আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
462 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (23 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহ।
১)গর্ভবতী মেয়েদের সিজদা দেওয়ার সময় পেটে চাপ পড়ে যার ফলে সেজদা দিতে খুবই কষ্ট হয় এমতাবস্থায় সে গর্ভবতী মেয়ে যদি বসে চেয়ারে নামাজ পড়ে তাহলে কি তার নামায হবে?
২) কোন কোন আমল করলে গর্ভবতী মায়েদের সন্তান জন্মদান সহজ হবে / আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা সহজ করে দিবেন? ( ইন শা আল্লাহ)
৩) গর্ভাবস্থায় কি কি আমল করব? ( যাতে সন্তান সুস্থ এবং নেকসন্তান হয়)

1 Answer

0 votes
by (560,490 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


https://ifatwa.info/44884/ ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ 
হাদীস শরীফে এসেছেঃ 
হযরত ইমরান ইবনে হুসাইন রাযি থেকে বর্ণিত,তিনি বলেন,
عَنْ عِمْرَانَ بْنِ حُصَيْنٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: كَانَتْ بِي بَوَاسِيرُ، فَسَأَلْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنِ الصَّلاَةِ، فَقَالَ: «صَلِّ قَائِمًا، فَإِنْ لَمْ تَسْتَطِعْ فَقَاعِدًا، فَإِنْ لَمْ تَسْتَطِعْ فَعَلَى جَنْبٍ»
আমার একবার অর্শগেজ হয়ে গেলো।আমি এমন অবস্থায় রাসূলুল্লাহ সাঃ এর নিকট নামায পড়ার পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে জিজ্ঞাসা করলাম।তখন তিনি প্রতিউত্তরে বললেন,তুমি দাড়িয়ে নামায পড়বে,তারপর দাড়ানো সম্ভব না হলে বসে বসে নামায পড়বে।যদি বসেও সম্ভব না হয় তাহলে হেলান দিয়ে নামায আদায় করবে।(সহীহ বোখারী-১১১৭)

ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়ায় বর্ণিত রয়েছে,
ولو كان قادرا على بعض القيام دون تمامه يؤمر بأن يقوم قدر ما يقدر 
যদি কেউ নামাযে কিছু সময় কিয়াম করার পর  অক্ষম হয়ে যায়,এবং এরপর আর দাড়াতে সক্ষম না হয়,তাহলে তার জন্য হুকুম হল যে, সে নামাযে ততটুকুই দাড়াবে যতটুকু তার জন্য সম্ভব হবে।(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/১৩৬)

তারপর উল্লেখ করা হয়,
وإن عجز عن القيام والركوع والسجود وقدر على القعود يصلي قاعدا بإيماء ويجعل السجود أخفض من الركوع، كذا في فتاوى قاضي خان حتى لو سوى لم يصح، كذا في البحر الرائق.
যদি কেউ নামাযে কিয়াম,রুকু,সিজদা করতে অক্ষম থাকে,কিন্তু সে আবার বসে বসে পড়তে সক্ষম হয়,তাহলে তার জন্য হুকুম হল যে,;সে বসে বসে ইশারায় নামায পড়বে।এবং সেজদার সময় মাথাকে রুকু থেকে একটু বেশী নিচু করবে।(ফাতাওয়ায়ে কাযীখান)তবে যদি কেউ রুকু এবং সেজদার সময়ে মাথাকে সমান করে রাখে তাহলে তার নামাযই বিশুদ্ধ হবে না।(বাহরুর রায়েক্ব)

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
দুজন বিজ্ঞ মুসলমান ডাক্তার যখন থেকে রুকু সিজদা থেকে বারণ করবে, তখন থেকেই মূলত ইশারার মাধ্যমে রুকু সিজদা করা লাগবে। আর দাড়ানোতে যেহেতু গর্ভের কোনো ক্ষতি হচ্ছে না, তাই প্রতি রাকাতে দাড়াতে হবে। 

এক্ষেত্রে সময় নিয়ে দাড়াতে এবং বসা লাগলেও নামাজের ক্ষতি হবেনা।
এক্ষেত্রে দাঁড়িয়ে নামাজ পড়ে রুকু সেজদার সময় চেয়ারেও বসা যাবে। 
,
যখন আর দাড়িয়ে নামাজ পড়া সম্ভব না হবে,তখন বসে আদায় করবে।
রুকু সেজদাহ ইশারার মাধ্যমে করবে।

আরো জানুন-https://www.ifatwa.info/1162

আর যদি বিজ্ঞ মুসলিম ডাক্তার রুকু সেজদাহ করতে বারন না করে,তারা যদি বিষয়টাকে গর্ভের জন্য ক্ষতিকর মনে না করে,তাহলে দাঁড়িয়ে রুকু সেজদাহ সহকারেই নামাজ আদায় করতে হবে।      

