আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
224 views
in সালাত(Prayer) by (31 points)

আসসালামু আলাইকুম।

প্রথমেই ক্ষমা চাই। হুজুর আমার দ্বীনি ইলম নাই, মানুষ হিসাবে ভুল হয়,  তাই আমার প্রশ্নে ভুল হলে-আপনারা রসূল(সঃ) আদর্শ অনুযায়ী ক্ষমা করবেন ও শুধরিয়ে দিবেন। এই আবেদন আপনাদের প্রতি। এবং আল্লাহর কছম প্রশ্নটি করা বিশৃঙ্খলা/ঐক্য নষ্টের জন্য না,আমি আমি আসলেই বিভ্রান্ত নিম্নোক্ত বিষয় নিয়ে। 

যদি আপনাদের দৃষ্টিতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির কারন মনে হয় প্রশ্নটি তাহলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেয়া (অনুগ্রহপূর্বক উত্তর টা আমাকে জানিয়ে) এবং ক্ষমাসূলভ দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রইল।

★>>ঘটনাঃ

https://ifatwa.info/37730/ তে বলা হয়েছে 

ফরজ অথবা ওয়াজিব নামাজের প্রথম বৈঠকে তাশাহুদে এক শব্দ বা বাক্য মাখরাজের সন্দেহের কারনে দুইবার ব একাধিক বার পরলে সেজদায়ে সাহু ওয়াজিব হবেনা।
এটি ফুকাহায়ে কেরামগন দের মত।  

ফরজ নামাজে ইচ্ছাপূর্বক ভাবে কোনো ওযর ছাড়া সুরা ফাতেহার এক আয়াত দুইবার পড়া মাকরুহ। 
নফল নামাজে কোনো সমস্যা নেই।
ফরজ নামাজের প্রথম দুইরাকাতে বিনা ওযরে সুরা ফাতেহার অধিকাংশ আয়াত  যদি দুইবার পড়া হয়,তাহলে সেজদায়ে সাহু আবশ্যক হবে।

আবার,, https://ifatwa.info/39525/ এ দেখলাম তার উল্ট জিনিস। ★ফরজ নামাজে প্রথম দুই রাকাতে সুরা ফাতিহার কোন আয়াতে মাখরাজ ভুল হলে আবার শুদ্ধ করার জন্য এই আয়াত আবার সম্পুর্ণ পড়লে সাহু সিজদা দিতে হবে।

 ★>>আমার প্রশ্নঃ

(১) ২টি বিষয় সাংঘর্ষিক। বুঝতেছি না,, বিষয়টি ক্লিয়ার করার অনুরোধ করছি। [যদি মাজহাব ভিত্তিক ভাগ থাকে তাহলে, বিষয়টি অবগত করার অনুরোধ জ্ঞাপন করছি]

 

(২) https://ifatwa.info/37730/ অনুযায়ী

>> ওযর গূলো কেমন হতে পারে?( মাখ্রাজ ভুল/সন্দেহ কি ওযর?)

>>অধিকাংশ আয়াত বলতে কতটুকু? 

>> এক আয়াত বার বার –এ বার বার বলতে কতবার? 

>>তাশাহুদ এ একাধিক আয়াত/বাক্য/শব্দ বার বার পড়লে? (ওযর বশত) 

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
edited by
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


নামাযে যেকোনো ভুলের কারণে সেজদা সাহু ওয়াজিব হয়ে যায় না। বরং ভুলে নামাযের কোনো ওয়াজিব ছুটে গেলে কিংবা কোনো ফরয বা ওয়াজিব বিলম্বিত হলে ওয়াজিব হয়। আর যদি ভুলে কোনো ফরয ছুটে যায়, তবে সেজদা সাহু করা যথেষ্ট নয়, বরং পুনরায় নামায আদায় করতে হবে। আর কোনো সুন্নত বা মুস্তাহাব ছুটে গেলে সেজদা সাহু করার বিধান নেই। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حدثنا عبد الله بن يوسف، أخبرنا مالك بن أنس، عن ابن شهاب، عن عبد الرحمن الأعرج، عن عبد الله بن بحينة رضي الله عنه، أنه قال: صلى لنا رسول الله صلى الله عليه وسلم ركعتين من بعض الصلوات، ثم قام فلم يجلس، فقام الناس معه، فلما قضى صلاته ونظرنا تسليمه كبر قبل التسليم، فسجد سجدتين وهو جالس، ثم سلم.

আবদুল্লাহ ইবনে বুহায়না রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক নামায আমাদের দুই রাকাত পড়ান। তারপর না বসে দাঁড়িয়ে যান। মুকতাদীরাও তাঁর সাথে দাঁড়িয়ে যায়। যখন তিনি নামায পূর্ণ করলেন এবং আমরা তাঁর সালাম ফিরানোর অপেক্ষা করছিলাম তখন সালাম ফিরানোর আগে তাকবীর দিলেন এবং বসা অবস্থায় দুটি সেজদা করলেন। তারপর সালাম ফিরালেন। 
(সহীহ বুখারী, হাদীস ১২২৪ সহীহ মুসলিম, হাদীস ৫৭০)

★শরীয়তের বিধান হলো নামাজে সুরা ফাতেহা পড়া ওয়াজিব।
আর ওয়াজিবকে একাধিকবার আদায় করলে সেজদায়ে সাহু ওয়াজিব হয়।    

