, পর্ব ৩৪ ; ক্রয়-বিক্ৰয়, অধ্যায় ১০০, হাঃ ২২১৮; মুসলিম, পৰ্ব ১৭: দুগ্ধপান, অধ্যায় ১০, হাঃ ১৪৫৭)

عَنْ سَعْدٍ قَالَ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ مَنْ ادَّعَى إِلَى غَيْرِ أَبِيهِ وَهُوَ يَعْلَمُ أَنَّهُ غَيْرُ أَبِيهِ فَالْجَنَّةُ عَلَيْهِ حَرَامٌ

‘সা‘দ (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূল(সা.)-কে বলতে শুনেছি, যে অন্যকে নিজের পিতা বলে দাবি করে অথচ সে জানে যে সে তার পিতা নয়, জান্নাত তার জন্য হারাম।’ [সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬৭৬৬]

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে যেকোনো প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস ইত্যাদিতে আপনার বাবার নাম লিখতে হবে।
এখানে মৃত লেখা যাবেনা।
মৃত লিখলে তাহা মিথ্যা ও ধোকার অন্তর্ভুক্ত হবে।
যাহা শরীয়তে জায়েজ নেই।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ غَشَّنَا فَلَيْسَ مِنَّا»

হযরত আবু হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ যে ধোঁকা দেয়, সে আমার উম্মতের অন্তর্ভূক্ত নয়। {মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-২৩১৪৭, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-১৬৪, সুনানে দারেমী, হাদীস নং-২৫৮৩, সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-২২২৫, সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৪৯০৫}

قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «الْمُسْلِمُونَ عَلَى شُرُوطِهِمْ

হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ মুসলমানগণ তার শর্তের উপর থাকবে। {সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৩৫৯৪, সুনানে দারা কুতনী, হাদীস নং-২৮৯০, শুয়াবুল ঈমান, হাদীস নং-৪০৩৯}

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
(০১)
এমতাবস্থায় আপনার বাবাকে মৃত বলতে পারবেননা।

প্রশ্নে উল্লেখিত তথ্য সঠিক নয়।

(০২)
এক্ষেত্রে মিথ্যা কার্যকরী ও স্থায়ী সমাধান নয়।
এখানে বাবার কথা আলোচনা করলে বলতে পারেন যে বাবা দূরে থাকে,আমাদের কোনো খোজ খবর রাখেনা।
আমাদের কোনো দায়িত্ব পালন করেনা।

(০৩)
আপনারা প্রত্যেক ক্ষেত্রে বাবার পরিচয় দিবেন।
পরিচয় গোপন করিবেননা।

আরো জানুনঃ- 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...