بسم الله الرحمن الرحيم
জবাব,
শুকনা কুকুর শরীর বা কাপড়ের সাথে লাগলে শরীর বা কাপড় কিছুই
নাপাক হবে না।(ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়্যাহ-৫/২৩৩)
যদি কেউ পবিত্র পানি কুকুরের উপর ঢেলে দেয়।অতঃপর কুকুর
মানুষের সামনে গিয়ে গা ঝাড়া দেয়,এবং ঐ পানি কোনো মানুষের শরীরে লাগে তাহলে ঐ মানুষের শরীর নাপাক
হবে না।(আহসানুল ফাতাওয়া-২/৮৬)
আল্লামা আলাউদ্দিন হাসক্বাফী রাহ লিখেন,
وَلَوْ أُخْرِجَ حَيًّا وَلَمْ
يُصِبْ فَمُهُ الْمَاءَ لَا يَفْسُدُ مَاءُ الْبِئْرِ وَلَا الثَّوْبُ
بِانْتِفَاضِهِ وَلَا بِعَضِّهِ مَا لَمْ يُرَ رِيقُهُ وَلَا صَلَاةُ حَامِلِهِ
وَلَوْ كَبِيرًا، وَشَرَطَ الْحَلْوَانِيُّ شَدَّ فَمِهِ.
যদি কুকুরকে পানির ছোট হাউজ(১০*১০স্কয়ার হাত নয় এমন হলে
ছোট নতুবা বড়)থেকে বের করা হয়,এবং কুকুরের মূখ পানির সাথে মিশ্রিত না হয়,তাহলে হাউজের পানি ফাসিদ হবে না।এবং কুকুরের
শরীরের পানি কোনো কাপড়ে লাগলে সেই কাপড়ও নাপাক হবে না।কুকুর কাউকে কামড় দিলে যতক্ষণ
পর্যন্ত তার লালা দেখা যাবে না ততক্ষণ পর্যন্ত কাপড় নাপাক হবে না।এবং বড় কুকুরকে বহনকারীর
কাপড়ও নাপাক হবে না।সুতরাং নামায ফাসিদ হবে না।আল্লাম হালওয়ানী রাহ এক্ষেত্রে কুকুরের
মূখ বন্ধ থাকার শর্তারোপ করেন।(আদ্দুর্রুল মুখতার-১/২০৮)
*কুকুরের দেহ মূলত নাপাক নয়। তাই কুকুরের শরীরে
কোনো নাপাকি লেগে না থাকলে তার সাথে কাপড় বা কোনো কিছু লাগলে নাপাক হবে না। তবে কুকুরের
লালা নাপাক। সেটি শরীরে বা কাপড়ে লাগলে নাপাক হয়ে যাবে। তাই কুকুরের মুখের লালা লেগে
যদি তার দেহ ভিজে থাকে এবং ঐ ভেজা অংশ কাপড়ে লাগে তাহলে কাপড় নাপাক হয়ে যাবে।
-(ফাতহুল কাদীর ১/১৩১; মারাকিল ফালাহ ২১; শরহুল মুনিয়া ১৫৯; আলবাহরুর রায়েক ১/১০১; আননাহরুল ফায়েক ১/৯৩)
* কুকুরের লালা লাগলে গোসল ফরয হয়না; বরং যেখানে লেগেছে তা তিনবার ধুয়ে নিলেই
পাক হয়ে যায়। কমপক্ষে তিনবার ধোয়া জরুরী। কেননা হাদীস শরীফে এসেছে, আবু হুরায়রা রযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, إِذَا وَلَغَ الْكَلْبُ فِي
الإِنَاءِ فَاهْرِقْهُ ثُمَّ اغْسِلْهُ ثَلاثَ مَرَّاتٍ যখন কুকুর
পাত্রে মুখ দেয় তখন পাত্রের বস্তুটি ফেলে দাও, তারপর পাত্রটি তিনবার ধুয়ে নাও। (দারাকুতনী
১৬৫)
আতা রহ. বলেন, أَنَّهُ كَانَ إِذَا وَلَغَ الْكَلْبُ فِي
الْإِنَاءِ أَهْرَاقَهُ وَغَسَلَهُ ثَلَاثَ مَرَّات আবু হুরায়রা
রযি. কুকুরের মুখ দেয়া পাত্রের বস্তু ফেলে দিয়েছেন এবং পাত্রটি তিনবার ধুয়েছেন। (দারাকুতনী
১৬৬)
আর সাতবার ধোয়া উত্তম। তন্মধ্যে একবার মাটি বা সাবানদ্রব্য
দ্বারা মেজে ফেললে বা ধুয়ে ফেললে আরও উত্তম। কেননা হাদীস শরীফে এসেছে, আবু হুরায়রা রযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, إِذَا شَرِبَ الْكَلْبُ فِيْ
اِنَاءِ أَحَدِكُمْ فَلْيَغْتَسِلْهُ سَبْعَ مَرَّاتٍ তোমাদের
কারো পাত্রে যখন কুকুর পানি পান করে, তখন সে যেন তা সাতবার ধুয়ে নেয়। (বুখারী
১৭২, মুসলিম ২৭৯)
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
শুকুর যেভাবে তার সমস্ত অংশ নিয়ে অপবিত্র যাকে নজসুল আইন
বলা হয়। কুকুর কিন্তু সেভাবে তার সমস্ত অংশ নিয়ে অপবিত্র নয়। বরং কুকুরের পশম পবিত্র।তার
চামড়া পবিত্র কি না? সে সম্পর্কে
উলামায়ে কেরামদের মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে। তবে দেবাগতের পর কুকুরের চামড়া পবিত্র হওয়া
সম্পর্কে সবাই একমত।এবং শরীরের ঐ সমস্ত অঙ্গ পবিত্র যাতে হায়াত থাকে না,যেমন নক,পশম ইত্যাদি। তবে তার গোশত নাপাক।
সুতরাং
প্রশ্নেল্লিখিত ছুরতে যদি আপনার প্রবল ধারণা হয় যে, কুকুরের শরীরে লেগে থাকা ভিজা
লালা থেকেই তাহলে আপনার জুতা ও পায়ের যেই অংশে লেগেছে তা নাপাক হবে। অন্যথায় নাপাক
হবে না। এবং উক্ত বিষয়ে অতিরিক্ত ওয়াসওয়াসায় নিপতিত হওয়া মোটেও উচিত নয়। তবে হ্যাঁ
যদি তা নাপাক প্রমাণিত হয় তাহলে তিনবার হাত ধৌত করাই যথেষ্ট। আর সাতবার
ধোয়া উত্তম।