আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
239 views
in পবিত্রতা (Purity) by (27 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারা কাতুহু শাইখ,
a.আমি খুবই চিন্তায় আছি পাক পবিত্রতা নিয়ে। বাসায় কেউ যদি এই বিধান গুলো না মানে তাহলে খুবই সমস্যা।তাদের বলাও যায় না। আমি একা কেমন করে পবিত্রতার মাসআলা গুলো মানবো।মাকে যদি বলি আমি ইসলামের বিধান মানবো তখন মা বলে যে আমি কি এসবই শুধু চিন্তা করছি, আমার কি পড়ালেখায় কোনো মন নেই।এভাবে তো পারা যায় না।তাছাড়া আজকে আমি কাপড় ধুয়েছি তো অনেক সময় লেগেছে।আমার যোহরে নামাজও কাজা হয়েছে এর জন্য।তারপরও ভেজা কাপড় পড়তে হয়েছে।বিছানা বালিশ কাথা সবই ইসলামের বিধান অনুযায়ী ধোয়া হয়নি আমার যতদূর মনে হয়।জায়নামাজও একই। কোথায় নামাজ পড়ব এখন সেটাই সমস্যা। আমার সামনে অর্ধবার্ষিক পরীক্ষা। পড়ালেখা ঠিক মতো হচ্ছে না। আমার মাথা শেষ হয়ে যাচ্ছে।আমাকে পরামর্শ দিন আমি এখন কি করতে পারি।

b.যদি ইসলামের বিধান অনুযায়ী ধোয়া কাপড় গুলো পূর্বের ধোয়া (যেগুলো বিধান অনুযায়ী ধোয়া হয়নি) কাপড়ের সাথে লাগে তাহলে বিধান অনুযায়ী ধোয়া কাপড়গুলো কি নাপাক হয়ে যাবে?

c.যদি একটি কাপড় পানিতে আলাদা আলাদা করে তিনবার ধোয়া হয় সেই পানি যদি পায়ে লাগে আবার সেই পা দিয়ে মেঝেতে হাটলে কি মেঝে নাপাক হবে?

d.পূর্বের ধোয়া কোনো কাপড় সন্দেহের কারণে আবার ধোয়া হয় তখন যদি সেই কাপড় প্রথমে একবার বালতিতে পানি নিয়ে ধোয়া হয় এবং সেই পানি বাথরুমের মেঝেতে ফেলে দিলে এবং তা পায়ে লাগলে সেই পা কি নাপাক?

e.আমি যেহেতু পূর্বের ধোয়া কাপড় পরে কাপড় ধুয়েছি তাই মাঝে মাঝে ধোয়া কাপড় গুলো আমার পরিহিত কাপড়ে লাগে।এতে যে কাপড় ধুয়েছি তা নাপাক হবে?

f.এমন কোনো নতুন জামা যা কয়েকবার পড়া হয়েছে সেটা পড়ে নামাজ পড়া কি যাবে?

g.জামার হাতা যদি কনুই ও কবজির মাঝখানে থাকে তাহলে কি নামাজ হবে?

h.আমার বাবার একটি জায়নামাজে নামাজ পড়ে যা কেনার পর থেকে এখনো ধোয়া হয়নি।কারণ কিছুদিন আগে গিফ্ট পেয়েছে।বাবাও ইসলামের পবিত্রতার বিধান মানে না।আমি সেই জায়নামাজে কি নামাজ পড়তে পারবো?

i.অদৃশ্য নাপাকি বলতে কি কি বোঝায়?
j.বিছানা, বালিশের কভার যা ইসলামের বিধান অনুযায়ী ধোয়া হয়নি সেখানে যে কাপড় পরে শুয়ে থাকবো সেই কাপড় পরে কি নামাজ পড়া যাবে? এমন কাথা যেখানে তরল নাপাকি কিছু লেগেছিল এবং তা অনেক আগে শুকিয়ে যায় এমন কাথা গায়ে দিলে যে কাপড় পড়ে থাকবো সেই কাপড়ে নামাজ হবে?

দয়া করে উত্তর দিবেন। আল্লাহ আপনাকে উত্তম প্রতিদান দিক।

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ عَلِيِّ بْنِ الْعَلَاءِ ، ثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ شَوْكَرِ بْنِ رَافِعٍ الطُّوسِيُّ ، نَا أَبُو إِسْحَاقَ الضَّرِيرُ إِبْرَاهِيمُ بْنُ زَكَرِيَّا ، نَا ثَابِتُ بْنُ حَمَّادٍ ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ زَيْدٍ ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ ، عَنْ عَمَّارِ بْنِ يَاسِرٍ ، قَالَ : أَتَى عَلَيَّ رَسُولُ اللَّهِ - صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ - وَأَنَا عَلَى بِئْرٍ أَدْلُو مَاءً فِي رِكْوَةٍ لِي ، فَقَالَ : يَا عَمَّارُ ، مَا تَصْنَعُ ؟ قُلْتُ : يَا رَسُولَ اللَّهِ ، بِأَبِي وَأُمِّي ، أَغْسِلُ ثَوْبِي مِنْ نُخَامَةٍ أَصَابَتْهُ . فَقَالَ " يَا عَمَّارُ ، إِنَّمَا يُغْسَلُ الثَّوْبُ مِنْ خَمْسٍ : مِنَ الْغَائِطِ ، وَالْبَوْلِ ، وَالْقَيْءِ ، وَالدَّمِ ، وَالْمَنِيِّ ، يَا عَمَّارُ ، مَا نُخَامَتُكَ وَدُمُوعُ عَيْنَيْكَ وَالْمَاءُ الَّذِي فِي رِكْوَتِكَ إِلَّا سَوَاءٌ "