ফরজ নামাজে ইচ্ছাপূর্বক ভাবে কোনো ওযর ছাড়া সুরা ফাতেহার এক আয়াত দুইবার পড়া মাকরুহ। 
নফল নামাজে কোনো সমস্যা নেই।
ফরজ নামাজের প্রথম দুইরাকাতে বিনা ওযরে সুরা ফাতেহার অধিকাংশ আয়াত যদি দুইবার পড়া হয়,তাহলে সেজদায়ে সাহু আবশ্যক হবে।
৩য়,৪র্থ রাকাতে হলে কোনো সমস্যা নেই।
,

ولو کرر الفاتحة او بعضھا فی احدی الاولیین قبل السورة سجد للسہو ۔
(طحطاوی علی مراقی الفلاح ٤٦٠ باب سجود السہو)
সারমর্মঃ
যদি ১ম দুই রাকাতে সুরা ফাতেহা বা তার কিছু আয়াত অন্য সুরা পড়ার আগে (বারংবার পড়ে),পুনরায় পড়ে,তাহলে সেজদায়ে সাহু আবশ্যক হবে।  
  
ولو قرأھا في رکعۃ من الأولیین مرتین وجب سجود السہو لتاخیر الواجب الخ، وکذا لو قرأ أکثرھا ثم أعادھا کما في الظہیریۃ۔ (شامی زکریا ۲؍۱۵۲)
সারমর্মঃ
নামাজের প্রথম দুইরাকাতে সুরা ফাতেহা যদি দুইবার পড়া হয়,তাহলে সেজদায়ে সাহু আবশ্যক হবে।
একইভাবে যদি সুরা ফাতেহার অধিকাংশ আয়াত আবার পড়া হয়,তাহলেও সেজদায়ে সাহু আবশ্যক হবে।      

বিস্তারিত জানুনঃ  

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
এখানে সুরা ফাতেহার অধিকাংশ আয়াত পাটগ করলে সেজদায়ে সাহু দিতে হবে নাকি কিছু আয়াত তিলাওয়াত করলেও সেজদায়ে সাহু দিতে হবে?        
বিষয়টি মতবিরোধ পূর্ণ মাসয়ালা।
যেটি উপরোক্ত দুটি ফিকহের ইবারত থেকে বুঝা যায়।    

(০১)
যদি মাখরাজ গত ভুল হওয়াতে নামাজ ফাসেদ হয়ে যাওয়ার মতো অর্থ বিকৃত হয়,তাহলে সেই ছুরতে সেই আয়াত পুনরায় তিলাওয়াত করলে কোনো সমস্যা নেই।
মাকরুহও হবেনা।   সেজদায়ে সাহুও ওয়াজিব হবেনা।
আর যদি মাখরাজ গত ভুল হওয়াতে নামাজ ফাসেদ হয়ে যাওয়ার মতো অর্থ বিকৃত না হয়,তাহলে যদি সুরা ফাতেহার অধিকাংশ আয়াত পুনরায় পাঠ করা হয়,তাহলে সেজদায়ে সাহু আবশ্যক হবে। 
আর যদি শুধু এক আয়াত আবারো পড়া হয়,তাহলে সেজদায়ে সাহু ওয়াজিব হবেনা।        

فتاوی عالمگیری:
"ذكر في الفوائد: لو قرأ في الصلاة بخطأ فاحش، ثم رجع وقرأ صحيحاً، قال: عندي صلاته جائزة وكذلك الإعراب".  (1 / 82، الفصل الخامس فی زلۃ القاری، ط؛رشیدیہ)
সারমর্মঃ
কেহ যদি নামাজে অশুই তিলাওয়াত করে,অতঃপর সেই আয়াতে ফিরে গিয়ে পুনরায় সহীহ তিলাওয়াত করে,তাহলে তার নামাজ সহীহ।

         حاشیۃ الطحطاوی علی الدر
"وفي المضمرات  : قرأ في الصلاة بخطأٍ فاحش ثم أعاد وقرأ صحیحاً فصلاته جائزة". (1/267، باب مایفسد الصلاۃ، کتاب الصلاۃ)
সারমর্মঃ
কেহ যদি নামাজে অশুই তিলাওয়াত করে,অতঃপর সেই আয়াতে ফিরে গিয়ে পুনরায় সহীহ তিলাওয়াত করে,তাহলে তার নামাজ সহীহ।

(০২)
এখানে সন্দেহ ওযর নয়।
মাখরাজ গত ভুল হয়ে যদি অন্য হরফ উচ্চারণ হওয়া  সম্পর্কে নিশ্চিত হয়,তাহলে সেটি ওযর।
আয়াত বাদ গেলে সেই স্থান আবারো পড়া ওযর।

★অধিকাংশ আয়াত বলতে সুরা ফাতেহার চার আয়াত।

★দুইবার উদ্দেশ্য। 

★২য় বৈঠকে হলে তো কোনো সমস্যা নেই।
১ম বৈঠকে হলে মাখরাজ গত ভুল হয়ে যদি অন্য হরফ উচ্চারণ হওয়া  সম্পর্কে নিশ্চিত হয়,তাহলে সেটি আবারো পড়লে সেজদায়ে সাহু আবশ্যক হবেনা।

নতুবা সেজদায়ে সাহু আবশ্যক হবেনা।  


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (31 points)
★ (২) নং প্রশ্নের শেষ উত্তরটি কি শুধু ফরজ নামাজের ক্ষেত্রে?

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...