আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
149 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (13 points)
আসসালামুআলাইকুম।
১) ক্যাডেট কলেজে জুনিয়র পানিশমেন্ট দেয়ার অধিকার আইনত কেবল প্রিফেক্টদের থাকে। কিন্তু বাস্তবে সব সিনিয়রই দিয়ে থাকে। এটা কি জায়েয? আমি যদি প্রিফেক্ট না হয়েও কোনো জুনিয়রকে পানিশমেন্ট দেই, আমি কি জুলুমকারী নই? সবার অজুহাত এই যে নয়তো জুনিয়র বেয়াদব হয়ে যায়। কিন্তু প্রয়োজনে কে দিবে সেটাও তো নিয়মে বলা আছে। তাহলে কি এই অজুহাত খাটে?
২) কলেজে মসজিদে প্রবেশ করা হয় নিষিদ্ধ ওয়াক্তে। মাগরিবের আগে। তখন কি তাহিয়াতুল মসজিদ আদায় করা যাবে? নিষিদ্ধ সময় হওয়া সত্ত্বেও?
৩) বিতর পড়ার পর যদি আমি আবার উযু করি ঘুমের আগে, আমি কি তাহিয়াতুল উযু আদায় করতে পারব? জানামতে বিতর সর্বশেষে পড়তে হয়, তাহলে?
৪) কলেজে পিটির সময় তো ছেলে স্টাফদের সামনে লাফালাফি করতে হয়। তাও আবার বেপর্দা অবস্থায়। খুব বাজেভাবে পর্দার লঙ্ঘন হয়ে যায়। যেকটা পোশাক গায়ে থাকে তাও না থাকার মতোই, সবই বুঝা যায়। এই পিটি না করার জন্য মথ্যা বলা কি জায়েয? হায়েজ হয়েছে বললে মাফ দেয় পিটিতে। এই পরিস্থিতিতে না পড়ার জন্য যদি আমি মিথ্যা বলি, যে আমার হায়েজ হয়েছে, তবে তা কি জায়েয আছে?
৫) ছেলেদের কি বাংলাদেশ আর্মিতে জয়েন করা জায়েয? আমরা যখন বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমি গিয়েছি, তখন ওখানকার অফিসাররাই বলেছেন যে অনেক সময় ফিল্ডে নামাজ ঠিকমতো হয় না। পরে কাজা করতে হয়। আবার ট্রেইনিং এর সময় দাঁড়ি শেইভ করতে হয়। আবার বিভিন্ন নাচগানের অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে হয়। আবার ট্রেইনিং এ মেয়েদের সঙ্গে থাকতে হয়। আমাদের সরাসরি এটাই বলেছে যে শোয়ার জায়গা বাদে ছেলেমেয়েদের আর কোনো পার্থক্য নাই ওখানে। এমন দেখেছি যে পাশাপাশি দৌড়ায় যেখানে মেয়েটার গায়ে শার্টপ্যান্ট। এমন অনেক কাহিনী শুনেছি যে ছেলে ভালো ছিল। ওখানে গিয়ে প্রেম করেছে, জিনায় লিপ্ত হয়েছে।
এমতাবস্থায় কি জায়েয ছেলেদের ওখানে জয়েন করা?
৬) আমাদের ডাইনিং এ রোজা রাখতে হলে লুকিয়ে রাখতে হয়। একজন শিক্ষক কাউন্টিং করেন কয়জন টোটাল খেয়েছে। কেউ জানিয়ে রোজা থাকলেও ঐ কাউন্টিং এ নাম দেয়া হয় না। মূলত এটা নিষিদ্ধ। তো, কেউ যদি নফল রোজা বা কাজা রোজা রাখে, ঐ শিক্ষকের গণনা মিথ্যা হয়। বা ম্যাডামকে দেখলে মিথ্যা বলতে হয়, যে একটু পর খাব বা ইত্যাদি। এটা কি জায়েয? কাজা রোজা তো এতদিন বাকি রাখা ঠিক না। আর নফল রোজাও তো পালধ করা অনেক ভালো। তাদের এমন নিয়ম ভেঙে রোজা রাখলে কি পাপ হবে?
৭) আখলাক উত্তম করার উপায় বাতলে দিবেন দয়া করে শাইখ।
জাযাকাল্লাহু খইরন।

1 Answer

+1 vote
by (565,890 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


(০১)
হ্যাঁ এটি স্পষ্ট জুলুম।
এহেন জুলুমের জন্য কিয়ামতে কঠিন শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে।
মাজলুম ব্যাক্তি মাফ না করা পর্যন্ত কোনো মাফ হবেনা।  

