بسم الله الرحمن الرحيم
জবাব,
আমরা তাজবিদ সংক্রান্ত কিছু মাসয়ালা জেনে নেইঃ
“তাজবিদ
ও কিরাআতবিদগণ কর্তৃক উল্লেখিত তাজবিদের নিয়ম-কানুনগুলোর প্রতি গুরুত্ব দেয়া ভালো।
এটি কিরাআত সুন্দর করার অন্তর্গত। যেহেতু রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
« زَيِّنُوا الْقُرْآنَ بِأَصْوَاتِكُمْ »
“তোমরা সুন্দর
কণ্ঠে কুরআন তিলাওয়াত কর।” [হাদিসটি ইমাম আহমদ, ইবনে মাজাহ, নাসায়ী ও হাকেম রহ. হাদিসটি বর্ণনা করেছেন
এবং তা সহীহ]
সুতরাং যদি গুন্নাহ, তারকিক (বারিক/চিকন করা), তাফখিম (পোর/মোটা করা) ইত্যাদির প্রতি
লক্ষ্য রাখা হয় তাহলে তা উত্তম। কিন্তু আমার কাছে যা মনে হয় এটা আবশ্যক নয়-যদি স্পষ্টভাবে
ত্রটি-বিচ্যুতি ছাড়া পাঠ করে।”
শাইখ সালেহ আল
ফাউযান (হাফিযাহুল্লাহ) বলেন,
“قراءة القرآن بالتجويد مستحبة من غير إفراط، وليست واجبة، وإنما الواجب
تجويد القرآن من اللحن والخطأ في الإعراب”
“তাজবিদ
সহ কুরআন তিলাওয়াত করা মুস্তাহাব। তবে এ ক্ষেত্রে বাড়াবাড়ি করা যাবে না। এটা ওয়াজিব
নয়। বরং ওয়াজিব হল, ইরাব (উচ্চারণ
ও প্রকাশ করা) এর ক্ষেত্রে ভুল-ত্রুটি থেকে মুক্ত করে সুন্দরভাবে কুরআন তিলাওয়াত করা।”
শাইখ উসাইমিন রহ. বলেন,
أما التجويد فليس بواجب، التجويد تحسين للفظ
فقط، وتحسين اللفظ بالقرآن لا شك أنه خير، وأنه أتم في حسن القراءة، لكن الوجوب
بحيث نقول من لم يقرأ القرآن بالتجويد فهو آثم قول لا دليل عليه، بل الدليل على
خلافه”
“আর তাজবিদ
ওয়াজিব নয়। তাজবিদ শব্দকে সুন্দর করে মাত্র। কুরআনের শব্দকে সুন্দর করা নি:সন্দেহে
কল্যাণকর। এটি কিরাআতকে সুন্দর করার ক্ষেত্রে পূর্ণাঙ্গতা দান করে। কিন্তু তাজবিদকে
ওয়াজিব বলা অর্থাৎ “এ কথা বলা যে, যে ব্যক্তি তাজবিদ অনুযায়ী কুরআন পড়বে না সে গুনাহগার হবে” এর
পক্ষে কোনও দলিল নাই। বরং এর বিপরীতেই দলিল রয়েছে।”
★★যাদের জন্য পূর্ণ তাজবিদ সহকারে কুরআন
তেলাওয়াত সম্ভব। শুধুমাত্র তাদের জন্যই পূর্ণ তাজবিদ সহকারে কুরআন তেলাওয়াত করা ওয়াজিব।আর
যাদের বেলায় সম্ভব নয়, তাদের জন্য
পূর্ণ তাজবিদ সহকারে কুরআন তেলাওয়াত করা ওয়াজিব নয়।বরং অর্থে পরিবর্তন আসেনা এমনকরে
কুরআন পড়াই তাদের জন্য যথেষ্ট হবে।এমনকি তারা পূর্ণ তাজবিদ সহকারে না পড়লেও তাদের কোনোপ্রকার
গোনাহগার হবেন না।(শরহু তাইয়্যিবাতুন-নাশর-৬৩)
আরো জানুনঃ
https://ifatwa.info/11627/
https://ifatwa.info/11588/
* আল্লাহ
তা‘আলা পবিত্র কুরআনে এই মারাত্মক শিরক প্রসঙ্গে বলেন,
اِتَّخَذُواْ أَحْبَارَهُمْ وَرُهْبَانَهُمْ
