আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
116 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (10 points)

আসসালামু আলাইকুম,

বাস্তব ঘটনা

আজকে ইসলামপুর ঢাকা 1100 , কাপড় কিনতে যাই  আমরা তিনজন মিলে । দুইজনকে কাপড়ের দোকানে রেখে আমি মাগরিবের নামাজ পড়তে মসজিদে যায় । নামাজ পড়ে বের হয়ে কাপড়ের দোকানের দিকে যাচ্ছি । রাস্তায় মোটামুটি অনেক ভিড় ছিল । হঠাৎ একটি লোকের হাত আমার গায়ে লাগে তারপর আমি sorry বলে সামনের দিকে আসতে চাচ্ছি , সামনে থেকে আরেকজন বলছে আপনাকে পিছনে ডাকছে । তারপর পিছনে আগের লোকটির দিকে তাকায় । লোকটি বলে আমার নতুন মোবাইলের টাচ আপনি গায়ে লাগিয়ে ভেঙ্গে ফেলছেন । তারপর মোবাইল ঠিক করে দেওয়ার কথা বলে এবং আমাকে বলে মোবাইলের দোকানে চলেন।  আমি বলি আমার সাথে টাকা নেই আমার সাথিদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে ঠিক করে দিব, তাই আপনারা আমার সাথে চলেন । কিন্তু তারা রাজি হয়নি , তাই আমিই তাদের সাথে যাই । তারপর তারা আমাকে মোবাইলের দোকানে না নিয়ে অন্য জায়গায় নিয়ে যাই । যেই জায়গায় নিয়ে যায় সেখানেও অনেক মানুষ ছিল এবং মানুষের চলাচল ছিল। তারপর তারা তিনজন মিলে আমাকে অনেক ভয় দেখিয়ে 20000 টাকা চাই এবং আমি বেশি কথা বললে চোর বানানোর ও মারার ভয় দেখায় । তাই আমি বেশি কথা বলিনি ও চুপ থাকি। সাথে প্রায় 420 মত ছিল তা নিয়ে গেছে এবং আমার মোবাইলের বিকাশে টাকা আছে কিনা তারা চেক করে । বিকাশে টাকা ছিল না । তারপর বলে অন্য জায়গা থেকে এনেদে । অনেক ভয় দেখায় এবং তাদের ভয়ে আমি 5000 টাকা অন্য জায়গা থেকে এনে দেই । 

1. এ অবস্থায় ইসলামের দৃষ্টিতে আমার করণীয় কি ছিল ?

2. অনেকে এ অবস্থা দেখেছে কিন্তু কিছুই বলেনি ? তাদের করণীয় কি ছিল ?

3. কিভাবে আমরা এরকম সমস্যা থেকে বাঁচতে পারি ?

1 Answer

+1 vote
by (59,040 points)
edited by

 

بسم الله الرحمن الرحيم

জাবাব,

ইসলাম মানুষকে আন্তরিকতার শিক্ষা দেয়। কণ্যাণকামিতায় উৎসাহ দেয়। মুমিন একে অপরের কল্যাণকামি হওয়া ঈমানের দাবি। এর বিপরীতে কেউ যদি অপর মুমিনের ক্ষতি করার চেষ্টা করে, তাহলে তার পরিমাণ ভয়াবহ হবে। কারণ মহানবী (সা.) এমন লোকদের অভিশাপ দিয়েছেন।

পবিত্র হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, অভিশপ্ত সে, যে কোনো মুমিনের ক্ষতি করে অথবা তার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করে। (তিরমিজি, হাদিস : ১৯৪০

বর্তমান সময়ে শত্রুহীন থাকার সুযোগ বলতে গেলে নেই। সব মানুষেরই জীবনে কমবেশী শত্রু আছে। কারও বড় আর কারও হয়তো ছোটো। মানুষ জীবনে যত উন্নতি করবে ও অবদান রাখবে, তার শত্রু তত বাড়বে। কেউ বন্ধু রূপে শত্রুতা করবে, আবার কেউ প্রকাশ্যে শত্রুতা করবে। পৃথিবীর শুরু থেকে এই নিয়ম চলমান।