(০২)
https://ifatwa.info/7598/ ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ  
সমস্ত উলামায়ে কেরাম একমত যে, আছরের নামাযের পর সূর্যাস্তের পূর্ব পর্যন্ত নফল নামায মাকরুহ।এবং ফজরের নামাযের পর সূর্যোদয় পর্যন্ত নফল নামায মাকরুহ।

আবু সাইদ খুদরী রাযি থেকে বর্ণিত 
عن أبي سَعِيدٍ الخُدْرِيّ رضي الله عنه قال : سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ : ( لاَ صَلاَةَ بَعْدَ الصُّبْحِ حَتَّى تَرْتَفِعَ الشَّمْسُ ، وَلاَ صَلاَةَ بَعْدَ العَصْرِ حَتَّى تَغِيبَ الشَّمْسُ )

রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,ফজরের নামাযের পর সূর্যোদয় পর্যন্ত নফল নামায মাকরুহ।এবং আছরের নামাযের পর সূর্যাস্ত পর্যন্ত নফল নামায মাকরুহ।(সহীহ বোখারী-৫৮৮ সহীহ মুসলিম-৮২৭)


যে তিন সময় নামায পড়াকে হারাম বা মাকরুহে তাহরিমী বলা হয়েছে,সে সময় সকল প্রকার নামায পড়াই মাকরুহে তাহরিমী।
হ্যা ফজর এবং আছরের নামাযের পর কাযা নামায পড়া যাবে।তবে নফল পড়া যাবে না বরং মাকরুহ হবে।(ফাতাওয়ায়ে দারুল উলূম দেওবন্দ-৪/২৪৪)

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে  তাহিয়াতুল মসজিদ আদায় করা যাবেনা।

(০৩)
হ্যাঁ আপনি উক্ত সময়ে তাহিয়াতুল উযু আদায় করতে পারবেন।

বিতরকে সর্বশেষ নামাজ করতে বলা হয়েছে,তবে এর পরে নামাজ আদায় করলে তাহা শুদ্ধ হবেনা,কবুল হবেনা,এমনটি কেহউ বলেনি।

সুতরাং উল্লেখিত ছুরতে আপনি তাহিয়াতুল উযু আদায় করতে পারবেন।

(০৪)
হ্যাঁ জায়েজ হবে।

(০৫)
ছেলেদের বাংলাদেশ আর্মিতে জয়েন করা জায়েয আছে।
এখানে কোনো গুনাহমূলক কাজে জড়িয়ে পড়লে সেই গুনাহ করার গুনাহ হবে।
চাকুরীর ক্ষেত্রে সমস্যা হবেনা।

আরো জানুনঃ  

(০৬)
তাদের এমন নিয়ম ভেঙে রোজা রাখলে পাপ হবেনা।
আপনি যদি মিথ্যা না বলে কাজা রোযা রাখতে না পারেন,তাহলে সেখানে উল্লেখিত পদ্ধতিতে কথা বলতে পারেন।

(০৭)
উত্তম আখলাকের মূল চাবিকাঠি হচ্ছে ‘তাওয়াযূ’ বা বিনয়ঃ

যার মধ্যে তাওয়াযূ আছে সে কখনো বদ আখলাক ও দুর্ব্যবহারকারী হতে পারে না। এ কারণে আখলাক বিরোধী কোনো আচরণ প্রকাশ পাওয়ার অর্থই হচ্ছে তার মধ্যে তাকাববুর এসেছে। তাওয়াযূ অর্থ অন্যকে নিজের থেকে বড় মনে করা এবং নিজেকে ছোট মনে করা।

অন্তরে যেন নিজের বড়ত্বের চিন্তা না থাকে। বরং ভাবুন, আমার যা কিছু আছে সব আল্লাহর দান। যখন ইচ্ছা করেন তিনি তা ছিনিয়েও নিতে পারেন। আমার নিজস্ব কোনো গুণ নেই। আল্লাহ তাআলা অন্যদেরকে অনেক গুণ ও বৈশিষ্ট্য দান করেছেন। তাই তাদের অনেক কামাল ও যোগ্যতা রয়েছে। এভাবে নিজেকে বড় মনে না করার নামই তাওয়াযূ বা বিনয়।

হাদীস শরীফে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-

من تواضع لله رفعه الله

অর্থাৎ যে আল্লাহর (সন্তুষ্টির) জন্য নিজেকে নীচু করে আল্লাহ তাকে উঁচু করে দেন।-মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ১১২৯৯

আরো জানুনঃ 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (13 points)
edited by
এভাবে কি নফল রোজাও করা যাবে? 

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...