আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
2,048 views
in ব্যবসা ও চাকুরী (Business & Job) by (1 point)
যেমন এক বস্তা চাউল যদি নগদে ক্রয় করি তাহলে ১৩০০ টাকা এবং বাকীতে ক্রয় করে ৬ মাস পরে টাকা দেয় তাহলে ১৫০০ টাকা দিতে হবে।।

1 Answer

0 votes
by (675,600 points)
উত্তর
بسم الله الرحمن الرحيم 

শরীয়তে ব্যবসা বাণিজ্য, ক্রয় বিক্রয় করা জায়েজ। 
 এ সম্পর্কে আল কুরআনেই বলা হয়েছে,
احل الله البيع وحرم الربا 
 ‘মহান আল্লাহ কেনাবেচাকে হালাল করেছেন এবং সুদকে করেছেন হারাম’ (সূরা আল বাকারাহ : ২৭৫)। 

রাসূল সা: এক ইহুদির কাছ থেকে বাকিতে খাদ্যদ্রব্য কিনেছিলেন এবং তাঁর লৌহবর্ম বন্ধক রেখেছিলেন (সহিহ আল বুখারি)। 

★শরীয়তের বিধান অনুযায়ী  কিস্তিতে (বাকীতে মেয়াদের ভিত্তিতে)   ক্রয়-বিক্রয় করলে নগদের চেয়ে বেশি মূল্য নেওয়া জায়েয আছে।

বাকিতে লাভে পণ্য কেনাবেচা বৈধ হওয়ার ব্যাপারে প্রখ্যাত সাহাবি হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা: বলেছেন, ‘কোনো পণ্যের ক্ষেত্রে এ কথা বলায় কোনো অসুবিধা নেই যে, নগদ হলে এত দাম আর বাকিতে হলে এত দাম। তবে ক্রেতা-বিক্রেতার সন্তুষ্টির ভিত্তিতেই তা হতে হবে’ (মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বাহ)।

★হযরত শুবা ইবনুল হাজ্জাজ রাহ. (মৃত্যু : ১৬০ হি.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি হাকাম ইবনে উতাইবা এবং হাম্মাদ ইবনে আবু সুলাইমকে এক ক্রেতা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম যে, সে অন্যের থেকে পণ্য ক্রয় করে আর বিক্রেতা তাকে বলে যে, নগদ মূল্যে কিনলে এত টাকা আর বাকিতে কিনলে এত টাকা। (এতে কোনো অসুবিধা আছে কি?) তারা উভয়ে বললেন,  ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ে যদি (মজলিস ত্যাগ করার পূর্বে) কোনো একটি (মূল্য) চূড়ান্ত করে নেয় তাহলে এতে কোনো অসুবিধা নেই।

দেখুন : মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ২০৮৩৬; জামে তিরমিযী ১/১৪৭।

 হজরত তাউস ও আতা রহ: বলেছেন, এ কথা বলায় কোনো অসুবিধা নেই যে, এই কাপড় নগদ হলে এত দাম আর বাকিতে হলে এত দাম। এর যেকোনো একটি গ্রহণ করতে পারবে (মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বাহ)। 

ইমাম আবু হানিফা রহ: বলেছেন, ‘কোনো ব্যক্তি অন্য কোনো ব্যক্তির নিকট ১০০ দিনার পায়। উক্ত দিনার পরিশোধের সময় হলে দেনাদার তাকে বলে, তুমি ১০০ দিনার নগদ মূল্যের কোনো পণ্য আমার কাছে ১৫০ দিনারের বিনিময়ে নির্দিষ্ট মেয়াদে বাকিতে বিক্রয় করো। এটা নিশ্চয় বৈধ। কেননা, তারা এমন কোনো শর্ত আরোপ করেনি এবং এমন কিছু বলেনি যার কারণে এ বেচাকেনা ফাসিদ বা নষ্ট হয়ে যাবে।’

আল্লামা সারাখসি র: ও হিদায়া গ্রন্থকার লিখেছেন, বাকিতে বিক্রির ক্ষেত্রে দাম বৃদ্ধি করা ব্যবসায়ীদের সাধারণ রেওয়াজ। এর ভিত্তিতেই ব্যবসা হয়ে থাকে। তাই কেউ কোনো জিনিস বাকিতে কিনে মুরাবাহা করতে চাইলে তা ক্রেতার কাছে স্পষ্ট করে বলে দেয়া দরকার যে, আমি এটা বাকিতে কিনেছি।

