আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
103 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (5 points)
reshown by
আসসালামু আলাইকুম শায়েখ, আমার ভাবতেই কান্না পাচ্ছে আল্লাহ্ সুবহানা ওয়া তা'আলা আমায় এ কেমন সিদ্ধান্তহীনতায় রেখেছেন! শায়েখ আপনিই আমায় একটি সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করুন!
রিসেন্টলি, প্রেগনেন্সি কিট এ পজিটিভ এসেছে। যার অর্থ দাড়ায়, আমি সম্ভবত গর্ভবতী। আমি ডাক্তার দেখিয়ে এখনো কনফার্ম হইনি।

এই মুহূর্তে আল্লাহ যদি আমায় নতুন সন্তান দান করে থাকেন, আলহামদুলিল্লাহ! কিন্তু আমি দ্বিধায় ভুগছি আমার বর্তমান অবস্থার জন্য!

আমি, আমার স্বামী ও ১১ মাসের ছেলে নিয়েই আমার সংসার। গর্ভাবস্থায় বিভিন্ন জটিলতা থাকে যেকারণে অন্য কিছুই করা যায় না এবং অল্পতেই শরীর খারাপ হয়ে যায়। এই ১১ মাসের বাচ্চাকে আমি ছাড়া দেখার কেও নেই, আমি গর্ভবতী হলে এই বাচ্চার খাওয়া দাওয়া থেকে শুরু করে ঘুম পাড়ানোর জন্য ও কেও নেই। উল্লেখ্য, আমার এই শিশু বুকের দুধের উপর বেশি নির্ভরশীল! তাই এখন নতুন বাচ্চা আসলে এই বাচ্চা ঠিক মত দুধটা পাবে না। শারীরিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এমনিতেই সে একটু কম স্বাস্থ্যবান।
ভয় পাচ্ছি, আমি আমার ছেলের হক সম্পূর্ণরূপে আদায় করতে পারবো না বলে। পর পর ২টি বাচ্চাকে মানুষের মত মানুষ করে তাদের উভয়ের হক পালন করতে পারবো না। কারণ এখনি স্বামী ও সংসারের হক আদায় করতে হিমশিম খাচ্ছি।

আরেকটি বিষয় হচ্ছে, আমি শারীরিক ভাবে দুর্বল, যেহেতু প্রথম বাচ্চা নরমালেই ডেলিভারী হয়েছে, দ্বিতীয়টিও তাই হবে এবং এটার জন্য আমার শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণে শক্তি নেই। প্রথম বাচ্চার ডেলিভারীর সময়েই আমার অতিরিক্ত দুর্বলতা দেখা গিয়েছিল। আল্লাহ্ না করুক, আমার মৃত্যুও ঘটতে পারে অতিরিক্ত দুর্বলতার কারণে। কারণ গর্ভকালীন সময়ে আমার শারীরিক দুর্বলতা ক্রমশ বাড়তেই থাকে।

আমি রিজিক নিয়ে ভয় পাইনা, যার রিজিক সে সাথে করেই নিয়ে আসবে। তাছাড়া রিজিকের মালিক তো আল্লাহ নিজেই। কিন্তু আমার ভয় হচ্ছে আমার স্বামীর অবস্থানের উপর। অবস্থান বলতে এখানে তার ইমম্যাচিউরিটি, তার দায়িত্বহীনতা এবং স্ত্রী - সন্তানের প্রতি অবহেলা কে বুঝাচ্ছি।

এই মুহূর্তে আমি যদি গর্ভবতী হয়ে থাকি, আমার কি এই অনাগত বাচ্চাকে রাখাটা ঠিক হবে? যে দুনিয়াতে আছে সেও আমার অংশ, যে অনাগত সেও আমারই অংশ! আমি কাকে রেখে কার দিকে তাকাবো ভাবতেই পারছি না। আল্লাহ্ দ্রুতই এই সমস্যার সমাধান করে দিক।

আমার স্বামী আমায় একা সিদ্ধান্ত নিতে বলেছেন, আমি আপনার সু-পরামর্শ কামনা করছি।

দোয়া করবেন আমি যেনো সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারি এবং সবার হক আদায় করতে পারি।