أَرْبَاباً مِّنْ دُوْنِ اللهِ-
‘আল্লাহর
পরিবর্তে তারা তাদের আলেম ও সাধু-দরবেশদেরকে প্রভু বানিয়ে নিয়েছে’ (তওবা ৩১)।
আদী বিন হাতেম (রাঃ) আল্লাহর নবীকে এ আয়াত পাঠ করতে শুনে
বলেছিলেন,
إِنَّهُمْ لَمْ يَكُونُوا
يَعْبُدُونَهُمْ ‘
ওরা তো তাদের ইবাদত করে না’। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছিলেন,
وَلَكِنَّهُمْ كَانُوا إِذَا
أَحَلُّوا لَهُمْ شَيْئًا اسْتَحَلُّوهُ وَإِذَا حَرَّمُوا عَلَيْهِمْ شَيْئًا
حَرَّمُوهُ
‘তা বটে।
কিন্তু আল্লাহ যা হারাম করেছেন তারা ওদেরকে তা হালাল করে দিলে ওরা তা হালালই মনে করে।
একইভাবে আল্লাহ যা হালাল করেছেন তারা ওদেরকে তা হারাম করে দিলে ওরা তা হারামই মনে করে।
এটাই তাদের ইবাদত করা’।
আল্লাহ পবিত্র কুরআনে মুশরিকদের আচরণ বর্ণনা করতে গিয়ে
বলেন,
وَلاَ يُحَرِّمُوْنَ مَا حَرَّمَ اللهُ
وَرَسُولُهُ وَلاَ يَدِيْنُوْنَ دِيْنَ الْحَقِّ-
‘আল্লাহ
ও তাঁর রাসূল যা হারাম করেছেন তারা তাকে হারাম গণ্য করে না এবং সত্য দ্বীনকে তাদের
দ্বীন হিসাবে গ্রহণ করে না’ (তওবা ২৯)।
অন্যত্র তিনি বলেন,
قُلْ أَرَأَيْتُمْ مَّا أَنْزَلَ اللهُ لَكُم
مِّن رِّزْقٍ فَجَعَلْتُمْ مِّنْهُ حَرَاماً وَحَلاَلاً قُلْ اللهُ أَذِنَ لَكُمْ
أَمْ عَلَى اللهِ تَفْتَرُونَ-
‘আপনি বলুন, আল্লাহ তা‘আলা তোমাদেরকে যে রূযী দান করেছেন, তন্মধ্যে তোমরা যে সেগুলির কতক হারাম ও
কতক হালাল করে নিয়েছ, তা কি তোমরা
ভেবে দেখেছ? আপনি বলুন, আল্লাহ কি তোমাদেরকে এতদ্বিষয়ে অনুমতি
দিয়েছেন, নাকি তোমরা আল্লাহর নামে মনগড়া
কথা বলছ’ (ইউনুস ৫৯)।
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
১.কারো যদি কোরআন পড়ার সময় অনিচ্ছাকৃত ভুল হয়ে যায়, এর জন্য আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা তাঁর
বান্দার গুনাহ দেবেন না। তবে জেনে শুনে ইচ্ছাকৃত ভাবে কেউ যদি কুরআনের অর্থ বিকৃত কেরে
তাহলে সে আল্লাহ তায়ালার নিকট অনেক বড় গুনাহগার হিসেবে বিবেচিত হবেন। সুতরাং অনিচ্ছাকৃত
ভুলে ঈমান ভঙ্গ হবেনা।
২.হালালকে হারাম এবং হারামকে হালাল মনে করার অর্থ হল,কোনো কিছুকে হালাল এবং হারাম ঘোষনা প্রদানের একচ্ছত্র অধীকারী একমাত্র আল্লাহ তা'আলা। আল্লাহ তা'আলা ব্যতীত অন্য কাউকে হালাল এবং হারাম
কারী মনে করা শিরক ও কুফরী। যদি কেউ মনে করে তাহলে তার ঈমান চলে যাবে।
কেউ যদি কোনো হারাম কে অজ্ঞতাবসত হালাম মনে করে উক্ত কাজকে
করে নেয়,তাহলে এই কাজ করা তার জন্য
হারাম হয়েছে,কিন্তু
সে কাফির হচ্ছে না। ইলম শিক্ষা ফরয ছিলো, সে কেন শিখেনি,এর জন্য তার গোনাহ হবে।