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
(০১)
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে উক্ত মহিলা চেয়ারে বসে নামাজ পড়তে পারবে।
রুকু সেজদাহ ইশারার মধ্যমে আদায় করতে পারবে।
তবে কিরাআত পাঠের সময় দাঁড়িয়ে যেতে হবে।  
কেননা সে দাড়াতে সক্ষম।

(০২)
শায়খ ইবনু ঊছাইমীন রহ. বলেন, ‘গর্ভবতীর সন্তান প্রসবের ক্ষেত্রে কষ্টের সময় এসমস্ত আয়াত পড়ার মাধ্যমে আল্লাহ্ অনেকের উপকার দান করেছেন।

একজন মহিলা এআয়াতগুলো পাঠ করে সন্তান প্রসবীনীর উপর ফুঁক দিবে। অথবা যে কোন লোক তা পাঠ করে পানিতে ফুঁক দিবে। তারপর সে পানি গর্ভবতীকে পান করাবে এবং তা দিয়ে তার পেট মালিশ করবে।’
এই আয়াতগুলো পাঠ করে মহিলার উপর ফুঁক দিবে: ১) সূরা রা‘দের ৮নং আয়াত ২) সূরা ফাতির ১১ নং আয়াত ৩) সূরা নাহাল ৮৭নং আয়াত এবং ৪) সূরা যিলযাল।

প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাদিসে ইরশাদ করেন, ‘আল্লাহ তাআলার ৯৯টি গুণবাচক নাম রয়েছে; যে ব্যক্তি এ গুণবাচক নামগুলোর জিকির করবে; সে জান্নাতে যাবে।’ আল্লাহ তাআলার এ গুণবাচক নামগুলোর দৈনন্দিন জীবনে পালনীয় আলাদা আলাদা আমল এবং অনেক ফজিলত ও উপকারিতা রয়েছে।

আল্লাহ তাআলার গুণবাচক নাম সমূহের মধ্যে (اَلْمُبْدِئُ) ‘আল-মুবদিয়ু’ একটি। এ পবিত্র নামের আমলের মাধ্যমে গর্ভের সন্তানের হেফাজত এবং সহজে নিরাপদে নারীদের সন্তান প্রসব হয়।
(সংগৃহীত)

(০৩)
আল্লাহর কাছে বেশি বেশি দোয়া করুন।

رَبِّ هَبْ لِىْ مِنْ لَّدُنْكَ ذُرِّيَّةً طَيِّبَةًۚ اِنَّكَ سَمِيْعُ الدُّعَآءِ

হে আমার পালনকর্তা! আপনার পক্ষ থেকে আমাকে পুত-পবিত্র সন্তান দান করুন। নিশ্চয়ই আপনি প্রার্থনা শ্রবণকারী। (আল ‘ইমরান: ৩৮)

এই দোয়াও পড়তে পারেন—
رَبِّ هَبْ لِىْ مِنَ الصّٰلِحِيْنَ 
হে আমার প্রতিপালক! আপনি আমাকে সৎকর্মশীল পুত্র সন্তান দান করুন। (আস-সাফফাত: ১০০)

গোনাহ থেকে বিরত থাকুন।
ধৈর্য্য ধারণ করুন।
সময় মত নামাজ আদায় করুন।
যিকির আযকারে লিপ্ত থাকুন।
ওযু অবস্থায় থাকার চেষ্টা করুন।

আপনার সন্তানের জন্য কোরআন তেলাওয়াত করুন: প্রায় ২০ তম সপ্তাহে গর্ভের বাচ্চা শোনার সক্ষমতা অর্জন করে। মা প্রতিদিন কিছু কোরআন তেলাওয়াত করে বাচ্চার মাঝেও কোরআনের মাঝে সম্পর্ক জুড়ে দেয়ার এটাই উপযুক্ত সময়। আবদুল্লাহ ইবনে আমর রাযি. বলেন,

عَلَيْكُم بِالْقُرْآَن ، فَتَعَلَّمُوه وَعَلَّمُوه أَبْنَائِكُم ، فَإِنَّكُم عَنْه تُسْأَلُوْن ، وَبِه تُجْزَوْن

কোরআনের বিষয়ে তোমাদের উপর অবশ্য পালনীয় এই যে, কোরআন শিক্ষা করা এবং তোমাদের সন্তানদের কোরআন শিক্ষা দেয়া। কেননা এ বিষয়ে তোমাদের জিজ্ঞাসা করা হবে এবং তার প্রতিদানও দেয়া হবে। (শরহে সহীহ বুখারী, ইবন বাত্তাল : ৪৬)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...