শিরক দুই প্রকার: এক. শিরকে জলী, দুই. শিরকে খফী। শিরকে জলী সবচেয়ে মারাত্মক। শিরকে জলীর অনেক প্রকার রয়েছে।
ইবাদত, যা একমাত্র আল্লাহ তাআলার হক, তাতে আল্লাহ ছাড়া কাউকে শরীক করা, উপায়-উপকরণের ঊর্ধ্বের বিষয়ে গাইরুল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করা, উপায়-উপকরণকে উপায়-উপকরণের সৃষ্টিকর্তার মান দেওয়া, গাইরুল্লাহকে উপকার ও ক্ষতির ক্ষমতাধারী মনে করা ইত্যাদি।
★ছোট শিরক যেমনঃ-
★রিয়া তথা লোক দেখানো ইবাদত।
★আল্লাহ ছাড়া অন্যের নামে শপথ করা।
আব্দুল্লাহ ইবনে উমার রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে বর্ণিত আছে, রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসালাম বলেছেন,
مَنْ حَلَفَ بِغَيْرِ اللَّهِ فَقَدْكَفَرَ أَوْ أَشْرَك
‘‘যে ব্যক্তি আল্লাহ ছাড়া অন্যের নামে শপথ করল, সে কুফুরী করলো অথবা শিরক করল’’। ইমাম তিরমিযী হাদীছটি বর্ণনা করার পর হাসান বলেছেন
★শব্দের মাধ্যমে ছোট শিরক হয়ে থাকে
যেমন কেউ বললো, ماشاء الله وشئت ‘‘আল্লাহ এবং আপনি যা চেয়েছেন’’।
★কোনো কোনো অবস্থায় لو (যদি) শব্দ উচ্চারণ করা
এমন কিছু শব্দ রয়েছে, যা উচ্চারণ করা মোটেই ঠিক নয়। কারণ এটি মানুষের আকীদা নষ্ট করে। বিশেষ করে কিছু কিছু ক্ষেত্রে لَوْ শব্দটি ব্যবহার করার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা এসেছে। মানুষ যখন অপ্রিয় পরিস্থিতির সম্মুখীন হয় কিংবা মুছীবতে পড়ে তখন সে যেন এমন না বলে, আমি যদি এমন করতাম, তাহলে আমার এ বিপদ হতো না! আমি যদি এমন না করতাম, তাহলে আমার এমন হতো না। কেননা এ ধরণের কথার মধ্যে ইঙ্গিত পাওয়া যায় যে, বান্দার যা হাতছাড়া হলো এবং যা ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয় তাতে তার ধৈর্য নেই।
সেই সঙ্গে যে ব্যক্তি لو শব্দটি উচ্চারণ করে, তার কথার মধ্যে আরো ইঙ্গিত পাওয়া যায় যে, তাক্বদীর ও আল্লাহ তা‘আলার ফায়ছালার প্রতি তার ঈমান নেই। এতে নিজের নফস্কে দোষারোপ করা এবং কুমন্ত্রণা ও দুশ্চিন্তা প্রদানের জন্য শয়তানকে সুযোগ করে দেয়া হয়।
কোনো মুসলিমের উপর মুছীবত নেমে আসলে তাক্বদীরকে মেনে নেয়া এবং মুছীবতে সবর করা আবশ্যক। তবে নিজের নফস্কে দোষারোপ না করে কল্যাণ আনয়নকারী উপায়-উপকরণ সংগ্রহ করা এবং অকল্যাণ প্রতিহতকারী ও অপ্রিয় বস্তু বিদূরিতকারী উপায়-উপকরণ অবলম্বন করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করা জরুরী।
উহুদ যুদ্ধে মুসলিমদের উপর যে বিপদাপদ নেমে এসেছিল, তার কারণে যারা لو শব্দটি ব্যবহার করেছিল, তাদেরকে আল্লাহ তা‘আলা দোষারোপ করেছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
﴿يَقُولُونَ لَوْ كَانَ لَنَا مِنَ الْأَمْرِ شَيْءٌ مَا قُتِلْنَا هَاهُنَا﴾
‘‘তারা বলে, এ ব্যাপারে যদি আমাদের করণীয় কিছু থাকতো, তাহলে আমরা এখানে নিহত হতাম না’’। (সূরা আলে-ইমরান: ১৫৪)
মানুষের মধ্যে এমন অনেক ছোট শিরক রয়েছে, যা থেকে আল্লাহ তা‘আলা এবং তার রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদেরকে সতর্ক করেছেন। যাতে করে আকীদার সংরক্ষণ করা যায় এবং তাওহীদের হেফাযত করা হয়। কেননা এ ছোট শিরকগুলো তাওহীদে ঘাটতি আনয়ন করে। কখনো কখনো এগুলো বড় শিরকের দিকে নিয়ে যায়।