আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
7,304 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (-1 points)
আসসালামু আলাইকুম,

সূরা নূর: আয়াত ২৬ এ বলা হয়েছে-

الْخَبِيثَاتُ لِلْخَبِيثِينَ وَالْخَبِيثُونَ لِلْخَبِيثَاتِ ۖ وَالطَّيِّبَاتُ لِلطَّيِّبِينَ وَالطَّيِّبُونَ لِلطَّيِّبَاتِ ۚ أُولَٰئِكَ مُبَرَّءُونَ مِمَّا يَقُولُونَ ۖ لَهُم مَّغْفِرَةٌ وَرِزْقٌ كَرِيمٌ

দুশ্চরিত্রা নারীকূল দুশ্চরিত্র পুরুষকুলের জন্যে এবং দুশ্চরিত্র পুরুষকুল দুশ্চরিত্রা নারীকুলের জন্যে। সচ্চরিত্রা নারীকুল সচ্চরিত্র পুরুষকুলের জন্যে এবং সচ্চরিত্র পুরুষকুল সচ্চরিত্রা নারীকুলের জন্যে। তাদের সম্পর্কে লোকে যা বলে, তার সাথে তারা সম্পর্কহীন। তাদের জন্যে আছে ক্ষমা ও সম্মানজনক জীবিকা।


বর্তমানে অনেক যুবক-যুবতী বিয়ের আগে অবৈধ প্রেম বা শারীরিক সম্পর্ক করে নিজেদের চরিত্র নষ্ট করে ফেলে।
তাদের সামনে যখন উপরোক্ত আয়াতটি আসে তখন তারা ভাবে নিজে যেহেতু খারাপ তাই তাদের ভাগ্যে জুটবেও খারাপ সঙ্গী আবার নিজে ভালো হলে তাদের ভাগ্যে জুটবেও ভালো সঙ্গী।

উক্ত আয়াতের সহীহ ব্যাখ্যা কী আসলেই এরকম?

1 Answer

+1 vote
by (589,380 points)

ওয়া আলাইকুম আসসালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহ

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।


জবাবঃ-
আল্লাহর তা'আলার বানী
الْخَبِيثَاتُ لِلْخَبِيثِينَ وَالْخَبِيثُونَ لِلْخَبِيثَاتِ ۖ وَالطَّيِّبَاتُ لِلطَّيِّبِينَ وَالطَّيِّبُونَ لِلطَّيِّبَاتِ ۚ أُولَٰئِكَ مُبَرَّءُونَ مِمَّا يَقُولُونَ ۖ لَهُم مَّغْفِرَةٌ وَرِزْقٌ كَرِيمٌ
দুশ্চরিত্রা নারীকূল দুশ্চরিত্র পুরুষকুলের জন্যে এবং দুশ্চরিত্র পুরুষকুল দুশ্চরিত্রা নারীকুলের জন্যে। সচ্চরিত্রা নারীকুল সচ্চরিত্র পুরুষকুলের জন্যে এবং সচ্চরিত্র পুরুষকুল সচ্চরিত্রা নারীকুলের জন্যে। তাদের সম্পর্কে লোকে যা বলে, তার সাথে তারা সম্পর্কহীন। তাদের জন্যে আছে ক্ষমা ও সম্মানজনক জীবিকা।(সূরা নূর-২৬)

(এক)
মুফাস্সিরীনে কেরাম উক্ত আয়াতের অর্থ বর্ণনা করতে যেয়ে ভিন্ন ভিন্ন মত পেশ করে থাকেন,
  • (১)কথার মধ্যে ভাল এবং খারাপ থাকা।অর্থাৎ নোংরা ও অশ্লীল কথা, এবং সভ্যতাজনিত কথা।
তখন আয়াতের অর্থ হবে,নোংরা কথা নোংরা মানুষের জন্যই উপযোক্ত।ঠিকতেমনি নোংরা মানুষ নোংরা কথার উপযুক্ত।এমনিভাবে ভালো কথা ভালো মানুষের উপযুক্ত। এবং ভালো মানুষ ভালো কথার উপযুক্ত।এটা,হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস,মুজাহিদ ইবনে জাবর,সাঈদ ইবনে যুবাইর, শা'বী, হাসান বসরী, হাবীব ইবনে আবী ছাবিত,যাহহাক, ইবনে জারীর তাবারী রাহ এর মত।ইমাম নাহহাসা উনার কিতাব 'মা'আনীল কুরআন' এ বলেন,এটাই সর্বোত্তম তাফসীর।এর প্রমাণ হল,আল্লাহ তা'আলার পরবর্তী বাণী,
أولئك مبرءون مما يقولون
'তাদের সম্পর্কে লোকে যা বলে, তার সাথে তারা সম্পর্কহীন' তথা হযরত আয়েশা রাযি ও হযরত সফওয়ান রাযি সম্পর্কে নোংরা শ্রেণীর লোকরা যা বলেছিলো,তা থেকে তারা দুইজন পবিত্র।এত্থেকে বুঝা যায়,এই আয়াতে الْخَبِيثَاتُ لِلْخَبِيثِينَ শব্দ দ্বারা কথার অশ্লীলতা বুঝানো হয়েছে।
ইমাম তাবারী রাহ বলেন,এটাই সর্বোত্তম তা'বীল।কেননা এই আয়াত হযরত আয়েশা রাযি এর শানে নোংরা কথা বলার পরই নাযিল হয়েছে।কাজেই বুঝা গেল,এই আয়াতে নোংরামি দ্বারা কথা নোংরামি উদ্দেশ্য নেয়া হয়েছে।
(তাফসীরে তাবারী-১৯/১৪৪)

