আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
176 views
in পবিত্রতা (Purity) by (20 points)
একজনের পক্ষ হতে -

اَلسَّلَامُ عَلَيْكُمْ وَرَحْمَةُ اللّٰهِ وَ بَرَكَاتُهُ

১/ফরজ গোসলের মাঝে প্রস্রাব করলে কি গোসলের শেষে নামাজ পড়ার জন্য আবার আলাদা করে অজু করা লাগবে?

২/স্ত্রীর সন্তুষ্টির জন্য পুরুষের কি বুকের পশম উপড়ানো যাবে?উল্লেখ্য যে পশমের জন্য বুকে ঘামের দূর্গন্ধ হয়,এই অবস্থায় স্ত্রীর কাছে গেলে কষ্ট পায়।অমুসলিমদের অনুসরণ জাতীয় কোনো কারণে না,স্ত্রীর চায় সেই জন্য।

৩/মহিলারা কি তালাক দিতে পারে?মেয়ের বাবা যদি বিয়েটা টিকাতে না চায়।

৪/স্বামীর ডাকে সাড়া না দিলে ফেরেশতারা লানত করতে থাকে এমন একটা হাদিস আছে।কিন্তু স্ত্রীর যদি অসুস্থতা থাকে,মন খারাপ থাকে তাহলেও কি গুনাহগারী হবে?আর সাড়া না দেওয়ার গুনাহটা কোন পর্যায়ের? স্ত্রীর ডাকে (মিলন বা অন্তরঙ্গ সময় কাটানোর) যদি স্বামী সাড়া না দেয় তাহলে কি তিনিও গুনাহগার হবেন?

৫/স্ত্রী অপছন্দ করে,কিন্তু স্বামী যদি চায় স্ত্রী তার গোপন অঙ্গতে মুখ দিক/মুখে নিক।স্ত্রী এই কাজে অনুৎসাহ দিলেও, স্বামী যদি বলে এটা মাকরুহ কিন্তু হারাম না,অনেক আলেম বলেছেন জায়েজ। তাহলে স্ত্রীর করনীয় কি? স্বামীর সন্তুষ্টির জন্য সেই কাজ করা নাকি বিরত থাকা?
(একসাথে অনেক গুলো প্রশ্ন করার জন্য দুঃখিত।সবগুলোর উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করবেন ইং শা আল্লাহ)

1 Answer

0 votes
by (588,060 points)

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
(১)
ফরজ গোসলের মাঝে প্রস্রাব করলে, গোসলের শেষে নামাজ পড়ার জন্য আবার আলাদা করে অজু করা লাগবে। কেননা গোসলের মধ্যে প্রস্রাবের দ্বারা হাদাসে আসগার তথা ছোট হাদাস চলে এসেছে।যেজন্য নামাযের পূর্বে আবার অজু করা অত্যাবশ্যক।

(২)
দাড়ি ব্যতিত শরীরের অন্যান্য অঙ্গের লোম, যেমন হাত বা পায়ের লোম, পুরুষ এবং নারীদের জন্য একেবারে উপড়ে ফেলা বা মুণ্ডন করা নিষেধ নয়। তবে অনুত্তম।
وفى حلق شعر الصدر والظهر ترك الادب، (رد المحتار، كتاب الحظر والاباحة، فصل فى البيع-9/583، طحطاوى على مراقى الفلاح-431

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
স্ত্রীকে সন্তুষ্ট করতে বুকের লোম পরিস্কার করা যাবে।

(৩)
https://www.ifatwa.info/4506 নং ফাতাওয়ায় বলেছি যে,
তালাক প্রদান করা সম্পূর্ণ স্বামীর অধীকার।হ্যা শরীয়ত কিছু কিছু ক্ষেত্রে স্ত্রীকে নিজের উপর তালাক প্রদানের অনুমোদন দিয়েছে।যেমন,স্বামী কর্তৃক স্ত্রীকে তালাক প্রদানের অনুমতি প্রদান করলে,স্ত্রী নিজেকে তালাক দিতে পারবে।তাছাড়া স্বামী খোরপোষ না দিলে,স্ত্রী কাযী সাহেবের নিকট অভিযোগ দায়ের করতে পারবে।কিংবা স্বামী নিখোঁজ হলে বা ধ্বজভঙ্গ হলে কোর্ট বিবাহ ভঙ্গের রায় দিতে পারবে।

(৪)
https://www.ifatwa.info/990 নং ফাতাওয়ায় বলেছি যে,
আল্লাহ তা'আলা স্বামী-স্ত্রী পরস্পরকে বিশেষকরে স্বামীকে নির্দেশ দিয়েছেন যে,আপন স্ত্রীর সাথে সদ্ব্যবহার করতে(সূরা নিসা-১৯)।স্ত্রীর সকল হাজত পূর্ণ করা এই সদ্ব্যবহারের আওতাধীন।
সুতরাং যেভাবে স্বামীর আহবানে সাড়া দেয়া স্ত্রীর জন্য ওয়াজিব।ঠিকতেমনি স্ত্রীর আহবানেও সাড়া দেয়া স্বামীর জন্য উচিৎ ও তার নৈতিক দায়িত্বের আওতাধীন।যদিও সাধারণ পরিস্থিতিতে ওয়াজিবের হুকুম আরোপিত হয় না।কিন্তু যদি পরিস্থিতি এমন হয় যে, স্বামী সাড়া না দিলে, স্ত্রী গোনাহে পতিত হতে পারে,এমন সম্ভাবনা রয়েছে অনদিকে স্বামীর শরয়ী কোনো উযরও নেই,তাহলে এমন পরিস্থিতিতে স্বামীর জন্যও সাড়া দেয়া দিয়ানাতান তথা নৈতিকভাবে ওয়াজিব হবে।(দিয়ানাতান এর অর্থ হল, এমন হক যে হকের ইস্যু তৈরী করে কোর্টে বিচার দায়ের করা যায় না)

হযরত উমর রাযি নিজ মেয়েকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন যে,একজন স্ত্রী তার স্বামীর সঙ্গহীন ভাবে কতদিন ধর্য্য ধরতে পারে?উত্তরে উম্মুল মু'মিনিন হযরত হাফসা রাযি চার মাসের কথা বলেছিলেন।
সুতরাং এত্থেকে বুঝা গেল যে,স্ত্রীর ধর্য্যহীন পরিস্থিতিতে স্বামীর জন্য স্ত্রীর ডাকে সাড়া দেয়া স্বামীর উপর নৈতিক ওয়াজিব।স্বামী পাশে থাকাবস্থায় সহবাসহীন থাকা স্ত্রীর হয়তো এক দিন/সাপ্তাহও অসম্ভব হতে পারে?তাই স্বামীর শারীরিক সক্ষমতা থাকাবস্থায় স্ত্রীকে সঙ্গ দিয়ে স্ত্রীর প্রয়োজনকে পূর্ণ করা নৈতিকভাবে স্বামীর উপর ওয়াজিব হবে।(শেষ)

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
স্ত্রীর যদি অসুস্থতা থাকে,মন খারাপ থাকে তাহলে স্বামীর ডাকে সাড়া না দেওয়ার জন্য গোনাহ হবে না। এবং স্বামী সুস্থ থাকলে,স্ত্রীর ডাকে সাড়া দেওয়া স্বামীর উপরও ওয়াজিব।

(৫)
বিরত থাকাই উচিৎ। কেননা কখনো বীর্য মুখের ভিতরে চলে যেতে পারে। যা গিলে ফেলা হারাম।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 314 views
0 votes
1 answer 507 views
...