আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
1,696 views
in সালাত(Prayer) by (38 points)
আসসালামু আলাইকুম, শায়েখ। নামাজে ইমামের বরাবর পিছনে মুয়াজ্জিন দাঁড়ান এবং তার দুই পাশে বাকি মুসল্লীরা দাঁড়ান। যদি এমন হয় ইমামের একটু পিছনে ডানে মুয়াজ্জিন দাঁড়িয়েছেন তখন কীভাবে বাকি মুসল্লীরা দাঁড়াবে এবং যদি ১ম দুই কাতার পূর্ণ থাকে তখন ৩য় কাতার কোন জায়গা থেকে শুরু হবে? আমি কিছু মানুষকে মাঝখান থেকে শুরু করতে দেখেছি আবার কিছু মানুষকে ডান দিক থেকে শুরু করতে দেখেছি। জাযাকুমুল্লাহ খাইর।

1 Answer

0 votes
by (566,400 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 

নামাজের কাতারের ক্ষেত্রে সর্বপ্রথম ইমামের পিছনে দাড়াবে।
وینبغي أن یکون بحذاء الإمام من ہو أفضل۔ (الفتاویٰ الہندیۃ ۱؍۸۹) 
ইমামের পিছনে দাড়ানো ব্যাক্তি উত্তম। 
অতঃপর তার ডানদিকে,তারপর তার বাম দিকে।
উভয় দিকে বরাবর মুক্তাদি যখন হবে,তখন ইমাম মাঝে দাড়াবে।
 (ফাতাওয়ায়ে  দারুল উলুম  ৩/২৩০)

وینبغی للامام ان یقف بازاء الوسط فان وقف فی میمنۃ الوسط اوفی مسیرتہ فقد اساء لمخا لفۃا لسنۃ ھکذا فی التبیین الخ فان تساوت المواضع ففی یمین الا مام وھو الا حسن (عالمگیری الباب الخامس فی الا مامۃ فصل خامس ج۱ ص ۸۳۔ط۔م۔ج۱ص۸۹)ظفیر۔
যার সারমর্ম হলো ইমামের জন্য কাতারের মাঝ বরাবর দাড়ানো সুন্নাত।   

★★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে  প্রথমে ইমামের পিছিনে,তারপর  ডান দিকে তারপর বামদিকে,আবার ডান দিকে আবার বাম দিকে,,,এই ভবে কাতার পূর্ণ করতে হবে। 

আব্দুল্লাহ ইবনু আব্বাস রাযি. থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে, তিনি বলেন,
صَلَّيْتُ مَعَ النَّبِيِّ ﷺ ذَاتَ لَيْلَةٍ فَقُمْتُ عَنْ يَسَارِهِ، فَأَخَذَ رَسُولُ اللَّهِ ﷺ بِرَأْسِي مِنْ وَرَائِي، فَجَعَلَنِي عَنْ يَمِينِهِ، فَصَلَّى
একরাতে আমি নবী ﷺ–এর সঙ্গে নামায আদায় করতে গিয়ে তাঁর বামপাশে দাঁড়ালাম। তিনি আমার মাথার পেছনের দিক ধরে তাঁর ডানপাশে নিয়ে এলেন। তারপর নামায আদায় করলেন….। (বুখারী ৬৯০)


★বারা ইবনু ‘আযিব  হতে বর্ণিত, তিনি বলেছেন-
كُنَّا إِذَا صَلَّيْنَا خَلْفَ رَسُولِ اللَّهِ – صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ – أَحْبَبْنَا أَنْ نَكُونَ عَنْ يَمِينِهِ ، فَسَمِعْتُهُ يَقُولُ حِينَ انْصَرَفَ: “رَبِّ قِنِي عَذَابَكَ يَوْمَ تَبْعَثُ عِبَادَكَ”.

