আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
134 views
in সাওম (Fasting) by (23 points)
edited by
কোন কনফিউশন না রেখে আমাদের দেশে চাঁদ অনুযায়ী ৮,৯ জিলহজ উভয় দিনেই রোযা রাখার পরামর্শ দেন অনেক আলেমরা। তাই
এই টা অনুযায়ী আমি নিয়্যাত করেছিলাম ৮,৯ জিলহজ্জ উভয় দিনই রোজা রাখবো। ৮ জিলহজ্জ তো আলহামদুলিল্লাহ রেখেছি রোজা। কিন্তুু আজকের রোজাটা মানে ৯ ই জিলহজ্জের রোজার জন্য সাহরী খেতে উঠতে পারি নি, আমি প্রেগনেন্ট তাই না খেয়ে রোজা রাখাটা আমার জন্য খুবই কষ্টকর,কারন আমার এখনই ক্ষুধা লেগে গিয়েছে, সাহস পাচ্ছি না সারাদিন রাখতে পারবো নাকি! কারণ আমি এতোটা হেলদি না,
যদিও এখন পর্যন্ত আমি রোজা ভাঙ্গি নাই।
এখন,  শুধুমাত্র ৮ জিলহজ্জ রোজা রাখাটা কি আরাফার রোজা হিসেবে গণ্য হবে ?  নাকি আজকের দিনকেই আরাফার রোজা হিসেবে ধরা হবে?
৮ ই জিলহজ্জ একদিন রোজা পালন করলেই কি আরাফার রোযার ফজিলত / সওয়াব পাওয়া যাবে???

আমার কি করা উচিত?  রোজা ভেঙ্গে ফেলবো নাকি রাখবো?
( আমার আর্জেন্ট জানা জরুরি,কোনো ভাবে আমার উত্তর টা তাড়াতাড়ি দেয়া সম্ভব হলে আমার জন্য উপকার হয়)

1 Answer

0 votes
by (59,730 points)
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আরাফার রোযা হলো যিলহজ্জ মাসের ৯ তারিখ এর রোযা।
তাই বাংলাদেশে বসবাস কারীগণ আজ শনিবার রোযা রাখবে।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، وَأَحْمَدُ بْنُ عَبْدَةَ الضَّبِّيُّ، قَالاَ حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ غَيْلاَنَ بْنِ جَرِيرٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَعْبَدٍ الزِّمَّانِيِّ، عَنْ أَبِي قَتَادَةَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " صِيَامُ يَوْمِ عَرَفَةَ إِنِّي أَحْتَسِبُ عَلَى اللَّهِ أَنْ يُكَفِّرَ السَّنَةَ الَّتِي قَبْلَهُ وَالسَّنَةَ الَّتِي بَعْدَهُ
কুতয়াবা ও আহমাদ ইবনু আবদা আদ-দাববী (রহঃ) ...... আবূ কাতাদা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছনঃ আরাফা দিবসের সিয়াম সম্পর্কে আমি আল্লাহর কাছে আশা করি যে, তিনি এর মাধ্যমে পূর্ববর্তী বছর এবং পরবর্তী বছরের গুনাহসমূহের কাফফারা করে দিবেন। 
(তিরিমিজি ৭৪৭.ইবনু মাজাহ ১৭৩০, মুসলিম, তিরমিজী হাদিস নম্বরঃ ৭৪৯ [আল মাদানী প্রকাশনী]

https://ifatwa.info/48870/#q48870 নং ফাতাওয়াতে আমরা বলেছি যে, 
(ক) হানাফি মাযহাব মতে মাসের সূচনা চাঁদ দেখার উপরই নির্ভর করে।তাই প্রত্যেক এলাকায় চাঁদ দেখার পরই সেখানে হিজরী মাস শুরু হবে।
(খ)বাকী তিন মাযহাব মতে কোথাও চাঁদ দেখা গেলে সবার জন্য হিজরী মাস শুরু হয়ে যাবে।

