আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
97 views
in কুরবানী (Slaughtering) by (9 points)
আসসালামু আলাইকুম,
আমাদের বর্তমানে কোনো জমানো টাকা নেই, বাড়ি বানানোর জন্য সব দিয়ে দেয়া হয়েছে।
আমার মায়ের এবং আমাদের ২ বোনের কিছু স্বর্ণ আছে যা ১ লাখ টাকার মতো মূল্য হবে, আমার মায়ের একটা গহনা ভেঙে যাওয়ায় ঐটার পরিবর্তে দোকান থেকে আরেকটা গহনা তিনি নিবেন। এবং আমাদের কিছু গহনার এখনো একবছর হয়নি ‌‌‌।

১.আমার প্রশ্ন হলো, আমাদের ক্যাশ টাকা না থাকায় কি আমার মায়ের উপর যাকাত ফরজ হবে? তার কুরবানি ফরজ হবে ?
২.কতটুকু স্বর্ণ থাকলে আমার মায়ের উপর যাকাত ফরজ হবে? এবং এটা কি আমার , আমার মায়ের এবং আমার বোনের মিলিয়ে সব গহনার উপর ধরা হবে? নাকি আমাদের আলাদা আলাদা যাকাত আসবে ?
৩. আমার মায়ের গ্রামে ২ টা ছাগল আছে, ব্যবসায়ীক কাজে লাগানো হয়েছে। ওগুলো একবছরের বেশি হয়েছে, ওগুলোর কি যাকাত আসবে ?
৪. আরাফার নিয়মে রোজা কবে রাখতে হবে? মক্কায় যেদিন আরাফা সেদিন নাকি আমাদের দেশে যেদিন আরাফা সেদিন?

1 Answer

0 votes
by (62,960 points)
edited by

 

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

জিলহজ্ব মাসের দশ, এগারো ও বারো তারিখ এ তিনদিনে প্রয়োজন অতিরিক্ত কারো কাছে যদি সাড়ে বায়ান্ন তোলা রূপা বা সাড়ে সাত তোলা স্বর্ণের সমপরিমাণ মূল্য পরিমাণ সম্পদ থাকে, তাহলে তার উপর  কুরবানী করা আবশ্যক।

প্রয়োজন অতিরিক্ত বলতে বুঝানো হয়েছে, উক্ত তিন দিনের নিত্য প্রয়োজনীয় আসবাব এবং এখনি আদায় আবশ্যক এমন ঋণমুক্ত হতে হবে। দীর্ঘমেয়াদী ঋণ কুরবানী আবশ্যক হবার জন্য বাঁধা হবে না।

ঋণ পরিশোধ করার পর যদি হাতে ৫.৫ ভড়ি রূপার সমমূল্য পরিমাণ সম্পত্তি হাতে না থাকে, তাহলে তার উপর কুরবানি ওয়াজিব হবে না। (কিতাবুল-ফাতাওয়া-৪/১৩৪)

হাদীস শরীফে এসেছেঃ

عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ مَنْ وَجَدَ سَعَةً فَلَمْ يُضَحِّ فَلَا يَقْرَبَنَّ مُصَلَّانَا

আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও যে কুরবানী করে না, সে যেন অবশ্যই আমাদের ঈদগাহের নিকটবর্তী না হয়। (মুসনাদ আহমাদ ৮২৭৩, ইবনে মাজাহ ৩১২৩, হাকেম ৭৫৬৫-৭৫৬৬)

কুরবানি দেওয়া ওয়াজিব।কার উপর ওয়াজিব? এ সম্পর্কে ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়ায় বর্ণিত রয়েছে,

مِنْهَا الْيَسَارُ وَهُوَ مَا يَتَعَلَّقُ بِهِ وُجُوبِ صَدَقَةِ الْفِطْرِ دُونَ مَا يَتَعَلَّقُ بِهِ وُجُوبُ الزَّكَاةِ،

এই পরিমাণ ধনবান ব্যক্তির উপর কুরবানি ওয়াজিব,যে পরিমাণ ধনসম্পত্তি থাকার কারণে কারো উপর সদকায়ে ফিতর ওয়াজিব হয়। যাকাত ওয়াজিব হওয়ার নেসাব পরিমাণ সম্পত্তির মালিক হওয়া শর্ত নয়। (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-৫/২৯২, কিতাবুল-ফাতাওয়া-৪/১৩১)

কুরবানির নেসাব পৃথক। এবং যাকাতের নেসাব পৃথক। কুরবানি ওয়াজিব হলেই যে যাকাত দিতে হবে, বিষয়টা মূলত এমন নয়। বরং যাকাত ওয়াজিব হলেই কুরবানিও ওয়াজিব হবে। কেননা যাকাতের জন্য ক্রমবর্ধমান মাল হওয়া শর্ত। কিন্তু কুরবানি ওয়াজিব হওয়ার জন্য ক্রমবর্ধমান মাল হওয়া শর্ত নয়।

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

১. আপনার মায়ের কাছে যদি টাকা না থাকে এবং গহনাও এপরিমাণ না থাকে যা নেসাব পরিমাণ, তাহলে আপনার মায়ের উপর কুরবানী ওয়াজিব হবে না।

২. সাড়ে সাত ভরি স্বর্ণ ও সাড়ে .৫ ভরি রূপা বা তার সমমূল্য পরিমাণ সম্পত্তি হাতে না থাকলে তার উপর কুরবানি ওয়াজিব হবে না। এবং আপনাদের প্রত্যেকের নেসাব পৃথক ভাবে হিসাব করতে হবে । একত্রে হিসাব করা যাবে না।

৩. জ্বী না ঐগুলিতে যাকাত আসবে না। কারণ, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন,

 فَإِذَا كَانَتْ سَائِمَةُ الرَّجُلِ نَاقِصَةً مِنْ أَرْبَعِيْنَ شَاةً وَاحِدَةً فَلَيْسَ فِيْهَا صَدَقَةٌ

কারো গৃহপালিত ছাগলের সংখ্যা চল্লিশ হ’তে একটিও কম হ’লে তার উপর যাকাত নেই’(বুখারী হা/১৪৫৪,  মিশকাত হা/১৭৯৬)

৪. হানাফি মাযহাব মতে মাসের সূচনা চাঁদ দেখার উপরই নির্ভর করে। তাই প্রত্যেক এলাকায় চাঁদ দেখার পরই সেখানে হিজরী মাস শুরু হবে। সুতরাং বাংলাদেশের তারিখ ও সময় অনুপাতে আরাফার রোজ রাখতে হবে। বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন: https://ifatwa.info/22811/


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...