আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
127 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (43 points)

আসসালামু আলাইকুম 

 

১) যেনা করলে যেনাকারীর ইমান চলে যায় যতক্ষণ না সে তওবা করে, এই কথাটি কতটুকু সত্য?

 

২) [১] নং সত্য হলে এখানে যেনা বলতে কি চূড়ান্ত যেনা যেটা অঙ্গের মাধ্যমে করা হয় তা বুঝানো হয়েছে?  নাকি অন্য যেমন: চোখের যেনা সহ আরও যে যেনা আসে সেক্ষেত্রেও একই বিষয় হবে অর্থাৎ ঈমান চলে যাবে?

 

৩) নন মাহরামের দিকে কামভাব ছাড়া দৃষ্টি দিলেও কি চোখের যেনা হবে? 

 

৪) অনেক মেয়েদের দেখা যায় বয়ফ্রেন্ড থাকে তারা আবার অনেকে বোরকা পড়ে, অনেক ক্ষেত্রে তাদের চেহারাও দেখা যায় না। অনেকের আবার উদ্দেশ্য থাকে নিজের পরিচয় লুকানো।  তাদের কি ঔ সময়ের জন্য পর্দা হইতেছে?

৫) যেনার দরুন কেউ গর্ভবতী হয়ে যায় এবং পরে যেনাকারী আর যেনাকারিণীরারা পরে একে অপরকে বিয়ে করে ফেললে সেই বাচ্চাও কি জারজ বা অবৈধ হয়ে যায়?


 

জাযাকাল্লাহু খাইরান 

1 Answer

0 votes
by (675,600 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم


(০১)
যেসব মানুষেরা ব্যাভিচার করে, তাদের ঈমান চলে যায়না ঠিক,তবে যেনার সময় তাদের পূর্ণ ঈমান থাকেনা।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ 
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। 

 عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم لاَ يَزْنِي الزَّانِي حِينَ يَزْنِي وَهُوَ مُؤْمِنٌ وَلاَ يَشْرَبُ الْخَمْرَ حِينَ يَشْرَبُ وَهُوَ مُؤْمِنٌ وَلاَ يَسْرِقُ حِينَ يَسْرِقُ وَهُوَ مُؤْمِنٌ وَلاَ يَنْتَهِبُ نُهْبَةً يَرْفَعُ النَّاسُ إِلَيْهِ فِيهَا أَبْصَارَهُمْ حِينَ يَنْتَهِبُهَا وَهُوَ مُؤْمِنٌ
وَعَنْ سَعِيدٍ وَأَبِي سَلَمَةَ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مِثْلَهُ إِلاَّ النُّهْبَةَ
তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কোন ব্যভিচারী মু’মিন অবস্থায় ব্যভিচার করে না এবং কোন মদ্যপায়ী মু’মিন অবস্থায় মদ পান করে না। কোন চোর মু’মিন অবস্থায় চুরি করে না। কোন লুটতরাজকারী মু’মিন অবস্থায় এরূপ লুটতরাজ করে না যে, যখন সে লুটতরাজ করে তখন তার প্রতি লোকজন চোখ তুলে তাকিয়ে থাকে।সা‘ঈদ ও আবূ সালামাহ (রাঃ) আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) সূত্রে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে অনুরূপ বর্ণিত, তবে তাতে লুটতরাজের উল্লেখ নেই। ফিরাবরী (রহ.) বলেন, আমি আবূ জা‘ফর (রহ.)-এর লেখা পান্ডুলিপিতে পেয়েছি যে, আবূ ‘আবদুল্লাহ (ইমাম বুখারী) (রহ.) বলেন, এ হাদীসের ব্যাখ্যায় ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেছেন, এর অর্থ হল, তার হতে ঈমানের নূর ছিনিয়ে নেয়া হয়।সহীহ বোখারী- শামেলা-২৪৭৫ (৫৫৭৮, ৬৭৭২, ৬৮১০) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ২২৯৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ২৩১৩) 