হানাফি মাযহাবের উলামায়ের কেরামগনের বক্তব্য-
শরীয়তে কিছু ইবাদতের সম্পর্ক চাঁদের সাথে আর কিছুর সম্পর্ক সূর্যের সাথে।
পৃথিবীর সকল জায়গায় একসাথে সূর্যোদয় হয় না এবং সূর্যাস্তও হয় না।এবং তাহাজ্জুদের ওয়াক্ত এক সাথে হয় না।হাদীসে এসেছে,শেষ রাত্রে আল্লাহ বান্দাকে ডেকে বলেন,আছো কি কেনো গোনাহগার?আমি ক্ষমা করে দেবো।অথচ পৃথিবীর সকল জায়গায় এক সাথে তাহাজ্জুদ হয় না।লাইলাতুল কদরের আলোচনা কুরআনে এসেছে,অথচ সারা পৃথিবীতে এক সাথে রাত্র হয় না।

উপরোক্ত বিষয়গুলোতে আমরা অবশ্যই একথা বলবো,যে এই ইবাদত গুলি,যেমন লাইলাতুল কদর ইত্যাদির সম্পর্ক স্থানের সাথে।জিলহজ্বের মাসের নয় তারিখের নাম হল,ইয়াউমুল আরাফাহ।হাদীসে আরাফাহর দিন রোযা রাখার কথা বলা হয়েছে।
সুতরাং আরাফাহ তথা ৯জিলহজ্বের সম্পর্ক স্থানের সাথে।যে যেখানে অবস্থান করবে,সেখানের হিসেবেই ৯জিলহজ্ব অনুযায়ী রোযা রাখবে।

অন্যদিকে যারা সারা পৃথিবীতে একই সাথে হিজরী বর্ষ গণনার পক্ষে মতামত দিয়ে থাকেন।তারা মূলত সৌদিকে মানদন্ড হিসেবে সাব্যস্ত করেন। সুতরাং যে দিন সৌদিতে মাসের সূচনা হবে। সেদিন সারা পৃথিবীতেও মাসের সূচনা হবে।এ হিসেবে আরাফাহ তথা ৯জিলহজ্ব সেদিনই হবে যেদিন সৌদিতে ৯জিলহজ্ব হবে। আল্লাহ-ই ভালো জানেন।

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন!

১, আরাফার রোযা হলো যিলহজ্জ মাসের ৯ তারিখ এর রোযা। তাই বাংলাদেশে বসবাস কারীগণ আজ শনিবার রোযা রাখবে। কারণ আজকে বাংলাদেশে যিলহজ্জ মাসের ৯ তারিখ৷
এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-https://www.ifatwa.info/2247

২, অধিকাংশ আলেমের মতে যেহেতু আরাফার রোজা বাংলাদেশে আজকে শনিবার৷ তাই আজকে রোজা রাখলে আরাফার রোজা বলে ধর্তব্য হবে৷ সুতরাং আপনি অধিকাংশ আলেমের মতের উপর আমল করে আজকে রোজা রাখবেন৷ তবে যেহেতু এই রোজা নফল রোজা, ফরজ-ওয়াজিব নয়৷ তাই আপনার জন্য কষ্টকর হলে ভেঙ্গে ফেলতে পারেন৷ 

৩, যিলহজ্জ মাসের প্রথম ৯ রোজাই অনেক অনেক ফজিলতপূর্ণ৷ রাসূল সা, ৯ টা রোজাই রাখতেন৷ আর যেহেতু আপনি ৮ তারিখে রোজা রেখেছেন তাই তাতে আলাদা সওয়াব পেয়ে যাবেন ইনশাআল্লাহ৷ আর আরাফার রোজার ফজিলত পেতে হলে আজকের রোজাটা রেখে দিবেন৷ তবে যেহেতু এই রোজা নফল রোজা, ফরজ-ওয়াজিব নয়৷ তাই আপনার জন্য কষ্টকর হলে এখন ভেঙ্গে ফেলতে পারেন৷ 

(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

...