তাই শত্রুর চক্রান্ত ও ক্ষতি থেকে বাঁচতে আল্লাহর সাহায্য চাইতে হয়। বিভিন্ন আমল করে শত্রুর অনিষ্ট থেকে বেঁচে থাকার চেষ্টা করতে হয়। তন্মধ্যে একটি দোয়া বেশ বিখ্যাত। সাহাবি আবু মুসা আশআরি (রা.) বলেন, আল্লাহর রাসুল (সা.) যখন কোনো গোত্র বা লোকদের ব্যাপারে ভয় পেলে, এই দোয়াটি পড়তেন।

اللَّهُمَّ إِنَّا نَجْعَلُكَ فِي نُحُورِهِمْ وَنَعُوذُ بِكَ مِنْ شُرُورِهِمْ

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্না নাজআলুকা ফি নুহুরিহিম, ওয়া নাউজুবিকা মিং শুরুরিহিম।

অর্থ : হে আল্লাহ! আমরা তোমাকে শত্রুর মোকাবেলায় পেশ করছি, তুমিই তাদের দমন করো। আর তাদের অনিষ্ট থেকে তোমার নিকট আশ্রয় চাই। (আবু দাউদ, হাদিস : ১৫৩৭)

আরও একটি ছোট আমল করতে পারেন। এতে শত্রুর হাত থেকে সম্পূর্ণরূপে মুক্তি লাভ করবেন ইনশাআল্লাহ।

আমলটি হল-

اللَّهُمَّ مُنْزِلَ الْكِتَابِ ، سَرِيعَ الْحِسَابِ ، مُجْرِيَ السَّحَابِ ، هَازِمَ الأَحْزَابِ ، اهْزِمْهُمْ وَزَلْزِلْهُمْ

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা মুনযিলাল কিতাব, সারিয়াল হিসাব; মুজরিয়াস সাহাব, হাযিমাল আহযাব। আহযিমহুম ওয়া যালযিলহুম।

অর্থ : হে আমার মালিক ! কোরআন অবতীর্ণকারী; দ্রুত হিসাব গ্রহণকারী, মেঘকে পরিচালনাকারী। শত্রুবাহিনীকে পরাজিত ও প্রতিহত করো, তাদের দমন ও পরাজিত করো; তাদের মধ্যে কম্পন সৃষ্টি করে দাও। (তাবরানি, হাদিস : 989)

ইনশাআল্লাহ শত্রু কোনো ক্ষতি করতে পারবে না। বিপদেও ফেলতে পারবে না। তবে আমল শুরু করার এই বিষয়গুলো মনে রাখতে হবে

এক. আল্লাহর উপর ভরসা রেখে আমল করতে হবে। দুই. হালাল খাবার খেতে হবে। তিন. ৫ ওয়াক্ত নামাজ পড়তে হবে। চার. পিতা মাতার সঙ্গে সম্পর্ক ভালো রাখতে হবে।

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন/বোন!

যেকোন শত্রু কবল থেকে বাঁচতে উপরে উল্লেখিত আমলের কোন বিকল্প নেই।পরবর্তি সময়ে উক্ত আমলগুলি করার চেষ্টা করবেন ইনশাআল্লাহ। তবে প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার জন্য করণীয় হলো সবর করা। নিশ্চয় তারা আপনার উপর জুলুম ও অবিচার করেছেন। তারা যদি আপনার থেকে অন্যায় ভাবে যেই টাকা আত্নসাৎ করেছে তা ফিরিয়ে দেওয়ার পূর্বে ইন্তেকাল করে, তাহলে তারা স্বীয় কৃত কর্মের ফল আল্লাহ তায়ালার নিকট পাবে, যা অত্যন্ত ভয়াবহ। এবং আপনাকেও আল্লাহ তায়ালা এমন পরিস্থিতিতে সবরের পূর্ণ ফলাফল দান করবেন ইনশাআল্লাহ।

 তবে যদি আপনার কাছে তাদের সম্পর্কে কোন ডকুমেন্টস থাকে সেক্ষেত্রে আপনি চাইলে তাদের বিরুদ্ধে স্থানীয় প্রশাসনকেও উক্ত বিষয় অবগত করতে পারেন। আল্লাহ তায়ালা এমন জালেমদের হাত থেকে আমাদের সকলকে হেফাজত করুন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...