অর্থ- আমরা যখন রাছূলুল্লাহ 1 এর পিছনে সালাত আদায় করতাম, তখন আমরা তাঁর ডানদিকে দাঁড়াতে পছন্দ করতাম। ছালাম ফিরানোর পর আমি তাঁকে বলতে শুনেছি “রাব্বী ক্বীনী ‘আযাবাকা ইয়াওমা তাব‘আছু ‘ইবাদাকা” (অর্থ- হে আমার প্রতিপালক! যে দিন তুমি তোমার বান্দাহ্দেরকে বিচারের জন্য উঠাবে, সেদিন আমাকে তোমার ‘আযাব হতে রক্ষা করো)।
(আবু দাউদ নাসায়ী।

 ‘আব্দুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাছ  হতে বর্ণিত, তিনি বলেছেন-
بِتُّ عِنْدَ خَالَتِي، فَقَامَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُصَلِّي مِنَ اللَّيْلِ ، فَقُمْتُ أُصَلِّي مَعَهُ ، فَقُمْتُ عَنْ يَسَارِهِ ، فَأَخَذَ بِرَأْسِي فَأَقَامَنِي عَنْ يَمِينِهِ.
অর্থ- একদা আমি আমার খালার (উম্মুল মু’মিনীন মাইমূনাহ এর) নিকট রাত্রি যাপন করি। রাছূলুল্লাহ 1 উঠে রাতের সালাত পড়তে লাগলেন, আমিও উঠে গেলাম তাঁর সাথে নামায পড়তে এবং গিয়ে তাঁর বাম পাশে দাঁড়ালাম। তিনি আমার মাথায় ধরে (আমাকে তাঁর পিছন দিকে ঘুরিয়ে) ডান পাশে এনে দাঁড় করালেন।
(বুখারী মুসলিম)

এতে প্রমাণিত হয় যে, ইমামের সাথে দাঁড়ানো মুক্ব্তাদীর জন্য উত্তম স্থান হলো ইমামের ডান পার্শ্ব। নতুবা রাছূলুল্লাহ  ইবনু ‘আব্বাছ-কে  তাঁর বাম পার্শ্ব হতে ডান পার্শ্বে নিয়ে আসতেন না।

‘আয়িশাহ রাঃ হতে বর্ণিত, তিনি বলেন-
قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِنَّ اللَّهَ وَمَلائِكَتَهُ يُصَلُّونَ عَلَى مَيَامِنِ الصُّفُوفِ.
অর্থ- রাছূলুল্লাহ বলেছেন:- নিশ্চয়ই আল্লাহ (নামাযে) সফসমূহের ডান দিকে অবস্থানকারীদের উপর রাহ্মাত বর্ষণ করেন এবং ফিরিশতাগণও তাদের জন্য (আল্লাহ্র কাছে) মাগফিরাত (ক্ষমা) প্রার্থনা করেন।
(আবু দাউদ)

ডান দিক হতে কাতার পূর্ণ করার অর্থ এই নয় যে, ইমামের ঠিক পিছনের জায়গাটুকু সহ ইমামের ডান-বাম খালি রেখে মাছজিদের একদম ডান প্রান্ত থেকে সফ শুরু করা। বরং এর অর্থ হলো ইমামকে মধ্যখানে রেখে প্রথমে তাঁর ডানপার্শ্বে তারপর বামপার্শ্বে দাঁড়াতে হবে।

 উদাহরণ স্বরূপ- যদি ইমামের ডানে ও বামে পাঁচজন পাঁচজন করে মোট ১০ জন মোক্ব্তাদী হয়ে যান, তাহলে ১১ নং মোক্ব্তাদীর জন্য উচিত হলো ইমামের ডান পার্শ্বে দন্ডায়মান পূর্ববর্তী ৫ জনের ডান পার্শ্বে গিয়ে দাঁড়ানো। আর মুক্তাদী যদি মাত্র ১জন হন তাহলে অবশ্যই তাকে ইমামের ডান পার্শ্বে ইমামের সাথে একই বরাবরে দাঁড়াতে হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...