উক্ত হাদীসের অনেক ব্যখ্যা হতে পারে।মোল্লা আলী ক্বারী রাহ. বলেন, 
 «وَأَصْحَابُنَا أَوَّلُوهُ بِأَنَّ الْمُرَادَ الْمُؤْمِنُ الْكَامِلُ فِي إِيمَانِهِ، أَوْ ذُو أَمْنٍ مِنْ عَذَابِ اللَّهِ تَعَالَى، أَوِ الْمُرَادُ الْمُؤْمِنُ الْمُطِيعُ لِلَّهِ، يُقَالُ: أَمِنَ لَهُ، إِذَا انْقَادَ وَأَطَاعَ، أَوْ مَعْنَاهُ الزَّجْرُ وَالْوَعِيدُ، أَوِ الْإِنْذَارُ لِمُرْتَكِبِ هَذِهِ الْكَبَائِرِ بِسُوءِ الْعَاقِبَةِ، إِذْ مُرْتَكِبُهَا لَا يُؤْمَنُ عَلَيْهِ أَنْ يَقَعَ فِي الْكُفْرِ الَّذِي هُوَ ضِدُّ الْإِيمَانِ، أَوْ أَنَّ الْإِيمَانَ إِذَا زَنَى الرَّجُلُ خَرَجَ مِنْهُ، وَكَانَ فَوْقَ رَأْسِهِ مِثْلَ الظُّلَّةِ، فَإِذَا انْقَلَعَ رَجَعَ إِلَيْهِ، وَسَيَأْتِي تَقْرِيرُهُ. وَقِيلَ: مَعْنَى مُؤْمِنٍ مُسْتَحٍ مِنَ اللَّهِ تَعَالَى؛ لِأَنَّ الْحَيَاءَ شُعْبَةٌ مِنَ الْإِيمَانِ، فَلَوِ اسْتَحَى مِنْهُ وَاعْتَقَدَ أَنَّهُ نَاظِرٌ لَمْ يَرْتَكِبْ هَذَا الْفِعْلَ الشَّنِيعَ، وَفِيهِ بَحْثٌ،» - «مرقاة المفاتيح شرح مشكاة المصابيح» (1/ 124)
সর্বোত্তম ব্যখ্যা হল, যিনার সময় মানুষের কামিল ঈমান থাকে না। বা যিনার সময় ঈমান বের হয়ে যায়, এবং মাথার উপর ছায়ার মত থাকে, যখন যিনা শেষ হয়, তখন আবার ঈমান চলে আসে। 

বিস্তারিত জানুনঃ- 

(০২)
এখানে যেনা বলতে চূড়ান্ত যেনা যেটা অঙ্গের মাধ্যমে করা হয়, তা বুঝানো হয়েছে।

(০৩)
অপ্রয়োজনে ইচ্ছাকৃতভাবে নজর দিলে চোখের যেনা হবে।

(০৪)
বয়ফ্রেন্ড সাথে থাকা অবস্থায় তাদের পূর্ণ পর্দা হবেনা।
কেননা এক্ষেত্রে গায়রে মাহরামের সাথে কথা বলার দরুন কন্ঠের পর্দা থাকেনা।

(০৫)
সেটি যেনার সন্তান বলে বিবেচিত হবে,তবে এক্ষেত্রে ঐ যেনাকারী যদি বাচ্চাটির বাবার দাবী করে,সেক্ষেত্রে সন্তানের বংশ যেনাকারীর দিকে নিসবত হবে।

হাদীস শরীফে এসেছে,রাসুলুল্লাহ সাঃ ইরশাদ করেনঃ- 

الْوَلَدُ لِلْفَرَاشِ وَلِلْعَاهِرِ الْحَجَرُ وَحِسَابُهُمْ عَلَى اللَّهِ»

সন্তান বিছানার মালিকের; আর ব্যভিচারীর জন্য রয়েছে পাথর। আর পরকালে তাদের হিসাব আল্লাহর হাতে।
(তিরমিজি ৩০৭৩)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...