بسم الله الرحمن الرحيم
জবাব,
বাদ্যযন্ত্রসহ
কোন গজল বা সংগীত শোনা জায়েজ নয়। এমন কি দফের বাদ্যও জায়েজ নয়। ইসলামের শুরু যুগে তা
বৈধ থাকলেও পরবর্তীতে তা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তাই দফের বাদ্যযুক্ত গজল শোনাও জায়েজ নেই।
وَمِنَ النَّاسِ مَن يَشْتَرِي لَهْوَ الْحَدِيثِ لِيُضِلَّ عَن
سَبِيلِ اللَّهِ بِغَيْرِ عِلْمٍ وَيَتَّخِذَهَا هُزُوًا ۚ أُولَٰئِكَ لَهُمْ
عَذَابٌ مُّهِينٌ [٣١:٦
আর একশ্রেণীর
লোক আছে, যারা অজ্ঞতাবশত খেল-তামাশার বস্তু
ক্রয় করে বান্দাকে আল্লাহর পথ থেকে গাফেল করার জন্য।-সূরা লুকমান : ৬।
উক্ত আয়াতের
শানে নুযূলে বলা হয়েছে যে, নযর ইবনে হারিস বিদেশ থেকে একটি
গায়িকা বাঁদী খরিদ করে এনে তাকে গান-বাজনায় নিয়োজিত করল। কেউ কুরআন শ্রবণের ইচ্ছা করলে
তাকে গান শোনানোর জন্য সে গায়িকাকে আদেশ করত এবং বলত মুহাম্মদ তোমাদেরকে কুরআন শুনিয়ে
নামায, রোযা এবং ধর্মের জন্য প্রাণ বিসর্জন
দেওয়ার কথা বলে। এতে শুধু কষ্টই কষ্ট। তার চেয়ে বরং গান শোন এবং জীবনকে উপভোগ কর।-মাআরিফুল
কুরআন ৭/৪
এরই পরিপ্রেক্ষিতে
আল্লাহ তাআলা উক্ত আয়াত নাযিল করেন।
عَنْ أَبِي مَالِكٍ الْأَشْعَرِيِّ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ
اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَيَشْرَبَنَّ نَاسٌ مِنْ أُمَّتِي
الْخَمْرَ، يُسَمُّونَهَا بِغَيْرِ اسْمِهَا، يُعْزَفُ عَلَى رُءُوسِهِمْ
بِالْمَعَازِفِ، وَالْمُغَنِّيَاتِ، يَخْسِفُ اللَّهُ بِهِمُ الْأَرْضَ،
وَيَجْعَلُ مِنْهُمُ الْقِرَدَةَ وَالْخَنَازِيرَ
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও ইরশাদ করেন,আমার উম্মতের কিছু লোক মদের নাম পরিবর্তন করে
তা পান করবে। আর তাদের মাথার উপর বাদ্যযন্ত্র ও গায়িকা রমনীদের গান বাজতে থাকবে। আল্লাহ
তাআলা তাদেরকে যমীনে ধ্বসিয়ে দিবেন এবং তাদের কতককে বানর ও শূকরে রূপান্তরিত করবেন।-সুনানে
ইবনে মাজাহ হাদীস : ৪০২০;সহীহ ইবনে হিব্বান হাদীস : ৬৭৫৮।
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ أَنَّهُ قَالَ:
«الدُّفُّ حَرَامٌ، وَالْكُوبَةُ حَرَامٌ، وَالْمِزْمَارُ حَرَامٌ
হযরত আব্বাস
রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, দফ হারাম। বাদ্যযন্ত্র হারাম।
মদের পেয়ালা হারাম। বাঁশী হারাম। [সুনানে সুগরা লিলবায়হাকী, হাদীস নং-৩৩৫৯, সুনানে কুরবা লিলবায়হাকী, হাদীস নং-২১০০০]
قَالَ أَبُو هُرَيْرَةَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «يُمْسَخُ قَوْمٌ مِنْ أُمَّتِي فِي آخِرِ الزَّمَانِ
قِرَدَةً وَخَنَازِيرَ»، قِيلَ: يَا رَسُولَ اللهِ، وَيَشْهَدُونَ أَنْ لَا إِلَهَ
إِلَّا اللهُ، وَأَنَّكَ رَسُولُ اللهِ، وَيَصُومُونَ؟ قَالَ: «نَعَمْ»، قِيلَ:
فَمَا بَالُهُمْ يَا رَسُولَ اللهِ؟ قَالَ: «يَتَّخِذُونَ الْمَعَازِفَ
وَالْقَيْنَاتِ وَالدُّفُوفَ، وَيَشْرَبُونَ الْأَشْرِبَةَ، فَبَاتُوا عَلَى
شُرْبِهِمْ وَلَهْوِهِمْ، فَأَصْبَحُوا قَدْ مُسِخُوا قِرَدَةً وَخَنَازِيرَ
হযরত আবূ
হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, শেষ জমানায় আমার উম্মত বানর ও শুকরে রূপান্তরিত
হবে। জিজ্ঞাসা করা হল, হে আল্লাহর রাসূল! তারা সাক্ষি
দিবে যে, আল্লাহ তাআলা ছাড়া কোন মাবুদ নাই
এবং আপনি আল্লাহর রাসূল এবং রোযা রাখার পরও?
নবীজী সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম জবাব দিলেন, হ্যাঁ। বলা হল, তাদের অপরাধ কি?
বললেন, তারা বাদ্য, গায়িকা এবং দফের বাজনা গ্রহণ করবে। মদ খাবে, রাতে মদ খেয়ে মাতাল হয়ে ঘুমাবে। আর সকালে দেখবে
তারা বানর ও শুকরে পরিণত হয়ে গেছে। [হিলয়াতুল আওলিয়া-৩/১১৯]
আরো বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন: https://ifatwa.info/29629/?show=29629#q29629
★ সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
বাদ্য-বাজনা, মিউজিক
শোনা নাজায়েয। তাই হামদ-নাত,নাশিদের সাথে বাদ্য-বাজনা, মিউজিক
থাকলে ঐ হামদ-নাত,নাশিদও শোনাও জায়েয হবে না। তাই এ থেকে বিরত
থাকা কর্তব্য। তবে হামদ-নাত, গজল, যদি সম্পূর্ণ বাজনা ও মিউজিক মুক্ত হয়, শরীয়ত
পরিপন্থী যদি কোনো কিছু না হয় তাহলে তা দেখা জায়েয হবে।
উল্লেখ্য
যে, কোনো পদ্ধতি ব্যবহার করার মাধ্যমে যদি ঐ হালকা
মিউজিক এর আওয়াজ কান পর্যন্ত না আসে এবং বুঝা না যায়, তাহলে এমন
নাশিদ শোনাতে কোনো সমস্যা নেই।
তবে মনে রাখতে হবে যে,
মিউজিক কোনটাতে আছে? আর কোনটাতে নাই, এগুলো নির্ধারণ করা সাউন্ড এনালিষ্টের কাজ।
সুতরাং আপনি বিজ্ঞ কোনো সাউন্ড এনালিষ্টের শরণাপন্ন হয়ে উনার কাছ থেকে জেনে নিবেন। আমরা বলবো, উপরোক্ত হাদীস গুলোকে সামনে রেখে সতর্কতামূলক আপাতত
এধরনের নাশিদ গুলো শ্রবণ থেকে নিজেকে দূরে রাখবেন।