বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
- (১) আযান-ইকামাত শুধুমাত্র ফরজ ও জুমুআহ নামযের ক্ষেত্রে সুন্নাতে মুআক্কাদা।অন্যান্য নামাযের ক্ষেত্রে তা প্রযোজ্য নয়।এসম্পর্কে -রদ্দুল মুহতারে বর্ণিত আছে..............
)لما في الدرالمختار وَالْإِقَامَةُ كَالْأَذَانِ فِيمَا مَرَّ (وفي ردالمحتار تحت قوله )فيما مرّ(وَهِيَ أَنَّهُ سُنَّةٌ لِلْفَرَائِضِ،
অর্থাৎ-আযান ইক্বামতের বিধান একিই।আযান-ইক্বামত শুধুমাত্র ফরজ(জুমুআহ) নামাজের জন্য সুন্নাত।(-রদ্দুল মুহতার ১/৩৮৮)
অন্যতম ফাতাওয়া গ্রন্থ ফাতাওয়া হিন্দিয়াতে বর্ণিত রয়েছে........
وَالْإِقَامَةُ مِثْلُ الْأَذَانِ فِي كَوْنِهِ سُنَّةً لِلْفَرَائِضِ فَقَطْ. كَذَا فِي الْبَحْرِ الرَّائِقِ. وَلَيْسَ لِغَيْرِ الصَّلَوَاتِ الْخَمْسِ وَالْجُمُعَةِ نَحْوِ السُّنَنِ وَالْوِتْرِ وَالتَّطَوُّعَاتِ وَالتَّرَاوِيحِ وَالْعِيدَيْنِ أَذَانٌ وَلَا إقَامَةٌ كَذَا فِي الْمُحِيطِ
অর্থাৎ- ইক্বামত আযানের মতই, শুধুমাত্র ফরজ ও জুমুআহ নামাজের জন্য সুন্নাত মুআক্বাদা,( আলবাহরুর রায়েক)এবং ফরজ ব্যতীত অন্যান্য নামজ যেমনঃ-সুন্নাত,বিতির,নফল,তারাবীহ,ঈদ ইত্যাদি নামাজের জন্য আযান-ইক্বামত সুন্নাত নয়।(আল-মুহিত)(ফাতাওয়া হিন্দিয়া, ১/৫৩)
সুন্নাত নফল নামাজে আযান-ইক্বামত দেয়ার কোনো নিয়ম নেই,এবং দেয়া উচিৎও হবেনা,তবে যদি কেউ করে নেয় তাহলে তার নামায শুদ্ধ হবে,যেহেতু নামাজের ভিতরে ফরজ বা ওয়াজিবে কোন ব্যাঘাত ঘটেনি, কিন্তু এরকম না করাই সুন্নতে নববীর অনুসরণ হবে।(আপকে মাসাঈল আউর উনকা হল,২/৭৩)
বিঃদ্রঃ
ফরয নামজের জামাতে নফলের নিয়তে শরীক বক্তির জন্য নামাজের ইক্বামত দেয়া মাকরুহ।(আহসানুল ফাতাওয়া,৪/২৯২)
- (২) জুমুআর নামায ফরজ। জুমুআর নামায পড়ার মাধ্যমে জোহরের নামায সাক্বিত বা রহিত হয়ে যায়।অর্থাৎ আর জোহরের নামায পড়া লাগে না।মুসাফিরের উপর জুমুআর নামায ওয়াজিব হবে না,বরং তিনি জোহরের নামায আদায় করবেন। কেননা জুমুআর নামাজ ওয়াজিব হওয়ার জন্য ফাতওয়ায়ে হিন্দিয়াতে নিম্নোক্ত শর্তাবলী উল্লেখ করা হয়েছে....
وَهِيَ الْحُرِّيَّةُ وَالذُّكُورَةُ وَالْإِقَامَةُ وَالصِّحَّةُ، كَذَا فِي الْكَافِي، وَالْقُدْرَةُ عَلَى الْمَشْيِ، كَذَا فِي الْبَحْرِ الرَّائِقِ، وَالْبَصَرُ، هَكَذَا فِي التُّمُرْتَاشِيِّ،
তরজমাঃ-
(১)স্বাধীন ব্যক্তি হওয়া (২)পুরুষ হওয়া(৩)মুক্বিম (মুসাফির না)হওয়া(৪)সুস্থ থাকা(৫)জামে মসজিদে হেটে যাওয়ার সামর্থ্য থাকা(৬)দৃষ্টি সম্পন্ন থাকা।
حَتَّى لَا تَجِبَ الْجُمُعَةُ عَلَى الْعَبِيدِ وَالنِّسْوَانِ وَالْمُسَافِرِينَ وَالْمَرْضَى،
সুতরাং গোলাম, মহিলা, মুসাফির এবং অসুস্থ ব্যক্তির উপর জুমুআহ ওয়াজিব হবে না।(ফাতওয়ায়ে হিন্দিয়া ১/১৪৪)
তবে যদি কোন মুসাফির জুমুআর নামায পড়ে নেয় তাহলে তার জুমুআহ সহীহ হবে,এবং তার জন্য জোহরের নামায পড়া লাগবে না।
وَمَنْ لَا جُمُعَةَ عَلَيْهِ إن أَدَّاهَا جَازَ عَنْ فَرْضِ الْوَقْتِ، كَذَا فِي الْكَنْزِ.
তরজমাঃ-যার উপর জুমুআর নামায ওয়াজিব নয় সে যদি জুমুআর নামায পড়ে নেয় তাহলে সে নামায জোহরের নামাযের স্থলাভিষিক্ত হয়ে যাবে,কানযুদ্দাক্বাইক্বে এরকম-ইবর্ণিত আছে।(ফাতওয়ায়ে হিন্দিয়া ১/১৪৫)
দু-রাকাত ও তিন রাকাত বিশিষ্ট ফরয নামায এবং সুন্নাত নামাজের কোন ক্বসর নেই।পুরোটাই পড়তে হবে।
(قَوْلُهُ: وَفَرْضُ الْمُسَافِرِ عِنْدَنَا فِي كُلِّ صَلَاةٍ رُبَاعِيَّةٍ رَكْعَتَانِ) قَيَّدَ بِالرُّبَاعِيَّةِ احْتِرَازًا عَنْ الْفَجْرِ وَالْمَغْرِبِ فَإِنَّهُ لَا قَصْرَ فِيهِمَا وَقَيَّدَ بِالْفَرْضِ احْتِرَازًا عَنْ السُّنَنِ فَإِنَّهَا لَا تُقْصَرُ.
তরজমাঃ-প্রত্যেক চার রাকাত বিশিষ্ট ফরজ নামাজে মুসাফিরের উপর দু-রাকাত ফরজ, দু-রাকাত বিশিষ্ট ফজরের নামায এবং তিন রাকাত বিশিষ্ট মাগরিবের নামায ও সুন্নাত নামাযে কোনো ক্বসর(অর্ধেক নামায) নেই।(আল-জাওহারাতুন নাইয়্যিরাহ,১/৮৫)
- (৩) সফর অবস্থায় ও মহিলাকে পুরুষের মত নাময আদায় করতে হবে।সফরে পুরুষ মহিলার নামাযের একি-ই হুকুম।