  • (২)কাজের মধ্যে নোংরামি ও সভ্যতা।তখন আয়াতের ব্যাখা হবে,মন্দ কাজ মন্দ লোকের জনই উপযুক্ত।এবং মন্দ লোক মন্দ কাজের উপযুক্ত।ঠিকতেমনি ভদ্র কাজ ভদ্র লোকের উপযুক্ত।এবং ভদ্র লোক ভদ্র কাজের উপযুক্ত।এটা হাবীব ইবনে আবি ছাবিত,আ'তা ইবনে আবি রাবাহ,কাতাদাহ,
ইবনে তাইমিয়্যাহ রাহ বলেন, 
নোংরা কথা বা কাজ,দুটুই হতে পারে।
মাজমু'আতুল ফাতাওয়া-১৪/৩৪৩)


  • (৩)নিকাহর ব্যাপারে ভাল-মন্দ পুরুষ এবং নারী উদ্দেশ্য।তখন আয়াতের উদ্দশ্য হল,দুশ্চিরিত্র পুরুষের জন্য দুশ্চরিত মহিলা।এটা আব্দুর রহমান ইবনে যায়েদ ইবনে আসলাম এর মত।রাসূলুল্লাহ সাঃ ভালো ছিলেন,এবং উনার স্ত্রী আয়েশা রাযিও ভালো ছিলেন।

ইমাম কুরতুবী রাহ বলেন,
এই ব্যখ্যার উৎস হল,আল্লাহর তা'আলার অন্য এক বাণী,
الزاني لا ينكح إلا زانية أو مشركة
যিনাকারী পুরুষ যিনাকারী মহিলা বা মুশরিক মহিলা ব্যতীত অন্য কাউকে বিয়ে করবে না।(সূরা নূর-০৩)
তখন,الخبيثات দ্বারা উদ্দেশ্য হবে,যিনাকারী মহিলা।এবং الطيبات দ্বারা উদ্দেশ্য হবে,সভ্যভদ্র মহিলা।

এটা নাহহাস রাহ এর মত।এবং  ইবনে যায়েদ এর মত।(তাফসীরে কুরতুবী-১২/২১১)

(দুই)
প্রথম ও দ্বিতীয় ব্যাখ্যানুসারে কোনো মতপার্থক্য নেই,অভিযোগ নেই।
তবে তৃতীয় ব্যখ্যায় প্রশ্ন চলে আসে যে,আমরা দেখতে পাই যে,অনেক নেককার স্ত্রী বদকার স্বামীকে বিয়ে করে থাকে?

জবাবে বলা হবে,এখানে অর্থ হল,সচ্চরিত্র পুরুষের জন্য সচ্চরিত্রা মাহিলাকে বিয়ে করা ব্যতীত অন্য কোথাও বিয়ে করা উচিৎ হবে না।এবং দুশ্চিরিত্রা মহিলা মহিলার জন্য দুশ্চিরিত্র পুরুষই বেশ উপযুক্ত। যে ব্যক্তি দুশ্চরিত্রা মহিলার খবর জানা সত্বেও সে দুশ্চরিত্রাকে বিয়ে করতে যাবে,সে নিজেও এরকম দুশ্চরিত্র।

তাফসীরে জালালাইন গ্রন্থে উক্ত আয়াতের ব্যাখায় লিখা হয়,
ﻣِﻤَّﺎ ﺫُﻛِﺮَ ﺃَﻱْ اﻟﻻَّﺋِﻖ ﺑِﺎﻟْﺨَﺒِﻴﺚِ ﻣِﺜْﻠﻪ ﻭَﺑِﺎﻟﻄَّﻴِّﺐِ ﻣِﺜْﻠﻪ
উক্ত আয়াতে যে বলা হয়েছে,'দুশ্চরিত্রা নারীকূল দুশ্চরিত্র পুরুষকুলের জন্যে'(শেষ পর্যন্ত)

এই আয়াতের সহজ অর্থ হচ্ছে,দুশ্চরিত্র নারীর জন্য দুশ্চিত্র পুরুষই উপযোক্ত এভাবে ঠিক তার উল্টো।এ অর্থ নয় যে,দুশ্চরিত্র নারী দুশ্চরিত্র পরুষকেই পাবে।হতে পারে পাবে আবার নাও পেতে পারে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by
আল্লাহ অবিবেচক ও অন্যায় বিচারক নয়। তিনি কখনও ভালোর সাতে খারাপ আর খারাপের সোথে ভালো মিশাবেন না।

by (589,380 points)
আপনি কি বুঝাতে চাইছেন। 
by
আল্লাহ তালা অবিবেচক ও অন্যায় বিচারক নন । তাই একটা সম্ভবনা থাকে যে পবিত্র ছেলের সাথে অপবিত্র মেয়ে জীবনসঙ্গী হতে পারে না । আবার দুনিয়া আমাদের বিভিন্নভাবে পরীক্ষা নেওয়া হবে । তাই এখানেও সম্ভবনা থাকে যে একজন পবিত্র ছেলে / মেয়ে র সাথে একজন অপবিত্র ছেলে / মেয়ে জীবনসঙ্গী হতে পারে ।
by (589,380 points)
আপনি কি বলতে চাচ্ছেন?
by (9 points)
reshown by
কোনো বাভিচারি মহিলা/পুরুষ যদি তওবা করে ফিরে আসে। এবং জেনে শুনে ও দীনদার ভালো কাউকে বিয়ে করে এতে তার গুনাহ হবে? মানে যে যিনাহ করবে সে যিনাহ করছে এমন কাউকেই খুঁজে/যার সাথে করেছে তাকেই বিয়ে করবে এমন?
by (589,380 points)
তাওবাহ করে নিলে আর কোনো গোনাহ হবে না।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...