আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
108 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (87 points)
reshown by
আসসালামুয়ালাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহু।
১/ যেহেতু ইদ, জুমুয়ার নামাজে ফিতনার আশংকা থাকায় মহিলাদের অনুপ্রবেশ নিষেধ তবে ওয়ায মাহফিল এ মহিলাদের আসার অনুমোদন দেওয়া কি শরিয়াহ সম্মত?

২/ যে অত্যন্ত গরীব জন্য একবার ও হজ্ব করে নি জীবনে তাকে দিয়ে বদলি ফরয হজ্ব(সামর্থ্যবান কিন্তু হজ্ব না করেই মারা গেছে) করানো যাবে কি?

৩/ কোনো কাজ এর পদ্ধতি সম্পর্কে জানার জন্য, কিংবা কোনো প্রয়োজনীয় কাজে সফলতার উপায় জানার জন্য, বা গুনাহ ছাড়া এর পদ্ধতি এর জন্য ইস্তেখারা করা যাবে কি?

৫/ হাদিস সম্মত এমন কোনো পদ্ধতির আমল আছে যা করার পর  দুয়া করলে সেটা কবুল হয়?

৬/ গুনাহ করার পর তাওবা না করে আবার একি গুনাহ বারবার হয়ে গেলে কিভাবে অন্তর কে পুনরায় পরিশুদ্ধ করব?

৭/ ইসমে আজম প্রসংে বিস্তারিত জানতে চাই, এটা কখন করে? সবকক্সেত্রে প্রয়োজনে কি করা যায়? এর নিয়ম কি?

জাজাকাল্লাহু খইরন

1 Answer

0 votes
by (676,960 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


(০১)
দ্বীনের জরুরী ইলম শিক্ষা করা নারীদের উপরও ফরয। তবে এর শরীআতসম্মত পদ্ধতি হলো ঘরের পুরুষরা দ্বীন শিখে তাদের নারীদেরকে শেখাবে। 

নারীরা শিখে ঘরের মেয়েদেরকে অনুরূপভাবে আশপাশের মেয়েদেরকে সহীহ-শুদ্ধভাবে কুরআন মাজীদ শেখাবে, প্রয়োজনীয় মাসআলা-মাসায়েল শেখাবে, হক্কানী উলামায়ে কেরামের রচিত কিতাব থেকে ওয়ায-নসীহত শুনাবে। 

প্রয়োজনে মাঝে মাঝে মাহরাম পুরুষের তত্ত্বাবধানে হক্কানী আলেম ও বুযুর্গদের ঘরোয়া পরিবেশে এনে পর্দা-পুশিদার সাথে ওয়ায -নসীহত শুনবে। 

সহীহ বুখারী ও সহীহ ইবনে হিব্বানে বর্ণিত হয়েছে, একবার কিছু সংখ্যক নারী সাহাবী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট আরজ করলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমরা আপনার মজলিসে পুরুষদের সাথে বসতে পারি না। আমাদের জন্য একটি দিন ধার্য করুন, যাতে সেদিনটিতে আমরা আপনার থেকে নসীহত শুনতে পারি। নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন موعدكن بيت فلانة অর্থাৎ নির্ধারিত দিন অমুক মহিলার ঘরে জমায়েত হও। অতপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেখানে তাদেরকে ওয়ায-নসীহত করলেন। -(সহীহ বুখারী, হাদীস ১০১; সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস ২৯৪১)


ইসলামের প্রাথমিক যুগে যদিও নারীরা নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মত
ইমামের পেছনে নামায পড়ার তীব্র আকাঙ্ক্ষার  কারণে মসজিদে নববীর জামাতে অংশগ্রহণ করত। তথাপি তার জন্য বেশ কিছু শর্ত ছিল। 

যেমন, ১. পূর্ণ পর্দার সাথে আসতে হবে। ২. সুগন্ধি ব্যবহার করতে পারবে না। ৩. সাজসজ্জা পরিত্যাগ করতে হবে। ৪. রাতে আসবে, দিনে আসবে না। ৫. মহিলারা সবার পরে আসবে এবং নামায শেষে পুরুষদের আগে বের হয়ে যাবে। ৬. কোনো অবস্থাতেই পুরুষদের সাথে মেলা-মেশার আশঙ্কা না থাকতে হবে। উপরন্তু, নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজ হায়াতেই মহিলাদের মসজিদে নববীতে না এসে নিজের ঘরের অন্দরমহলে নামায পড়ার জন্য তাকীদ করতেন।


একদা হযরত উম্মে হুমাইদ রা. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দরবারে এসে বললেন, আমি আপনার সঙ্গে নামায নামায পড়তে ভালবাসি। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: আমি জানি তুমি আমার সঙ্গে নামায পড়তে ভালবাস। কিন্তু তোমার ঘরে নামায তোমার বাইরের হুজরায় নামায অপেক্ষা উত্তম। আর তোমার হুজরায় নামায তোমার বাড়ীতে নামায অপেক্ষা উত্তম। আর তোমার বাড়ীতে নামায তোমার মহল্লার মসজিদে নামায অপেক্ষ উত্তম। আর তোমার মহল্লার মসজিদে নামায আমার মসজিদে নামায অপেক্ষা উত্তাম। অত:পর উক্ত মহিলা নিজ ঘরের অন্ধকার প্রকোষ্ঠে নামাযের স্থান নির্ধারণ করে নিল এবং আমরণ তাতেই নামায আদায় করল। (মুসনাদে আহমাদ (হাদিস নং ১৭০৯০), সহীহ ইবনে খুযাইমা (হাদিস নং ১৬৮৯) ও সহীহ ইবনে হিব্বান (হাদিস নং ২২১৭)