আহমাদ ইবনে আলী ইবনুল 'আলা (রহঃ) ... আম্মার ইবনে ইয়াসির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার নিকট এলেন, তখন আমি একটি কূপ থেকে বালতি দিয়ে পানি তুলে আমার একটি পানির পাত্রে ভর্তি করছিলাম। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, হে আম্মার! তুমি কি করছো? আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমার পিতা-মাতা আপনার জন্য কোরবান হোক। আমি আমার পরিধেয় বস্ত্রে লেগে যাওয়া শ্লেষ্মা পরিষ্কার করছি। তিনি বলেনঃ হে আম্মার! পাঁচটি জিনিস থেকে কাপড় ধৌত করা প্রয়োজনঃ বিষ্ঠা, পেশাব, বমি, রক্ত ও বীর্য। হে আম্মার! তোমার নাকের শ্লেষ্মা, তোমার উভয় চোখের অশ্রু এবং তোমার এই পানির পাত্রের পানি একই সমান (পাক-নাপাকীর হুকুমের ক্ষেত্রে)।
(সুনানে দারা কুতনি ৪৫০)

https://ifatwa.info/31990/. ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ  
হাদিস শরিফে এসেছে,আসমা রাযি. থেকে বর্ণিত,

 أَنَّ النَّبِيَّ  ﷺ قَالَ -فِي دَمِ الْحَيْضِ يُصِيبُ الثَّوْبَ-: «تَحُتُّهُ، ثُمَّ تَقْرُصُهُ بِالْمَاءِ، ثُمَّ تَنْضَحُهُ، ثُمَّ تُصَلِّي فِيهِ

হায়িযের রক্ত কাপড়ে লেগে যাওয়া প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, ‘পানি দিয়ে ঘষা দিবে তারপর পানি দ্বারা ভালোভাবে ধৌত করবে। অতঃপর সলাত আদায় করবে।’ (বুখারী ২২৭,৩০৭)

শরীয়তের বিধান হলো কাপড়ে/ চাদরে নাপাকি লাগলে তিনবার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে এবং প্রত্যেকবার ভালো করে চাপ দিয়ে নিংড়াতে হবে। ভালো করে নিংড়িয়ে ধোয়ার পরও যদি দুর্গন্ধ থেকে যায় কিংবা দাগ থাকে তাতে কোনো দোষ নেই। এতেই চাদর কিংবা কাপড় পবিত্র হয়ে যাবে।  (হাশিয়ায়ে তাহতাবী আলাল মারাকী, পৃষ্ঠা নং ১৬১, বেহেশতি জিওর ২/৭৭ )

কাপড়ে অদৃশ্যমান নাজাসত লাগলে, কাপড়কে তিনবার ধৌত করে তিনবারই নিংড়াতে হতে।এবং শেষ বার একটু শক্তভাবে নিংড়ানো হবে যাতে করে পরবর্তীতে আর কোনো পানি বাহির না হয়।(ফাতাওয়ায়ে হাক্কানিয়া;২/৫৭৪,জা'মেউল ফাতাওয়া;৫/১৬৭) 

আরো জানতে ভিজিট করুন- https://www.ifatwa.info/118

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
a.
আপনি সমস্ত দুশ্চিন্তা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলুন।
আপনাকে নিজের জামা আর জায়নামাজ পবিত্র করতে হবে।   
বাকি জিনিস যেহেতু নামাজে ব্যবহার হচ্ছেনা,তাই সেগুলো পবিত্র না করলেও চলবে।

আর জামা নাপাক হলে তিনবার ধুয়ে প্রত্যেকবার নিংড়িয়ে নিলে ভেজা অবস্থাতেও নামাজ পড়া যাবে। 

b.
উভয়টিই একসাথে ভেজানো বা উভয়টিই ভেজানোর পর একসাথে রাখলে নাপাক হবে।

c.
এই পানির ছিটাকে অনেকে নাপাক বলেছেন।
তাই সতর্কতামূলক প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে নাপাক মনে করে পা ধুয়ে ফেলতে হবে।

d.
সতর্কতামূলক পা কে নাপাক ধরবেন।

e.
না,নাপাক হবেনা।

f.
হ্যাঁ, তাতে নাপাকি না থাকলে সেটি পড়ে নামাজ পড়া যাবে।
 
g.
নামাজ হবে।
তবে মহিলা হলে সেক্ষেত্রে বাকি হাত অন্য কিছু (ওড়না ইত্যাদি)   দিয়ে হলেও ঢেকে রাখতে হবে।

h.
আপনি সেই জায়নামাজে নামাজ পড়তে পারবেন।

i.
কাপড়ে লেগে যেটার দেখা যায়না। যেমন পেশাব।

j.
সেখানে যে কাপড় পরে শুয়ে থাকবেন, সেই কাপড় পরে নামাজ পড়া যাবে।

★কাথায় নাপাকি লেগে শুকিয়ে গেলে সেই কাথা গায়ে দিলে সেটা নাপাক হবে কিনা,জানুনঃ


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...