জাযাকিল্লাহ খাইরণ।

1 Answer

0 votes
by (59,190 points)
edited by

 

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

https://www.ifatwa.info/446 নং ফাতাওয়ায় বলেছি যেজন্মনিয়ন্ত্রণ এবং এ্যাবর্শন(গর্ভপাত) সাধারণত চার ধরণের হয়ে থাকে। যথাঃ-

(১)(চিরস্থায়ী)জন্মনিরোধ পদ্ধতিঃ

অর্থাৎ-এমন কোনো পদ্ধতি গ্রহণ করা যার ফলশ্রুতিতে চিরস্থায়ীভাবে সন্তান উৎপাদনের ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায়।

(২)(অস্থায়ী)জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতিঃ

অর্থাৎ এমন কোনো পদ্ধতি গ্রহণ করা যার ফলশ্রুতিতে সন্তান জন্মানোর ক্ষমতা অবশিষ্ট থাকা সত্বেও বর্তমানে নির্দিষ্ট সময়ের ভিতর সন্তান জন্ম নিবে না।

(৩)চারমাস পূর্বে গর্ভপাতঃ

অর্থাৎ-গর্ভাশয়ে সৃষ্ট সন্তান চারমাস অতিবাহিত হওয়ার পূর্বে ঔষধের মাধ্যমে বিনষ্ট করে দেয়া।

(৪)চারমাস পর গর্ভপাতঃ

অর্থাৎ-গর্ভাশয়ে সৃষ্ট সন্তানকে চারমাস অতিবাহিত হওয়ার পর ঔষধের মাধ্যমে বিনষ্ট করে দেয়া।

তৃতীয় পদ্ধতি শরীয়ত সম্মত প্রয়োজন ব্যতীত নাজায়েজ ও হারাম।

বিশেষ কিছু কারণে শরীয়ত অনুমোদন প্রদান করে থাকে।

(ক) বর্তমানে কোলে দুধের একটি শিশু রয়েছেঅপরদিকে উক্ত মহিলার গর্ভাশয়ে নতুন সন্তানও উৎপাদিত হচ্ছে। গর্ভের ধরুন দুধ একেবারে শুকিয়ে গেছে। অপরদিকে উক্ত সন্তানকে অন্যকোনো উপায়ে লালনপালন করা যাচ্ছেনা। মায়ের দুধ ব্যতীত অন্যকিছুতে সে মূখই দিচ্ছে না। এমতাবস্থায় চারমাস হয়নি এমন গর্ভকে গর্ভপাত করা বৈধ রয়েছে।

(খ)কোনো মুসলমান বিজ্ঞ ডাক্তার উক্ত গর্ভবতী মহিলাকে পরিদর্শন করে বলে যে,গর্ভপাত না করলে মহিলার জান বা কোনো অঙ্গ বিনাশের আশঙ্কা রয়েছে। (আহসানুল ফাতাওয়া-৮/৩৪৭, (এইচ,এম,সাঈদ-করাচী), কিতাবুন নাওয়াযিল-১৬/২৬৭)

বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- https://www.ifatwa.info/446

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

বর্তমানে আপনার কোলে যেহেতু দুধের একটি শিশু রয়েছেঅপরদিকে গর্ভাশয়ে নতুন সন্তানও উৎপাদিত হচ্ছে। গর্ভের দরুন যদি দুধ একেবারে শুকিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা হয় এবং উক্ত সন্তানকে লালনপালনের ক্ষেত্রেও প্রবলেম হয়। মায়ের দুধ ব্যতীত অন্যকিছুতে সে মূখই না দেয়। এমতাবস্থায় চারমাস হয়নি এমন গর্ভকে গর্ভপাত করা বৈধ রয়েছে।

তবে কোনো মুসলমান বিজ্ঞ ডাক্তার আপনাকে পরিদর্শন করে যদি বলে যে, গর্ভপাত না করলে আপনার জান বা কোনো অঙ্গ বিনাশের আশঙ্কা রয়েছে। অথবা আপনি স্বাস্থ্যঝুকিতে আছেন যা বড় কোন রোগের কারণ হতে পারে। তাহলে এমতাবস্থায় আপনার জন্য গর্ভপাত জায়েয হবে। অন্যথায় জায়েয হবে না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...