অতঃপর নবীজীর ইন্তিকালের পর সামাজিক পরিবেশের সামান্য পরিবর্তনের কারণে সাহাবায়ে কেরাম মহিলাদেরকে মসজিদে আসতে নিষেধ করে দেন এবং মহিলারাও মসজিদে আসা বন্ধ করে দেয়। উম্মাহাতুল মুমিনীন এবং অন্যান্য মহিলা সাহাবীদের তাকওয়া- তহারাত, খোদাভীতি যা প্রবাদতুল্য, এবং পরবর্তীযুগের নারীদের জন্য যারা হলেন আদর্শ তাঁদের ব্যাপারে যদি এমন নিষেধাজ্ঞা হয়, তাহলে এমন ফেতনা-ফাসাদের ব্যাপকতার যুগে প্রকাশ্যে দিবালোকে বেপর্দার সাথে দুর-দুরান্ত থেকে মহিলাদের উক্ত সম্মেলনে যাতায়াত কীভাবে অনুমোদিত হতে পারে?

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন, 
মহিলাদেরকে মাঠে-ময়দানে ডেকে এনে ওয়ায শোনানোর আয়োজনটা পরিপূর্ণ ভাবে শরীয়তসম্মত পন্থা নয়। কেননা মহিলাদের ক্ষেত্রে শরীয়তের নির্দেশনা হল, ইবাদত-বন্দেগী থেকে শুরু করে তাদের সকল কাজ পুরুষদের থেকে আলাদা হবে। তাদের অবয়ব ও চলাফেরা পুরুষদের দৃষ্টির আড়ালে থাকবে।

অতএব মাহফিল কমিটির কর্তব্য হবে, মহিলাদের জন্য মাহফিলে অংশগ্রহণের ব্যবস্থা করা থেকেই বিরত থাকা। কেননা এর দ্বারা মহিলাদের ব্যাপারে শরীয়তের অনেকগুলো বিধান ও নির্দেশনার লঙ্ঘণ হয় এবং ক্ষেত্রবিশেষে তা পুরেপুরি নাজায়েযের আওতায় চলে যেতে পারে। তাই নিজেদের আবেগ ও চাহিদা অনুযায়ী আমল না করে শরীয়ত নির্দেশিত পন্থায় এবং শরীয়তের চাহিদা অনুযায়ী আমল করাই মুসলমানদের করণীয়।

দ্বীনের জরুরি ইলম শিক্ষা করা নারীদের উপরও ফরয। তাদেরকে সঠিক ঈমান-আকীদা শিক্ষা দেওয়া, তালীম-তরবিয়ত করা খুবই দরকার। তবে এর পদ্ধতি হতে হবে অবশ্যই শরীয়তসম্মত। আর তা হল ঘরের পুরুষরা দ্বীন শিখে তাদের নারীদেরকে শেখাবে। এমনিভাবে বাড়িতে বাড়িতে ঘরোয়া দ্বীনী মাহফিল এবং ঘরোয়া দ্বীনী তালীমের আয়োজন করা। আর ঘর/বাসার কাছে অনাবাসিক তালীমুল বানাতের ব্যবস্থা থাকলে সেখানে গিয়ে দ্বীন শিখে আসতে পারে। এতে প্রত্যেক ঘরেই দ্বীনী তালীমের চর্চা হবে এবং ঘরে ঘরে দ্বীনী পরিবেশ কায়েম হবে- ইনশাআল্লাহ।
(সংগৃহীত)

(০২)
হ্যাঁ তাকে দিয়ে বদলি হজ করানো যাবে।
তবে উত্তম হলো যে ব্যাক্তি তার ফরজ হজ আদায় করেছে,তাকে দিয়ে বদলি হজ আদায় করানো। 

(০৩)
হ্যাঁ করা যাবে।

(০৫)
এ সংক্রান্ত বিস্তারিত জানুনঃ   

(০৬)
গুনাহ ছেড়ে দিয়ে লজ্জিত হয়ে মহান আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।

(০৭)
ইসমে আজম সম্পর্কে  তিরমিজি, আবু দাউদ শরীফের একটি হাদীসে এসেছেঃ  
হযরত বুরাইদা রাযি থেকে বর্ণিত
وَعَنْ بُرَيْدَةَ - رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ -: «أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ - صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ - سَمِعَ رَجُلًا يَقُولُ: اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ بِأَنَّكَ أَنْتَ اللَّهُ، لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ، الْأَحَدُ، الصَّمَدُ، الَّذِي لَمْ يَلِدْ، وَلَمْ يُولَدْ وَلَمْ يَكُنْ لَهُ كُفُوًا أَحَدٌ فَقَالَ: " دَعَا اللَّهَ بِاسْمِهِ الْأَعْظَمِ الَّذِي إِذَا سُئِلَ بِهِ أَعْطَى، وَإِذَا دُعِيَ بِهِ أَجَابَ» " رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ، وَأَبُو دَاوُدَ.

রাসূলুল্লাহ সাঃ এক ব্যক্তিকে বলতে শুনলেন,
اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ بِأَنَّكَ أَنْتَ اللَّهُ، لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ، الْأَحَدُ، الصَّمَدُ، الَّذِي لَمْ يَلِدْ، وَلَمْ يُولَدْ وَلَمْ يَكُنْ لَهُ كُفُوًا أَحَد
তখন রাসূলুল্লাহ সাঃ বললেন, ঐ ব্যক্তি ইসমে আ'জম দ্বারা ডাকছে।যে নাম দ্বারা ডাকলে,দেয়া হবে,এবং দু'আ করলে জবাব দেয়া হবে।(মিরকাত-২২৮৯)

এ সংক্রান্ত বিস্তারিত জানুনঃ  


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...