بسم الله الرحمن الرحيم
জবাব,
জাকাত অসহায়
গরিবের হক। যার ওপর জাকাত ফরজ হয় তার কর্তব্য হচ্ছে, অসহায় গরিবসহ জাকাতের নির্ধারিত খাতে তা
ব্যয় করা। জাকাত আদায়ের ক্ষেত্রে সবচেয়ে উত্তম হলো নিজের এলাকায় উপযুক্তদের মাঝে খরচ
করা। প্রশ্নোক্ত বিষয়ে জরুরী কিছু মাসআলা জেনে নিতে পারি:
নিজ এলাকার বাইরে জাকাত পাঠানোর বিধান :
হজরত আবু
জুহাইফা (রা.) বলেন, আমাদের
এলাকায় রাসূল (সা.) এর তরফ থেকে জাকাত আদায়কারী আসলেন। আমাদের এলাকার ধনীদের থেকে জাকাত
নিয়ে, এলাকার গরিবদের মাঝে বন্টন
করলেন।’ (সুনানে তিরমিজি-৬৪৯)।
এই হাদিস দ্বারা বুঝা যায়, এলাকার জাকাত, এলাকার গরিবদের মাঝেই বন্টন করতে হয়। তাই
জাকাত নিজ এলাকায় খরচ না করে অন্যত্র পাঠানো মাকরূহ। তবে যদি অন্য এলাকার মানুষ, নিজ এলাকার চেয়ে বেশি মুখাপেক্ষী হয় বা
বেশি নেককার হয় বা সেখানে জাকাতদাতার কোনো নিকট-আত্মীয় থাকে তাহলে সেখানে জাকাতের মাল
পাঠাতে কোনো সমস্যা নেই। এবং শরীয়তের দৃষ্টিতে এটা মাকরূহও হবে না। ( রদ্দুল মুহতার, খণ্ড-৩, পৃষ্ঠা- ৩৫৫, আলা মারাকিল ফালাহ, পৃষ্ঠা-৭২২, দরসে তিরমিজি, খণ্ড-২, পৃষ্ঠা-৪৭৪, আহসানুল ফাতাওয়া, খণ্ড-৪, পৃষ্ঠা-২৪৯)।
বিকাশের মাধ্যমে জাকাত দিলে বিকাশের খরচ কে বহন করবে?
বিকাশের
মাধ্যমে কেউ জাকাত আদায় করে থাকলে, বিকাশ চার্জ জাকাত দাতাকেই বহন করতে হবে।
অন্যথায় বিকাশ থেকে যে পরিমান চার্জ কেটে রাখা হবে, ওই পরিমাণ জাকাত পুনরায় আদায় করতে হবে।
কারণ, বিকাশের খরচ বাবদ কেটে রাখা
টাকা জাকাত হিসেবে আদায় হবে না। এক্ষেত্রে মুলনীতি হলো, জাকাত আদায় হওয়ার জন্য
শর্ত হচ্ছে, হকদারকে
সম্পদের মালিক বানিয়ে দেয়া। যতটুকু সম্পদের মালিক বানানো হবে ততটুকু সম্পদ জাকাত হিসেবে
আদায় হবে। (রদ্দুল মুহতার, খণ্ড-৩, পৃষ্ঠা-২০৩)।
পরিবহনের মাধ্যমে জাকাত পাঠালে ভাড়া বহনের বিধান :
পরিবহনের
ক্ষেত্রেও একই বিষয়। জাকাতের সম্পদ পাঠানোর ভাড়া জাকাত দাতাকেই বহন করতে হবে। জাকাতের
টাকা থেকে পরিবহনের ভাড়া দিলে ওই টাকা জাকাত হিসেবে আদায় হবে না। তেমনিভাবে জাকাতের
মালে কোনো শ্রমিক কাজ করলে তার পারিশ্রমিক জাকাত দাতার নিজস্ব মাল থেকে দিতে হবে। জাকাতের
মাল থেকে দিলে জাকাত আদায় হবে না। (রদ্দুল মুহতার, খণ্ড-৩, পৃষ্ঠা-২২৫, বাহরুর রায়েক, খন্ড-২, পৃষ্ঠা-৩৬৯)।
সু-প্রিয়
প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
যদি কোন
ব্যক্তি যাকাতের টাকা থেকে কারো কাছ থেকে কিছু পাঠাতে চায় তাহলে এই বাবদ যেই খরচ
হবে তা যাকাত থেকে গ্রহণ করা যাবে না বরং যার উপর যাকাত ফরজ সেই উক্ত খরচ বহন
করবে। তবে যদি কোন নফল দান বা সদাকা হয়, যা কারো উপর ওয়াজিব নয়(যেমন: যাকাত,মানত,
কুরবানী ইতাদী) এমন ডোনেশন হকদারের কাছে পৌছাতে যেই সকল আনুসাংঙ্গিক খরচ (যাতায়াত ভাড়া) লাগে, তা উক্ত ডোনেশনের
টাকা থেকেই গ্রহণ করা জায়েয আছে।