ইমাম আবু হানিফা রহ: বলেছেন, ‘কোনো ব্যক্তি অন্য কোনো ব্যক্তির নিকট ১০০ দিনার পায়। উক্ত দিনার পরিশোধের সময় হলে দেনাদার তাকে বলে, তুমি ১০০ দিনার নগদ মূল্যের কোনো পণ্য আমার কাছে ১৫০ দিনারের বিনিময়ে নির্দিষ্ট মেয়াদে বাকিতে বিক্রয় করো। এটা নিশ্চয় বৈধ। কেননা, তারা এমন কোনো শর্ত আরোপ করেনি এবং এমন কিছু বলেনি যার কারণে এ বেচাকেনা ফাসিদ বা নষ্ট হয়ে যাবে।’
,
★★শরীয়তের বিধান হলো  কিস্তিতে ক্রয়-বিক্রয় করলে নগদের চেয়ে বেশি মূল্য নেওয়া জায়েয। 
তবে কিস্তির বিক্রির ক্ষেত্রে নিম্নোক্ত শর্তের প্রতি লক্ষ্য রাখতে হবে-
১. পণ্যের মূল্য ও আদায়ের তারিখ সুনির্দিষ্ট হতে হবে।
২. চুক্তির সময় পণ্যের মূল্য চূড়ান্ত হওয়ার পর কিস্তি আদায়ে বিলম্ব বা পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়া ইত্যাদি কারণে পুনরায় মূল্য বৃদ্ধি করা যাবে না।
৩. কিস্তি আদায়ের জন্য পণ্য আটকে রাখা যাবে না; বরং চুক্তির পরই পণ্য ক্রেতাকে বুঝিয়ে দিতে হবে।

(মাজাল্লাতু মাজমাইল ফিকহিল ইসলামী জিদ্দা ৭/২/৩২-৩৬; বাইউত তাকসীত ওয়া আহকামুহু, সুলাইমান আততুরকী পৃষ্ঠা : ২২৮; বুহুস ফী কাযায়া ফিকহিয়্যাহ মুআছিরা, আল্লামা তাকী উসমানী ১/৭)
,
কিস্তির মেয়াদ কম বেশি হওয়ার কারণে পণ্যের মূল্য কম বেশি করা জায়েয। তবে শর্ত হল, কেনা বেচার সময় মেয়াদ অনুযায়ী একটা মূল্য চূড়ান্ত করে দিতে হবে। অর্থাৎ গ্রাহক যদি পণ্যটি কিস্তিতে নেয় তবে তা কত মাসে পরিশোধ করবে এবং মোট কত টাকা পরিশোধ করবে তা চুক্তির সময়ই নির্ধারণ করে নিতে হবে। বেচাকেনা সম্পন্ন হওয়ার পর কোনো কিস্তি আদায়ে বিলম্ব হলেও মূল্য বাড়ানো যাবে না। অথাৎ পূর্ব নির্ধারিত মূল্য অপরিবর্তীত থাকবে। তাই গ্রাহকের দায়িত্ব হবে নির্ধারিত সময় অনুযায়ী কিস্তি আদায় করে দেয়া। যেন বিলম্বের কারণে বিক্রেতা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।

(জামে তিরমিযী, হাদীস ১২৩১; আলমাবসূত, সারাখসী ১৩/৭; আহকামুল কুরআন, জাস্সাস ২/৩৭; রদ্দুল মুহতার ৫/৯৯,মাবসূত ১৩/৮; রদ্দুল মুহতার ৫/১৪২; বুহুস ফী কাযায়া ফিকহিয়্যাহ মুআসিরা ১/৭-৮)
,
★★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরত    " একই পন্য নগদে এক রকম দাম, আর বাকীতে অন্য দামে উপরে উল্লেখিত শর্তের ভিত্তিতে বিক্রয় করা যাবে।
যেমন এক বস্তা চাউল যদি নগদে ক্রয় করি তাহলে ১৩০০ টাকা এবং বাকীতে ক্রয় করে ৬ মাস পরে টাকা দেয় তাহলে ১৫০০ টাকা দিতে হবে।
এই পদ্ধতি উপরে উল্লেখিত শর্তের ভিত্তিতে হলে  জায়েজ  আছে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (1 point)
যদি মেয়াদ উল্লেখ না করা হয় এবং কিস্তি না করে একবারে পুরা টাকা পরিশোধ করা করার ক্ষেত্রে বিধান কি
by
মুহতারাম,
মনঃপীড়ার মধ্যে আছি। অনুগ্রহ করে দ্রুত উত্তর জানিয়ে কৃতজ্ঞ করবেন।

আমি গ্রামীণফোনে ১০০ টাকায় একমাস মেয়াদে ১০ জিবি কিনি। কিন্তু একমাস যাওয়ার পরও একদিন দেখি ৭ জিবি প্লাস আছে। অথচ আগের ডেটা ব্যালেন্স এত থাকার কথা না। সম্ভবত নতুন করে আসছে কিন্তু সেটার জন্য আমি কোন রিচার্জ ও করিনি কোন কোডও ডায়ল করিনি। কীভাবে কী হলো কিছুই বুঝতে পারিনি।
আমি কোন ধরনের কোন জালিয়াতির কথা চিন্তাও করিনি। এখন এটা বোনাস, না টেকনিক্যাল ত্রুটি কে জানে।

প্রশ্ন হলো ওইটা ব্যাবহার আমার জন্য বিশুদ্ধ হয়েছে কি?

এখন আমাকে ক করতে হবে? 

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...